জনগণের দাবি তত্ত্বাবধায়ক। মেনে নিন! মেনে নিন!! জনগণের জন্যই সংবিধান। তার জন্য জনগণ নয়।
লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী ২৫ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:৪৪:১৩ রাত
"আমি খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলি। . . . . ."
হ্যাঁ আমিও এখন খেটে খাওয়া মানুষের কথাই বলছি। মাউলানা ভাসানী যে মানুষগুলোর কথা বলেছিলেন, আমি তাদের কথাই বলছি। এই মানুষগুলোর বসে বসে খাওয়ার মত বিঘার বিঘা জমি নাই। লক্ষ লক্ষ টাকা নাই। সরকারী বড় বড় পদ নাই। অধীনে কোন মণ্ত্রনালয় নাই। পকেটে কোন মন্ত্রী মিনিস্টার নাই। কোন চ্যালা চামুন্ডা নাই। তারাও কারও দালাল নয়। সামনে ককটেল ফুটলে ধারে কাছে নাই। পুলিশ দেখলে মাফ চাই। প্রধানমন্ত্রী হইবার খায়েশ নাই। কোন রকম বাঁইচা থাকলেই হয়।
এই মানুষগুলার কেউ কাজ করে মাঠে, কেউ ঘাটে। কেউ থাকে সাধারণ একটা ঘরে। কেউ থাকে ভার্সিটির হলের গণরূমে, ১৫-২০ জন একসাথে। বাপের পয়সায় কোন রকমে চলে তারা। চলবেনা যে ভবিষ্যতে চাকরী ছাড়া। প্রাইমারীরই হোক না কেন। আজ তার বাপে চালায়। ভবিষ্যতে সেও বাপ হয়ে আরেকজনরে চালাবে। তারপর একদিন বিদায় নিবে। প্রজন্ম আসবে, প্রজন্ম যাবে। এক প্রজন্ম চলবে তার আগের প্রজন্মের ঘাড়ে চড়ে।
এরাই সাধারণ মানুষ। এদের চাওয়া পাওয়া এসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর এদের জন্যই সংবিধান। সংবিধানের জন্য এরা নয়। এদেরকে সংবিধান দেখাতে আসবেন না। তারা দেখতেও চায় না।তারা চায় দেশটা ভালভাবে চলুক। তবে তারা চায় তাদের চাকররা ভালভাবে চালাক।
কিন্তু হচ্ছেটা কী? করছেনটা কী? পাইছেনটা কী? তত্ত্বাবধায়ক দিতে এত আপত্তি কেন? ভয় কেন? অলসতা কেন? স্বৈরাচারী মনোভাব কেন?
- তত্ত্বাবধায়ক অসাংবিধানিক।
- অগণতান্ত্রিক।
- 'পশ্চাদমুখী'।
- সংবিধানে নেই।
- গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে। . . . . . . . . . .
আগেই বলেছি জনগণকে সংবিধান দেখাতে আসবেন না। তারা দেখতেও চায় না। আমার দেশের স্কুলের নিম্নবেতনের একজন কেরানী জানতে চায় না সংবিধানে কয় হাজার ধারা আছে। আমার দেশের একজন ভ্যানচালক জানেনা গণতন্ত্র কী? জানতেও চায় না। জানলেও সেটা তার দৈনিক আয়ের এক পয়সাও বৃদ্ধি করবেনা। আমার গ্রামের একজন কৃষক জানেনা, জানতে চায়ও না গণতন্ত্র কিভাবে উত্পাদন (চর্চা) করতে হয়। আমার দেশের একজন মুচি কোন 'সংবিধান' মেনে জুতা সেলাই করেনা। একজন দিন মজুর জানেনা গণতন্ত্র খায়, নাকি গায়ের ঘাম মুছে।
ওসব বড় বড় গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক জ্ঞান আপনাদের মত জ্ঞানীগুণী মাথামোটাদের ঝুলিতেই মানায়। জনসাধারণকে ওসব দেখাইয়া তাদের জীবনের চার আনা, আট আনা, বারো আনা জীবনটাই মিছে করে দিবেন না।
সো জনমতের দিকে ফিরে আসুন, প্রাধান্য দিন। জনমত এখন তত্ত্বাবধায়কের পক্ষে, 'আপনাদের সংবিধানে'র বিপক্ষে। আর তাই অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করুন। সংবিধানে কি কি কাটা ছেঁড়া করবেন না করবেন সেটা আপনাদের ব্যাপার। সাধারণে ওসব দেখবে না। সংবিধান পবিত্র কি অপবিত্র সেটাও তারা দেখবেনা। তারা সহজ সরল। সহজভাবেই সবকিছু দেখে। সহজভাবেই সবকিছুর সমাধান চায়। চায়তে ভালবাসে। ওসব সাংবিধানিক জটিল জটিল ধারার মারপ্যাঁচে তাদেরকে আবদ্ধ করতে আসবেন না।
বিষয়: বিবিধ
১০৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন