সালামের মাহাত্ম

লিখেছেন লিখেছেন তৌহিদুল ইসলাম তানিন ০১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:৩৯:২৭ রাত



ইদানিং, আমি ব্যাক্তিগতভাবে একটি কাজ করার চেষ্টা করি - যেকোন দোকানে হাজির হয়েই সালাম বিনিময় করার চেষ্টা করি এবং আসার সময় ও সালামের মাধ্যমেই বিদায় নিই (কিছু কিনি আর না কিনি)। এতে কিন্তু কয়েকটি উপকার পাওয়া যায়। যেমনঃ

১. ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়/বৃদ্ধি পায়

২. আন্তঃরিকতা তৈরী হয়/বৃদ্ধি পায়

৩. সওয়াব/পূন্য হাসিল হয়

৪. তুলনামূলক উত্তম পন্য বা সেবা পাওয়া যায় (সবক্ষেত্রেই যে এমন হবে, তা নয়)

৫. তুলনামূলক উত্তম ব্যাবহার পাওয়া যায় (সবক্ষেত্রেই যে এমন হবে, তা নয়)

৬. বেশী ভীড় থাকলে, দোকানদারের দৃষ্টিপাত করা (নিজের দিকে) সহজ হয়।

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ঈমান আন আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষন না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বাতলে দেব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে ? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ্‌ মুসলিম | অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান | হাদিস নাম্বার: ১০০]

আর, এই প্রচলন যে শুধুমাত্র দোকানেই সীমাবদ্ধ রাখব তা কিন্তু নয় - প্রতিটি কাজে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর দ্বারা উত্তম বিনিময় পাওয়া যাবে। এছাড়াও ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো, উত্তম-অধম না দেখেই তা করতে হবে। অথচ, আমরা অনেকেই মনে করি, "আরে! ও তো আমার থেকে ছোট/আমি ওর থেকে উত্তম/সম্মানীত ব্যাক্তি !!! আমি ওকে সালাম দিব কেন? ও-ই আমাকে সালাম দিক !" আমরা কেউ যদি এমন চিন্তাভাবনা লালন করি, তাহলে সেটা অহংকারের বহিঃপ্রকাশ বৈ অন্য কিছু নয়, যা কিনা ভয়াবহ রকমের গুনাহ কেননা অহংকারকে আল্লাহ্‌ সুব'হানাল্লাহু তা'আলা নিজের চাদর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এই চাদরকে নিয়ে টানাটানি করতে ও নিষেধ করেছেন।

রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “অহংকার আমার চাদর এবং শ্রেষ্ঠত্ব আমার পোষাক। অতএব, যে এর কোন একটি নিয়ে আমার সাথে কাড়াকাড়ি করবে তাকে আমি জাহান্নামে ছুড়ে মারব।” [আহমদ এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা ও ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন]

আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা) বলেছেনঃ “যার অন্তরে অণু পরিমান অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।” এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলঃ যদি কেউ সুন্দর জামা আর সুন্দর জুতা পরিধান করতে ভালবাসে? তখন রসুল (সা) বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার মানে হল সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।” [ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ্‌ মুসলিম | অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান | হাদীস নম্বরঃ ১৬৪]

আগে সালাম দিলে কেউ বড় থেকে ছোট/ধনী থেকে দরিদ্র/উত্তম থেকে অধম/সম্মানীত থেকে অসম্মানীত ব্যাক্তি হয়ে যাবে না। আর, রসূল (সঃ) ও কোন রকম বাছ-বিচার না করে, আগেভাগেই সবাইকে সালাম দিতেন। এই কারনে কোন সাহাবী উনাকে সালাম দেয়ার সুযোগ পেতেন না।

** এখানে, একটা বিষয় লক্ষনীয় যে, কোন নারীর জন্য কোন গায়েরে মাহরাম পুরুষকে সালাম দেয়া কর্তব্যের আওতায় পড়ে না কেননা এতে ফিত্নার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File