কৃত্রিম জাতীয়তাবোধের জন্য কাঁদবো? লড়বো? নাকি সত্যিকার জাতীয়তাবোধ।
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১৬ মার্চ, ২০১৪, ০৭:৫০:৪৬ সকাল
স্রষ্টা-দ্রোহী শক্তি আমাদের পিতা আদম আঃ কে সত্যিকার ফলের পরিবর্তে কৃত্রিম ফলের প্রতি আকর্ষন বাড়িয়ে আস্বাদন করিয়েছে।
আর আজকে সেই শক্তি গনতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ, স্যেকুলার, গ্লোবালাইজেশান ইত্যাকার চমকপ্রদ নাম ও তত্ত্ব ধারন করে, মিডিয়ার ডানায় ভেসে ভেসে আমাদের মন, মাথা ও মগজে সত্যিকার জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে, সত্যিকার সংবিধানের পরিবর্তে এক কৃত্রিম জাতীয়তাবাদের ধারনা বসিয়ে দিয়েছে - এক গোজামিলের সংবিধানকে পবিত্র বলে আমাদের কাছে চালাতে চাইছে।
আর ভুল করে সোনা ভেবে কাঁচ তোলার মত সত্যিকার জাতীয়তাকে ভুলে, সত্যিকার সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ স্যেকুলার রূপী মানবতার শত্রুদের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে কৃত্রিম জাতিস্বত্তা ও সংবিধানের জন্য নিজেদের জান, মাল, অধিকার ও পরিবার পরিজনকে কোরবানী করছি - পরিনতি হিসাবে না পাচ্ছি এই জগতের শান্তি, আর না আছে আগামী জগতে (পরকালে) শান্তির নিশ্চয়তা।
আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে, বিবেক বিবেচনাকে কাজে লাগিয়ে দেখতে হবে স্যেকুলার রূপী এসব মানুষের ধ্যান ধারনা অনুযায়ী আদৌ কি সত্যিকারভাবে আমরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারক ও বাহক? আদৌ কি বাংলাদেশের সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হব? না কি বুঝার চেষ্টা করবো, এই জাতীয় জাতীয়তাবাদ মানবতা ও আল্লাহর শত্রুদের তৈরী করা এক ধরনের বিবেদ সৃষ্টিকারী, গ্রুপিং সৃষ্টিকারী, শাসন ও শোষন করার জন্য সৃষ্ট পদ্ধতির অংশ - যা মূলতঃ কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট ও আমাদের মধ্যে পন্য ব্রান্ডিং এর মত করে প্রোথিত করা হয় এবং হয়েছে।
আপনি একটু চিন্তা করলেই দেখবেন ১৯৪৭ এর আগে নেহেরু, জিন্নাহ টাইপ স্যেকুলার রা আমাদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের কথা বলে হত্যা, নির্যাতন এর মুখে ঠেলে দিল। আর ১৯৪৭ এর পরে আইয়ুব, ইয়াহিয়া ভুট্টো, মুজিব পাকিস্থানী জাতীয়তাবাদের কথা বলে একই ভাবে নিগৃহীত, অপমানিত করলো। আর ১৯৭১ এর পর হতে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কথা বলে গুম, খুন, হতে শুরু করে হেন কোন অপমান-অপদস্থতা নাই - যা করতে বাকি রাখা হয়েছে।
আমরা এই ধর্মনিরপেক্ষ স্যেকুলারের কাছ হতে রাউন্ড দ্যা ক্লক শুনি 'পবিত্র! সংবিধান রক্ষা'র নামে দুনিয়ার কুৎসিত ও জগন্যতম ব্যাংক লুট, ঘুষ, দূর্নীতি, ধর্ষন, হত্যা, গুম, ক্রসফায়ার সহ সমস্ত সাক্ষাৎ শয়তানের কাজকে হালাল/বৈধ আর ওয়াজ মাহফিল ফতোয়া হতে শুরু করে স্রষ্টার উপাসনা, বন্ধনা সহ কোরান হাদীস ইত্যাকার বই পড়া হারাম/অবৈধ।
আপনি আমি কি একবার ও ভাববো না, যে স্যেকুলার রা আমাকে, আপনাকে ৬০/৭০ বছরে ৩ বার জাতীয়তা পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে, আর মাত্র ৪২ বছরে ১৫ বার তথাকথিত পবিত্র! সংবিধানকে শিরোধার্য করতে বাধ্য করেছে - তারা আদৌ আস্থা সম্পন্ন মানুষ নয়, তারা মূলতঃ প্রতারকের চেয়েও নিকৃষ্টতম কোন অভিধায় অভিযুক্ত হওয়ার যোগ্য। তাদের তালে তাল মিলানো কি আমাদের আদৌ উচিত?
অথচ তার বিপরীতে আমরা দেখছি ১৪০০ বছর আগে মহান স্রষ্টা আমাদের বলেছে 'তিনি মোহাম্মদ সঃ এর মাধ্যমে বিশ্বকে এক নতুন জাতি উপহার দিলেন, যার নাম দিলেন 'মুসলিম/মুসলমান'। আর আজ ১৪০০ বছর পরেও আমরা দেখছি আমাদের এ জাতিস্বত্তার কোন নড়চড় হয়নি - বলা হয়নি আজ হতে তোমরা মুসলিম নও - তোমরা এক্স ওয়াই জেড কিংবা অন্য কিছু।
অন্য দিকে সেই স্রষ্টা আমাদেরকে দিয়েছেন চমৎকার এক সংবিধান - যা শুধু জাতীয়তাবোধের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিই নয় - তার সাথে দিয়েছে ব্যক্তিগত, সামাজিক, বৈশ্বিক ও পরকালীন বিষয়াদির গাইডলাইন। যা ১৪০০ বছরে পরিবর্তন করতে হয়নি, এ্যামেন্ডমেন্ট আনতে হয়নি, যার কোন প্যারালাল নেই - যার কোন সংযোজন, বিয়োজন কিছুরই প্রয়োজন নেই।
ইদানিং কালে ক্রিকেট উদ্ভোধন, ছায়াছবি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সেক্যুলার পূজারী এক একটি গ্রুপ (যার স্বার্থহানী হয় বা হয়েছে) হঠাৎ করেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়েছে, দিতে চাইছে। সে সাথে সাধারন মুসলিম জনগোষ্ঠি ও সে রব তুলছে - ঠিক যেভাবে আদম আঃ প্রতারিত হয়েছিল, বিশ্বাস করেছিল শয়তানকে।
তারা চাইছে আর একবার কৃত্রিম ঐ বাংলাদেশী জাতিসত্তার নামে আমাদের কে অস্থিতিশীলতায় ফেলে হত্যার শিকার করতে, চাইছে অস্থিতিশীলতার আড়ালে আমাদের মধ্য হতে আর একটি ক্রিমিয়া, পূর্ব তীমুর কিংবা সাউথ সুদান সৃষ্টি করতে, চাইছে হয়তোবা পূর্ব জার্মানীর ন্যায় তৃতীয় একটি দেশের সাথে এ দেশকে একীভূত করতে।
এমতাবস্থায় আমার আহ্বান, যদি আমাদেরকে জাতিস্বত্তার জন্য কোন আন্দোলন সংগ্রাম স্ট্রাগল কিংবা স্ট্রাইভ করতেই হয় তবে তা কৃত্রিম বাংলাদেশী জাতিস্বত্তার পরিবর্তে - মুসলিম জাতিস্বত্তার জন্য করতে শুরু করি। শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ তম পরিবর্তিত সংবিধানের পরিবর্তে কোরআনের জন্য শুরু করি। এতে করে নিশ্চিত আমরা এ দুনিয়াতে প্রতারিত হবনা আর পুরুষ্কার হিসাবে আমরা এ পৃথিবীতে যেমন আমার ও আপনার অধিকার ফেরত পাবো, সন্মান ফেরত পাবো ঠিক তেমনি পরকালের জন্যও আমাদের পুরুষ্কার নিশ্চিত হবে।
এতে করে ধর্মনিরপেক্ষ, স্যেকুলার, মুনাফিক, কাফের, মুশরিক যে অভিধায়ই আমরা আমাদের অধিকার হরনকারীদের ডাকি কিংবা চিহ্নিত করিনা কেন - আমরা তাদের সাথে বুঝা পড়া করতে যেমন স্বচ্ছন্দ্য বোধ করবো - ঠিক তেমনি অধিকার রক্ষায় ডিভাইন সাপোর্ট ও স্যালভেশান ও পাব।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এর কিছুটা নমুনা টি২০ কনসার্টে দেখা গেছে ।
যুদ্ধের সময় যারা সন্মুখ সমরে যুদ্ধ করেছে তারাও এদের মত এত গলা বাজি করে না চেতনা নিয়ে ।
তথাকথিত উটপাখিতুল্য এই চেতনাধারীরা সাধারন মানুষের ভাগ্য নিয়ে চিনিমিনি খেলাকে তাদের ব্যবসা বলে দেখছেন আর তাই বারবার সাধারন মানুষকে ফুটবলের মত এ পাশ হতে ওপাশে, এ কর্নার হতে ও কর্নারে লাথির আঘাতে ছুটতে হচ্ছে এবং হয়েছে আর স্বভাবিকভাবেই গলাবাজি থাক দুরের কথা গলা উঠাবার ই সুযোগ পাচ্ছেনা।
আজকে আপনারা-আমরা যারা ঐ সাধারন মানুষের কন্ট্রিবিউশানে ও সমর্থনে কোন না কোন লেভেল এর জ্ঞান আহরন করেছেন - তারা যদি তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে তাদের জন্য কিছু না কিছু করতে শুরু করে - নিশ্চিত তাদের ভাগ্য ফিরবে, তারা জেগে উঠতে পারবে - তাতে তাদের এ ফুটবল টাইপ ছুটাছুটি বন্ধ হবে। এবং তারা এ দুনিয়ায় যেমন শান্তি পেতে পারে তেমনি আগামী দুনিয়ায় ও।
ধন্যবাদ।
আমরা এই ধর্মনিরপেক্ষ স্যেকুলারের কাছ হতে রাউন্ড দ্যা ক্লক শুনি 'পবিত্র! সংবিধান রক্ষা'র নামে দুনিয়ার কুৎসিত ও জগন্যতম ব্যাংক লুট, ঘুষ, দূর্নীতি, ধর্ষন, হত্যা, গুম, ক্রসফায়ার সহ সমস্ত সাক্ষাৎ শয়তানের কাজকে হালাল/বৈধ আর ওয়াজ মাহফিল ফতোয়া হতে শুরু করে স্রষ্টার উপাসনা, বন্ধনা সহ কোরান হাদীস ইত্যাকার বই পড়া হারাম/অবৈধ।
আপনি আমি কি একবার ও ভাববো না, যে স্যেকুলার রা আমাকে, আপনাকে ৬০/৭০ বছরে ৩ বার জাতীয়তা পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে, আর মাত্র ৪২ বছরে ১৫ বার তথাকথিত পবিত্র! সংবিধানকে শিরোধার্য করতে বাধ্য করেছে - তারা আদৌ আস্থা সম্পন্ন মানুষ নয়, তারা মূলতঃ প্রতারকের চেয়েও নিকৃষ্টতম কোন অভিধায় অভিযুক্ত হওয়ার যোগ্য। তাদের তালে তাল মিলানো কি আমাদের আদৌ উচিত?
অথচ তার বিপরীতে আমরা দেখছি ১৪০০ বছর আগে মহান স্রষ্টা আমাদের বলেছে 'তিনি মোহাম্মদ সঃ এর মাধ্যমে বিশ্বকে এক নতুন জাতি উপহার দিলেন, যার নাম দিলেন 'মুসলিম/মুসলমান'। আর আজ ১৪০০ বছর পরেও আমরা দেখছি আমাদের এ জাতিস্বত্তার কোন নড়চড় হয়নি - বলা হয়নি আজ হতে তোমরা মুসলিম নও - তোমরা এক্স ওয়াই জেড কিংবা অন্য কিছু।
অন্য দিকে সেই স্রষ্টা আমাদেরকে দিয়েছেন চমৎকার এক সংবিধান - যা শুধু জাতীয়তাবোধের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিই নয় - তার সাথে দিয়েছে ব্যক্তিগত, সামাজিক, বৈশ্বিক ও পরকালীন বিষয়াদির গাইডলাইন। যা ১৪০০ বছরে পরিবর্তন করতে হয়নি, এ্যামেন্ডমেন্ট আনতে হয়নি, যার কোন প্যারালাল নেই - যার কোন সংযোজন, বিয়োজন কিছুরই প্রয়োজন নেই।
ইদানিং কালে ক্রিকেট উদ্ভোধন, ছায়াছবি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সেক্যুলার পূজারী এক একটি গ্রুপ (যার স্বার্থহানী হয় বা হয়েছে) হঠাৎ করেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়েছে, দিতে চাইছে। সে সাথে সাধারন মুসলিম জনগোষ্ঠি ও সে রব তুলছে - ঠিক যেভাবে আদম আঃ প্রতারিত হয়েছিল, বিশ্বাস করেছিল শয়তানকে।
তারা চাইছে আর একবার কৃত্রিম ঐ বাংলাদেশী জাতিসত্তার নামে আমাদের কে অস্থিতিশীলতায় ফেলে হত্যার শিকার করতে, চাইছে অস্থিতিশীলতার আড়ালে আমাদের মধ্য হতে আর একটি ক্রিমিয়া, পূর্ব তীমুর কিংবা সাউথ সুদান সৃষ্টি করতে, চাইছে হয়তোবা পূর্ব জার্মানীর ন্যায় তৃতীয় একটি দেশের সাথে এ দেশকে একীভূত করতে।
এমতাবস্থায় আমার আহ্বান, যদি আমাদেরকে জাতিস্বত্তার জন্য কোন আন্দোলন সংগ্রাম স্ট্রাগল কিংবা স্ট্রাইভ করতেই হয় তবে তা কৃত্রিম বাংলাদেশী জাতিস্বত্তার পরিবর্তে - মুসলিম জাতিস্বত্তার জন্য করতে শুরু করি। শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ তম পরিবর্তিত সংবিধানের পরিবর্তে কোরআনের জন্য শুরু করি। এতে করে নিশ্চিত আমরা এ দুনিয়াতে প্রতারিত হবনা আর পুরুষ্কার হিসাবে আমরা এ পৃথিবীতে যেমন আমার ও আপনার অধিকার ফেরত পাবো, সন্মান ফেরত পাবো ঠিক তেমনি পরকালের জন্যও আমাদের পুরুষ্কার নিশ্চিত হবে
৫০০% সহমত
কিন্তু এ নিয়ে আপনার থটস্ - আপনার সাবলিল ভাষায় শেয়ার করলে হয়তো অনেক পাঠকের চিন্তাধারায় স্বচ্ছতা ফিরে আসতো।
কিছুক্ষন আগে ইসলামী রাষ্ট্র উল্লেখ পূর্বক এক প্রশ্নের উত্তরে একজন ইসলামিক স্কলারকে বলতে শুনলাম, ওনার ৬০/৭০ বছরের পড়ালিখায় উনি ইসলামের কোন অথরিটিটিভ বইয়ে ইসলামী রাষ্ট্র নামে কিছুই পান নি। উনি যা পেয়েছেন তা খেলাফত প্রতিষ্ঠা - রাষ্ট্র নয়। খেলাফত ও রাষ্ট্র পুরোপুরি পৃথক দুটি কনসেপ্ট। খেলাফত এ ভূমির সার্বভৌমত্ব, আইনের উৎস ইত্যাদির পেছনে আছেন আল্লাহ ও কোরআন। আর রাষ্ট্রের কনসেপ্ট এ সার্বভৌমত্ব ও আইনের উৎস ইত্যাদির পেছনে আছেন জনগন! ও সংসদ/সাংবিধান।
ধন্যবাদ আবার ও।
সামনে এগুলোর বিস্তারিত বয়ান নিয়ে হাজির হবো। দোয়া করবেন আমার জন্য।
আপনার চিন্তাধারা পজিটিভ এবং উৎসাহব্যাঞ্জক। এ নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ায় প্রচুর কাজ হচ্ছে। সব কাজের মূলে ইসলামের শিক্ষা ও এ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স এর জন্য প্রচুর রিসার্চ ও প্রজেক্ট ছোট ও মাঝারী পরিসরে ব্যাক্তি ও সংগঠনের উদ্দ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। আশা করি আপনার উদ্দ্যোগটি - তাতে সাউথ এশিয়ান/বাংলাদেশ পারস্পেকটিভ যোগ করবে।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে আপনাকে শায়খ ইমরান হোসাইন এর 'জেরুজালেম ইন কোরআন' বইটি পড়তে উৎসাহিত করবো - যদি না পড়ে থাকেন। অথবা ইউটিউবে এর উপর ওনার বিস্তারিত আলোচনা শুনতে পারেন - তাতে আপনার লিখার ফাউন্ডেশানে নতুন কিছু উপাদান পাবেন। ধন্যবাদ আপনার চিন্তা শেয়ার করার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন