নতুন মধ্যপ্রাচ্যের পদধ্বনীঃ শুনতে কি পাও - ও মুসলিম?
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১৪ মে, ২০১৫, ০৮:২১:৩৭ রাত
বিসমিল্লাহির রহমানুর রাহিম।
এ লিখার পাঠকের কাছে অনুরোধ - লিখার বক্তব্যটিকে মূখ্য বিবেচনা করুন ওটার উপর রিফ্লেক্ট করুন। শব্দচয়ন, বানান ও ভাবকে গৌন বিবেচনা করুন।
--------------------
মধ্যপ্রাচ্য - মানুষের আধ্যাত্মিক আত্মার রাজধানী যেন। এ রাজধানীকে কেন্দ্র করে মানুষের ফেরেস্তা রূপ (নবী রাসুল আম্বিয়া আঃ দ্রষ্টব্য) যেমন ধ্রুবতারার ন্যায় বিশ্বময় প্রতিভাত হয়েছে, তেমন ই মানুষের পশুত্বের রূপ (ফেরাউন, নমরূদ দ্রষ্টব্য) ও যেন কালের উদাহরন হিসাবে সেকাল-একালে বিমূর্ত হয়ে আছে।
মানব ইতিহাস ও আগামীর (কোরান, সুন্নাহ তে যে রেফারেন্স বা ইন্ডিকেশান আছে তার ভিত্তিতে) চিত্রকল্পে পুরো বিশ্বব্যবস্থাকে যদি আমরা পূর্নদৈর্ঘ্য ছায়াছবির সাথে তুলনা করি - তবে মনে হবে - মধ্যপ্রাচ্য যেন পুরো পৃথিবীর নাট্যশালায় - কেন্দ্রীয় মঞ্চ হিসাবে কাজ করেছে এবং করছে এবং করতে যাচ্ছে। পৃথিবীর অপরাপর অংশে যা কিছু হয়েছে এবং হচ্ছে এবং হবে - তা কেন্দ্রীয় মঞ্চকে যেন এক ডাইমেনশান হতে অন্য ডাইমেনশান এ সরিয়ে নিয়ে (তথা ভেংগে ও গড়ে) তাওরাত, যবুর, ইন্জিল, কোরান ও হাদীসের ভবিষ্যতবানী সমূহকে বাস্তবায়ন করতে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছে তথা ভবিষ্যতবানী সমূহ উন্মোচিত হচ্ছে।
আদম আঃ এর মধ্যপ্রাচ্যে আগমনকে যদি আমরা শিল্পমন নিয়ে উল্লেখিত ছায়াছবির সূচনা ধরি, তবে ইব্রাহীম আঃ এর মধ্যপ্রাচ্যের কেন্দ্রবিন্দু তথা জেরুসালেম এ আগমন যেন সেই ছায়াছবির শেষাংকের সূচনা। এই শেষাংশের কেন্দ্রবিন্দুতে যেন আছে ইব্রাহীম আঃ এর ঔরসজাত দুটো পরিবারের ইহলৌকিক ও পরালৌকিক শ্রেষ্টত্বের প্রতিযোগীতা। বনী ইসরাইল তথা বনী ইসহাক/ইয়াকুব আঃ ও বনী ইসমাইল আঃ পরিবার।
আল্লাহ তার গাইডেন্স, নেয়ামত, স্বীকৃতি, নেতৃত্ব, সুযোগ ও সুবিধা ইত্যাদি - দুটো পরিবারকেই যেন দুহাত এ দিয়েছেন। আর তারপর যেন দু পরিবারকেই আহ্বান জানিয়েছেন এভাবে, প্রমান করঃ
১। তোমাদের মধ্যে কোন পরিবার আমাকে 'ইন অল সেন্স' এ 'ট্রু নিয়ন্তা' বলে মনে কর?
২। তোমাদের মধ্যে কোন পরিবার আমার আদেশ ও নিষেধ এর প্রতি ট্রু সাবমিটার তথা ট্রু মুসলিম - ঠিক যেমনটা তোমাদের বাবা ইব্রাহীম আঃ উদাহরন সেট করেছেন?
দুটো পরিবারই লিটারেলী দুনিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে, আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ এর প্রতিভূ বা কর্নধার কিংবা ধ্বজ্জাধারী হিসাবে। এর মধ্যে বনী ইসরাইল শত শত নবী রাসুল ও গাইড দ্বারা গাইডেড হল আর বনী ইসমাইল শুধু মাত্র একজন - মোহাম্মদ সঃ দ্বারা গাইডেড হল।
আমরা অপরাপর মানুষরা তথা পৃথিবীর সাধারন এ্যাক্টর ও এক্ট্রেস রা - লিটারেলী ৩টি মূল শ্রেনীতে বিভক্ত হয়ে আমাদের রোল প্লে করতে লাগলাম। ১টি বনী ইসরাইলকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছি, অন্যটি বনী ইসমাইলকে কেন্দ্র করে এবং শেষটি স্প্রীচুয়ালী ইনডিপেন্ডেন্ট তথা নাস্তিক, আত্মাহীন কিংবা হৃদয়হীন কিংবা নাট্যমঞ্চে ভবঘূরের ন্যায় ভ্যালুলেসভাবে আবর্তিত হচ্ছি কিংবা হতে লাগলাম।
উল্লেখিত ছায়াছবির শেষাংকের পরিসমাপ্তির সূচনা যেন হয়েছে ঠিক সেদিন - ঊনবিংশ শতাব্দীর একেবারেই শেষভাগে, যেদিন আল্লাহ ফেরাউনের মৃতদেহকে (রেমেসিস ২) পৃথিবীবাসীর সামনে 'কোরানে বলানুযায়ী' সাইন হিসাবে অবমুক্ত করে দিলেন। তার আগে চলমান মূল নাট্যমঞ্চ - মধ্যপ্রাচ্যে ছোট খাট ড্রামা ও মেলোড্রামার উপস্থিতি থাকলেও বনী ইসরাইল ও বনী ইসমাইল - নন কনফ্রন্টেশনাল ভূমিকায় প্রতিযোগীতায় লিপ্ত ছিল। কিন্তু ফেরাউনের লাশ দ্রুতলয়ে দুটো পরিবারের ফাইনাল শোডাউন এর মত পরিস্থিতি তৈরী করলো। তৈরী হল জিয়োনিস্ট মুভমেন্ট, তার ধারাবাহিকতায় মাত্র ২ যুগের মধ্যে বনী ইসমাইল ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল বহুদাভাগে, মাত্র অর্ধ শতকের ব্যাবধানে জন্ম নিল ইসরাইল (ইসলামিক থিংকারদের মতে 'দাব্বাতুল আরদ' এর), এবং বনী ইসমাইলের কোরবানীর আন্জাম পূর্নমাত্রায় শুরুর নিমিত্তে কনফ্রন্টেশনাল ড্রামা ও মেলোড্রামার তথা দ্বন্ধ ও সংঘাত এর শুভ সূচনা হল। ঠিক যেমনটা আল্লাহর রাসুল সঃ ভবিষ্যতবানী করেছিলেন 'আরবের দূর্ভাগ্য' বলে। সে সাথে মোহাম্মদ সঃ এর নেতৃত্বে রেনেসাঁ রূপী নতুন মধ্যপ্রাচ্য র্যাডিকেলী রি শেইফ হতে লাগলো নতুন এক মঞ্চে।
নতুন এ ভাংগা গড়ার ইতিহাসে পৃথিবীতে বনী ইসরাইল ও বনী ইসমাইল এর নাম ধারন করা উভয় গ্রুপ গ্রাজুয়ালী দু দুটো ভাগে বিভক্ত হল। বনী ইসরাইল নাম ধারন করা মূলতঃ সাদা চামড়ার খাযারস্ রা, যারা প্রমানিতভাবে শতভাগ ভূয়া বনী ইসরাইল - তারা বনী ইসরাইলের এ্যাফেয়ার নিয়ন্ত্রন করার নিরংকুশ অধিকার ই শুধু পায়নি - গত ১০০ বছর ধরে তারা তাদের নামে 'ইন অল সেন্স' এ আল্লাহকে 'ট্রু নিয়ন্তা'র পজিশন হতে সরিয়ে দিয়েছে এবং নিজেদেরকে অমুসলিম এর কারেকটারস্টিক্স দিয়ে অলংকৃত করেছে - তথা তাওরাতের শিক্ষাকে জলান্জলি দিয়েছে।
একইভাবে গত ১০০ বছর ধরে বনী ইসমাইলের এ্যাফেয়ার এ, মূল বনী ইসমাইল (আরব) যত বেশী দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ভন্ডামী, মূর্খতা, স্বেচ্ছাচারিতার মত ইভিল গুলোকে আত্মস্থ করেছে, প্রকাশ করেছে ও ভিত্তি হিসাবে গ্রহন করেছে - তাতে ভূয়া বনী ইসমাইলের সমর্থক (লিটারেলী পারসিক) কিংবা ভূয়া উত্তোরাধিকারীরা নতুন ফোর্স হিসাবে ইতোমধ্যে আবির্ভূত হয়েছে। ঠিক যেমন করে ভূয়া বনী ইসরাইল রা ট্রু বনী ইসরাইলের উপর ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ লাভ করেছে ঠিক তেমনি ভূয়া বনী ইসমাইল রা আগামী কিছু সময়ের মধ্যে ট্রু বনী ইসমাইলের উপর ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রন লাভ করতে যাচ্ছে।
আমরা যারা মোহাম্মদ সঃ এর অনুসারী বলে নিজেদের মনে করি - কিন্তু
অনুক্ষন দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের উপর কাজে কর্মে - দুনিয়ার সাকসেস মুখি তাদের সময় হয়েছে এটা জানার, বোঝার ও হৃদয়ংগম করার যেঃ
* অচিরেই আমরা ভূয়া বনী ইসমাইলের (পারস্যের) কাছে হেজাজ তথা মক্কা ও মদীনার দায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রন নিতে দেখব এবং মেনে নিতে বাধ্য হব।
এতে করে ভূয়া বনী ইসরাইল যেমন জেরুসালেম এর নিয়ন্ত্রণ লাভ করেছে তেমনি ভূয়া বনী ইসমাইল ও মক্কা মদীনার নিয়ন্ত্রণ লাভের সুযোগ পাবে। আর তারপর বনী ইসরাইল ও বনী ইসমাইলের নামে দ্বন্ধ ও সংঘাতকে এমন মাত্রায় নেওয়া হবে - যাতে রাসুলুল্লাহ সঃ এর প্রফেসী অনুযায়ী ট্রু বনী ইসমাইল মূল শোডাউনের কবলে পড়ে এবং গনহারে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে পারে।
ছায়া ভিত্তি/রেফারেন্সঃ
১। ইরানের সাথে নিউক্লিয়ার ডায়ালগ পাবলিকলী সিল করা ও ইসরাইলের এ্যাকশান-রিএ্যাকশান।
২। আরব উপদ্বীপের দেশসমূহ, জর্ডান, ইজিপ্টের অনৈতিক ক্ষমতার ব্যবহার ও ইরানের মোরাল স্ট্রেংথ এর প্রচার ও প্রসার।
৩। আখেরী জামানা সংশ্লিষ্ট হাদীস সমূহ ও বনী ইসরাইল সংশ্লিষ্ট আয়াত সমূহ।
বিষয়: বিবিধ
২১৭২ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
আলেমদের কাছে গবেষনার দাবী সবসময়ই। বিশেষ করে আজকের এই অন্ধকার যুগে, ওনাদের কাছ হতে উপযুক্ত আলোর দেখা পেতে চাই।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
ফেরউনের মূর্ত্তি সর্বসাধারনের জন্য অবমুক্ত নয়। কাসকেডে বাঁধানো ফেরাউনের মূর্ত্তি পকেটের টাকা খরচ করে টিকিট কেটে দেখেতে হয়।
বলাবাহুল্য- পিরামিড, স্ফিংস, মোমি, ফেরা ষ্টেচু.......... এসবই তৎকালিন মিশরীয়/বাইঞ্জানটাইন শিক্ষা, সভ্যতা, আবিস্কার, সংরক্ষন এবং পুরকৌশল বিনির্মানের জ্বলজ্বলে প্রতিক। সারা বিশ্বের পর্যটক মানুষ বিনম্র শ্রদ্ধায় অপুর্ব কৃর্ত্তি অবলোকন করে।
আপনারা মানুষ হবেন কবে? এখানে কেউ আল্লার কুদরত দেখতে যায় না। ধন্যবাদ।
(Holy Quran 10:90-92)
NEPAL: MILLION YEARS OLD FROZEN CAVEMAN DISCOVERED IN HIMALAYA
কোরান আমাদের আরো জানাচ্ছে ইব্রাহীম আঃ এর নাতির ছেলে ইউসুফ আঃ ওনার বাবা মা ও আরো ১১ ভাইকে মিশরে সেটেল করেছেন এবং ওনারা ঐ সময়ের মিশরের শাসক 'আজিজ' এর ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন ছিলেন। আর তার অনেক অনেক বছর আগে নূহ আঃ ছিলেন এবং তারো অনেক অনেক আগে আদম আঃ ছিলেন। কিন্তু তা কত বছর আগে - তা কোরান সুনির্দিষ্ট করে বলেনি বলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে লক্ষ বছরের পুরোনো মানব ফসিল এর সাথে কোরান কিংবা ইসলামের কোন কন্ট্রাডিকশান পাইনা। বরং সামন্জস্যতা পাই। ধন্যবাদ।
অনুসন্ধানি মানুষ অজানা রহস্য জানার তাগিদেই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শত লক্ষ বছরের পুরানো মানব ফসিল, গুহ মানব, তুষার মানব, ডাইনোসর, পিরামিড, স্ফিংসই, মমি, ফেরাউন মমি(ধারনা করা হয়), পিতলের মূর্ত্ত, ইমারতের ধ্বংস অবশেষ.......... ইত্যাদি সংরক্ষন করে আসছে। আর্কোলজিস্ট'দের এই প্রক্রিয়া অব্যহত আছে এবং থাকবে।
তবে, হাস্যকর ভাবে এখানে আল্লা/টাল্লার কোন কুদরতি নেই। সবই অনিসন্ধানী মানুষের ধারাবাহিক কর্মযজ্ঞ।
আসুন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি - আল্লাহ যেন এ সব মানুষকে রোগ হতে মুক্তি দেন এবং ওনার খাস বান্দায় পরিনত করেন। এবং আমাদেরকে ও আল্লাহর রাহে কাজ করার তৌফিক দেন এবং সিরাতুল মোস্তাকিম এর পথে রাখেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন