আজকে পড়ুনঃ স্যেকুলার ধর্মের অন্যতম উৎসব 'নববর্ষ' ভাতার প্রচলন। আগামীতে পড়ুনঃ ঈদ, পূজা, বৌদ্ধপূর্নিমা ও ক্রিসমাস ভাতার বিলোপ।
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ০২ এপ্রিল, ২০১৬, ০৭:০১:৩২ সন্ধ্যা
বিসমিল্লাহির রহমানুর রাহীম।
আস্সালামুআলাইকুম।
আমাদের সময় এ ২রা এপ্রিল ২০১৬ ইং তারিখের খবর, এ বছর হতে 'সরকার ২১ লক্ষ সরকারী কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা দিচ্ছেন'।
News @ here
সরকারের এ উদ্দ্যোগকে আপাতঃ অন্যায় মনে হয় না, হবে না। সাধারন মানুষ এ উদ্দ্যোগটিকে বরং নিষ্পাপ একটি উদ্যোগ মনে করবে, করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ধর্মানুরাগী, ধর্মীয় চিন্তাবিদ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, আলেম ওলামাসহ, যারা মানুষকে ধর্মীয় দিক-নির্দেশনা দিতে ধর্মীয় আদেশানুযায়ী, সামাজিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত - তাদের কাছে এ উদ্দ্যোগটিকে শুধুমাত্র অন্যায় নয় - বরং এক্টিভলী ধর্মের উপর আঘাত বলে প্রতিভাত হবে। কিন্তু কেন?
এটা বোঝার জন্য আমাদেরকে প্রথমতঃ আমাদের শিক্ষা ও জ্ঞান অনুযায়ী চিন্তা-ভাবনা করতে হবে, বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আর তাহলেই আপনি অনুভব করতে পারবেন, বুঝতে পারবেন যে, আজকের বাংলার বেশীরভাগ মানুষেরই একচ্ছত্র ধর্ম 'গনতন্ত্র'। যা কখনো কখনো মানুষকে প্রতারিত করতে 'রাজনীতি' 'স্যকুলারিজম' ইত্যাদি টার্মিনোলজীতে অবহিত হয়। (বাংলার মানুষের জীবন-জীবিকা, শিক্ষা-দিক্ষা, উৎসব-পূজা-পার্বন-আচার-আচরন, বিচার-আচার হতে শুরু করে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ইত্যাদি সব ই নতুন এ ধর্মের শরীয়া (কনস্টিটিউশান) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আর মানুষরা জেনে কিংবা না জেনে - এ ধর্মের দীক্ষায় দীক্ষিত। তারা এখন এ ধর্মের আওতায় জীবন যাপন করে, এ ধর্মের জন্য শহীদ হয়, এ ধর্মের জন্য হরতাল, মানববন্ধন, আন্দোলন ইত্যাদি জেহাদে অবতীর্ন হয়, এ ধর্মের আওতায় ধৈর্য ও শান্তির জন্য ফতোয়া ও দেয় - যা মূলতঃ মাহাত্মা গান্ধি, মার্টিন লুথার কিং, নেলসেন মেন্ডেলা ইত্যাকার মানুষের সুন্নাহ র সাথে সামন্জশ্যপূর্ন।)
এ ধর্মের ধর্মীয়-গুরুরা, নেতৃবৃন্দরা - বৈশাখী ভাতার মত এমন উদ্দ্যোগকে তাদের ধর্মের শিক্ষানুযায়ী বলে বেড়াবে 'এটা আর একটা আওয়ামী রাজনীতি', কেউবা তারস্বরে বলবে 'সরকারী কর্মচারীদের ঘুষ দেওয়া হচ্ছে' আবার কেউবা বলবে 'সরকার দেশের কর্মচারীদের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করছে' ইত্যাদি। এ নিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি, সেমিনার-টকশো ও লিখালিখি করবেন ও করাবেন। এবং তার মাধ্যমে নতুন এ ধর্মীয় উৎসব ও ভাতার আদান প্রদানকে মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য করবেন এবং এর আকর্ষন বাড়াতে উত্তোরোত্তর নাটক সিনেমায় কাজ করবেন। ফলাফল হবে এমন যে অচিরেই এ ধর্মের অনুসারী বাংলার মানুষজন - ঈদ, দূর্গা পূজা, বৌদ্ধপূর্নিমা কিংবা ক্রিসমাস ভাতার পরিবর্তে - বৈশাখী ভাতার জন্য দাবী তুলবেন এবং পুরুষ্কৃত হবেন। এবং আগামীতে ঈদ, দূর্গা পূজা, বৌদ্ধপূর্নিমা কিংবা ক্রিসমাস এর পরিবর্তে বৈশাখী ছুটির জন্য দাবী তুলবেন এবং পুরুষ্কৃত হবেন।
আর কোরান ও হাদীসের উপর তুলনামূলক আমলকারী, সেন্স সম্পন্ন - কিন্তু ডিফেন্সিভ, লিবারেল ও নিরাপদে বেঁচে থাকার জন্য জেহাদে রত আলেম ওলামা ও নেতৃবৃন্দের আহ্বান ও যুক্তিকে খন্ডাতে, তাদের ভয়েস ও ফতোয়াকে দমিয়ে রাখতে এবং সর্বোপরি সাধারন মানুষকে প্রতারিত করতে, গনতন্ত্র নামক এ ধর্মের মুজাহিদ - তথা বাংলার ভন্ড, কাফের, মুরতাদ ও মুশরিক রূপী চ্যানেল আই, প্রথমালো ও প্রেস ক্লাবের আলেম ও ওলামার মাধ্যমে বলানো হবে যে - এই বৈশাখী ভাতার সাথে ইসলামের কোন দূরতম সম্পর্ক নেই। এ নিয়ে কথা বলা সিম্পলী মুসলমানের আবেগ অনুভূতি নিয়ে রাজনীতি। এ ভাতা প্রচলনের আগেও বাংলায় ইসলাম ছিল, আগামীতেও থাকবে।
ফ্যাক্টচুয়ালী বিচার বিশ্লেষন করলে, অন্তরের চোখ, কান ও বিবেকবোধ ব্যবহার করলে, এটা দিনের আলোর ন্যায় পরিষ্কার হয় যে - গনতন্ত্র নামক এ ধর্মের প্রবক্তা তথা 'দ্যা গ্রেট ডিসিইভার' মানুষের মধ্যস্থিত হাজার বছর ধরে বিস্তৃত ঐশ্বরিক ও প্রাকটিসিং ধর্ম সমূহ ও ধর্মের আওতাধীন বিধিবিধান, শরীয়া ও রিচ্যুয়াল সমূহকে - গনতন্ত্রের আওতাধীন বিধিবিধান, শরীয়া ও রিচ্যুয়াল সমূহ দিয়ে একের পর এক প্রতিস্থাপন করে চলেছে।
এর বাহিরে - এ বৈশাখী ভাতার অপর একটি করুন ও নিষ্ঠুর স্বরূপ হল - তথাকথিত সরকার (লিটারেলী ডিসিভার এর এজেন্ট) অন্যায়ভাবে (আমি আলেম হলে বলতাম 'হারাম ভাবে' - কারন কোরান ও হাদীস দিয়ে এটাকে পরিষ্কারভাবে হারাম সাব্যস্থ করা যাবে।) - জনগন হতে ফি, ফাইন, ট্যাক্স ও ভ্যাট এর নামে তাদের অর্থ সম্পদ (১) প্রতারনা, (২) চুরি, (৩) ডাকাতি ইত্যাদি উপায়ে নিয়ে রাজকোষে নিয়ে - তারপর সেই অর্থ সম্পদকে ব্যবহার করছে - এমন সব অদাবীকৃত, অন্যায্য স্যেকুলার ধর্মের 'বৈশাখী ভাতা'র প্রচলন করে। যাতে ভাতা প্রদানকারী জনগনের ঈমান, আকিদা, ধর্মীয় উৎসব, আবেগ, উদ্দ্যম ও ফোকাস কে তাদের ধন সম্পদ দিয়েই ধ্বংশ করে দেওয়া যায়।
হে স্রষ্টা - মানুষের অন্তর্দৃষ্টি খুলে দাও, গনতন্ত্র নামক এমন স্যাটানিক ধর্মের মূল স্বরূপ চিনতে মানুষকে সাহায্য করো।
বিষয়: বিবিধ
১৭৪৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অন্তর্দৃষ্টি খোলার জন্য ইসলামের সঠিক অনুশীলন করা চাই, সেটাতো হচ্ছেনা।
সবাই তালে বেতালে মহাতালে পড়ে আছে
অন্তর্দৃষ্টি খোলার জন্য ইসলামের সঠিক অনুশীলন করা চাই, সেটাতো হচ্ছেনা। সবাই তালে বেতালে মহাতালে পড়ে আছে
ঠিকই বলেছেন। কিন্তু তাতে ইসলামের কিছুই যায় আসেনা। বরং আমরা সবাই ঐ 'না চর্চা করার' জন্য নিজেদের ঠিকানা প্রস্তুত করে চলেছি।
এটা আমাদের নিজ হাতে ডেকে আনা দূর্ভাগ্য কিংবা নিজ হাতে করা গর্তে পড়ার ব্যবস্থা -- ভিন্ন অন্য কি বলা যায়?
আমি বলি যাযা হবার তা যত জলদী হয় ততই ভাল৷আল্লাহ বলেন, সবার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে৷তার ভিতর সে মুক্ত৷ মেয়াদ শেষ হলেই পাকড়াও৷ তাই এজেণ্ডা যত তাড়াতাড়ি শেষ হয় ততই ভাল৷
ঠিক ই বলেছেন। আত্মা যেন তাই বলতে চায়।
আমার তো মনে হচ্ছে লুটপাটের অংশ সরকারী কর্মচারীদেরকেও ঘুষ দিচ্ছে যেন তারা খুশী থাকে!
প্রশাসন ও সশস্ত্রবাহিনী- এ দুটো ঠিক থাকলে সরকার পতন দুঃসাধ্য- এটা ওরা ঠিকই জানে!
আপাতঃ তাই ই মনে হয় - কর্মচারীদের খুশী করছে, নিজেদের পতন দীর্ঘায়িত করছে।
গত ২০/২৫ বছরের ট্রাক রেকর্ড বলছে তারা একের পর এক মুসলমানের হাতে স্যেকুলারিজম এর তন্ত্র মন্ত্র ধরিয়ে দিয়ে, ধর্মীয় তন্ত্র-মন্ত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে।
প্রতারকেরা যেমন 'কাঁচ হাতে ধরিয়ে দিয়ে হীরা ছিনিয়ে নেয়'।
ধন্যবাদ।
আর বাকিটা রইলো কী????
নিঃসন্দেহে বিদায়াত।
নিঃসন্দেহে প্যাগান সংস্কৃতিকে (মূলতঃ ধর্মকে) প্রমোট করা হয়, যা শির্ক এর অন্তর্ভুক্ত।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন