পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত প্রাত্যাহিক রুটিন
লিখেছেন লিখেছেন তৌহিদুল ইসলাম তানিন ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:২৩:০৭ রাত
বর্তমান সময়ে স্কুল, কলেজ ও বিস্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার ধুম লেগেছে, কারো এখন চলছে আর কারো সামনে হাতছানি দিয়ে ডাকছে । এই সময়ে কিভাবে সময়কে উপযুক্তভাবে লাগাতে হয় তা নিয়ে সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীরা হিমশিম খায় । এই কারনে তারা একটি রুটিন বা নিয়মের দারস্থ হয় । কিন্তু, আমাদের চারপাশে, গ্রামে-গঞ্জে, শহরে, হাটে-বাজারে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ধরনের দৈনিক রুটিন পাওয়া যায়, যা কিনা বর্তমান প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতা বিবর্জিত এবং অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাবহারিকভাবে প্রয়োগের অনুপযোগী । আর, এ কারনেই ঐ সব রুটিন মানতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা তথা পরীক্ষার্থীরা খৈই হারিয়ে ফেলেন । একজন পরীক্ষার্থীর অনুরোধকল্পে তাদের জন্য বাস্তবিক ব্যাবহার উপযোগী, সময়াপোযগী ও প্রাত্যাহিকভাবে ব্যাবহারযোগ্য একটি রুটিন তৈরির ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালালাম । ইন শা আল্লাহ্, এর দ্বারাপরীক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করছি ।
.....................................................................................................................
সকাল ০৫টা ০০ মিনিটঃ ঘুম থেকে উঠা, আড়মোড়া ভাঙ্গা, ২ গ্লাস পানি পান (সকালে খালি পেটে পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী) ও ফজরের নামাজের প্রস্তুতি
সকাল ০৫টা ১৫ মিনিটঃ ফজরের নামাজ আদায়
সকাল ০৫টা ৩০ মিনিটঃ কোরআন শরীফ ও হাদীস পড়া (*চাইলে সময় আরো বাড়াতে পারেন)
সকাল ০৬টা ০০ মিনিটঃ নাস্তা তৈরী/তৈরিতে সহায়তা, নাস্তা গ্রহন (খাবারের আধা ঘন্টা পূর্বে পানি পান করলে তা হজমে সহায়তা করে) ও দাঁত ব্রাশ করা
সকাল ০৬টা ৩০ মিনিটঃ একমনে–একধ্যানে পড়াশুনা শুরু (কি পড়বেন সেটা নিজে ঠিক করে নিবেন)
সকাল ০৯টা ৩০ মিনিটঃ হালকা বিশ্রাম
সকাল ০৯টা ৪৫ মিনিটঃ আবার একমনে–একধ্যানে পড়াশুনা শুরু
সকাল ১১টা ০০ মিনিটঃ হালকা নাস্তা গ্রহন
সকাল ১১টা ০৫ মিনিটঃ আবার একমনে–একধ্যানে পড়াশুনা শুরু (ঘুম বা বিশ্রাম বেশী প্রিয় হলে এই সময় কাজে লাগাতে পারেন, তবে তা অবশ্যই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে)
...
দুপুর ১২ টা ০৫ মিনিটঃ রান্না-বান্না, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং (ফেসবুকিং, ব্লগিং ও অন্যান্য), বাবা-মা-ভাই-বোনকে সময় দেয়া, পরিবারের কাজে সহায়তা করা (যেকোন এক বা একাধিক)
দুপুর ০১ টা ০০ মিনিটঃ গোসল করা, কাপড় ধোয়া, রূপচর্চা, যোহরের নামাজের প্রস্তুতি
দুপুর ০১ টা ৩০ মিনিটঃ যোহরের নামাজ আদায়
দুপুর ০১ টা ৪৫ মিনিটঃ দুপুরের খাবার গ্রহন ও হালকা বিশ্রাম
দুপুর ০২ টা ০০ মিনিটঃ আবার একমনে–একধ্যানে পড়াশুনা শুরু
...
বিকাল ০৪টা ০০ মিনিটঃ ঘুম
বিকাল ০৫টা ০৫ মিনিটঃ ঘুম থেকে জেগে উঠা ও আসরের নামাজের প্রস্তুতি
বিকাল ০৫টা ১৫ মিনিটঃ আসরের নামাজ আদায়
বিকাল ০৫টা ২০ মিনিটঃ হালকা নাস্তা গ্রহন, খেলাধুলা, বাইরে বেড়ানো, বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং (ফেসবুকিং, ব্লগিং ও অন্যান্য), কাব্য ও সাহিত্য চর্চা, বাবা-মা-ভাই-বোনকে সময় দেয়া, পরিবারের কাজে সহায়তা করা (যেকোন এক বা একাধিক)
...
সন্ধ্যা ০৬টা ২০ মিনিটঃ মাগরিবের নামাজের প্রস্তুতি ও নামাজ আদায়
সন্ধ্যা ০৬টা ৩০ মিনিটঃ আবার একমনে–একধ্যানে পড়াশুনা শুরু
...
রাত ০৯ টা ৩০ মিনিটঃ রাতের খাবার গ্রহন ও হালকা বিশ্রাম (রান্না-বান্না না করা থাকলে আগে তা করে নিবেন)
রাত ০৯ টা ৪৫ মিনিটঃ টিভি দেখা (অবশ্যই শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান), সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং (ফেসবুকিং, ব্লগিং ও অন্যান্য ), কাব্য ও সাহিত্য চর্চা, বাবা-মা-ভাই-বোনকে সময় দেয়া, পরিবারের কাজে সহায়তা করা (যেকোন এক বা একাধিক)
রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটঃ রূপচর্চা, দাঁত ব্রাশ করা, প্রচুর পরিমানে পানি পান করা (যেন ফজরেরে সময় অন্তঃত ব্লাডারেরে চাপে ঘুম ভাঙ্গে) ও ঘুমানোর প্রস্তুতি
রাত ১১ টা ০০ মিনিটঃ ঘুমের দেশে হারিয়ে যাওয়া (বেশী রাত জাগা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর । আর, যারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন তাদের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া অতীব জরুরী কেননা একমাত্র ভারী ঘুম হলেই ভালো ভালো স্বপ্ন দেখা যায় এবং এর জন্য তাড়াতাড়ি ও বেশী ঘুমানো বাঞ্ছনীয় ।)
.....................................................................................................................
** সর্বমোট পড়ার সময়কালঃ ১০ ঘন্টা ১৫ মিনিট
(*চাইলে এখান থেকে ১৫ মিনিট হাদীস পড়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন)
** পাঠ্য শ্রেনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি, ক্লাশ (যদি থাকে), এলাকার পার্থক্য, নামাজের সময়ের পার্থক্য, টিউশনি, পার্ট-টাইম বা ফুল টাইম চাকুরী, বৈবাহিক অবস্থা, হলে বা মেসে থাকা ও অন্যান্য কর্মকান্ডের উপর ভিত্তি করে রুটিন এদিক-ওদিক করে নিতে পারেন ।
** আশা করি, সবাই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ভালো ও দ্বীনি কাজেই ব্যাবহার করেন অথবা করবেন, ইন শা আল্লাহ্ ।
[[[ প্রয়োজনীয় মনে হলে, আশা করি কাজে লাগাবেন ]]]
## এই রুটিনের উন্নয়নকল্পে কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই তা সাদরে গৃহিত হবে বলে প্রত্যয় ব্যাক্ত করছি ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন