'পশ্চিমা গনতন্ত্র' 'মেজরিটির ভোট' 'সার্বভৌম সংসদ' কে না বলুন। লাত, ওজ্জা ও মানাত - কে দুরে রাখুন।

লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১৩ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৬:৫০:১১ সকাল

বিসমিল্লাহির রহমানুর রাহীম

আস্‌সালামুআলাইকুম।

বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বের মিডিয়া সমূহে চোখ বুলালে যে খবরাখবর ও তার পাশাপাশি - গন মুসলিম, মুসলিম লিডারশীপ ও ইন্টেলেকচ্যুয়ালদের যে ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া দৃষ্টিগোচর হয় - তা যৎসামান্য একজন মুসলিম হিসাবে বড় বেশী ডিপ্রেসিভ, বড় বেশী অস্বস্তিকর।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফ্যাক্টস, ফিগার ও ঐতিহাসিক ডাটা বিচার বিশ্লেষন করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, রাসুলুল্লাহ সঃ এর ভবিষ্যত বানী করা সে হাদিসটি বুঝিবা শীঘ্রই ট্রু মুমিন এর ঘরের কড়া নাড়বে (আমি তথাকথিত সংখ্যা নির্ভর 'মুসলমান' বোঝাচ্ছি না)। যেখানে তিনি ঈমান সংরক্ষন এর যাতনা কে - জলন্ত কয়লা হাতের তালুতে ধরে রাখার যাতনার সাথে তুলনা করেছেন কিংবা রূপক হিসাবে দেখিয়েছেন। (আল্লাহ ভাল জানেন)

কিন্তু মুসলিম উম্মাহ দিকে না তাকিয়ে, যদি একচোখা দজ্জালের মত - শুধুই নিজের দিকে তাকাই, নিজের ব্যাক্তিগত কাজ-কারবার, নিজের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, আয়-রোজগার, আরাম-আয়েশ, নির্ঝান্ট নিরুপদ্রব, টেনশানবিহীন এই জীবন এর দিকে তাকাই - মনে হয় 'আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ সোবহানাল্লাহু তায়ালা আমাকে, আমার পরিবার পরিজনকে, আত্মীয়স্বজনকে, বন্ধুবান্ধবকে লক্ষ লক্ষ মুসলমান ভাই বোনের চেয়ে বেশী নিরাপদ ও আরামদায়ক রেখেছেন। আমার ভবিষ্যৎটা ও বুঝিবা বড় বেশী সম্ভাবনাময় ও স্বস্তিকর (মূলতঃ মরীচিকা - কিন্তু সেন্স এ কাজ করেনা)।

অথচ নিজের এই নিরপদ্রব জীবনের দিকে আল্লাহর দেয়া দু'চোখে (বাহ্যিক ও অন্তঃচক্ষু) তাকালে মূহুর্তেই আখেরাতে এই আমার জন্য ভয়াবহ জীবনচিত্র বিমূর্ত হয়, ভয়ে কুকড়ে উঠতে হয় - অকৃতজ্ঞতা স্বত্তেও আল্লাহর কাছে আশার দোলাচলে দুলতে হয়। কোরআনের আয়াতের অনুবাদ সমূহ হৃদয়ের গভীরের কোন এক জায়গায় লতিয়ে-প্যাচিয়ে কনকনিয়ে উপরে উঠে যেন বলতে চায়, 'না তুমি/তোমরা আমার সেই তাওহীদ এর বাহক নও - যে বাহক হতে আদম, নূহ, ইব্রাহীম, মুসা, ঈসা, মোহাম্মদ সঃ ইত্যাকার নবী রাসুল রা বলেছেন'।

আবার কখনো কখনো বুঝিবা মোহাম্মদ সঃ এর মোহনীয়, নীচু কিন্তু গুরুগম্ভীর ঢেউ জাগানিয়া স্বরের কোন এক আলোচনা হৃদয়তন্ত্রে বেজে যায় - 'আমি কি তোমাদেরকে পরিষ্কারভাবে উদাহরন সহ বলিনি অমাবস্যার রাতে - কালো একটা পাথরে - কালো একটা পিপড়ার ন্যায় শির্ক তোমাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে? বলিনি সকালে মুমিন হলেও সন্ধ্যা হতে না হতেই তোমরা কুফরীতে নিমজ্জিত হবে? বলিনি তোমাদেরকে মোনাফেক এর বৈশিষ্ট্যে সমূহ? তুমি/তোমরা কি তারপর ও সাবধান হবে না?' শরীর ও মন কেঁপে উঠে - করনীয় কি? অন্ধ ও মূর্খের ন্যায় হাঁতড়ে মরি।

কখনো কখনো বুঝিবা জীর্ন, শীর্ন, ক্ষুধার্থ, ক্লান্ত, শ্রান্ত সাহাবী রাঃ দের তেজদীপ্তমান, আত্মবিশ্বাসী, পৌরুষতুল্য, প্রশান্তিময় চেহারাসমূহ উদ্ভাসিত হয়ে আমার/আমাদের এই আরাম ও আয়েশকে ব্যাংগ করে যায়। দ্রুতলয়ে যেন বলতে চায় - 'ওহে বুনাইয়া কিংবা ইয়া আখি - কেন অযথা আখেরাতকে বিক্রি করছো? কেন এই সব দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান লাত, মানাত ও ওজ্জা সহ ৩৬০ এর বেশী মূর্তিকে জীবনের বিভিন্ন পরতে পরতে জড়িয়ে নিয়েছ?'

আমি প্রায়ই এমনটা অনুভব করি - ব্যাক্তি ইবাদত নামাজ, রোজা, চ্যারিটি সাথে হজ্জ ওমরাহ - উম্মাহ করে আসছে, করছে এবং আগামীতেও করবে ইনশাল্লাহ্‌। এসব নিয়ে ম্যাক্রো পলিসি কিংবা মাথার চুল ছেড়ার দরকার ছিল না, মাথা ব্যাথ্যার বিষয় ও এসব না - কারন উম্মাহর এ সব এ কোন অনীহা নেই (আমি সাধারন সংখ্যাতত্ত্বের মুসলমানকে মিন করিনি, মিন করছি যারা নিজেকে নিজে স্বেচ্ছায় মুসলমান মনে করে)।

কিন্তু যেখানে উম্মাহ আজ ব্যার্থ, বিকলাংগ, পুংগু - তা হল উম্মাহ পার্থিব চোখে সব কিছু দেখতে চাইছে, স্যেকুলার চোখে আশপাশ বুঝতে চাইছে, নীতি নির্ধারন করতে চাইছে। এককথায় উম্মাহ তার অন্তরচক্ষু হারিয়েছে - তথা কোরান ও হাদীসের এ্যাপ্লেকেশান করার মেকানিজম ভুলে বসেছে কিংবা ব্যবহার করতে ব্যার্থ হচ্ছে।

বলা যায় উম্মাহ আজ ১৪০০ বছর আগের আবু জাহেল, আবু লাহাব, উমাইয়া ইবনে খালাফ এর ন্যায় (কোরান ও রাসুল সঃ কে পাশ কাটিয়ে) দুনিয়াবী চোখে সব কিছু দেখতে চাইছে। তারা যেমন ব্যবসা, পাওয়ার প্রতিপত্তি, গোত্র প্রীতি ইত্যাকার বিষয়কে কোরান ও রাসুলের উপর প্রাধান্য দিয়েছিল এবং সে সব সংরক্ষনের জন্য লাত ওজ্জা মানাত কে ধারন করতে চাইছিল। আজকে আমরা সেই দুনিয়াবী বিষয়াবলীর জন্য জাতীয়তাবাদ, দেশের নিরাপত্তা, সিকিউরিটি কাউন্সিল, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ, ডব্লিও টি ও, ইউ এন, ডেভলপমেন্ট এন্ড এ্যামপাওয়ারমেন্ট, পশ্চিমা গনতন্ত্র, মেজরিটির ভোট, সার্বভৌম সংসদ, নারী স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, হিউম্যান রাইটস্‌, লবিস্ট, মহামান্য, মানুষ্য আইন, পাসপোর্টভিসা ----- ইত্যাকার শত শত দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান, কনসেপ্টচ্যুয়াল দেবদেবীকে নিজের ও উম্মাহর মুক্তির নিমিত্তে জেনে, না জেনে, বুঝে, না বুঝে নিজেদের করে নিয়েছি এবং অজান্তে তা লালন করছি কিংবা পূজা করে চলেছি। স্বভাবতঃই শির্ক, কুফুরী, মোনাফেকী আজ সর্বত্র ছড়িয়েছে, ছড়াচ্ছে এবং আগামীতে তা মহামারীর ন্যায় আরো ছড়াবে - ঠিক যেমনটা ১৪০০ বছর আগে আইয়ামে জাহেলিয়ায় ছিল।

আসুন কোরান ও হাদীস দিয়ে - নব্য এসব দেবতাদের স্বরূপ উন্মোচন করি - যারা গন মুসলমানের জীবনে আজ চেপে বসেছে - ঠিক যেমন করে ইব্রাহীম আঃ দেবতাদের স্বরূপ উর-বাসীর সামনে উন্মোচন করেছেন। যেমন করে মুসা আঃ ফেরাউনকে ফেইস করেছেন।

A brief personal focus on Democracy

A relevant writing to diagnose Democracy

আল্লাহ আমাদের অন্তরচক্ষু খুলে দিন - সত্য জানার ও বোঝার জন্য অন্তরকে প্রসারিত করে দিন - অহংকার ও ইগোকে অবদমিত করে দিন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

375522
৩০ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৬:৫৮
মুহাম্মদ_২ লিখেছেন : এই লেখায় কোন মন্তব্য নাই কেন??
৩০ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০২:১৮
311364
সাদাচোখে লিখেছেন : Happy আল্লাহ ভাল জানেন।
378959
২৩ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৬:২৩
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : সব ব্লগার ভয় পেয়ে গেছে। তারপর দেশের
বাহির থেকে লেখা এবং কথা বলা যায়। ময়দানে কাজ করা খুব কঠিন। আপনার
চিন্তার কাছাকাছি চিন্তা নিয়ে ইসলামী সমাজ কাজ করছে ১৯৮২ থেকে,আত্ম প্রকাশ করে ১৯৯৭ তে। আমি নিজেও ভীত ছিলাম।পরে আমি দেশের বাহিরে চলে আসি।দীর্ঘ সময় যোগাযোগ ছিল না। গত মাসে পএিকায় জানতে পারি।আমীর সাহেবের সাথে
ফোনে যোগাযোগ করি। দেশের প্রতি জেলা শহরে সংগঠন রয়েছে।বর্তমানে আমি ওনাদের সুধী আপনারও সুধী।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File