সহাবস্থানের বাংলাদেশ। বাধ্য আমরা।
লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:২২:৪৭ রাত
¤ মশারীর মধ্যে মশা মারতে যাই, পারিনা। হাত ফসকে যাবে। গোলকিপারই যেখানে জালের মধ্যে অতবড় বল ধরতে পারেনা!
¤ ইটের আঘাত দিয়ে থেঁতলে দেব, পারিনা। নিজের হাতই থেঁতলে যাবে।
¤ কিছুক্ষণ চাইয়া চাইয়া দেখিয়া POWER খাইয়া (মশক যেন আমার নায়িকা, আমি যেন সাকিব খান) এনার্জি বাড়াইয়া দশ ফুট উচ্চতা লাফাইয়া সেখান থেকে মশাকে জোরে নিক্ষেপ কইরা হত্যা করব, পারিনা। অন্ত্য বেগের কারনে মশার কিছু হবেনা। কিন্তু দশ ফুট লাফাইয়া নিচে নামতে পারব না। হাড্ডি তরল না হলেও গুঁড়াতো হবেই। কারন আমার আন্ডারওয়ার তো আর প্যান্টের উপরে থাকেনা।
তাই মশাকে আর কিছু বলিনা। :/
¤ গালে বসলে মাথা ঝাকি দিই।
¤ বুকে বসলে ফুঁ দিই।
¤ পিঠে বসলে আরাম পায়। ইদানিং পিঠ চুলকে দেওয়ার কাউকে পাইনা।
এভাবে মশার সাথে আমার সহাবস্থানিক রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
রক্ত যখন দিয়েছে, রক্ত দিয়েই যাবে জনগণ।
শাসকগোষ্ঠী, তবুও তোমগোর সাথে সহাবস্থান করেই যাচ্ছে, যাবে বললাম এ ক্ষণ।
না। এ কোন সুশীল সাজার চেষ্টা নয়। নয় 'আই হেট পলিটিক্স' টাইপ স্ট্যাটাস। এটাই বাস্তব। এবং এটা অস্বীকারও করা যাবেনা। প্রতি পাঁচ বছর পর পর নেতাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। কিন্তু ম্যাঙ্গো পাবলিকের তাতে কী হয়? পাঁচ বছর আগে যে রিক্সা চালাত, কোন একটা দুর্ঘটনায় তার একটা পা নায়। তাকে দেখার কেউ নাই। পাঁচ বছর আগে যে দিন মজুর ছিল। বয়সের কারনে এখন তাকে ভিক্ষা করতে হয়। তাকে দেখার কেউ নাই। পাঁচ বছর আগে যে বসতির একটা ছোট্ট ঘরে বাস করতো সেই ঘর এখন দুই ভাগ হয়ে গেছে। হয়ত পাঁচ বছর পর চার ভাগ হবে। পাঁচ বছরে তাদের ভাগ্যের কী পরিবর্তন হল? জন প্রতিনিধিগণ কী ব্যবস্থা নিলেন?
বলবেন এখানে তরুণ সমাজ কোন ভূমিকা রাখতে পারে না? শাসকগোষ্ঠি আপনারা আছেন কী কাজে? আর তরুণ সমাজ কতটুকুই বা করতে পারবে? ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে টাকা জমা করে তার দ্বারা কয়জনেরই বা ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব। সরকারী উদ্যোগ ছাড়া এটা হতে পারেনা। কেননা এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। বাংলাদেশের অর্ধেক লোকই দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। সুতরাং অবস্থার উন্নয়নে একটা কেন্দ্রীয় শক্তির মাধ্যমে সমন্বয় দরকার। যেটা কোন বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্টির দ্বারা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে কী দেখি? 'দুই দিনের পোলা, ভাতরে কয় অন্ন'। পাঁচ বছর আগে যার সামান্য কিছু ছিল সে আজ একটা টিভি চ্যানেলের মালিক। যার ছিল একহাজার কোটি তার আজ পাঁচ হাজার কোটি। যেখানে নেতৃত্বকে ভয় করা উচিত। কারন কিয়ামতের দিন সৃষ্টিকর্তা নেতাদেরকেই আগে পাকড়াও করবেন। সেখানে আমাদের দেশে নেতৃত্ব বিষয়টা নিয়ে ঈদানন্দ বয়ে যায়। আনন্দ হবে না কেন? যেকোন ব্যবসার যেমন একটা নির্দিষ্ট মৌসুম থাকে তেমনি তাদের কাছেও অর্থ উপার্জনের এটা একটা মোক্ষম সময় এবং সুযোগ। একবার ক্ষমতায় যেতে পারলেই হয়। সেটা প্রধানমন্ত্রীর কথাই বলেন আর একেবারে নিচে গ্রাম পর্যায়ের মেম্বারই বলেন।
আবারও বলি এটা সুশীল সাজার চেষ্টা নয়। আমাদের প্রত্যেকেরই রাজনৈতিক একটা ভিউ আছেই। কিন্তু আমরা কি উপরোক্ত কথাগুলি অস্বীকার করতে পারি? আমরা কি বলতে পারি অমুক সরকারের সময় দেশে কোন দুর্নীতি, লুটপাট হয়নি? আমরা কি বলতে পারি অমুক আমলে মানুষ পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়না? আমরা কি বলতে পারি ঐ সময়ে দেশে প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেনি? তবে আমরা আশা করি সেই রকম একটা সরকার আমাদের দেশে সৃষ্টি হোক দল যাদের কাছে বড় নয়, দেশটাই বড়। না আসা পর্যন্ত আমরা ভোট দিবনা নাকি? কারন সবাই তো খারাপ :/ । আপনি ভোট দেন আর না দেন। আম্লীগ আর বিম্পিই ক্ষমতায় যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আমাদের সহাবস্থান এভাবেই এবং ঠিক এখানেই।
বিষয়: বিবিধ
১১২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন