গণমানুষের জন্য - বিদায়াত নির্নায়ক

লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ০৫ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৩:৪৬:৫৪ রাত

রাসুলুল্লাহ সঃ এর মৃত্যুবার্ষিকীকে (প্রমানিত) ও জন্মবার্ষিকীকে (অপ্রমানিত) 'ঈদে মিলাদুন্নবী' নাম দিয়ে কিছু লিখা লিখার কারনে আজকের ব্লগে 'বিদায়াত' শব্দটি বড় বেশী করে আলোচনায় এসেছে এবং এতে কারো কারো কলমের আচঁড়ে সীমানা অতিক্রম করার জোঁক যেমন দেখা গেছে তেমন বেফাঁস ভাষা ও ব্যবহার করা হয়েছে। যা মুসলমান হিসাবে আমাদের কারোরই কাম্য নয়। আর ঐ সব শব্দ ও অভিশাপ পড়ার জন্য উপযুক্ত ও নয়, বরং পাপ কামানোর জন্যই বেশী উপযোগী বলে মনে হয়েছে।

অনেক দিন আগে আমি ডঃ ইয়াসির কাদির একটা বক্তব্য শুনেছিলাম। যেখানে উনি বিদায়াত নিয়ে কথা বলেছেন। আমি গণমানুষ হিসাবে ব্যাক্তিগতভাবে ওখান হতে যে শিক্ষাটি পেয়েছিলাম - তার আলোকে নিচে 'বিদায়াত নির্নায়ক' নামক একটা টুলস উপস্থাপন করলাম। যদি গনমানুষেরা বিদায়াত নির্নয়ে এর ব্যবহার করেন - ইনশাল্লাহ তিনি বিদায়াত থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকবেন। আর কোন আলেম ভাই যদি শুধু মাত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে এ টুলসে কোন সংশোধনী আনেন তাহলে আমি নিজে নিঃসন্দেহে উপকৃত হব।

টেস্ট টুলস - ১ঃ খোঁজ খবর করে দেখুন - যা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা আল্লাহ (কোরান) ও আল্লাহর রাসুল (হাদীস) হালাল করেছেন কিংবা বলেছেন কিনা। যদি করে থাকেন তবে আপনি তা সাধারনভাবে হারাম সাব্যস্ত করতে পারবেন না। যদি করেন - তবে তা বেদায়াত হবে।

উদাহরনঃ আল্লাহ উটের দুধকে হালাল করেছেন। সরকার কিংবা কোন আলেম কিংবা অন্য কেউ সাধারন মানুষের জন্য তা হারাম করতে পারবেন না। করলে তা বেদায়াত হবে। (ইয়াহুদীদের ধর্মীয় গ্রন্থে সংযোজন ও বিয়োজন সংশ্লিষ্ট একটি হাদীসের আলোকে অমন কাজ শিরক বলেও সাব্যস্থ হবে)।

টেস্ট টুলস - ২ঃ খোঁজ খবর করে দেখুন - যা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা আল্লাহ (কোরান) ও আল্লাহর রাসুল (হাদীস) হারাম করেছেন কিংবা বলেছেন কিনা। যদি করে থাকেন তবে আপনি তা সাধারনভাবে হালাল সাব্যস্ত করতে পারবেন না। যদি করেন - তবে তা বেদায়াত হবে।

উদাহরনঃ আল্লাহ সুদ, মদ ও শুকুরের মাংসকে হারাম করেছেন। সরকার কিংবা কোন আলেম কিংবা অন্য কেউ সাধারন মানুষের জন্য তা হালাল করতে পারবেন না। করলে তা বেদায়াত হবে।

টেস্ট টুলস - ৩ঃ খোঁজ খবর করে দেখুন - যা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদি তা সম্পর্কে - আল্লাহ (কোরান) ও আল্লাহর রাসুল (হাদীস) স্পষ্টভাবে হালাল কিংবা হারাম বলেন নি, এবং কোরান ও হাদীসে বর্নিত শিক্ষার আলোকে তা স্পষ্টভাবে হালাল কিংবা হারাম - বলে সাব্যস্থ হয় না - তবে তার সব কিছুই আপনি (সাধারন মানুষ) নিজ ইচ্ছায় গ্রহন করতে পারেন কিংবা বর্জন করতে পারেন।

কন্ডিশান একটাই আর তা হল - অমন কোন কিছুকে গ্রহন কিংবা বর্জনের ক্ষেত্রে - এটা ইসলামিক, কিংবা এটা মুসলমানের কিংবা এতে আখেরাতে কল্যান হবে কিংবা এতে পাপ কিংবা পূন্য হবে ইত্যাদি ক্লেইম করা যাবেনা, দাবি করা যাবেনা।

যদি পাপ পূন্য কিংবা ইসলামিক ইত্যাদি দাবি করা হয় - শুধুমাত্র তখনই তা বা সে কাজ হবে বিদায়াত।

উদাহরনঃ মসজিদে মাইক্রোফোন কিংবা মাল্টিমিডিয়া স্থাপনঃ যেহেতু এ বিষয়ে কোরান কিংবা হাদীস হালাল কিংবা হারাম সাব্যস্থ করেনি - আমি কিংবা আপনি তা মসজিদে স্থাপন করার অধিকার যেমন রাখি, আবার স্থাপন না করার ও অধিকার রাখি। স্থাপন করলে তা যেমন বেদায়াত হবেনা, তেমন ই স্থাপন না করলে ও বেদায়াত হবে না।

কিন্তু স্থাপন করার সময় যদি মানুষজনকে বলি, 'মাইক্রোফোন কিংবা মাল্টিমিডিয়া স্থাপন করলে ১০টি সওয়াব হবে, আখেরাতে নাযাত পাওয়া যাবে ইত্যাদি' তবে নিঃসন্দেহে - ঐ মাইক্রোফোন কিংবা মাল্টিমিডিয়া স্থাপন বেদায়াতে রূপান্তর হবে।

সুতরাং আমাদেরকে এ জাতীয় দুনিয়াবী বিষয়ের সাথে ইসলাম কিংবা ইসলামিক কোন অনুসংগ - না জড়িয়ে চলতে হবে এবং তা করতে পারলে ইনশাল্লাহ বেদায়াত মুক্ত জীবন নিশ্চিত করতে পারবো।

ধন্যবাদ।

বিষয়: বিবিধ

১২০০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299313
০৫ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৭:১৬

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 7228

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> ফুয়াদ পাশা লিখেছেন : আপনি বিষয়ের গভিরে না যেয়ে এ বি সি ডি জাতিয় কথা বলে ইসলামের বিদাত পর্ব শেষ করে দিলেন। কিন্তু বিষয়টি এত ছোট না। আজ ইসলামের বিদাত-অবিদাত দ্বন্দ সংঘাত সারা বিশ্বেকে অশান্ত করে তুলেছে। মুসলিম আলেমদের অধিকাংশই মনে করেন ; আলকায়দা, আইসিস, আল শাহাব, তালেবান, তাহরিকী তালেবান, বোকোহারাম এরা শতভাগ ইসলামিক। রাসুলের সাহি তরিকা কঠর ভাবে মেনে এরা আল্লাহর নামে জিহাদ শুরু করেছেন। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহু। অন্যদিকে আলেম সমাজের একাংশ মনে করেন এদের কর্মকান্ড অনৈসলামিক। উহা সাহি ইসলাম না। ইদানিং আবার আরেক শ্রেনির আলেম আবির্ভুত হয়েছেন যাদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। তালেবান যোদ্ধারা যখন ভারতের বিরুদ্ধে, ন্যাটোর বিরুদ্ধে অথবা শিয়াদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ চালায় তাহা সাহি ইসলামিক জিহাদ। কিন্তু এরা যখন পাকিস্তানী সৈন্যদের উপর হামলা করে উহা অনৈসলামিক।

তাহলে কোনটি বিদাত আর কোনটি বিদাত নয় তাহা কে নির্ধারন করে দিবে??
০৭ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:২৩
242555
সাদাচোখে লিখেছেন : ইসলামে - খৃষ্টানদের মত পোপ নেই, ইয়াহুদীদের মত রাবাই ও নেই। সো মুসলিম ব্যাক্তি নিজে, নিজ সামর্থ্যানুযায়ী, কোরান ও হাদীসের আলোকে, শুধুমাত্র আল্লাহ কে ভয় করে চেষ্টা করলে গাইডেড হবে, ন্যায় ও অন্যায় বুঝতে পারবে এবং একইভাবে বেদায়াত ও বুঝতে পারবে। ইনশাল্লাহ্‌।

দেখুন একজন মুসলিম (যে নিজেকে কোরানে সোপর্দ করেছে), অন্যায় কে অন্যায় বলতে বাধ্য এবং ন্যায়ের জন্য সামর্থ্যানুযায়ী সংগ্রাম করতে ও বাধ্য। আর যা কিছু ইভিল তা মুসলিম মাত্রই ত্যাগ করবে - এটাই স্বাভাবিক। সো অন্যায়ের সাথে আপনি কোন মুসলিমকে পাবেন না। একজন ও না।

কিন্তু একজন ইভিল এর চোখে যা কিছু ভাল, যা কিছু সৎ, যা কিছু উপকারী, যা কিছু কনস্ট্রাক্টিভ - তা ভুল, অন্যায় ও ক্ষতিকর। সুতরাং তার কাজ ই হল সৎকে অসৎ বানানো, উপকারী জিনিসকে অপকারী জিনিসে পরিনত করা, গঠনমূলক কাজ ও কথাকে অগঠনমূলক কিছুতে পরিনত করা এবং আলটিমেটলী মুসলিমকে অমুসলিম বানানো তথা তার দাশ এ পরিনত করা।

সুতরাং যে ব্যাক্তি নিজেকে স্রষ্টার নিকট সোপর্দ করেছে এবং তার সাহায্য চেয়েছে - সে মুসলিম এবং সে গাইডেড হয়েছে এবং গাইডেড থাকবে।

আর যে স্রষ্টার আইন ভেংগে নিজের সুখ ও সুবিধার জন্য শয়তানের খপ্পরে পড়েছে - সে তো শয়তানী করবেই, খুন করবে, মারবে কাটবে - এ আর এমন কি?
ধন্যবাদ
০৭ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:১৩
242579

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 7228

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 917

"> ফুয়াদ পাশা লিখেছেন : (দেখুন একজন মুসলিম (যে নিজেকে কোরানে সোপর্দ করেছে), অন্যায় কে অন্যায় বলতে বাধ্য এবং ন্যায়ের জন্য সামর্থ্যানুযায়ী সংগ্রাম করতে ও বাধ্য।)

আসলে সমস্যার মূলই কোরাণ। আজন্ম কোরাণে সোপর্দো করে হেফাজতের আল্লামা সফি মেয়েদের ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত বিদ্যায় বিশ্বাসী। বিন লাদেন, মুল্লা ওমর, আয়ম্যান জাহরি, খলিফা আবু বকর বাগদাদি, দেইল্লা রাজাকার এরা সবাই কোরানে সোপদ্দিত। সম্ভবত আপনিও তাই। কি ভয়ংকর কোরাণ রে ভাই??
০৮ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:২০
242644
সাদাচোখে লিখেছেন : Allah raises in rank those who believe among you and those who have been given knowledge. (আল কোরান ৫৮:১১)

Say, (O Muhammad!), are those who know equal to those who know not? (আল কোরান ৩৯:০৯)

Seeking knowledge is compulsory (fard) on every Muslim. Al-Tirmidhi, Hadith 74

আমার ধারনা আপনি যদি বিচার ও বিবেচনা করার মত বোধ শক্তির রাখেন রাখেন - তবে আপনার আর্গুমেন্ট এর অসারতা সহজেই ধরতে পারবেন। ধন্যবাদ।
299341
০৫ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:১২
হতভাগা লিখেছেন : সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন , মাশা আল্লাহ ।
০৭ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:২৪
242556
সাদাচোখে লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File