আজকের বিশ্ব-বাস্তবতা বুঝতে ---- কোরান এর কয়েকটি আয়াত নিয়ে ভাবতে চাইলে - খুব কি অন্যায় হবে? পর্ব - ৩
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ২৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪৮:৫৪ সকাল
বিসমিল্লাহির রহমানুর রাহিম
আসসালামুআলাইকুম।
Go to Part - 2
আমরা যদি ইয়াহুদীদের তাওরাত (ওল্ড টেস্টামেন্ট) এ, আল্লাহর এই পারটিকুলার ওয়ার্নিং কিংবা ভবিষ্যতবানীর খোঁজ করি, তবে তা পাব ওল্ড টেস্টামেন্ট এর - ইংরেজি ডিউটারোনমি, বাংলা অনুবাদে 'দ্বিতীয় পুস্তক' অধ্যায়ের ২৮ ও ৩০ অনুচ্ছেদ এ। এ দুটো অনুচ্ছেদে তাওরাতের লিখক, আল্লাহ সোবহানাল্লাহু তায়ালার জবানে আমাদেরকে জানাচ্ছেন - জর্ডানের দিক হতে প্রতিশ্রুত 'পবিত্রভূমি'তে (আজকের জেরুজালেম, কোরানের বায়তুল মাক্দিস / মুকাদ্দাসা ও আশপাশের এলাকা) প্রবেশের ইমিডিয়েট আগে বনী ইসরাইলীদের জন্য আল্লাহ যে উপদেশ, সাবধান ও ভবিষ্যতবানীসমূহ পেশ করেছেন। এটাকে আমরা এভাবে নিতে পারি, বনী ইসরাইল ৪০ বছর মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াবার পর অবশেষে যে নবীর নেতৃত্বে তারা পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল সে সন্ধিক্ষনে সে নবী আঃ তাদেরকে এ সাবধান, উপদেশ বানী সমূহ শুনিয়েছিলেন।
ইংরেজিতে ২৮ অনুচ্ছেদ পড়তে ক্লিক করুন - Click Here
ইংরেজিতে ৩০ অনুচ্ছেদ পড়তে ক্লিক করুন - Click Here
কিন্তু আলোচনার সুবিধার্থে ও কলেবর কমাতে ব্যাক্তিগতভাবে আমি সবগুলো আয়াতের সারাংশ আজকের বিশ্ব বাস্তবতা বুঝতে যতটুকু প্রয়োজন - ততটুকু পেশ করার চেষ্টা করছি।
আল্লাহ তাদেরকে বলছেন, এই শহরে প্রবেশপূর্বক যদি বনী ইসরাইল আল্লাহর আনুগত্য করে তবে তারা নিশ্চিতভাবেই দুনিয়াবী ও আধ্যাত্মিক (ষ্প্রীচুয়াল) বিষয়াদিতে বিকশিত হবে, প্রস্ফুটিত হবে, পরিপূর্নতা পাবে, তৃপ্ত থাকবে। কিন্তু তারা যাবে অবাধ্যতা করে, তবে তারা চুড়ান্ত রকমের অভিশপ্ত হবে, তারা দুনিয়াবী বিষয়াদিতে ও আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতায় ভীষন ক্ষতির সন্মুখিন হবে। তারা অভিশপ্ত হবে, ঘৃনিত হবে, নিন্দিত হবে এবং সর্বোপরী ধ্বংশের মুখোমুখি হবে। তাদের উপর নির্যাতন ও নিষ্পেষন নেমে আসবে, নিশৃংস জাতির দ্বারা তারা আক্রান্ত হবে এবং দাসে পরিনত হবে। তারা পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠির উপর পতিত হবে, ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য হবে এবং হতভাগা কিংবা নিগ্রহের প্রতিচ্ছবি হয়ে বাঁচবে।
ইন্টারেস্টিংলী তাওরাতের এই আলোচনায়, কোরান-এ বর্নিত 'দু'বার যে ইয়াহুদীরা বিশৃংখলা কিংবা অবাধ্যতা করবে তা এক্সপ্লিসিটলী পাওয়া যায় না। কিন্তু পুরো বর্ননায় সম্ভাব্য অবাধ্যতার যে সব ক্ষেত্রের বিবরন পাই - তা দুটি ডিসটিন্কট ক্যাটাগরীর বিশৃংখলা কিংবা অবাধ্যতার সেন্স পাওয়া যায়। কোন গবেষক যদি কোরান, হাদীস এর প্যারামিটার সমূহ ব্যবহার করে - কিছু সময় চেষ্টা করেন - তবে আমার ধারনা তাওরাতের এই আয়াত সমূহে যে বিশৃংখলা কিংবা অবাধ্যতার কথা বলা হয়েছে - তা হতে সহজেই দুটি ভিন্ন ধরনের বিশৃংখলার আলামত নির্নয় করতে পারবেন। এবং সেক্ষেত্রে আমরা কোরানে বর্নিত দুটো ভিন্ন বিশৃংখলার ভবিষ্যতবানীর প্রমান পাব। ইনশাল্লাহ্।
এবার আমরা বুঝতে চেষ্টা করি গত পর্বে উল্লেখ করা কোরানের আয়াতে বর্নিত ঐ পারটিকুলার শহর কিংবা দেশ কিংবা ভূমিটি কোথায় কিংবা কোন টি? যে ভূখন্ডকে কেন্দ্র করে ইয়াহুদীরা বিশৃংখলা করবে বলে আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন - যা তিনি তৌরাতে জানিয়ে রেখেছিলেন? আর সে শহরের ক্লু হিসাবে তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে - প্রথমবার তাদের অবাধ্যতার জন্য যে শাস্তি দিয়েছেন তথা শহরকে (বাড়ী ও মসজিদ) ধ্বংশ করে তাদেরকে বহিষ্কার করেছিলেন এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর তাদেরকে সে শহরে ফিরিয়ে এনেছেন এবং সন্তান সন্তুতি ও সম্পদ দিয়েছেন। এর পর দ্বিতীয়বার তিনি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার জন্য আবার ও সেই শহরকে ধ্বংশ করেছিলেন এবং উচ্ছেদ করেছেন। কিন্তু কোরানের আয়াত অনুযায়ী সেই শহরে তারা দ্বিতীয়বার উচ্ছেদ এর পর ফিরে এসেছে এমন বলে নি। সুতরাং এই ফ্যাক্টস সমূহ আমাদেরকে ম্যাচ করতে হবে ঐ শহর নির্নয় করতে চাইলে।
চলুন এবার আমরা কোরানের সুরা মায়েদার ২১ হতে ২৬ নং আয়াতে। যেখানে আমরা ঐ শহর বা ভূমি সম্পর্কে ডিটেইলস্ পাই। যেখানে আল্লাহ আমাদের জানাচ্ছেন মুসা আঃ বনী ইসরাইলীদের বলছেন একটা কথোপকথন,
২১। ওহ আমার স্বজনেরা, পবিত্রভূমিতে প্রবেশ কর যা আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন, এবং পেছন দিকে ফের না, তাতে তোমরা ক্ষতিগ্রস্থই হবে।
২২। তারা বলেছিল, 'ওহ মুসা আঃ সেখানে তো সৈরাচারী এক জাতির বসবাস, আর আমরা কক্ষনো সেখানে প্রবেশ করবো না যতক্ষন না তারা উচ্ছেদ হয়। যখন তারা সেখান হতে চলে যাবে, আমরা সেখানে যেতে তখন রাজি আছি।
২৩। তাদের মধ্যস্থিত তাকওয়া সম্পন্ন দুই ব্যাক্তি, যারা আল্লাহর দয়ায় আব্বৃত ছিল, বলেছিল, 'শহরের গেইট দিয়ে প্রবেশ কর। ভিতরে প্রবেশ করলেই - তোমরা বিজয়ী হবে। বিশ্বাসী হলে, আল্লাহর উপরেই তোমাদের ভরসা করা উচিত।
২৪। তারা বলেছিল, 'ওহ মুসা আঃ, আমরা কক্ষনো, কোন অবস্থায়ই সেখানে প্রবেশ করবো না, যতক্ষন অবধি তারা সেথায় থাকবে। সুতরাং তুমি আর তোমার আল্লাহ এবং যুদ্ধ কর। আমরা ঠিক এখানেই বসে পড়লাম।
২৫। সে (মুসা) বলেছিল, ওহ আমার আল্লাহ, আমার ও আমার ভাই ভিন্ন অন্য কারো উপর (আমার) নিয়ন্ত্রন নেই। সুতরাং আমাদের ও গুনাহগার এই বান্দাহদের মধ্যে পার্থক্য নিশ্চিত করুন।
২৬। তিনি (আল্লাহ) বলেছিলেন, এই (ভূমি) টি তাদের জন্য চল্লিশ বছরের জন্য হারাম সাব্যস্থ হল। তারা ভূপৃষ্ঠে বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াবে। সুতরাং গুনাহগার বান্দাহর জন্য কষ্ট পেয়োনা।
উল্লেখিত এই ভূখন্ডটি যে বায়তুল মাকদিস্ তথা জেরুজালেম কেন্দ্রিক আশ-পাশস্থ পবিত্র ভূমি যা আল্লাহ সোবহানাল্লাহু তায়ালা ইব্রাহীম আঃ এর উত্তরসূরীকে আবাদ করতে তথা আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে উপহার দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন - তা আমরা অন্যান্য ইসলামিক সোর্স হতে ও যেমন জানতে পারি, তেমনি ইয়াহুদী সোর্স হতেও জানতে পারি।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১৫১৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঠিক। আল্লাহ কোরানে সরাসরি তা যেমন উল্লেখ করেছেন, তাওরাতেও তার উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে আর আগামী পর্বে স্যেকুলার সোর্স এর তথ্য ও উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো - যদিও - তা পাবলিকলী সবার জন্য আছে।
ধন্যবাদ।
সেই সত্যের নেক্সট যেটি দেখার জন্য আমি অপেক্ষা করছি (সিনাই এ প্লেইন উড়িয়ে দেয়া, ইউক্রেইনের সোলজারকে সরাসরি ট্রেনিং দেওয়া, আর আজকের রাশিয়ান বিমানকে আকাশ হতে ফেলে দেয়া) তা হল ---
আল্লাহ অতি দ্রুতলয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীকে 'দম্ভ ও শক্তিমত্তা' প্রদর্শনী সহযোগে - সিরিয়া ও ইউক্রেনের দিকে ধাবিত করছে, ঠিক যে ভাবে হিজরী ২ সনে আল্লাহ কোরায়শ-দের 'দম্ভ ও শক্তিমত্তা' প্রদর্শনী সহযোগে বদর এর প্রান্তে ধাবিত করেছিল। আর আল্লাহ রাশিয়াকে ঠিক সমরূপে সহজ একটা টার্গেট - আইসিস এর দিকে ধাবিত করিয়েছিল ঠিক যেমন করে মোহাম্মদ সঃ কে ধাবিত করেছিল সহজ টার্গেট সুফিয়ানের কাফেলার দিকে। কিন্তু সুফিয়ান যেমন গায়েব হয়েছে - আইএস ও তেমন গায়েব হয়ে যাবে আর সিরিয়ায় শুরু হওয়া রাশিয়া বনাম ন্যাটো - ইউক্রেইন হয়ে কিংবা না হয়ে ডাইরেক্ট এ্যাকশানে গেলে - কয়েক মাসের মধ্যে আপনার ও আমার জন্য এইরকম কিছু একটা উপহার দিবে, যার একটা রূপ কোরানের সূরা আর রহমানের এ আয়াতসমূহের মত কিছু একটা হতে পারে (আল্লাহ ভাল জানেন) -
There will be sent against you both, smokeless flames of fire and (molten) brass, and you will not be able to defend yourselves. (নিউক্লিয়ার বোম?) (35) Then which of the Blessings of your Lord will you both (jinn and men) deny? (36) Then when the heaven is rent asunder, and it becomes rosy or red like red-oil, or red hide(37) (বার্স্ট এর পরের কিছুর মত)
এরপর তোমরা তাহার কোন রংবাজীকে অস্বীকার কেবে????
ইনশাল্লাহ্। কিন্তু রাশিয়া আর ন্যাটো এ্যালায়েন্স একে অপরের সাথে সাপ ও বেজীর ন্যায় খেলা শুরু করেছে - তার কনসিকোয়েন্স রিয়ালাইজ করতে গেলে - এ লিখাকে বড় বেশী মান্দাতার আমলের মনে হয়। সো আজকে আর লিখতেই পারলাম না।
ধন্যবাদ। ইনশাল্লাহ আবার ফিরে আসার চেষ্টা করবো সিরিজ টাতে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন