গণতন্ত্রের পোষ্টমর্টেম - ২
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:০৬:৩৩ রাত
নিচের লিখায় প্রতি উত্তর দিতে গিয়ে লিখাটি লিখা হয়। লম্বা হওয়ায় মনে হল পোষ্ট হিসাবে রেখে দিই - যেহেতু আগেও এর উপর একটা লিখা লিখেছিলাম।
Click this link
কাজি সাকিব ভাই, আমি জামায়াত বিদ্বেষী নই কিংবা জামায়াত আমার কাছে এ্যালার্জিক নয়। ধর্মীয় বিবেচনায় ও পলিটিক্যাল বিবেচনায় - সংগঠন হিসাবে জামায়াত নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি ভাল দল - এবং পরিবর্তিত উপমহাদেশের পলিটিক্স এ আমাকে যদি ফেভারিট হিসাবে একটি দলকে চ্যুজ করতেই হত - তবে নিঃসন্দেহে এখনকার জানাশোনা ও বুঝ অনুযায়ী আমি জামায়াত কেই চ্যুজ করতাম।
আমি একই সাথে স্বীকার করছি - ইসলাম সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুবই সীমাবদ্ধ। স্যেকুলার ধ্যান-ধারনায় আমি বড় হয়েছি এবং স্যেকুলার বিষয়াদির পেছনেই অনেক অনেক বছর দৌড়েছি এবং আমার লেভেল অনুযায়ী দুনিয়াবী ইস্যুতে নিজেকে নিজে সাকসেসফুল ই মনে করতাম।
যাক, যে ইস্যুটিতে ব্লগার মতামত চেয়েছেন আর আপনি মতামত দিয়েছেন - তা আমি পড়েছি এবং আপনার জাস্টিফিকেশানের ধরন দেখে বুঝলাম - আপনি যৌক্তিক একটা ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন - যা আমার কাছে কোরান হাদীস কেন্দ্রিক ব্যাখ্যা মনে হয়নি বলেই আমার মতামত লিখার চেষ্টা করছি।
কিন্তু এ ইস্যুতে বেশ কয়েকটি কারনে - আমি আপনার উত্তরে কনভিন্সড হতে পারিনি বলে দুঃখিত। আর সে নিমিত্তে ও এ লিখার অবতারনা। আমি মনে করি - একজন সত্যিকারের মুসলিম হিসাবে - এ ইস্যুতে আমাদের কারোরই ক্ষুদ্ধ, রাগ বা বিরাগ হবার কোন সুযোগ নেই। বরং এ আলোচনাকে এমন ভাবে উৎসাহিত করা উচিত - যাতে আমরা কোরান হাদীসের আলোকে - এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারি এবং তা যথাযথভাবে প্রপাগেইট করতে পারি - যদি তা ইসলামের জন্য, উম্মাহর জন্য ভাল হয়।
অথবা কোরান হাদীসের আলোকে এর ক্ষতিসমূহ চিহ্নিত করতে পারি, নেগেটিভিটিসমূহ উপলব্ধি করে এর যথাযথ রিফর্ম করতে পারি কিংবা অলটারনেটিভ খুঁজতে পারি কিংবা একেবারে না পারলে 'আখেরাত ঠিক রাখা'র জন্য এ থেকে বের হয়ে আসতে পারি।
কারন আমার মনে হয় - একজন মুসলিম হিসাবে এ পৃথিবীতে আমাদের সত্যকে চেনা, জানা ও বোঝা অনেক বেশী ইমপোর্টেন্ট, সত্যকে আকড়ে ধরে ওপারে যাবার প্রস্তুতি নিশ্চিত করা ইমপোর্টেন্ট - যা নবী মোহাম্মদ সঃ আমাদের জন্য আল্লাহর কাছ হতে সত্য সাক্ষীসহ এনে দিয়েছেন।
আর কোন কারনে কোন বিষয়ে যদি কোন নেগেটিভিটি, যদি কোন বেদাত, শিরক ইত্যাদি আমাদের মধ্যে ডুকে গিয়ে থাকে - তবে তা যত পুরোনো দিনের প্রাকটিস ই হোক না কেন, যত কাল ধরেই প্রাকটিস হয়ে থাকনা কেন - তার থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করাই একজন মুসলিম হিসাবে অন্যতম কর্তব্য।
আমি ব্যক্তিগতভাবে আরো মনে করি - আমরা আল্লাহ, কোরআন, হাদীস, মোহাম্মদ সঃ ইত্যাকার ইস্যুর সত্যতা, ন্যায্যতা, যথার্থতা - আমাদের সামর্থ্যের পুরোটা দিয়েই ডিফেন্ড করবো এবং সেখানে কোন কম্প্রোমাইজ করবো না, করা উচিত না।
কিন্তু ম্যান-মেইড কোন সংগঠন, কোন ধ্যান ধারনা, কোন আবিষ্কার কে কখনো কোরান হাদীস দিয়ে ভ্যালিডেটেড না হলে - চুড়ান্ত রকমের তথা অন্ধভাবে ডিফেন্ড করবো না। ডিফেন্ড করতে গিয়ে এমন কোন টার্ম কিংবা টার্মস ব্যবহার করবো না - যাতে সত্য প্রকাশ হতে বাধাঁ প্রাপ্ত হয়, কিংবা কেউ সত্য খোঁজায় অনুৎসাহিত হয়। এই জন্য যে ম্যান মেইড বিষয়ে ভুল হলেও হতে পারে, কিংবা সময়ের সাথে বা জেনারেশানের আবর্তনে তা পরিবর্তিত হতে পারে, অতি রাইট কিংবা অতি রং ও মনে হতে পারে।
আমার লিমিটেড জ্ঞান এর আলোকে আমি যা বুঝেছি - ইউনিভার্সালী - কোন আলেম কিংবা আলেম সমাজ যথাযথ রিসার্চ করে কোরান হাদীসের আলোকে অফিশিয়ালী 'আজকের বিশ্বে যে গণতন্ত্র প্রাকটিশ হয় - গনতন্ত্র বলতে যা বোঝায় তা'কে ইসলামে জায়েজ, বৈধ কিংবা হালাল বলেন নি। যা আপনিও আপনার কমেন্ট এ বলেছেন এইভাবে, 'আর প্রচলিত গণতন্ত্রের যে সকল অগ্রহনযোগ্য দিক রয়েছে জামায়াত সেগুলো মানেও না এবং সেগুলো খারাপ তা একবাক্যেই সকলেই স্বীকারও করে এবং সেই বিষয়ে সম্প্রতী আল্লামা সাঈদী সাহেব রচিত নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্য নামক গ্রন্থেও লিখা রয়েছে,অতীতে অন্যরাও লিখেছেন'!
ইন্টারেস্টিংলী তখন মনে আসে তাহলে আমরা কোন গনতন্ত্রের কথা বলছি? পৃথিবীতে কি ইসলামী গনতন্ত্র বলে কোন কিছু আছে? যদি থেকে থাকে কতজন মুসলিম সে বিষয় সম্পর্কে জানে? এসব লেজিটেমেট প্রশ্ন সামনে চলে আসে।
অথচ ইতিহাসে আমরা দেখি - বৃটেনের প্রেশারে অটোমান খেলাফত কে ব্যান্ড করে (মাত্র ৯০ বছর আগে), স্যেকুলার ও ইসলাম বিদ্বেষী কামাল আতাতূর্ক এর হাত ধরে গণতন্ত্রের আইডিয়া মেইন মুসলিম ভূখন্ডে বা ধ্যাণ ধারনায় প্রবেশ করে। পরবর্তীতে 'পরাধীন মুসলিম বিশ্বব্যবস্থায়' (বহুদাভাগে বিভক্ত মুসলিম ন্যাশানহুড কে ধ্বংশ করে আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিভক্ত নতুন করে সৃষ্ট ন্যাশানহুড)- তুলনামূলক অগ্রসর ও বিশ্বব্যবস্থাপনা বুঝতে সক্ষম অমন মুসলিম লিডার শীপ রা (টিপিক্যাল স্কলার রা নন) - পরাধীনতা হতে উত্তোরিত হতে - কিংবা খেলাফত ফিরে পাবার নিমিত্তে - হার্ডলাইন স্ট্রাগল এ না গিয়ে - মন্দের ভাল এই ধারনার বশঃবর্তী হয়ে - গনতন্ত্রকে আলিংগন করেছে।
মুসলিম নেতাদের ঐ সময়ের প্রেক্ষিত বিবেচনায় নিলে মনে হয় - তারা বুঝিবা যথাযথ সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন। যেমন আপনি আপনার কমেন্ট এ - তেমন একটি বক্তব্য অনুরনন করেছেন 'এখন প্রচলিত গণতন্ত্রের বাইরে থেকে আমরা যদি সমাজের সকল কর্তৃত্ব তাগুতের হাতে তুলে দেই তবে তা হবে ইসলামের জন্য ক্ষতিকারক!'
এই আর্গুমেন্টটা ইসলামী আকিদানুযায়ী ও স্পিরিট অনুযায়ী দূর্বল মনে হয়। কারন আমরা দেখেছি মোহাম্মদ সঃ মক্কায় কিংবা আবিসিনিয়ায় তাগুতের হাত হতে কর্তৃত্ব ছিনিয়ে নিতে চান নি। বরং আমরা দেখি মক্কায় ওনাকে রাজা বানাতে চাইছে কোরাইশরা - তথা কর্তৃত্ব দিতে চাইছে - কিন্তু উনি তা গ্রহন না করে আল্লাহর রাস্তায় নির্যাতন চ্যুজ করেছেন। আবার মদীনায় ও উনি কর্তৃত্ব নিজের হাতে তুলে না নিয়ে মদীনা সনদ তৈরী করে কর্তৃত্ব ভাগাভাগি করে ইয়াহুদী ও মূর্তি পূজকদের দিয়েছেন - ধর্মীয় লাইনানুযায়ী।
অন্যদিকে স্টাবলিশড ফ্যাক্টস বলছে - পাশ্চিমা গণতন্ত্রের জন্মই হয়েছে - আল্লাহ বা স্রষ্টার নামে শাসনের অথরিটিকে চ্যালেন্জ করে - মানুষের নামে মানুষকে শাসন করার অলটারনেটিভ বা বিকল্প একটা মেকানিজম হিসাবে।
পৃথিবীর ইতিহাসে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিন, কোথাও, কোন কালে, আল্লাহ/স্রষ্টা ভিন্ন অন্য কারো আইনে/ডিকটেশানে মানুষ শাসিত হয়নি। তা সে ফেরাওন হোক আর নমরুদ হোক আর ১৬৪৮ সালের আগে - গনতন্ত্রের সুতিকাগার বৃটেন ই হোক। সব সময়ই, সব কালেই, সব ভূখন্ডেই - রাজা বাদশা ফেরাও, আজিজ কিংবা পোপ, র্যাবাই, খলিফা - মানুষ শাসন করেছে স্রষ্টার নামে বা স্রষ্টার পাওয়ার নিজের উপর আরোপ করে তথা নিজেকে স্রষ্টা ক্লেইম করে - ডিভিনিটিকে সামনে এনে। শাসকরা অলয়েজ যে আইন মানুষের সামনে পেশ করেছে - তা আল্লাহর নামে চালিয়েছে - কোন দিন বলেনি এটা তাদের বানানো আইন।
কিন্তু ১৬৪৮ এ অফিশিয়ালী বৃটেন স্রষ্টার আইন মানতে অপারগতা জানায়, তারা প্রটেস্ট করে সাকসেসফুলি সেফারেট হয় এবং রাজা ও সংসদকে আইন প্রনয়নের অধিকার ওপেনলি দেয় - এবং মানুষ তা মেনে নেয়। এর ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট সিস্টেমকে তারা গনতন্ত্র বলে তথা গনতন্ত্রের জন্ম দেয়। এর জন্ম হয়েছে - (১) স্রষ্টার দেওয়া শরীয়া কে অস্বীকার করার নিমিত্তে (যা তখন ক্যাথলিক পোপ এর আয়ত্বাধীন ছিল) এবং নিজের তৈরী আইনকে শরীয়ার উপরে স্থান দিতে, (২) ভূখন্ডের উপর স্রষ্টার সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার অভিপ্রায়ে এবং তার পরিবর্তে জনগনকে সার্বভৌমত্ব দেবার সংকল্পে।
গনতন্ত্রের আওতায় আইন তৈরীতে - স্রষ্টার বিকল্প হিসাবে সামনে আনা হয় রাজাকে এবং মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিকে - যাকে/যাদেরকে (নব্য) লর্ড উপাধী দেওয়া হয়। অন্যদিকে ভূখন্ডের অধিপতি স্রষ্টাকে অস্বীকার করে মানুষকে তথা জনগনকে মালিকানা বা সার্বভৌমত্ব দেওয়া হয়। স্রষ্টাকে গৌন বা সেকেন্ডারী ক্লাসের ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। স্রষ্টাকে লিটারেলী চার দেয়ালে বন্দী করা হয়, এবং সিরিমোনিয়াল পজিশান হিসাবে জন্ম, মৃত্যু ও বিয়েতে কাজে লাগানো হয়।
পরবর্তীতে ইউরোপের শাসক ও শোষক (ব্যবসায়ী) শ্রেনী - বৃটেনের - স্রষ্টা মুক্ত নব্য অবস্থায় - নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিনিষেধ মুক্ত স্বাধীনতা ও আইন প্রনয়নে ফ্ল্যাক্সিবিলিটির সুবিধা দেখে - একে একে স্রষ্টার আইন ছেড়ে - গণতন্ত্রকে আলিংগন করে। (উল্লেখ্য ইয়াহুদী দ্বারা নির্যাতিত ইউরোপীয়ান খৃষ্টানডোম বিগত প্রায় ১৪০০ বছর ধরে তাওরাতের আইন বা শরীয়া বাদ দিয়ে - কালচারাল ইনফ্লুয়েন্স ও প্রয়োজনানুযায়ী আইন তৈরী করে ঈশ্বরের নামে চালিয়ে আসছিল এবং তার কারনে বিতর্কিতও হয়ে ছিল)
আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার রেফারেন্স বিহীন হাদীস সংশ্লিষ্ট মন্তব্যটির ক্লু খুঁজছিলাম যেখানে আপনি বলেছেন - 'ইহা (গনতন্ত্র) যদি হারাম হয় তবে রাসুল সাঃ মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে হযরত আবু বকর রাঃ কে খলীফা হিসেবে নির্ধারিত করে না দিয়ে সাহাবাদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন কেন? কেন তিনি কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করে বলেছিলেন এদের মধ্য থেকে একজনকে তোমাদের খলীফা হিসেবে নির্বাচিত করবে'!
আমি বরং ইসলামিক সোর্স হতে পেলাম, মোহাম্মদ সঃ এর ওফাত এর পর কিছু আনসার নেতৃবৃন্দ রা মিটিং এ বসেন রাসুলের সঃ এর উত্তরাধিকার নির্ধারন (কনসেনসাস এর মাধ্যমে সিলেকশান বা সুরা বা পরামর্শের মাধ্যমে নির্ধারন) করার জন্য। নির্বাচন (ক্যানডিডেচার কিংবা নন ক্যানডিডেচার এর মাধ্যমে - যেখানে একজনের ভার্চুসমূহ জনসন্মুখে হাইলাইটেড হবে, নেগেটিভিটি গৌন বা গোপন হবে) করার জন্য নয়। সংবাদ পেয়ে ওমর রাঃ, আবু বকর রাঃ কে নিয়ে সেখানে আসেন এবং আবু বকরের নাম প্রস্তাব করেন এবং সকলে মেনে নেন। সেখানে আবু বকরের কোন গুনাগুন আলোচনা হয়নি এবং কোন ভোটিং কিংবা মতামত ছিল না বরং বাইয়াতের আহ্বান ছিল। প্যারালালী আমরা দেখি আবু বকর রাঃ নির্বাচন না করে পরামর্শ নিয়েছেন ইনার সার্কেলের কয়েকজনের। এবং ওমর রাঃ কে নমিনেট করেছেন। সিমিলারলী আমরা ওসমান ও আলী রাঃ এর ক্ষেত্রেও তাই দেখি। সো আপনার ঐ রেফারেন্সটিকে কোথায় কিভাবে ফিট ইন করাবো বা করতে পারবো - যা আজকের গনতন্ত্রকে ইসলাম দ্বারা জায়েজ করবো।
ইতিহাস বলে - মূলতঃ গণতন্ত্রের সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহ দ্রোহ হতে। গনতন্ত্রের বিকাশ হয়েছে স্রষ্টাকে সাইডলাইনে নিতে।
একটিভলী, জোর করে, এজেন্ট নিয়োগ করে, টাকা পয়সা দিয়ে, মিডিয়া ক্যাম্পেইন করে - এর বিস্তৃতি অপরাপর দেশে (মুসলিম দেশ সহ) ছড়ানো হয়েছে - আল্লাহর কর্তৃত্বকে খর্ব করে - পশ্চিমা কর্তৃত্বকে সে স্থানে রিপ্লেইস করার জন্য। এ কাজে ট্রিলিয়নস অব ডলার ইনভেস্টমেন্ট করেছে দজ্জালিক স্বত্তা সমূহ (বৃটেন, অভিবাসিত অবস্থায় ইউএস(অস্ট্রেলিয়া) ও ইসরাইল) তামিম আদ দারীর হাদিসের ইন্টারপ্রিটেশান অনুযায়ী এবং খুন করেছে লাখে লাখে মানুষ - মুসলিম ও নন মুসলিম ল্যান্ড সমূহে।
এরপর আমরা দেখি গণতন্ত্রের নামে ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিল এর উদ্ভব এবং মুসলিম ভূখন্ড-সমূহ তাদের সিকিউরিটি বা নিরাপত্তার মালিকানা, আল্লাহর পরিবর্তে ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাছে লিখিতভাবে দিয়ে বসেছে। ফলাফল স্বরূপ আমরা ২ বছর পর পর গাজার সিকিউরিটির অবস্থা দেখছি, এর আগে প্রমানহীন খুনীকে হস্তান্তর না করার কারন দেখিয়ে আফগানিস্থানের সিকিউরিটির নামে লাখ লাখ মুসলিম নিধন সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দেখেছি, ডব্লিওএমডির নামে ইরাকে, গনতন্ত্রের নামে ইয়েমেনে ড্রোনহত্যা, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মিশর, সিরিয়া, আবার ইরাক আমরা দেখছি।
গণতন্ত্র, সিকিউরিটি কাউন্সিল, এবং তা হতে সংসদ দ্বারা উদঘত শিশুসমূহ - হিউম্যান রাইটস, ইউনিভার্সাল জাস্টিস, ওমেন এ্যামপাওয়ারমেন্ট, মিডিয়ার স্বাধীনতা ইত্যাকার নামে বিভিন্ন শাখা প্রশাখার আবরনে - আমরা মুসলিম নিধনকে হালালিফাইড করছি - আর সেই গনতন্ত্র ও আইনের শাসনের কারনে, তার দোহাই দিয়ে - আমরা অবশিষ্ট মুসলিমরা সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের মা বোন ভাইয়ের হত্যা দেখছি, ধর্ষিত হতে দেখছি, নির্যাতিত হতে দেখছি, পুংগু হতে দেখছি।
আমরা গণতন্ত্রের নামে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সরকার হতে অপসারিত হয়ে এবং চিড়িয়াখানার কেইজ এর ভিতর দেখছি। আমরা গনতন্ত্রের নামে হামাসকে ইসরাইলী অস্ত্র নির্মাতার গিনিপিগ হতে দেখেছি। আর বাংলাদেশে জামায়াত আর শিবিরের দিকে তাকালে, পুলিশের কোলে চড়ে বিচারলয়ে যাওয়া মুসলিম দের দেখলে - গণতন্ত্রকে আর যাই হোক মোস্ট সুবিধাবাদী, মোস্ট কনভেনিয়েন্ট, মোস্ট ইউজফুল মুসলিম নির্যাতনের যন্ত্র ছাড়া -অন্য কিছু মনে হয়না ভাই।
যদি কোন কারনে আপনার মনে উদয় হয় - বাংলাদেশে কিংবা মুসলিম প্রধানদেশে গনতন্ত্র ইম্যাচূউরড - তাই অমন চিত্র।
তাহলে বলবো আপনি মিসৌরীর রিসেন্ট কালো যুবক হত্যার ঘটনাটি অবলোকন করুন, বিচার বিশ্লেষন করুন। কিভাবে শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে, কিভাবে বন্দী করা হচ্ছে। আপনি যদি ওয়েস্টার্ন কোন দেশে থাকেন এবং চিন্তা করার সুযোগ পান - তবে দেখবেন গনতন্ত্রের নামে কিভাবে এ্যানস্লেইভমেন্ট নিশ্চিত করা হয়েছে, মানুষকে কিভাবে অনুভূতিহীন মেশিন বানানো হয়েছে - নরওয়ের খুনের ব্যাকগ্রাউন্ড এ্যানালাইসিস করুন, ওকলাহোমা ঘটান বিচার করুন, স্কুল শুটিংসমূহ বিচার বিশ্লেষন করুন।
অথচ আল্লাহর বই ও হাদীস পড়লে এটা পরিষ্কার ই হয় - মুসলিমদের কাজ ই হল আল্লাহর পথে - অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামর্থ্যানুযায়ী কনপ্রনটেশানে যাওয়া - এবং এ উছিলায় মরলেই সাকসেস আর বেঁচে থাকলেও রিওয়ার্ড। আপনি তাওরাতেও তাই পাবেন, ইন্জিলেও তাই। কিন্তু আমরা কনপ্রন্টেশানে যেতে পারছি না। গনতন্ত্রের ছেলে মেয়ে নাতি ও নাতনি ক্যাপিটালিজম, কনজুমারিজম, সেল্পসেন্ট্রিক ইনকাম ও এক্সপেনডিচার সহ ভদ্র, অমায়িক এর এক নতুন ইলুইশান আমাদেরকে আকড়ে ধরেছে।
আর ম্যাক্রো লেভেল এ প্রতিবেশী দেশ কি ভাববে, কিভাবে রিএ্যাক্ট করবে, আন্তর্জাতিক গুড বুকে আমার সংগঠনের নাম কোথায় উঠবে, শামীম ওসমান, বেনজির, মানিক টাইপ লোকেরা বুঝি আমাদেরকে সাইজ করে ফেলবে - এমন কত কিছুই না হিসাব নিকাশ করি এই গণতন্ত্রের বাতাবরনে। কিন্তু আল্লাহকে আল্লাহর নির্দেশকে সেভাবে আর সামনে আনতে পারিনা - যেভাবে আনতে চাই।
দুঃখিত লিখাটি বেশী লম্বা হয়ে যাবার জন্য। শেষ মেশ একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করবো। দেখুন ২০০১ সালে আমেরিকা পৃথিবীর সব চাইতে পাওয়ারপুল দেশ, নাথিং ইক্যুয়ালস টু ইট। তারা বললো বিন লাদেন টুইন টাওয়ার ভেংগেছে। তাকে তাদের হাতে তুলে দিতে মোল্লা ওমর কে আদেশ দেওয়া হল।
মোল্লা ওমর গনতন্ত্র, আমেরিকা, ন্যাটো, সিকিউরিটি কাউন্সিল ইত্যাদিকে সিম্পলী ফেরাউন জ্ঞান করলো আর আল্লাহর সুপ্রিমিসিকে ধারন করে কোরানহাদীস অনুসারে বললো - দয়া করে আমাদেরকে প্রমান দিন প্রথমে। আমেরিকা প্রমান দিলনা - আফগানিস্থানকে ধুলায় মিশিয়ে দিল।
রেজাল্ট - মুসলিম আইনানুযায়ী - আমেরিকা অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষের হত্যাকারী হল। মোল্লা ওমর একজন নিরাপরাধ মানুষকে (যেহেতু কোন কালেই আমেরিকা কোন প্রমান উপস্থাপন করতে পারেনি) বাচিঁয়ে সারা মানবতাকে বাঁচালো।
অন্যদিকে জেনারেল মোশাররফ - গনতান্ত্রিক নিয়ামানুযায়ী কোন প্রমান ছাড়াই নিজেকে আমেরিকার কাছে সোপর্দ করলো এই যুক্তিতে যে - পাকিস্থানের নিরাপরাধ মানুষের জীবন রক্ষার্থে আর বিনিময়ে মুজাহিদীন নামক অল্প কিছু মুসলিম হত্যার বিনিময়ে।
বিচারদিনের সম্ভাব্য রেজাল্ট বিবেচনায় বলুন - গনতান্ত্রিক টা রাইট ছিল - না কি মোল্লা ওমর এর ইসলামিক টা রাইট ছিল।
চিন্তা করে দেখুন - আমাদের দেশে আমরা নিরাপরাধ কাদের মোল্লাকে গনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক হওয়ায় বাঁচাতে পারিনি।
বিষয়: রাজনীতি
১৬১৬ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার মতে শাসনব্যবস্থায় আদিযুগ থেকে এখনও খুব একটা পরিবর্তন হয় নি, বরঞ্চ বলতে গেলে একদম আদিকালের ব্যবস্থাই রয়েছে।
আদিকালের রাজাদের যুগে, রাজ্যের একদল মানুষ নির্যাতিত হতো আর রাজা এবং তার সাথের দল নির্যাতন করতো, কখনো কখনো নির্যাতিত দল সংঘবদ্ধ হয়ে রাজা এবং তার দলকে উৎখাত করে নিজেরা রাজ্য দখল করে নতুন রাজা বানিয়ে নিতো অথবা পাশের এলাকার আরেক রাজার দল ঝাপিয়ে পড়ে রাজ্য দখল করে নিতো, এখানে দেখা যায় দু’দল সুবিধাকাঙ্খী মানুষ মারামারি করতো ক্ষমতার জন্য আর নিরীহ কিছু প্রজা বসে বসে দেখতো অথবা যুদ্ধের-সময় এ থেকে দূরে থাকতো। এসব রাজত্বগুলোয় কখনো হয়তো ধর্মের বিধান থাকতো অথবা অন্য বিধান থাকতো, আর ক্ষমতার এ দন্দ্বের জন্য সে বিধানের আলোকে রাজ্য চলছে না ইস্যু দিয়েই যুদ্ধের সূত্রপাত হতো।
সমাজতান্ত্রিক বা কথিত-গণতান্ত্রিক যুগেও একই, দু’দল মানুষ ক্ষমতার দ্বন্দে বিভিন্ন ইস্যু বানিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়ে ক্ষমতা দখল করেছে এর সাথে একটা বিষয় শুধু যোগ করেছে – ভোট। এটা কিন্তু রাজাদেরর আমলেও ছিলো, তাকে কেউ গুলিবাট বা লটারী বলতো, রাজ্যের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা গুলিবাট-লটারী ব্যবহার করতো। সে গুলিবাট এর প্রচলন তখন ব্যালট পদ্ধতি না থাকায় সবাই মৌখিক-ভোট এর মাধ্যমে দিয়েছিল তাই সবাই গুলিবাট-লটারীর ফল সবাই মেনে নিতো। আমার মনে হয় এরকমভাবেই ক্ষমতালোভীরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিজেরাই মৌখিক-ভোট এর মাধ্যমে পুরোনো গুলিবাট-লটারীর সিষ্টেমকে আপডেট করে ভোট এর ব্যাপারটা নিয়ে এসেছে – যাতে সাধারণ মানুষকেও তাদের সম্মতিদানের অধিকার দিয়ে তাদেরকেও দু’ কথা শুনিয়ে চুপ রেখে নিশ্চিন্তে ক্ষমতা ব্যবহার করা যায়।
সবই মূলত রাজ্য/রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা এবং সে ক্ষমতা আর এ নিয়ে দুই দলের দন্দ্ব। এখন দেখুন সেই রাজাদের আমলে এবং সমাজতান্ত্রিক যুগে– রাষ্ট্রের মালিক কিন্তু রাজা/সমাজতান্ত্রিক-নেতারাই ছিলো, তারাই সব ব্যবস্থাপনা চালাতো, রাজারা দেশের মালিক হিসেবে কর আদায় করতো আর সমাজতান্ত্রিকরা সাধারণ মানুষের শ্রমের বেনিফিট সেন্ট্রালী-এ্যাকুমুলেট করতো। এখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াও দেখেন রাষ্ট্রের মালিক আজও সেই সরকার বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষই, এরা রষ্ট্রের সমস্ত ভূমির মালিক জনগন/প্রজা রাষ্ট্র থেকে সে ভূমি লীজ নেয় এবং তাতে বসবাস করে, আবাদ করে, ব্যবসা করে। লীজ-রেন্ট বা খাজনা/কর দেয়া বন্ধ করে দিলেই জনগণ/প্রজার কাছ থেকে সেটা কেড়ে নেয়া হয়।
মূলত আমার হিসেবে গণতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক-রাজতান্ত্রিক সব একই বিষয় এবং রূপও বলতে গেলে একই, শুধুমাত্র নতুন করে প্রবর্তন হওয়ায় মানুষের বুঝতে একটু সময় লাগতো/লাগছে।
কিন্তু রাষ্ট্রপতি কিংবা সরকার প্রধান যখন ইসলামী বিধিবিধানের আলোকে স্রষ্টার কাছে একাউনটেবল হন এবং যখন বুঝেন তার এই পাওয়ারপুল অবস্থান - তার কোন যোগ্যতার জন্য নয় - বরং আল্লাহর দেওয়া আমানত - তখন তিনি মাইল্ড হন, নরম হন এবং জনসেবায় ভ্রত হন।
আমার মূল আলোচনায় আমি আসলে যেটা বলতে চেয়েছিলাম - তা হল ধর্মীয় আকিদা ও শরীয়া কখনোই আজকের গণতন্ত্রের সাথে যায় না। দুটো কন্ট্রাডিক্ট করে। ধন্যবাদ।
আসলে কাঁটা বনে কখনো আপেল ফলে না। দিনদিন শুধু কাঁটা বড় হয়। ইসলামের অবস্থাও তাই। পশ্চিমারা কবেই মুসলিম মুল্লুক থেকে গাঠ্ঠি গোল করে চলে গেছে। কিন্তু মুসলিম মুল্লুকে আল্লার ইসলাম আপেল ফলাতে পারেনি। অথচ ২য় মহাযুদ্ধের পারমানবিক বোমার ধ্বংসস্তুপ থেকে আজকের জাপান কোথায় চলে গেছে। জার্মানী, ইটালী, ফ্রান্স, ভিয়েৎনাম, চীন......... আজকে কোথায়? অথচ মুসলিমরা এখনো শয়নে স্বপনে পশ্চিমা ক্লু খুঁজে, দর্জ্জালের আগমন অনুভব করে।
আক্ষেপ, ১ম মহাযুদ্ধের ১০০ বছর পরও মুসলিমরা জার্মান, ফ্রান্সের প্যারালাল একটি খেলাফত রাষ্ট্র গঠন করে পশ্চিমাদের দেখাতে পারল না।
২।অথচ আল্লাহর বই ও হাদীস পড়লে এটা পরিষ্কার ই হয় - মুসলিমদের কাজ ই হল আল্লাহর পথে - অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামর্থ্যানুযায়ী কনপ্রনটেশানে যাওয়া - এবং এ উছিলায় মরলেই সাকসেস আর বেঁচে থাকলেও রিওয়ার্ড।
হাঁ ভাই, মুসলিমরা এ কাজটি নিপুন ভাবে করছে। সুন্নিরা শিয়া মসজিদে, শিয়ারা সুন্নি মাসজিদে বোমা মেরে ইসমালী রিওয়ার্ড/সাকসেস এর পাহাড় নির্মান করছে বটেই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ।
এ বইটা ইমরান সাহেবের সাইট থেকে নামানো যায় নাই, সেখানে ৫০ টাকায় একটা ঠিকানা থেকে কিনতে বলেছে। অন্য একটা সোর্স থেকে নামিয়েছিলাম - এ বইয়ের ইংরেজি ভার্সনটা কি ৪৯ পৃষ্ঠারই?
দারুন লিখেছেন ইমরান সাহেব, মার্ক্সের দ্যা ক্যাপিটাল এবং ফিশারের কিছু বই এবং লেখা পড়ে অনেক প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খাইতো – সেসবের প্রশ্নের অনেকগুলোরই জবাব এসেছে এখানে।
আর Jerusalem in the Quran এর বাংলা ভার্সন উনার সাইটেই পেয়েছি – সেটা মনে হয় ঠিকই আছে ২৮৪ পৃষ্ঠার।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এ রিসোর্স সম্বন্ধে আমাকে অবগত করানোয়।
কিন্তু এই ভদ্রলোকের বক্তব্য ও লিখা আমাকে অনেক সময়ই অলটারনেটিভ ভাবনায় ভাবিত করে - আর তাদের একধরনের কনসোর্ট পাওয়া যায় - এই যা - আল্লাহ ভাল জানেন।
মানি ইন ইসলাম, রিবা ইন ইসলাম টাইপের বই গুলো চটি টাইপের - খুব বড় না। এ বই গুলো মূলতঃ কোন ইমিনেন্ট ইস্যুর উপর প্রশ্ন করার কারনে উনি লিখেছিলেন।
আশা করি এই বইগুলো আপনাকে ফারদার কোন মৌলিক লিখা লিখতে উৎসাহিত করবে।
জাজাকাল্লাহ খায়ের।
আর মুসলিম খলীফা টুকটাক যা অবশিষ্ট ছিল হয় কাফেরদের কাছে পরাজিত হয়ে ধ্বংস হয়েছে না হয়তো খেলাফতের নামে রাজতন্ত্রের সূচনা করেছে!ফলাফল লোকে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করা শুরু করলো যা আমাদের এদিকেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে!শুরুতে সকল আলেমরাই তা বর্জন করলেন!সেই ভোট বর্জনের তথা রাষ্ট্রীয়নীতি বর্জনের ঢেউ লাগলো শিক্ষানীতিতে,অর্থনীতিতে,চিকিতসানীতিতে,বাণিজ্যনীতিতে,সমাজনীতিতে,রাজনীতিতে তো বটেই! ফলাফল হল সমাজের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো মুসলিমদের হাতছাড়া হয়ে গেল,সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো চলে গেল বিধর্মী নয়তো মুনাফেকদের হাতে,অর্থনীতি চলে গেল তাদের হাতে,যেই বিজ্ঞানের মূল ছিল মুসলিমেরা আর ইউরোপে ছিল নিষিদ্ধ সেগুলোর হর্তাকর্তাও রাতারাতি হয়ে গেল অমুসলিমেরা!
আর কোরআন হাদীস জানা মুসলিমেরা নিজেদের স্বেচ্ছায় বন্দী করে নিল মসজিদের কোণায়,রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে হয়ে পড়লো বেখবর এবং ফলাফল আজ দেখাই যাচ্ছে সমাজের কোন অংশে কোরআন-হাদীসের জ্ঞ্যান সম্পন্ন লোকেদের অবস্থান নেই বললেই চলে,কোরআন-হাদীস চর্চাকারীদের ভবিষ্যত হয়ে পড়েছে পাড়ায় মিলাদ পড়ানো আর কেউ মারা গেলে কোরআন খতম দেয়া যা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সেটাই বাস্তবতা !
ধীরে ধীরে সেক্যুলার শিক্ষানীতির কারণে আর সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ট্রাক ভিন্ন হয়ে যাওয়াতে তৈরী হতে লাগলো শুধু সূরা ফাতেহা আর ১০ সুরা জানা মুসলমান!পরবর্তীতে তৈরী হতে লাগলো শুধু জুমু'আর নামাজ পড়া মুসলমান যারা সূরা ফাতেহার অর্থ জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,দুয়ায় কুনু'তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,তাশাহুদের অর্থ কি জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,এমনকি অযূর ফরজ কয়টি জিজ্ঞাসা করলে বলে তাও জানিনা!
সমগ্র অর্থনীতি চলে গেল সূদী ব্যবস্থাপনায় যার থেকে বের হওয়ার রাস্তা নেই বললেই চলে,জীবণের কোন না অংশে জড়িয়ে পড়তে হবেই সমাজে বেঁচে থাকতে হলে!
সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ আলেমরা সিদ্ধান্ত নিলেন এর থেকে পরিত্রান চাইলে অবশ্যই রাষ্ট্রনীতিতে ঢুকতে হবে তা এখন যেই পদ্ধতিতেই থাকুক না কেন,ঢুকতে হবে শিক্ষানীতিতে,ঢুকতে হবে অর্থনীতিতে!রাসুল সাঃ মক্কায় ইসলাম প্রচার করেছেন কাফের জালিমদের পরিচালিত সমাজ ব্যবস্থার অধীনেই,তাদের দেয়া বিচারের রায় মেনেই ৩ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল যা আজকে কারাগার হয়েছে!তায়েফের ময়দানে রাসুল সাঃ এর দিকে বৃষ্টির মত পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে,দান্দাল মুবারক শহীদ হয়েছে কিন্তু বিনিময়ে রাসুল সাঃ একটি ফুলের টোকাও দেননি!সুতরাং পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকেই কাজ করতে হবে!
বলেছিলেন যে রাসুল সাঃ কে রাজা হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তিনি মানেননি,কিন্তু যেটা উল্লেখ করেননি তা হল তার বিনিময়ে রাসুল সাঃ কে আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার বাদ দিতে হবে যার মানে হচ্ছে নিজের ব্যক্তিগত জীবণ থেকেই ইসলামকে দূরে সরিয়ে দেয়া,সমাজের প্রশ্নতো বহু পরে!তা রাসুল সাঃ মানেননি! কিন্তু যেখানে নিজের ঈমান আকীদাকে ঠিক রেখে ইসলাম প্রচার করা গিয়েছে সেখানে রাসুল সাঃ কোন কার্পণ্য করেননি যার উদাহরণ হুদাইবিয়ার সন্ধি!
আজো যদি প্রচলিত ব্যবস্থায় রাজনীতি করতে গেলে নিজের জীবণেই শিরকে লিপ্ত হতে হয় তবে সেই রাজনীতি জামায়াত করে নাই,করছে না,ইনশাআল্লাহ করবেও না যার প্রমাণ জামায়াতকে বলা হয়েছিল সকল ক্ষমতার উতস জনগণ এই কথা মেনে নাও কিন্তু জামায়াত মানেনি!জামায়াতকে ক্ষমতার লোভ দেখানো হয়েছে বিনিময়ে ঈকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব থেকে দূরে সরে মসজিদের কোণায় বসে জিকির করো সমস্যা নাই,জামায়াত মানেনি,সংসদে মুজিব কিংবা অন্য কারো ছবির সামনে মাথা নত করতে বলা হয়েছিল জামায়াত নেতারা তা করেনি,জামায়াত নেতাদের ফাঁসির কাষ্ঠে নেয়া হচ্ছে ঐ ইসলাম প্রচারের দায়ে,কসাই বানানো হচ্ছে ঐ ইসলামকে প্রতিষ্ঠি করার আন্দোলন করার জন্যেই জামায়াত তাগুতের কাছে মাথা নত করেনি,জামায়াত নেতাদের বলা হচ্ছে প্রাণ ভিক্ষা চাও রাষ্ট্রপতির কাছে,সেদিনের ঘটনা জামায়ত নেতাদের কেউ আজো তা করেনি!
শুধু যা করছে জামায়াত তা হচ্ছে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার ভিতর থেকেই একটি বিপ্লব ঘটাতে চাচ্ছে যার নাম ইসলামী বিপ্লব!জামায়াতের উদ্দেশ্য কোন গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করা নয়,কোন সমাজতন্ত্র,পুজিবাদ,মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠিত করা নয় বরঞ্চ উদ্দেশ্য আল্লাহর সৃষ্ট এ জমিনে আল্লাহর আইনকে প্রতিষ্ঠিত করা যার মাঝেই ঐ গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র হেন তন্ত্র তেন তন্ত্র সকল তন্ত্রের সকল ভালো গুণগুলোই রয়েছে!
ধন্যবাদ।
আসলে গণতন্ত্রের রয়েছে অনেক রূপ। যেমনঃ
Anticipatory, Athenian, Consensus, Deliberative, Demarchy, Direct, Economic, Grassroots, Illiberal, Inclusive, Liberal, Messianic, Non-partisan, Participatory, Radical, Representative, Representative direct, Republican, Social, Sociocracy, Soviet, Totalitarian....
সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের একক কোন সংজ্ঞা নেই, একেক জন একেক ধরনের সংজ্ঞা দিয়েছেন।
যারা গণতন্ত্রকে হারাম বলেন তারা শুধু একটি সংজ্ঞাই জানেন, আর তা হল-
“গণতন্ত্র হল জনগণের সরকার, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার, এবং জনগণের জন্য গঠিত সরকার”
অতএব, গণতন্ত্র হারাম!
কিন্তু এটাতো শুধু আব্রাহাম লিঙ্কনের (Abraham Lincoln) বক্তব্য।
তিনি তার দুমিনিটকাল স্থায়ী ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বরে প্রদত্ত গেটিসবার্গ বক্তৃতায় বলেন :That Government of the people, by the People, for the People, shall not perish from the earth.
আমি যদি বলি সঙ্গীত হারাম না হালাল? কি উত্তর দেবেন?
সঙ্গীতের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা হচ্ছে- "গীত,বাদ্য ও নৃত্যূ - এই তিনটিকে একত্রে সংগীত বলে।" এটা বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার বইতে উল্লেখ করা হয়েছে (গীতং বাদ্যং তথা নৃত্যং ত্রয়ং সঙ্গীতমুচ্যতে)। এই সংজ্ঞামতে সঙ্গীত হারাম। তা যে ধরনেরই হোক।
কিন্তু সঙ্গীতের আরও একটি সংজ্ঞা হচ্ছে - "স্বর ও তালবদ্ধ মনোরঞ্জক রচনাকে বলা হয় সংগীত।" এই সংজ্ঞানুযায়ী শর্তসাপেক্ষে তা হালাল হতে পারে।
তেমনি গণতন্ত্র আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রতিষ্ঠিত কোন মতবাদ নয়। ইসলামের যে অংশটুকু গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয় তাকে আমরা ইসলামী গণতন্ত্র বলতে পারি। যেমন সঙ্গীতের যে অংশটুকু ইসলামী অনুশাসন লংঘন করে না, তাকে আমরা ইসলামী সঙ্গীত বলতে পারি।
গনতন্ত্র শব্দে জটিলতা পরিহারে এভাবে চিন্তা করা যেতে পারে।
১.বিয়ে অনেক ধর্মে আছে। কিন্তু ইসলামে বিয়ের রুলস আলাদা । বিয়ে অন্য ধর্মে আছে বলে আমরা বিয়ে শব্দটা ইউজ করবনা সেটা সহীহ হতে পারেনা। রুলস ভিন্ন হতে হবে বা ইসলামী হতে হবে।
২. কোন অমুসলিম মুসলিম হলে বডি স্ট্রাকচারে কোন চ্যাঞ্জ হয়না। চিন্তা বিশ্বাস আমলে পরিবর্তন হয়। ঠিক তেমনি গনতন্ত্র শব্দটির প্র্যাকটিসে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে কোন সমস্যা নাই।
৩. ব্যাংক শব্দটি ইসলামে নাই। সুদ পরিহার করে মুদারাবা , বাইয়ে মুরাবাহা, বাইয়ে সালাম, ইজারা , মুশারিকা পদ্বতি এপ্লাই করে চললে ব্যাংক শব্দটি কোন সমস্যা সৃষ্টি করছেনা।
৪. গনতন্ত্র শব্দটি জেনা, মদ , জুয়া , সুদ , ঘুষ এর মত কোরআন ঘোষিত কোন হারাম শব্দ নয়।
৫. গনতন্ত্র শব্দটি কোন ধর্মের ওয়ার্ডও নয়।
৬. কে ভোটাধিকার পাবে তা ইসলামী কোর্ট নির্ধারন করবে। পরামর্শের বেলায় সাক্ষী(ভোট) দেয়ার অধিকার যদি আপনি সবাইকে দিবেননা বলে মনে করেন।
৭.আর কারা ভোটে প্রার্থী হতে পারবে তা ইসলামী গার্ডিয়ান কাউন্সিল বিবেচনা করে নির্ধারন করে দেবে। ইসলামী যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হবে তাদেরকে সাক্ষী বা পরামর্শ করার যোগ্য মনে করতে হবে। সাধারন ভোটাররা নেতা নির্বাচনের অধিকার পাবে মাত্র। কোন বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নয়। বড় সিদ্ধান্ত নেবে শুরা বা পার্লামেন্ট।
৮. কোরআন বিরোধী যে কোন আইন তা এমনিতেই বাতিল ঘোষিত হবে যদিও বা তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত থাকে ।
৯. সকল ক্ষমতার উতস জনগণ নয় বরং আল্লাহ এ কথা লিপিবদ্ধ থাকবে
১০. নাম নয় ...শব্দ নয় কি প্র্যাকটিস করছি বা মানছি তাই আসল বিষয়।
১১. এরপরও কেউ যদি মনে করে গনতন্ত্র নয় অন্য কোন টার্মিনোলজি ব্যবহার করবে তাতেও আমার কোন আপত্তি নেই।
আর জামায়াত গণতন্ত্রকে আদর্শ হিসেবে মানছে না স্রেফ মানজিলে মাকসুদে পৌছাবার সিড়ি হিসেবেই দেখছে!জামায়াতের জন্মলগ্ন থেকেই আদর্শ ঐ কোরআন,ঐ হাদিস তার বাইরে কোন নিজামী,সাঈদী,ওবামা,বুশ,লাদেন নয়!ব্যাপারটা ঠিক এইরকম একজন লোক ট্রেন ষ্টেশনে পৌছেই দেখেন যে ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "ক' যা ট্রেনের একেবারে শুরুতে রয়েছে,তাই তিনি শেষ বগি "ট' তে উঠে পড়লেন এবং মনে রাখলেন যে তার লক্ষ্য হচ্ছে "ক" বগি!
ঠিক সেই সময়ে আরেকজন লোক তড়িঘড়ি করে ষ্টেশনে ঢুকলেন আর দেখতে পেলেন যে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে এবং গতি একটু একটু করে বাড়ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "খ',তিনি তখন তার নাগালের চাইতে কিছুটা দূরে থাকা "ট' বগিতে না উঠে ঐ "খ' বগি লক্ষ্য করে দৌড়াতে লাগলেন,আগের সেই ব্যক্তি তাকে বললেন যে "ট' তেই উঠে পড়েন!তিনি বললেন যে না এই বগি আমার জন্য না,এতে উঠা হারাম,হারাম,হারাম!কিছুক্ষণের মাঝেই তার নাগালের মাঝে থাকা ঐ শেষ বগি "ট' ও তাকে ছেড়ে অনেকদুরে চলে গেল!তিনি ঐ ট্রেনই মিস করে ফেললেন আর বিড়বিড় করতে লাগলেন হারাম,হারাম,হারাম!আর আগেই সেই ব্যক্তিটি তখন ব্যস্ত ট্রেনের ভিতরে "ট' বগি থেকে "ক' বগির দিকে আগানোতে!
১। গনতন্ত্রে ধনী দরিদ্র সবাইকে সিদ্ধান্ত নেবার প্রক্রিয়ায় (নেতা নির্বাচনে) ইক্যুয়াল করা হয়েছে, অর্থাৎ ১ জন মানুষ ১ টি ভোট - গণমানুষের বিচার বিবেচনাবোধ এর ক্যাপাসিটিকে ধর্তব্যে আনা হয়নি।
অথচ ইসলামে গনমানুষকে নেতা নির্বাচনে কিংবা কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায়ই সামনেই আনা ই হয়নি। বরং সবগুলো প্রিসিডেন্টই - শো করে লিডার - এক্সপার্ট ওপেনিয়ন নিয়ে (পরামর্শ করে - নিজে একক সিদ্ধান্ত নেয়।
২। গনতন্ত্রে মেজরিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অলওয়েজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় - চাই তা ঠিক হোক কিংবা কমপ্লিটলী বেঠিক হোক।
ইসলামে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্র আল্লাহ, রাসুল এর অর্ডার এবং তারপর ঐ আলোকে সবচেয়ে যৌক্তিক ও যথার্থ সিদ্ধান্তটি - যা নেতা নেন। উপস্থিত সভাসদরা বা এক্সপার্টরা পরামর্শ দেন, ভোট দেন না - কিন্তু সিদ্ধান্ত নেন নেতা। আবু বকার রাঃ এর একক সিদ্ধান্ত - ওসামা বিন যায়েদ রাঃ কে ওফাতের পরে আর্মীর লিডার রাখা, খালেদ সাইফুল্লাহ রাঃ কে বিয়ে পরবর্তী অভিযোগের পরেও আর্মির লিডার রাখা, ওসমান রাঃ এর সিদ্ধান্ত ওনাকে অবরোধ করে রাখা লোকদের বিরুদ্ধে মদীনার মানুষ যেন অস্ত্র না ধরে ইত্যাদি ইত্যাদি।
৩। গণতন্ত্রে সুরা বা সংসদে আলোচনাক্রমে মেজরিটির ভোটে যে সিদ্ধান্ত - তাকে আইন বা শরীয়া করা হয়েছে - যা ঐ ভূখন্ডে বা সংগঠনে আর সবাইকে মানতে বাধ্য করা হয়েছে।
কিন্তু ইসলামে কোরান ও হাদীসকে শরীয়া নির্ধারক ধরা হয়েছে।
গণতন্ত্রের নিয়মানুযায়ী এবং ফ্যাক্টস অনুযায়ী - যে কোন বিষয়ের বিল সংসদে বা সুরায় তোলা যায় হিয়ারিং এর জন্য এবং মেজরিটির ভোটের মাধ্যমে হালাল জিনিসকে - হারাম করা যায় (বাংলাদেশে যেমন ১৮ বছরের নীচের মেয়েকে বিয়ে করা হারাম), আবার হারাম জিনিসকে হালাল করা যায় (বাংলাদেশে যেমন সুদকে হালাল করে দিয়েছে)।
৪। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আপনি মোস্ট অনৈতিক, মোস্ট ইনহিউম্যান কাজ করলে পরেও - তা আইনের চোখে, অফিশিয়ালী বৈধ। যেমন ইরাকে ডব্লিউএমডির নামে লক্ষ লক্ষ মানুষ খুন করা বৈধ। গুয়ানতানামো বে তে বিচারহীন ভাবে মানুষ আটকে রাখা ও বৈধ। বাংলাদেশে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামীকে ফাঁসী দেওয়ার জন্য কেবিনেট মিটিং ও সংসদে আইন পাশ করে - সে আইনে হাইকোর্ট এর মাধ্যমে কাদেরমোল্লাকে হত্যা করাও বৈধ।
অন্যদিকে ইসলামে অমন কোন কিছু কোনভাবেই বৈধ করা যাবে না - পৃথিবীর সব মানুষ চাইলেও না।
৫। গনতন্ত্র - সরকার বা লিডারকে জনগনের কাছে একাউন্টেবল করে - ফলে লিডার বাধ্য হয় - জনগনের উন্নতির জন্য কাজ করতে, জনগনকে সন্তুষ্ট করতে - তা সে চুরি করে হোক, ডাকাতি করে হোক, মিথ্যা বলে হোক, তথ্য গোপন করে হোক - জনগনকে সন্তুষ্ট করতে চায়।
কিন্তু ইসলাম - সরকার বা লিডারকে শুধু মাত্র আল্লাহর কাছে এ্যাকাউন্টেবল করে - সো সে সব সময় আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে। জনসন্তুষ্টি, তার কাছে গৌন হয়। আল্লাহর জন্য সে জন সমষ্টিকে ম্যাসাকার যেমন করতে পারে - আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সে ঐ জনগনের কাছে নিজের মাথায় - খাবার ক্যারী করে নিয়ে যেতে ও পারে, এমনকি পশু পাখিদের নিরাপত্তা নিয়েও সে সন্কিত হয়।
৬। আপনি আপনার লিখায় যুক্তি দিয়েছেন - রাজা বাদশা, খলিফা কিংবা প্রেসিডেন্ট প্রাইম মিনিস্টার ইত্যাকার ভুলের জন্য, কিংবা নিয়ম না মানার জন্য কিংবা অন্যায় অবিচার করার জন্য - ইসলাম কিংবা গণতন্ত্র দায়ী নয় - কারন ঐ নেতারা অন্যায় করে অবিচার করে। ইসলাম কিংবা গণতন্ত্র দুই জায়গায় ই ভাল ভাল কথা লিখা আছে, জুলুম কিংবা অবিচার করতে তো বলে নি।
এ যুক্তিটার উত্তর আসলে বেশ কয়েকভাবে বোধগম্য করানো যেতে পারে। আমি তাতে না যেয়ে আপনাকে একটা উদাহরন দেই?
উদাহরনের ভূমিকাঃ গনতান্ত্রিক সিস্টেমে সরকার প্রধান অফিশিয়ালী অবৈধ কাজ করে না, করতে পারেনা। তারা যা কিছু করে সবই বৈধ ও আইন সিদ্ধ ভাবে করে - প্রয়োজনে আইন তৈরী করে হলেও আইনানুযায়ী করে।
তো ধরুন ২০১০ সালে ক্যাম্প ডেভিড এ আমেরিকান ও ব্রিটিশ সরকার প্রধান চায়ের টেবিলের আলোচনায় হঠাৎ করেই গাদ্দাফীর প্রসংগ এলো। একজন বললেন - গাদ্দাফী আমাদের তুলনায় অনেক ভাল আছে - ৩০ বছরের ও বেশী ক্ষমতায়, কি পাওয়ার ও কি প্রতাপ। তার উপর রিসেন্টলী ইউনাইটেড আফ্রিকা তৈরীতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যা আলটিমেটলী আমাদের দেশ ও জাতির জন্য বিপদজনক। অন্যজন বললেন তাইতো, আমি দেখি এ নিয়ে কেবিনেটে আলোচনা করবো। প্রথমজন বললো আমিও আলোচনা করবো। মাস যেতে না যেতেই আলোচনা সমাপনান্তে পার্লামেন্ট এ বিল গেলে। পার্লামেন্ট এই মর্মে সিদ্ধান্তে এলো - গাদ্দাফী ইউ এস ও ইউ কে এবং ইন্টারন্যাশানাল কমিউনিটির জন্য থ্রেট। সো জাতিসংঘকে ডাকা হল - সিকিউরিটি কাউন্সিলকে জানানো হল - মেজরিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী - নো ফ্লাই জোন হল। পার্লামেন্ট টাকা বরাদ্ধ দিল - আদেশ অনুযায়ী দেশ ও পৃথিবী রক্ষার জন্য সিআইএ, এমআই ফাইভ - কিছু দল বল নিয়ে বেনগাজীতে গিয়ে তাদের লিবিয়ান এজেন্টদের টাকা দিল, প্ল্যান দিল, অস্ত্র দিল, কমিউনিকেশানস টুলস দিল - ফলাফল গাদ্দাফীকে খুন করা হল এবং লিবিয়াকে নিজেদের আর একটি লাভজনক কোম্পানী / দুধেল গাভী বানানো হল - যেখান হতে টাকা আসছে - পাশ্চাত্যের সরকার চলছে - উন্নয়ন হচ্ছে। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই, সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে, জনগনের স্বতঃস্ফুর্ত দেয়া টাকায় প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী লিবিয়াকে টাইরান্ট মুক্ত করে জনগনের জন্য এবং দেশের জন্য বিদেশ হতে কাড়ি কাড়ি ডিভিডেন্ড আনছে, রাস্তাঘাট হচ্ছে, জব ক্রিয়েশান হচ্ছে।
লক্ষ করুন - আইনের কোথাও বলা হয়নি, মিডিয়ায় জানানো হয়নি - লিবিয়া হতে তেল চুরি করে এনে আমেরিকার কিংবা ব্রিটেনের পার ক্যাপিটা ইনকাম ১০% আরো বাড়ানো হবে ইত্যাদি বরং আমেরিকানদের নিরাপত্তা বাড়াতে, আমেরিকানদের ফ্রীডম রক্ষা করতে এ কাজ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ইসলামের কোন কিছু দিয়ে তথা ইসলামকে টুলস বানিয়ে আপনি না পারবেন নিজের জনসাধারনের জন্য অমন ডাকাতি করে টাকা আনতে, না পারবেন অমন একজন গাদ্দাফীকে খুন করতে।
সো আমেরিকা কিংবা বৃটেন পৃথিবীতে একটা অবিচার ও করতে পারবে না - যদি না তারা তাদের এ্যাকশানকে গনতন্ত্রের চাঁচে বৈধ করে না নেয়।
৭। আপনি বলেছেন 'আসলে গণতন্ত্রের রয়েছে অনেক রূপ'। তথা গণতন্ত্রের রয়েছে অনেক সংজ্ঞা। এটা লিংকন সাহেবের সংজ্ঞায় সীমাবদ্ধ নয়। আমি তাতে পুরোপুরি একমত।
কারন ডায়াগনোস করলে পাওয়া যায় - গণতন্ত্র ডিসিপটিভ - এটা গণমানুষের সাথে ভাওতাবাজী, জালিয়াতি ও চরমতম প্রতারনা। সুতরাং প্রতারনা করার জন্য এর প্রয়োজন অনেক রকমের সংজ্ঞা, অনেক রকমের টাইপ, অনেক রং। যখন যাকে যা বলে বুঝানো যায়, যা বলে বশ রাখা যায়। অন্যদিকে -
ইসলামের একটিই মাত্র রূপ। এটির একটাই মাত্র টাইপ। এটির একটিই মাত্র সংজ্ঞা (আল্লাহর কাছে পরিপূর্ন ভাবে সাবমিশানের স্টাইল) এটি মৌলিক। চৌদ্দশত বছর ধরে - কোন রকমের দূর্বলতা নেই, কোন রকমের গোপনীয়তা নেই, কোন রকমের সীমাবদ্ধতা নেই।
৮। আপনার উদাহরন সমূহ - সংগীত, বিয়ে, ধর্মীয় কনভারশান ইত্যাদিঃ অন্য ধর্মে আছে কি নেই - এ চিন্তা কিংবা বিচার বিবেচনা করে কি একজন মুসলিম তা ব্যবহার করে কিংবা এক্সেপ্ট বা রিজেক্ট করে? - আমার জানামতে আমরা সংগীত, বিয়ে, কনভারসান ইত্যাদিকে ততটুকু এক্সেপ্ট করি - যতটুকু ইসলাম আমাদেরকে এক্সেপ্ট করার সুযোগ দিয়েছে। পরিষ্কার ভাষায় ডিফাইন করে দিয়েছে।
গনতন্ত্র কি তাই, অনুরূপ? মোহাম্মদ সঃ কি আমাদেরকে গনতন্ত্রের 'কোর প্রিন্সিপালিটি'র (আমি ১ হতে ৫/৬ পয্যন্ত উল্লেখ করেছি এই কমেন্ট এ) আদৌ কিছু এক্সেপ্ট করার জন্য দিয়েছিল, বলেছিল কিংবা নূন্যতম হিন্টস দিয়েছিল?
ধন্যবাদ আপনার চিন্তা শেয়ার করার জন্য। আসসালামুআলাকুম।
কিন্তু ট্রেন স্টেশানে এসে 'ক নায়ক' যদি দেখে ট্রেনটি আসলে কোথাও চলে যাচ্ছে না - যাবে যাবে করছে এবং অতিরিক্ত চাকচিক্যে ভরা, আলোতে ঝলমলাচ্ছে, প্রতিটি বগীই এয়ার কন্ডিশান্ড, সুমধুর বাধ্য বাজছে, এয়ার ফ্রেশনারের মন মাতানো ঘ্রান ছড়াচ্ছে আর সুটেড বুটেড লোকেরা তাকে শুধু ডাকছেই না, হাতে স্যান্ডউইচ ধরিয়ে দিতে চাইছে, জোর করে ট্রেনে তুলে দিতে চাইছে - সে কি যাচাই বাচাই না করে ঐ ট্রেন এর ১ নম্বর বগীতে উঠে পড়া ইসলামিক হবে?
আমার তো মনে হয় ফোরকান এসেছে সত্য ও মিথ্যার প্রভেদ করতে। আমরা কষ্ট করে গণতন্ত্রকে লিটমাস টেস্ট করতে পারি এবং তারপরে আকড়ে ধরতে পারি, কিংবা ফেলে দিতে পারি - তাই না?
ছেলে মেয়েরা একে কাজে লাগিয়ে অবাধ যৌনতায় মেতে উঠেছে!কোরআন হাদীস চর্চার পরিবর্তে তারা ব্যস্ত সানি লিওনের পর্ণ মুভি দেখতে,ইসলাম চর্চার পরিব্ররতে তারা ব্যস্ত নেট থেকে গান ডাউনলোডে,রাসুল সাঃ কিংবা সাহাবাদের জীবণী চর্চা না করে ব্যস্ত অ্যাঞ্জোলিনা জোলি,শাকিরা আর ক্যাটরিনাদের জীবণের গল্প শুনতে!
এরকমের ইন্টারনেটের অপকারীতা যদি বলা শুরু করি হাজারো অপকার বলা যাবে!এখন কেউ যদি শুধুমাত্র সে সকল অপকারী দিক বর্ণনা করে ইন্টারনেট ব্যবহারকেই হারাম ঘোষণা করে দেয় তাহলে কি হবে?
অথবা রাসুল সাঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি বলে তাকে যদি বিদা'ত ঘোষণা করে বসে তাহলেই বা কেমন হবে যদিও কোরআন হাদিসের কোথাও নেই যে নেট ইউজ করা হারাম ?
সেদিনতো আমি বলবোই যে; না আমি দেখেছি এই নেটকে কাজে লাগিয়ে সাদাচোখে ভাই কিভাবে নিজে ইসলাম বুঝতে এবং অন্যকে ইসলাম বুঝাতে ব্যবহার করেছেন!
আমিতো প্রতিবাদ করে বলবোই যে, না সমাজের ১০ জনের ভিতর বাকি ৯ জন নেটে সানি লিউনকে দেখে সময় পার করলেও আমি ব্যস্ত ছিলাম নেটের মাধ্যমেই কোরআন-হাদীস চর্চায়,আমি ব্যস্ত ছিলাম দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ইসলামী মনীষিদের রচিত ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নে যা শুধুমাত্র ঐ নেটেই সহজলোভ্য,আমিতো সেদিন প্রতিবাদ করে বলবোই যে,না আমি এই নেটের মাধ্যমেই রাসুল সাঃ এর সেই হাদিস ;"তোমরা একটি মাত্র আয়াত জানলেও তা প্রচার করো' তা চর্চায় কিছুটা হলেও ব্যস্ত ছিলাম!
ঠিক তেমনি গণতন্ত্রের নানা কেচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা করে কেউ একে হারাম উপাধী দিয়ে দিতে চায় তখন আমরা এর প্রতিবাদ করবোই যে না ইহা গণতন্ত্রের দোষ নয়,ইহা যারা সেটির চর্চা করছেন তাদের চরিত্রের দোষ যা তাদেরকে আপনি খলীফা বানিয়ে দিলেও তারা করবে!
গণতন্ত্রে আপনি আইন হিসেবে যেমন রামায়ণকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ঠিক তেমনি আইন হিসেবে কোরানের আইনকেও প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ রয়েছে যেখানে গণতন্ত্র আপনাকে বাধা দিবে না!
আর সকল আইনের উৎস কোরআনকে করলে তখন অটোমেটিক্যালই গণতন্ত্রের যত সমস্যা যেমন সংসদ যা পাশ করবে তাই মানতে হবে তা কোরআন বিরোধী হলেও,নিজের ধান্দা অনুযায়ী আইন করে বৈধভাবে অন্যায় করবে,অধিকাংশ লোক কোরআন বিরোধী আইন চাইলেই পাশ হয়ে যাবে,সকলের জবাবদিহিতা থাকবে জনগণের প্রতি ইত্যাদি আরো নানা কিছু সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে একটি পদক্ষেপেই!
কেননা যখনি আপনি ঘোষণা করবেন যে আজ থেকে সৃষ্টি যার আইন চলবে তাঁর,সকল ক্ষমতার উৎস রাব্বুল আ'লামীন এবং কোরআনই হচ্ছে রাষ্ট্রের সংবিধান তখন কোরআন বিরোধী কোন আইন সংসদে পাশতো দূরের কথা উত্থাপনের আগেই কোরআন বিরোধী বলে বাতিল হয়ে যাবে!এমনি করে সকল কিছুই পরিবর্তনযোগ্য।আর জামায়াত সে চেষ্টাই করে যাচ্ছে!
আর তাইতো জামায়াত গণতান্ত্রিক দল হলেও সমাজের আরো ৯টা দলের মত বিশ্বাস করে না যে সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ,জামায়াতের স্লোগান তাই সেই সৃষ্টিলগ্ন থেকেই সৃষ্টি যার আইন চলবে তাঁর!জামায়াতের মটো আল্লাহর আইন চাই,সৎ লোকের শাসন চাই!
জামায়াতের বিশ্বাস যে ঐ ৯টা ছেলে নেটকে খারাপ কাজে ব্যবহার করলেও ঐ আপনি একজন সাদা চোখে ভাই যেমন নেটকে ব্যবহার করছেন ইসলামের জন্য ঠিক তেমনি গণতন্ত্রকেও বাকি ৯টা দল,৯টা জাতি,৯টা দেশ নিজেদের স্বার্থোদ্বারে কাজে লাগালেও আমরা একে ইসলামের কাজে লাগিয়ে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের দিকেই এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ!
গণতন্ত্র কোন মতবাদ নয় বরঞ্চ ইহা একটি সিস্টেম,যেই সিস্টেমের মাঝে থেকেই সেক্যুলাররা তাদের ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে,সমাজতান্ত্রিকেরা তাদের মতবাদ সমাজতন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে,তবে আমি আপনি মুসলিম হয়ে কেন ইসলামকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবো না ?
মানব জীবনে নেতার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ প্রতিনিয়ত তার বৈষয়ীক উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য কোন না কোন মাধ্যম অবলম্বন করে থাকে। মানব জীবনে নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান কোনক্রমেই অস্বীকার করা যায় না। আর এ গুরুত্ব অনুধাবন করেই মহানবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন-“তোমাদের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি একত্রে অবস্থান একজনকে আমীর বা নেতা বানিয়ে নাও”।(সুনানে আবি দাউদ, ২য় খণ্ড, পৃ:-৩৪; মুসনাদে আহমাদ, ২য় খণ্ড, পৃ-১৭৭,)
আর নেতা কিভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন সে ব্যাপারে সূরা আল-ইমরানের ১৫৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেনঃ
فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللّهِ لِنتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لاَنفَضُّواْ مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللّهِ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ
আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন।
অর্থাৎ পরামর্শ গ্রহন করেই আল্লাহর উপর ভরসা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন,সুতরাং পরামর্শেরই একটি নতুন পদ্ধতি হতে পারে ভোটিং সিস্টেম যেহেতু এখন জনসংখ্যা অনেক বেশি যা রাসুল সাঃ করেননি সত্য কিন্তু কোথাও তো আর হারামও ঘোষণা করেননি!এরকম আমরা এখন যোগাযোগের প্রয়োজনে উড়োজাহাজ ব্যবহার করছি যেখানে রাসুল সাঃ যোগাযোগের জন্য সর্বোচ্চ উট ব্যবহার করেছেন!এধরনের আরো হাজারো উদাহরণ দেয়া যেতে পারে!আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণই সিদ্ধান্ত নেয় কি হবে রাষ্ট্রের এরকম একটি দেশ দেখান আমাকে,প্রতিটি রাষ্ট্রই ঐ রাষ্ট্রপ্রধানের ইচ্ছানুযায়ীই পরিচালিত হচ্ছে,সকল সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই আসছে সেই সিদ্ধান্ত জনগণের জন্য কল্যাণমুখীই হোক আর অকল্যাণমুখীই হোক!
জনগণ কোন রাষ্ট্রপ্রধানও নির্বাচিত করার ক্ষমতা রাখে না,তারা নির্বাচিত করছে তাদের লোকাল নেতা!অধিকাংশ দেশেই রাষ্ট্রপ্রধান কয়েকজনের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হচ্ছেন যারা সংসদীয় পরিভাষায় সাংসদ হিসেবে পরিচিত আর ইসলামী পরিভাষায় শুরা সদস্য হিসেবে পরিচিত!তারপরেও আরো যা যা পরিবর্তন করার দরকার রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে থাকলে তখন সবই করা সম্ভব!
তাই আবারো বলছি,নাম নয়...শব্দ নয় বরঞ্চ কি প্র্যাকটিস করছি বা মানছি সেটাই আসল বিষয়।আর সেকারণেই যখন আপনি বিভিন্ন জালিম লোকদের চরিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে গণতন্ত্রের অসৎ চরিত্র বর্ণনা করবেন তখন একইসাথে এর মাধ্যমে যে ভালো কিছুও করা সম্ভব একে ব্যবহার করে তার উল্লেখ থাকাও বাঞ্চনীয়!
অন্যথায় একপাক্ষিক কথায় লোকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় থেকে যেসকল ইসলামী দলগুলো ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে যাচ্ছে তাদের সম্পর্কে অনেকেরই ভূল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হবে যদিও সেই ইসলামী দলগুলো বাকি ৯টা গণতান্ত্রিক দলের মত ইসলামকে বাদ দিয়ে শিরকের ভিতর নিজেদের গা ভাসিয়ে দিচ্ছে না,তারা সকল ক্ষমতার উৎস জনগণকে মনে করছে না,কোরআন ব্যতীত আইনকে তাদের জীবণের লক্ষ্য হিসেবে ঘুণাক্ষরেও ভাবছে না!
অন্যথায় অনেকেই কিছু পাপাচারী শাসকের দুঃশাসনের গল্প শুনতে গিয়ে গণতন্ত্রের গল্প শুনে ইসলামী দলগুলো থেকে দূরে সরে পড়ে এবং নিজেদেরকে জেএমবির মত নানারকম ফেরকায় সংশ্লিষ্ট করে ফেলে যারা সমাজে ইসলামের উপকারতো বহু দূরের কথা অপকারেরই শেষ রাখে না!
তাই বেটার আমরা ইসলামী শাসনের উপকারীতা বর্ণনা করি যাতে লোকে সে সম্পর্কে বুঝে,জানে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সহায়তা করে!
ধন্যবাদ সাদাচোখে চাই আপনার সাথে অনেক মূল্যবান আলোচনার জন্য!
আপনি যে অভজেকটিভ সেট করেছেন - তার সাথে আমি একমত এবং অবশ্যই চাই তা হোক।
প্যারালালী আমি চাই - মোস্ট নলেজেবল ওয়ার্ল্ড ক্লাস আলেম ওলামারা - এ ইস্যুতে মৌলিক রিসার্চ করুক - এবং আপনার ভাষায় আমাদের জন্য একটা 'সিস্টেম' সেট করুক অথবা ভ্যালিডেট করুক।
আপনার সাথে আলোচনা করে নতুন কিছু আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরী হল ও কিছু ভাল আর্গুমেন্ট জানলাম - অন্য কোন আলোচনায় আবার দেখা হবে - ইনশাল্লাহ্। ভাল থাকবেন। আসসালামুআলাইকুম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন