ধর্মীয় (ইসলামী) আলোচনায় সমস্যাটি কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১০ জুন, ২০১৫, ০৮:৩৫:৪১ রাত
বিসমিল্লাহির রহমানুর রাহিম।
আসসালামুআলাইকুম।
এ লিখাটি কারো অনুভূতিতে আঘাত দেবার জন্য নয়। কারো প্রতি বিদ্বেষ কিংবা অসন্মান প্রসূত নয় - সিম্পলী চিন্তা ও ভাবনার জানালা - খোলার প্রচেষ্টা মাত্র।
গত ৩/৪ বছর ধরে 'ইসলাম' তথা কোরআন ও হাদীস এর প্রতি ধীরে ধীরে আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে - প্রায় সমরূপে ইসলামিক বিষয়াদি জানায়, বোঝায় ও চিন্তা ভাবনা করায় - আনন্দ ও পেতে শুরু করেছি। আলহামদুলিল্লাহ্। এ সময়টিতে আল্লাহ সোবহানাল্লাহু তায়লার দয়ায় - ইসলাম কেন্দ্রিক একটি ছোট্ট সামাজিক পরিসরে জীবনকে আবর্তন করার ও সুযোগ পেয়েছি। উপভোগ করেছি আলিয়া ও কাওমী মাদ্রাসা গ্রাজুয়েট আলিমদের সাহচার্য, হাফিজদের সাহচার্য, সেক্যুলার ইডুকেশান এ গ্রাজুয়েট কিন্তু ইসলামিক আন্দোলনে জড়িত ভাইদের সাহচার্য এবং ইসলামের প্রতি দরদ প্রসুত ইসলামিক এ্যানভায়রনমেন্ট এ আগ্রহী সেক্যুলার ব্যাকগ্রাউন্ডে পড়ালিখা করা অর্ডিনারী ভাইদের সাহচার্য।
এ সময়ে আমরা কোরান ও হাদীসের উপর, ইসলামিক বিভিন্ন টপিক্স এর উপর ক্লাস এ যোগ দিয়েছি, স্কলারের মতামত ও বক্তৃতা শুনেছি, নিজেরা আলাপ আলোচনা করেছি, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ করেছি, তাবলিগ জামাত এর সাথে চিল্লা ও গাস্ত এ গিয়েছি, কেউ কেউ হিউম্যান চেইন ও মিছিল এ শামিল হয়েছি, ইবাদত বন্দেগী করেছি, বাড়িয়েছি এবং বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কেও জড়িয়েছি।
সামাজিক পরিসরে ভাইদের মধ্যে ইসলামিক আলোচনায় যে ছন্দপতনের সৃষ্টি হয়, বিতর্ক অনৈসলামিক হয়, ভয়েস নিয়ন্ত্রনহীন হয় - তার কারন অনুসন্ধানে বিভিন্ন সময়েই মন যেন একুল ওকুল দুকুলেই দুলতে থাকতো।
গত পরশুদিন ঘুম হতে উঠলে পর মনে হলঃ বুঝিবা আমার মধ্যে একটা সেন্স তৈরী হচ্ছে কেন ইসলামিক আলোচনায় এই ছন্দপতন সৃষ্টি হয়? আমি অবাক হয়ে আবিষ্কার করলামঃ
প্রতিটি ইসলামিক আলোচনায় মতানৈক্যে সৃষ্টির জন্য মূলতঃ ৩টি প্রধান গ্রুপ কিংবা পক্ষের মধ্যস্থিত চিন্তায় মনস্তাত্বিক পার্থক্য ও আপব্রিংগিং এর জন্য দায়ী। এর মধ্যে যে কোন দুটির ডোমিনেন্ট উপস্থিতি সে মতানৈক্য ব্যাপক ও বিস্তৃত করার জন্য যথেষ্ট।
আসুন আমরা চেষ্টা করি এই তিনটি পক্ষকে চিহ্নিত করতে, বুঝার চেষ্টা করি কি কারনে এই পার্থক্য, কি ভাবে সেই পার্থক্য ভ্রাতৃত্ববোধ এ বাঁধা সৃষ্টি করে এবং সর্বোপরি কিভাবে আমরা সেই বোধ হতে বের হয়ে আসতে পারি?
পক্ষত্রয়ের মধ্যে প্রথমেই আছেন 'ইসলামিক ইডুকেশানে এ্যডুকেটেড' আমাদের প্রিয় আলিম ভাইরাঃ এ ভাইদের বেশীর ভাগই পরীক্ষা পাশের নিমিত্তে তথা এ্যাকাডেমিক প্রয়োজনে প্রথম বয়সে ইসলাম অধ্যয়ন করেছেন এবং পরবর্তীতে কোন একটি সময়ে এসে ইসলামকে ভালবেসেছেন কিংবা বলতে পারি ইসলামে নিজেকে সমর্পন করেছেন তথা ভলান্টারী ইসলামকে নিজের জীবনে গ্রহন করে নিয়েছেন। এ ভাইরা ইসলামকে নিজের জীবনে আবিষ্কার করার জন্য, পাওয়ার জন্য - ইসলামের ইতিহাসে কন্ট্রিবিউটরী ইতোপূর্বেকার নন-কন্ট্রোভার্সিয়াল মহা-মনীষীদের অসম্ভব উপরে স্থান দেন। এ ভাইরা দুনিয়াকে বিচার বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে ঐ সকল মহামনীষীদের চিন্তা ও ভাবনাকে প্রাধান্য দেন কিংবা তাদের শিক্ষা দ্বারা তাড়িত হয়ে মতামত ব্যাক্ত করেন, কিংবা অনুপ্রানিত থাকেন, অনুপ্রানীত হন।
পক্ষত্রয়ের মধ্যে এর পরেই আছেন 'সংগঠনের ছোয়ায়' ইসলামের ছায়াতলে আসা আমাদের প্রিয় সংগঠিত ইসলামিক ভাইরাঃ এই ভাইদের বেশীর ভাগই কোন এক/দুই কিংবা তিনটি সিলেক্টিভ ইসলামিক বই কিংবা এক/দুই জন ভাইয়ের বক্তব্য দ্বারা তাড়িত হয়ে ইসলামকে ভালবেসেছেন, ইসলামে দাখিল হয়েছেন, নিজেকে সমর্পন করেছেন - যেখানে মুসলিমদের শৌর্য, বির্য, সন্মান, ত্যাগ, নির্যাতন ও নিগ্রহের পাশাপাশি আলটিমেটলী সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী - এ মন্ত্র দ্বারা তাড়িত। এ ভাইরা পরবর্তীতে যতবেশী ইসলামের জ্ঞান আহরন করছেন, বিচার বিশ্লেষন করেছেন - তার চেয়ে বেশী সংগঠনের প্রয়োজনে দুনিয়াবী বিষয়াবলীতে অধিকতর জ্ঞান আহরন করেছেন এবং সংগঠনের প্রয়োজনে বিচার বিশ্লেষনে দুনিয়াবী বিষয়াবলীকে ইসলামাইজেশান তথা ইসলামের আলোকে বিচার বিশ্লেষন করার চেষ্টায় অধিকতর সময় দিয়েছেন। এ সব ভাইরা চৌকস পারসোনালিটি সম্পন্ন, জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ, সাফল্যের মুকুট পরা ইসলামিক ব্যাক্তিত্বদের দ্বারা তাড়িত হন, ইনস্পায়ারড হন কিংবা নিজেকে ইনস্পায়ার করেন।
পক্ষত্রয়ের মধ্যে সব শেষে আছেন - কোন এক মাইন্ড স্ট্রাইকিং ঘটনার কারনে কিংবা কৌতুহলের বশ্ঃবর্তী হয়ে হঠাৎ করেই কোরআন পড়তে গিয়ে কিংবা জানতে গিয়ে কিংবা কোন স্কলারের কোরান নিয়ে কোন আলোচনার কারনে সচেতনভাবে নিজের গন্তব্যশূন্য জীবনকে গ্রাজুয়ালী ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে ইসলামকে ভালবেসে ফেলা ভাইরা কিংবা ইসলামের পদতলে আত্মসমর্পন করা ভাইরা। এ ভাইদের সামনে মহামূল্যবান ইসলামকে পাবার জন্য কিংবা আবিষ্কারের জন্য - ক্রেডিট দেবার জন্য আমোদিত হবার জন্য কিংবা প্রেইজ করার জন্য কোন লিডার কিংবা নেতা যেমন থাকেন না, তেমনি কোন আর্লি স্কলার কিংবা মনীষী ও থাকেন না। স্বভাবতঃই এরা কোরআনকে পয়েন্টিং করতে থাকেন - গাইড পাবার জন্য, গাইডেড থাকার জন্য কিংবা নিজেকে ইনস্পায়ারড রাখার জন্য।
স্বভাবতঃই এই তিন শ্রেনীর ভাইরা প্রত্যেকেই ইসলামকে ট্রুলী ভালবাসেন। সকলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চান এবং জান্নাতে যেতে চান। কিন্তু প্রতিটি গ্রুপের ব্যাকগ্রাউন্ড, ইনস্পায়রেশান উৎস্য, বিচার ও বিশ্লেষনের প্রসেস ইত্যাদি যে কোন আলোচ্য বিষয়ে মতদ্বৈততা সৃষ্টি করে।
মজার ব্যাপার হল - ইসলামের সোর্স তথা কোরআন ও হাদীস হতে - উপরোক্ত প্রতিটি শ্রেণীর ভাইরা রেফারেন্স হিসাবে আয়াত যেমন টেনে আনতে পারেন তেমনি হাদীস ও। এবং রেফারেন্স হিসাবে আনা আয়াত ও হাদীসকে আমাদের এ ভাইরা এমন ভাবে ব্যবহার করেন - যে এটা পরিষ্কার হয়, ওনারা ওনাদের ইন্সাপায়ারিং সোর্স এর কথা, কাজ, বিচার ও বিশ্লেষনকে জেনে শুনে কিংবা মনের অজান্তে ডিফেন্ড করতে থাকেন। নিরপেক্ষ মন নিয়ে চিন্তা করলে দেখা যায় - ওনারা ইসলাম কিংবা সত্যকে ডিফেন্ড করা অপেক্ষা নিজের মতকে, নিজের সংগঠনকে, নিজের ধারনাকে কিংবা নিজের কোন ব্যাক্তিত্ব কিংবা গ্রুপ অব পিপলকে ডিফেন্ড করতে থাকেন।
কিছু উদাহরন সামনে আনা যাক। যেমন অধুনা সময়ের আলোচ্য বিষয় গনতন্ত্র, ভোট, ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক প্রডাক্ট, মুদ্রার ব্যবহার, রাইটস বেইজড সংগঠনের এ্যাক্টিভিটিস ইত্যাদি। এ আলোচনায় সংগঠনভিত্তিক ভাইরা এক পক্ষের ভূমিকা নেবেন - অপরাপর দু গ্রুপের ভাইরা বিরুদ্ধ ভূমিকা নেবেন।
আখেরী জামানা, দজ্জাল, ইয়াজুজ ও মাজুজ, সৌদী, ইজরাইল, আমেরিকার ভূমিকা ইত্যাদি - বিষয়ে তৃতীয় গ্রুপের ভাইরা এক পক্ষের ভূমিকা নিবেন - অপরাপর দুই ভাইরা বিরুদ্ধ ভূমিকা নেবেন।
আর্লি ইসলাম হতে উম্মাহ পরম্পরায় - উম্মাহর অভ্যন্তরে আকিদা, মাজহাব, কোরান ও হাদীসের ব্যাখ্যা, বিশ্লেষন পার্থক্য, শিয়া সুন্নী ইত্যাদি বিষয়ে প্রথম গ্রুপের ভাইরা এক পক্ষের ভূমিকা নিবেন এবং অপরাপর দুই ভাইরা বিরুদ্ধ ভূমিকা নেবেন।
আমার কাছে মনে হয় উদ্ভুত এ বিতর্কের অবসান এর জন্য যা দরকার তা হল, আমাদের মধ্যে কোরানের মধ্যস্থিত ঐ আয়াত সমূহ এবং রাসুলুল্লাহ সঃ এর ঐ হাদীসসমূহ সামনে আনা - যেখানে বলা হয়েছে মতদ্বৈততার ক্ষেত্রে - শুধু মাত্র কোরআন ও হাদীসকে আপহোল্ড করা। আর সেই আপহোল্ড করার সময় কোরআন ও হাদীস এর ম্যাসেজকে নিজের আক্কেল দিয়ে বিচার বিবেচনা করা - সংগঠন, ব্যাক্তি, আলেম ওলামা কিংবা অন্য যে কোন আবেগ তাড়িত দুনিয়াবী স্বত্তা (সাইন্টিস্ট, গবেষক, মুফতি) র উপরে স্থান দেওয়া।
আমাদের বোঝা উচিত আল্লাহ আমাদেরকে সর্বোত্তম অবয়বে (পরিপূর্ন হিসাবে) সৃষ্টি করেছেন। সত্য চেনার, বোঝার ও হৃদয়ংগম করার জন্য কোরান ও হাদীসের মেসেজ এর সাথে নিরহংকার চিত্তে নিজের আক্কেল/বিবেক মেলাতে পারলে আপনা আপনি সত্য নিজের সামনে উদ্ভাসিত হতে বাধ্য। ঠিক যেমন করে বেলাল রাঃ এর মত ক্রীতদাস এর সামনে সত্য উন্মোচিত হয়েছিল কিন্তু সার্টিফাইড জ্ঞান থাকা স্বত্তেও আবুল হাকাম / আবু জাহেল এর সামনে সত্য উন্মোচিত হয়নি। ঠিক যেমন করে মদীনার রাবাইদের সামনে জ্ঞান থাকার পর ও মোহাম্মদ সঃ আদৃত হয়নি কিন্তু জ্ঞানহীন ইয়াতরিব এর মুশরিক দের কাছে মোহাম্মদ সঃ আদৃত হয়েছিলেন। সো আল্লাহর জন্য, ইসলামের জন্য - কোন বুজুর্গ, কোন মুফতি, কোন স্পীকার, কোন সংগঠনের উর্দ্ধে উঠা, সংগঠনের নেতার মতামত এর উর্দ্ধে উঠা, সংগঠনের এ্যাকশানের উপরে উঠা - প্রয়োজন।
আমার ধারনা এতে করে মতদ্বৈততা ছাড়া ফেয়ার শিক্ষামূলক আলাপ আলোচনা হতে পারে এবং তাতে আমাদের সবার জন্য সত্যকে আকড়ে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, ভালবাসা জন্মাতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৫ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সমস্যাটা বিতর্কে নয় বরং বিতর্কের নামে নিজের মত কেই জোর করে ডিফেন্ড করায়। যেটা বেশি প্রয়োজন সেটা হলো অন্যের কথা শুনার মানসিকতা।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
আমার মনে হয় - স্যেকুলার শিক্ষা আমাদের শেখায় অন্যের কথা শুনতে। সেসাথে আরো শেখায় নিজে যা বিশ্বাস করি, তা বলতে এবং তা ডিফেন্ড করতে।
কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায় শুধু মাত্র সত্যকে ডিফেন্ড করতে আর মিথ্যাকে ত্যাগ করতে। আর সে সাথে জানায় কোরান শুধু আলটিমেইট ট্রুথ এবং বাদবাকি সবকিছুর সত্যতাকে কোরান দিয়ে টেস্ট করে নিতে।
কারণ কোরআন ও হাদীস তো আমরা সরাসরি আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) থেকে পাই নাই। যাদের মাধ্যমে পেয়েছি, ব্যাখ্যা ও তাদের মাধ্যমে পেয়েছি।
তাই অধিকাংশ মানুষ কোরআন হাদীসকে যেভাবে মূল্যায়ন করে, ব্যাখ্যা বা তার পেক্ষপটকেই একই ভাবে মূল্যায়ন করে। সুতরাং আপনার এ ধরনের প্রস্তাব তাদের কাছে কতটুকু গ্রহন যোগ্য হবে বলা মুশকিল।
কিছু উদারমনা লোকদের কাছে আপনার প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য হতে পারে কিন্তু এই কিছু লোক অধিকাংশ লোকের জোয়ারে ভেসে যাবে মনে হচ্ছে।
গবেষণামূলক পোষ্টটির জন্য জাযাকাল্লাহ খাইর
ধন্যবাদ পড়ার জন্য, ক্রিটিক্যালী ভাবনা ও নিজের অবজার্ভেশান শেয়ার করার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের মধ্যস্থিত আলেম ভাইরা কোরআন ও হাদীস এর ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন যেহেতু আগের সময়ের আলেম ও ওলামাদের মাধ্যমে পেয়েছেন - সেহেতু আলেম ও ওলামাদের কে ডিফেন্ড করতে প্রবৃত্ত হন - এবং ক্ষেত্রবিশেষে - কোরানের আয়াত ও হাদীসের রিয়ালিটিকে অস্বীকার করে হলেও।
আর তখন আলোচনা মতবিরোধে পরিনত হয়।
সো সামহাউ আমরা যদি কোরান ও হাদীসকে প্রমোট করতে পারি এবং সত্য ও বাতিল চিহ্নিত করায় কোরান কে ব্যব হারে উৎসাহিত করতে পারি - তবে সুফল পাব বলে আমার মনে হয়।
বাংলাদেশে যারা একমাত্র নিজেদের কোরআন হাদীসের অনুসারী দাবী করে (মানে আহলে হাদীস) তাদের মধ্যেও অগনিত গ্রুফ, একদল বলছে সারা বিশ্বে একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন হবে, অন্য দল বলছেঃ না ব্যতিক্রম হবে।
এনিয়ে গত বছর ময়মনসিংহে আহলে হাদীস বাই আহলে আহলে হাদীস প্রশাষনের সহায়তায় মুনাযারা পর্যন্ত হয়ে গেল। সবার দলিল কুরআন ও সহীহ হাদীস। তবে কেন দ্বিমত সৃষ্টি হল?
শেষ পর্যন্ত একই দিনের দাবীদার রা পরাজিত হল। মুনাযারার অনুষ্ঠানে পরাজিত হলেও তারা তাদের মতের উপরই অটল রইল।
ধন্যবাদ
আবু জান্নাত ভাই, আপনি ময়মনসিংহের যে উদাহরনটি দিলেন - ওতে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হল। দু পক্ষই কোরআন ও হাদীস আনলো। এবং কোরআন ও হাদীস এর আলোকে সত্য পরিষ্কার ভাবে দৃশ্যমান হল। ঠিক যা আল্লাহ ওনার কোরআনে ঘোষনা করেছেন - সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য নিরূপন করে দেবেন।
এর পর একজন ঈমানদার এর কাজ হল - কোরআন ও হাদীসের কাছে মাথা নত করা। কিন্তু কেউ কেউ তা না করতে পারে, পারসোনাল ইগোর কারনে, অন্য একজন আলেম এর দোহাই দিয়ে, সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা কিংবা ইনফ্লুয়েন্স ধরে রাখার কারনে। ভুলে থাকবেন যে ঐ আলেম কিংবা ঐ সংগঠন কিংবা আর যা কিছু কারন আছে সবই মানুষ্য সৃষ্ট - প্রভুর নয়।
আমার কাছে মানুষের মধ্যে ও বহু মত ও পথ থাকা স্বাভাবিক বলে মনে হয়। কিন্তু সে মত ও পথ যতক্ষন পয্যন্ত আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিমিত্তে কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পরিচালিত হবে - ততক্ষন পয্যন্ত আমাদের নাযাত এর সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় - আল্লাহ ভাল জানেন।
আমাদের মুসলমানদের মধ্যে তো সবাই বেহেস্তের একই স্তরে স্থান পাবে না। নিশ্চয়ই তারাই তুলনামূলক অধিক উচ্চতর স্থানে স্থান পাবেন যারা - কোরাআন এর কাছে পরিপূর্নভাবে সাবমিট করেছেন।
এ্যনি ওয়ে ধন্যবাদ আপনাকে। এ তর্কযে শেষ হবার নয়, ইসলামের শুরুলগ্ন থেকে এ বিষয়গুলো চলে এসেছে, কেয়ামত পর্যন্ত এভাবেই থাকবে। ধন্যবাদ
আপনি সাহাবা রাঃ এর যে বুঝ এর প্রতি ইন্ডিকেট করলেন - আজকের যুগে কেউ যদি অমন বুঝ রিয়াল লাইফে বুঝতে পারেন - তবে নিশ্চয়ই তার জন্য 'আমল' করা অত্যন্ত সহজ ও সরল হবে এবং তিনি আল্লাহর দিদার ও পাবেন।
কিন্তু আমার ধারনা - যেহেতু আমাদের বেশীর ভাগ এর দ্বারা অমন বুঝ ইনস্ট্যান্টলী আনা সম্ভব না - সেহেতু আমরা নীতিগতভাবে একমত হতে পারি যে - কোন বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের কোন আদেশ কিংবা নিষেধকে পরিষ্কারভাবে হৃদয়ংগম করার পর - সে আদেশ কিংবা নিষেধ কে অমান্য করার নিমিত্তে কোরআন ও হাদীসের বিপরীতে কোন আলেম ওলামা কিংবা সংগঠনকে দাঁড় করিয়ে - কোরআন ও হাদীসের অর্ডারকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেব না / ফেলে দেব না।
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
আজকের কেউ অবশ্যই পারে সেজন্যইতো তাকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আমি নিজের আকল দিয়ে বুঝতে বলিনি। কুরআন ও হাদীস এর ব্যাখ্যা বুঝতে হবে যেভাবে তারা বুঝেছেন
আর আল্লাহর দিদার পাবো ইনশাআল্লাহ! কেয়ামতে ও জান্নাতে।
আমি আপনার স্পিরিট ও এ্যাসারশান এর সাথে ১০০% একমত। যে ভাই ই সাহাবা রাঃ এর থট প্রসেস এর আলোকে ঐ নলেজ পাবার জন্য চেষ্টা করবেন - তাকে সাধুবাদ জানাই এবং আমি নিজেকে ও নিজের মন কে তা জানার জন্য এ্যানকারেজ করি। আল্লাহ আমাদের মন কে সাহাবা রাঃ এর মত তাকওয়া সম্পন্ন নরম করে দিন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্ত করে দিন। মুয়াদ রাঃ এর মত ভাবার গভীরতা দিন, হুরায়রা রাঃ এর মত মনে রাখার শক্তি দিন।
---------
কিন্তু যে পয্যন্ত না আমি ঐ সাহাবী রাঃ দের লেভেল এর নলেজ আয়ত্ব করতে পারলাম না - সে পয্যন্ত তো আমাকে ইসলাম চর্চা করে যেতে হবে এবং ঐ চর্চাকালীন সময়ে আমার সামনে বিভিন্ন বিষয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে মতামত আসবে। তাই না?
আমি তখন দু পক্ষ হতেই কোরআন ও হাদীসের যে রেফারেন্স সমূহ পাব তার সাথে আমার 'আকল' বা 'জাজমেন্ট' ব্যবহার করবো - সিদ্ধান্তে উপনীত হবার জন্য - এটাই বলতে চেয়েছি। বলতে চেয়েছি, অন্ধভাবে কোন পন্ডিত, সংগঠন, মুরুব্বীকে ফলো করবো না। - কারন ঐ পন্ডিত, সংগঠন কিংবা মুরুব্বী - সবাই ই মানুষ কিংবা মানুষ্য সৃষ্টি এবং তারা ভুল করতে পারেন। কিন্তু কোরআন ভুল হতে পারে না। এবং কোরআন আমাকে আক্কল ব্যবহার করতে বলেছে, উৎসাহিত করেছে ব্যবহার করার জন্য এবং বলেছে আমি সততার সাথে কোরানে গাইডেন্স চাইলে আল্লাহ গাইডেন্স দেবেন।
ধন্যবাদ - আপনার ভাবনা শেয়ার করার জন্য।
একজন কৃষক ও ইবাদাত করে। তবে জ্ঞান অর্জণ তাকেও করতে হবে কেননা তা ফরজ । মিনিমাম লেভেল জ্ঞান অর্জন করবে
সাহাবা (রা) দের আকলই আমাদের আকল বানাতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে আকল ব্যবাহরে প্রবলেম নেই
ধন্যবাদ পড়ার জন্য এবং অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। আরো ভাল হত যদি আপনার ভাবনা ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেন --
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
“জানা হচ্ছে এটা জানা যে তুমি কিছুই জানো না। এটাই জ্ঞানের প্রকৃত অর্থ ! (সক্রাতেস)। অর্থাৎ মানুষ যখন জ্ঞান অর্জন করে বা জ্ঞানী হয়, মুলতঃ তখন সে উপলব্ধি করে আসলে সে কত কম জানে! এজন্য জ্ঞান, মানুষকে অহংকারী নয়, বিনয়ী করে!
চমৎকার মন্তব্য। ইসলাম, সক্রেটিস এবং নিজের মতকে সাবলীলভাবে ব্যবহার করেছেন। ব্যাক্তিগত জীবনকে সুশোভিত করার জন্য আপনার কমেন্ট এ উল্লেখিত শিক্ষা অসাধারন কাজ করবে। যদি আমরা গ্রহন করে প্রাকটিস করতে পারি।
ধন্যবাদ।
জাজাকুম আল্লাহ খাইরান সুন্দর লিখার জন্য।
নিশ্চয়ই - আল্লাহ উম্মাহকে গাইডেড রাখতে সন্মানিত আলেমদের উপর বিশাল দায়িত্ব দিয়েছেন - যতদিন আলেম ও ওলামারা সে দায়িত্ব পালন করবেন - উম্মাহর একটি অংশ গাইডেড থাকবেন, ইনশাল্লাহ্।
আপনাকে ও ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন