রক্ত দিন, জীবন বাঁচান। নিজে দিন, আরেকজনকে এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তাকেও উত্‍সাহিত করুন।

লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী ০৫ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:১৭:০৬ রাত

#ঘটনা__১

- ভাই, বাবা খুব অসুস্থ, রক্ত লাগবে। ডায়াবেটিসের রোগী।

- কী গ্রুপ?

- A+

- এখন কোথায় আছে?

- হাসপাতালে।

- আচ্ছা চেষ্টা করব। তা আপনার রক্তের গ্রুপ কী?

- জানিনা।

- তো পরীক্ষা করেন।

- কোথায় করব?

- আপনার বাবার রক্তের গ্রুপ কি আগে থেকে জানতেন?

- না।

- কোথায় পরীক্ষা করালেন?

- হাসপাতালে।

- তো ঐখানেই আপনারটাও করান।

- এখন?

- কেন অসুবিধা কী? বেশিক্ষণ তো লাগবে না।

- না মানে . . . . কোন দিন রক্ত দেই নি তো। ভয় লাগে।

#নিজের__বাবাকে__রক্ত__দেওয়ার__কথায়__ভয়__লাগে।

না। তাকে নিরাশ করিনি। রক্ত সংগ্রহ করে দিতে সাহায্য করেছি। বেশি কিছু করতে হয়নি। শুধু ইনফরমেশনগুলো দিয়ে দিয়েছি। ভাইয়েরা পেজে পোস্ট দিয়ে দিয়েছেন। তবে এই অতি সামান্য কাজটুকু করেছি তাকে সাহায্য করার মানসিকতা থেকে নয়। রক্তাভাবে একজন মানুষ বিপন্ন এই মানসিকতা থেকে। তোমার রক্ত জমা রাখ। তোমার সন্তানকেও যখন ভয় লাগবে তখন কাজে লাগায়ো।

#ঘটনা__২

বিকেলে খেলতে গেলাম। ভাল পিচ গুলা দখল। অগত্যা দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত একটা পিচে খেলতে শুরু করলাম। বড় বড় ঘাস। সেরাম অসুবিধা। এরই মাঝে খেয়াল করলাম মাঠের এককোণে একজন বয়স্ক মহিলা এক ভাইয়ের সাথে কি যেন বলছে। দেখে গরীবই লাগল। কাছে গেলাম। কাঁদো কাঁদো স্বরে কথা বলছে। কান্নায় বুঝা যায় এ কোন মায়াকান্না নয়। এতে মিশে আছে আপনজন হারানোর তীব্র আশঙ্কা। গরীব মানুষগুলা সবসময় বোধ হয় একটু অন্যরকম হয়। একারণে মাঠে তাকে এককোণায় দেখা গেছে। #সভ্য জায়গায় আমরা অবশ্য খেলার সুযোগ পাই নি। আর ওরা সভ্য জায়গায় যেতে ভয় পাই। আসলে গণতন্ত্র চর্চার অভাব।

- কি ব্যাপার?

- (কেঁদে কেঁদে) বাজান, আমার স্বামী খুব অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছে। ডাক্তার বলেছে রক্ত লাগবে। আমরা গরীব মানুষ। আমাদের তেমন কেউ নাই। আমাদের অত টাকা পয়সাও নাই যে রক্ত কিনব? ওদেরকে (ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে) এত করে বললাম কিন্তু দিলনা।

আবেগকে মনে কখনও স্থান না দিলেও ঐ মুহুর্তে নিজের মায়ের কথা একবার মনে হয়েছিল। কিন্তু না চোখে পানি আসেনি। আসলে বঙ্গদেশ নিয়মকানুন দ্বারা আবদ্ধ। তাই এর নিয়মকানুনের মত নিজেকেও কঠিন রাখা বাঞ্জনীয়। :/

আপনি যতই হাহাকার করে বেড়ান, চোখের সামনে একজন মানুষ মরে যাক, বাঁচার আকুতি নিয়ে ছটফট করুক, এদেশের নিয়ম কানুন আপনার উপর একটুও সদয় হবেনা।

যাইহোক এক ভাই কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন উনি দিবেন। লাগবে B+ । উনার আবার O+ । তাতে কী? হাসপাতাল থেকে এক্সেচেঞ্জ করে পাওয়া যায় তো। ব্যস সমাধান হয়ে গেল। Happy

সমন্বিত অনুভূতিঃ বাংলাদেশে নিজের বাবাকে রক্ত দিতে ভয় পাওয়া পাবলিক যেমন আছে, অন্যের বাবাকে নিজের বাবা মনে করে রক্ত দেওয়ার মত পাবলিকও অনেক। এই পাবলিক গুলা এরকম কাজ করে নিজের মা বাবাকে না জানিয়ে। কারন জানতে পারলে এ কাজ কখনই করতে দিবেনা। যারা #রক্ত__দিতে__ভয়__পান, তারা পুরুষও নন মহিলাও নন।

কাজেই আসুন -

রক্ত দিই, জীবন বাঁচাই।

নিজে দিন, আরেকজনকে এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তাকেও উত্‍সাহিত করুন।

বিষয়: বিবিধ

১১৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File