শেখ হাসিনার মাতৃত্বের মৃত্যুঃ ইতিহাস যার হদীস কোনদিন করবে না, করতে চাইবে না।
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০৬:৪৩:০২ সকাল
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।
আসসালামুআলাইকুম।
১৯৯২ সালের ৪ঠা জানুয়ারী। ছাত্রলীগের রাজনীতির উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার ঘোষনা দিতে শেখ হাসিনা টিএসসি তে এলেন। আমি কিছুটা কৌতুহল আর কিছুটা বাধ্য হয়ে মিছিলের সাথে টিএসসিতে এলে ওনাকে সামনাসামনি প্রথম দেখি।
রাত ৯টার দিকে টিউশানী শেষে ফেরার পথে অসংখ্য বাস এর গ্লাস মাড়িয়ে পলাশী হয়ে, গেইটের অপরিচিত কালো জ্যাকেট ও অস্ত্রধারী গুন্ডালাইক কয়েকজন লম্বা ও স্থাস্থ্যবান মানুষকে ডিংগিয়ে ফিরি 'হলে'। (কেন যেন অনুভব হয়েছিল - ঐ মানুষগুলো ছিল ভীনদেশী) ইতোমধ্যে আমার 'হল' তথাকথিত ছাত্রলীগের ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড ও সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড দখল করে নিয়েছে। পুরো হলের প্যাসেজ এর বাতির সংখ্যা কমিয়ে প্রায় অন্ধকার করা। বিদঘুটে সেই আলো আধারিতে রূমে ডুকে ভয়ের একটা স্রোতকে অনুভব করি মেরুদন্ড বেঁয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে।
টিভি রূম বন্ধ, স্পোর্টস রূম বন্ধ। পরিচিত জনদের দুই একটা রুমে গিয়ে তা পেলাম বন্ধ। নিজের রুমে কেউ নেই, জামা কাপড় ছাড়ার গরজ অনুভব করছিলাম না। নিজের সংগ নিজে অনুভব করতে ডায়েরীর পাতা খুললাম। লিখলাম অনেক টা এমন কিছু একটা
'আজ প্রথম শেখ হাসিনাকে সামনা সামনি দেখলাম। দেখে মনে হল উনি বড় বেশী সিম্পল, সাধাসিধা। ভাবনা এসেছিল - ওনাকে রাজনীতিতে মানায় না। বড় বেশী রকমের 'মা' 'মা' লাগছে'। এমনি একটা সময়ে হলের এক ক্যাডার 'নামটা ঠিক মনে করতে পারছি না' এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল। ঘন্টাখানেকের ইন্টারোগেশান শেষে - হল হতে বের করে দিল। রুমে যেতে দিল না। কপর্দকশূন্য, এক কাপড়ে বহিষ্কার। নো ব্যাগ, মানি ব্যাগ নাথিং।
সারা রাত মিরপুর রোড ধরে হাঁটলাম। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না - কি করবো, কোথায় যাব?
আজ জীবনের এই মধ্যবয়সে, অনেক গুলো দেশ ঘুরে, অনেক রকমের কাজ ও দায়িত্বের ভিতর দিয়ে যেয়ে - নিজের ও পরের দেশের নিউজ, ভিউজ, ট্রেন্ড ও পরিনতির সাথে পরিচিত হয়ে - সে অভিজ্ঞতা ও আন্ডারস্ট্যান্ডিং দিয়ে শেখ হাসিনার জীবন, কাজ ও সে কাজের রেজাল্ট এবং তার বলয়ের উঠানামা দেখে মনে হচ্ছে -
আসলেই শেখ হাসিনার ঘর ছেড়ে রাজনীতির মাঠে আসা ভুল ছিল।
মনে হচ্ছে স্রষ্টা বুঝিবা ওনাকে বানিয়েছিল বড় জোর কয়েকটা বাচ্চার মা হতে, সংসারের জন্য সকাল বিকাল রাত সময় দিতে। স্বামী সংসার নিয়ে যতটুকু পারা যায় আনন্দে থাকতে। আল্লাহর শোকর গুজার করতে এবং পরিনতিতে পরকালের শান্তি স্বস্তি নিশ্চিত করতে।
কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতি ও প্ররোচনা ওনাকে আল্লাহ-দ্রোহী একটি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। সেই সিদ্ধান্ত আজ বিষ বৃক্ষের ন্যায় ওনাকে জড়িয়ে ধরেছে। ঠিক যেমনটা নেশাগ্রস্থ ঐশী নামী ঐ বাচ্চা মেয়েটিকে একটি সিদ্ধান্ত ঘৃনা ও ফাঁসির দরজায় পৌছিয়ে দিয়েছে। ঐশী ফাঁসির আসামী হয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের ভিতরে ও বাহিরে রাজীব, শাহরিয়ার কবির এর মত করুনার পাত্র হয়ে পড়েছেন, পরগাছায় পরিনত হয়েছেন।
আজ এই বেলায়, এই দেখায় মনে হয় - ইন্দো-ইংগ-আমেরিকা - ওনার মত আর কাউকে এমন এ্যাবসুলুট স্লেইভারীতে কোন কালে খাটায় নি, ভোগায় নি। এমন করে কাউকে দিনের পর দিন প্রতারনা ও ব্ল্যাকমেইল করে করে ধীরে ধীরে ডাইনী, পিচাশ, ধিকৃত, ঘৃনিত এক স্থায়ী ন্যাশানাল সিম্বল বানানোর প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেনি।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জিহবা, নখ, দাঁত বেয়ে বেয়ে মানুষের রক্ত - ওসব রক্তের টুপ টুপ শব্দের মধ্যে যুবকদের আত্মার নানা শব্দ বাতাসে ধাক্কা খেয়ে ধ্বনিত, প্রতিধ্বনিত হয়ে আসছে।
কিন্তু শতভাগ প্রতারনায় প্রতারিত হওয়া আজকের ব্যাক্তি শেখ হাসিনার অবস্থা ক্রমেই, কা'ব বিন মালিক রাঃ এর জীবনের ঐ পঞ্চাশ দিনের কোন একটি সময়ের লেভেল এ এসে পৌছেছে বলেই প্রতীয়মান হয়। যে অবস্থাটির বর্ননা আল্লাহ কোরানে বলেছেন অনেকটা এভাবে, '--------- যে পয্যন্ত না পরিপূর্ন বিস্তৃত (খোলামেলা) পৃথিবী তাদের জন্য সন্কুচিত হয়েছিল --------'।
বাংলাদেশের কনটেক্সটে, আজকের শেখ হাসিনার কাছে তথাকথিত নিরংকুশ শক্তিমত্তা ও স্বাধীনতা থাকা স্বত্তেও সমস্ত পৃথিবীটা ওনার জন্য সন্কুচিত হয়ে পড়েছে। কাব বিন মালিক রাঃ এ অবস্থা হতে বের হয়ে আল্লাহর দিদার পাবার প্রত্যাশায় গাচ্ছানিয়ার রাজার অপার লেটার পুঁড়িয়ে ফেলেছিল - কিন্তু শেখ হাসিনা সেই গাচ্চানিয়ার রাজা (ইন্দো-ইংগ-মার্কিন)র প্রতারনাপূর্ন নির্দেশে মানুষকে লটকে চলেছে - আর নিজেকে, নিজের স্বত্তাকে বাংলার জামারা - তে পরিনত করছে।
আল্লাহ ভাল জানেন।
সন্ত্রাসের কারণ মানুষ জানে। অন্তত এমেরিকার মানুষ বুশ, ম্যাককেইনের আই এস এর জন্য দায়ী করতেছে।
http://abcnews.go.com/International/french-president-francois-hollande-welcomes-refugees-paris-attack/story?id=35274658
পার্থক্য হচ্ছে এই যে আপনি যেটা আজ জানতে পারছেন - মুমিন, মুসলিমরা ১৪০০ বছর ধরেই তা জানে। এ হত্যা ও রক্তপাত এর ব্যাপারে মহানবী সঃ তার উম্মতদের কে দায়িত্বের সাথেই বলে গিয়েছেন - স্বভাবতঃই মুমিন মুসলমানরা এ নিয়ে চিন্তিত না - কারন এই মুমিন মুসলমানরা কোন প্রশ্ন তোলা ছাড়াই - আল্লাহর হুকুম কিংবা ইচ্ছা - এ তথ্যটি জানা মাত্রই তাদের পিতা ইব্রাহিম আঃ এর ছুরির নিচে নিজের গর্দান পেতে দিয়েছে।
মুমিন মুসলিমরা নাটকের পরের পার্ট এর জন্য অপেক্ষা করছে, কারন এটা তাদের কাছে সুস্পষ্ট যে পরের পার্ট চিত্রায়নের সময় নিকটে চলে এসেছে। আপনি ও আমাদের সাথে অপেক্ষা করতে পারেন - ঐ অন্ক দেখার জন্য।
মুসলিম শরীফ - Book 041, Number 6985:
Abu Huraira reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying: The last hour would not come unless the Muslims will fight against the Jews and the Muslims would kill them until the Jews would hide themselves behind a stone or a tree and a stone or a tree would say: Muslim, or the servant of Allah, there is a Jew behind me; come and kill him; but the tree Gharqad would not say, for it is the tree of the Jews.
ধন্যবাদ।
কিন্তু সাধারণ গৃহবধুর ভূমিকা পালন করা শেখ হাসিনা উপেক্ষা করতে পারলেন জনগনের প্রয়োজন । এগিয়ে এলেন নিজ হাতে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজে যেটা শুরু করেছিলেন তার বাবা ।
কারণ তিনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা
যে বয়সে, যে প্ল্যান এর আওতায় ঘাতকেরা কাজ করেছে ও পালিয়ে গেছে দেশ ছেড়ে - তা পুরো বাংলাদেশকে কাবু করার যুক্তির সাথে যায় না। ওটা আওয়ামীলীগের স্বস্তা পলিটিক্যাল যুক্তি।
কিন্তু আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং অনুযায়ী - যারা ওনার বাবাকে হত্যা করিয়েছেন - তারাই তাকে শতভাগ প্রতারনার ফাঁদ পেতে জনগনের সামনে দাঁড় করিয়েছেন। স্বভাবতঃই তিনি তাদের ফরমায়েশ পালন করতে করতে আজ প্রায় রিক্ত নিঃস্ব, দম বন্ধকরা এক অবস্থায় পৌছেছেন।
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ওনার প্রভুরা - ওনার বান্ধবীকে লন্ডনে রেখে - লেফটেনেন্ট জেনারেল আর মেজর জেনারেল চাল চেলেছেন - স্বভাবতঃই ওনার পৃথিবী প্রায় সন্কুচিত হয়ে পড়েছে। মোয়াম্মার গাদ্দাফীকে সেটা বুঝতে পাইপে প্রবেশ করতে হয়েছে - আল্লাহ জানেন শেখ হাসিনার তা বুঝতে কোথায় প্রবেশ করতে হয়?
ওনার শেষ সিম্বল কি হয়, মানুষ ওনাকে কিভাবে মনে রাখবে তাই ভাবছি।
কিন্তু ওনাকে যেভাবে পুতুল লাইক পরিচালনা করা হচ্ছে, যে ভাবে ওনাকে ব্রান্ডিং করানো হচ্ছে - তাই আমার মাথায় ঘুরছে।
অথচ আল্লাহ ওনার প্রতি বড় বেশী দয়া করেছেন - যা উনি ইন্দো-ইংগ-মার্কিনীদের ইচ্চা ও অনিচ্চার সাথে ট্রেডিং করলেন।
তাকে এত ইনোসেন্ট কেন ভাবছেন এত কিছুর পরেও? আপনি আমি যতটা চিন্তা করতে পারি তারও চাইতে অনেক বেশী প্রতিশোধ পরায়ণ হিসাবে প্রতিয়মান হচ্ছে না কি?
যেহেতু তিনি কোন কারন ছাড়াই অমন প্রতিশোধের নেশায় ভুগছেন, ক্রুদ্ধতায় আক্রান্ত - সেহেতু ওনার প্রতি সহমর্মিতা পোষন করছি এবং চাইছি যদি ওনার সামহাউ সম্বিৎ ফেরে। কে জানে ভদ্রলোক হয়তো রিয়াল তওবা করে শান্তি স্বস্তির পথে চলতেও তো পারে। আল্লাহ ইতোমধ্যে তা করে দেখিয়েছেন এবং আবারো দেখাবেন ইনশাল্লাহ্।
কেন বলছেন কারণ ছাড়া? তার পিতা-মাতা ভাই-ভাবী সবাইকে খুন করার পরে গোটা জাতী আনন্দে মেতে উঠলো, কেউ একটু উহ্ বলল না, এটা কি কোন কারণ নয়? এটাইতো বড় কারণ। তার পিতা-ভাই যাই করুক না কেন সেটা জাতির সমস্যা। কিন্তু তার সমস্যা হলো, তার আপনজনদের মৃত্যু গোটা জাতিকে সন্তুষ্ট করেছে। এটাই মূল কারণ - গোটা জাতির উপর প্রতিশোধের।
মন্তব্য করতে লগইন করুন