পর্ব - ১ 'খাযার' না মুখোশ পরা 'ইয়াজুজ ম্যাজুজ'? রক্ত আর লাশের উপর যাদের পথচলা। ক্ষমতা, সম্পদ ও বিশ্ব নিয়ন্ত্রন - যার (লুকানো) ইতিহাস।।

লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৩:৫৮:৫৭ রাত

প্রতিটি জাতিই তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি দূর্বল। সুযোগ পেলে সে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষনে ব্রতী হয়। অন্যের সাথে সে ইতিহাস ও ঐতিহ্য শেয়ার করতে কুন্ঠিত হয়না - অন্ততঃ সক্রিয়ভাবে লুকাতে চায় না।

এর একমাত্র ব্যাতিক্রম 'খাযার' জাতি। যারা মূলতঃ ছিল প্রচন্ড শক্তিশালী এক সাম্রাজ্যের অধিবাসী। যাদের সাথে সংশ্রব ছিলনা পৃথিবীর অপরাপর জাতি গোষ্ঠির। কোন কোন সূত্র বলেছে পারস্য ও বাইজাইনটাইন - উভয় সাম্রাজ্যই খাযার দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ন হয়েছিল। যুদ্ধে তারা প্রচন্ড রকমের নাস্তানাবুদ হয়েছিল খাযার দের হাতে।



মদীনায় যখন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত এবং পূর্বে ও পশ্চিমে সম্প্রসারনশীল - এমনি একটি সময়ে সম্পূর্ন অনাকাংখিতভাবে অতি দ্রুতলয়ে খাযার জাতি পেগান ধরনের ধর্ম ছেড়ে 'ইহুদী' ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। পাঠক মাত্রই জানেন যে, মুসা আঃ কে আল্লাহ 'বনী ইজরাইল' জাতির নবী হিসাবে পাঠিয়েছিলেন। আর বনী ইজরাইল হল ইব্রাহীম আঃ এর নাতি হজরত ইয়াকুব/ইজরাইল আঃ এর ১২ সন্তানের বংশধর - যারা হজরত ইউসুফ আঃ এর কল্যানে মিশরে বসবাস শুরু করে এবং ফারাও বংশের কাছে রাজত্ব হারালে দাসে পরিনত হয়। স্বভাবতঃই ইহুদীরা উল্লেখিত ১২ ট্রাইব এর বাহিরে ধর্ম সম্প্রসারনের জন্য কাজ করতো না, মানে ধর্ম প্রচার করতো না। এমতাবস্থায় 'খাযার' জাতি র ইহুদী ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়াটা স্বাভাবিক ছিলনা। তার উপর বাইজাইনটাইন, পারস্য ও উদীয়মান মুসলিম সাম্রাজ্যে ইহুদীদের এমন কোন পাওয়ার ছিলনা যে - খাযার রা প্রটেকশানের জন্য ইহুদী ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল।

দেখা যায়, ধর্মান্তরের পর হতে খাযার জনগোষ্ঠী দ্রুতলয়ে - খাযাররাজ্য ছেড়ে পশ্চিম উত্তর ও পশ্চিম দক্ষিন ইউরোপে ছড়িয়ে যায়। এর মধ্যে এ্যাডভান্সড খাযার রা স্পেন, ইউকে, ইটালী, ফ্রান্স, জার্মান ও রাশিয়ায় সেটেল হয় এবং কম এ্যাডভান্সড অংশ পোল্যান্ড সহ পূর্ব ইউরোপীয়ান দেশ সমূহে সেটেল হয়।



ছড়িয়ে পড়ার পর হতে খাযার জনগোষ্ঠী তাদের শিশুদের জন্য খাযার নামের বাহিরে - স্থানীয় একটি নাম দিত। প্রতিটি শিশুর খাযার নাম খাযার কমিউনিটি জানতো কিন্তু বাহিরের সমস্ত কাজে স্থানীয় নামে পরিচিত হত। খাযার রা তাদের স্বভাবগত চিন্তা, চেতনায়, ধ্যান ধারনায় স্থানীয়দের তুলনায় এতটাই উন্নত ছিল যে - অল্প সময়েই কোন সন্দেহের উদ্রেক না করে - তারা স্থানীয় নামে, স্থানীয় ব্যবসা বানিজ্য হতে শুরু করে প্রশাসন ও শাসনব্যবস্থায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পেরেছিল এবং স্থানীয় সমাজে মিশে গিয়েছিল। তাদের অন্যতম একটা কৌশল ছিল স্থানীয়মানুষদের তাদের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র রূপে উপস্থাপন করা কিংবা নিয়োগ দেয়া। এতে করে সাধারন মানুষ কখনো অনুভব করতো না কোন একটি প্রতিষ্ঠান তাদের নয় - এর মালিকানা অন্য কোন এক জাতির - যারা একই ধর্মের নয়, কিংবা একই বর্নের নয়, কিংবা একই সংস্কৃতির নয়।

ছড়িয়ে পড়ার পর হতে খাযার রা তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অন্য মানুষ হতে সবসময় লুকিয়ে নিজেদের ইহুদী হিসাবে পরিচয় দিত। আবার কেউ কেউ খৃষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে খৃষ্টান বলে পরিচয় দিত। আবার কেউ কেউ নিজেকে নিরেশ্বরবাদী বলেও পরিচয় দিত। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী খাযার রা সব সময়েই যুদ্ধের জন্য উন্মাদ ছিল এবং পুরো ইউরোপময় স্থানীয়দের কে উসকে দিয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধে লিপ্ত রাখে। এতে করে স্থানীয়রা যেমন অকাতরে মরছিল, দারিদ্রতা চরমতম রূপ লাভ করেছিল, অন্যদিকে খাযার রা আরো ঐশ্বয্যের অধিকারী হয়েছিল এবং রাজনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী হয়েছিল।

খাযার রা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সবসময়েই একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতো। এবং স্থানীয়ভাবে একে অপরকে সব সময় সাপোর্ট করতো সরকারী ও বেসরকারী ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পজিশান গুলো নিজেদের মানুষদের মধ্যে হাতিয়ে নিতে।

বেশ কিছু গবেষনায় দেখা যায়, ইউরোপের বড় বড় যুদ্ধের ঠিক আগে রহস্যজনকভাবে এমন একটি ইন্সিডেন্ট হত - আর সেই ইন্সিডেন্টকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে এমন বড় করা হত যে - সেই ইন্সিডেন্টকে কেন্দ্র করে দেশ সমূহ যুদ্ধে লিপ্ত হত।

একবার ইংল্যান্ডের এক বিখ্যাত খাযার - রাশিয়ার আর এক বিখ্যাত খাযার কে নিজস্ব ভাষায় লিখা চিঠি ও ডকুমেন্ট পাঠায়। পথিমধ্যে পত্র বাহক মারা যায়। এতে করে স্থানীয় প্রশাসন ঐ ডকুমেন্ট পায়। যা পড়ে পরবর্তীতে জানা যায় - উল্লেখিত ডকুমেন্ট গুলো পৃথিবীর মানুষকে শাসন করার উপায় সংবলিত। যা প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিদের কাছে প্রয়োজনীয় কিছু বলে মনে হয়নি। পরবর্তীতে এ ডকুমেন্ট সমূহ ইংল্যান্ডের সংগ্রহশালায় ছিল। ১৮০০ শতাব্দীতে কোন এক সময়ে একজন খাযার কিনা ঐ সংগ্রহশালার দায়িত্বশীল পদে নিয়োগ পান। এর অল্প সময় পর হতে ঐ ডকুমেন্ট আর দেখা যায়নি। এরা হল খাযার।

বিষয়: বিবিধ

২০৮৭ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

183718
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:০৪
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : ধন্যবাদ চুক চুক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩২
136392
সাদাচোখে লিখেছেন : পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:০৩
136430
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : Straight FaceGood Luck Good Luck Good Luck Good Luck
183746
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:৫৭
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : ভাল লাগলো, ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৩
136393
সাদাচোখে লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ উৎসাহ দেবার জন্য।
183779
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:২৬
সজল আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৩
136394
সাদাচোখে লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
191487
১৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:৪৭
মিজবাহ লিখেছেন :
ধন্যবাদ লেখককে গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট দেয়ার জন্য। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি........।
১৭ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৮
144270
সাদাচোখে লিখেছেন : ধন্যবাদ মিজবাহ ভাই। কয়েকদিনের মধ্যে লিখব।
222273
১৬ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:০৬
মিজবাহ লিখেছেন : আমার মনে হয় ইনশাআল্লাহ বলেননি বলে এতদিন পার হয়ে গেল ২য় পর্ব আমরা এখনো পেলাম না Happy
১৭ মে ২০১৪ রাত ০৩:৪৬
169801
সাদাচোখে লিখেছেন : ইনশাল্লাহ্‌। আশা করি এবার লিখতে পারবো। ধন্যবাদ।
255411
১৮ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৩৪
বুড়া মিয়া লিখেছেন : হুম, বানী ইসরাইল এর এ্যানালিষ্টরা অবশ্য ইউরোপ আর আপনার দেয়া ম্যাপের খাযারিয়া এলাকার দিকেই ইঙ্গিত করেছে।
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৪৮
199372
সাদাচোখে লিখেছেন : শেষ জামানা নিয়ে যে সব মুসলিম স্কলার রা গবেষনা করছেন - তাদের মধ্যে অনেকেই খাযারস্‌ দেরকে হয় ইয়াজুজ নয়তো মাজুজ বলে চিহ্নিত করতে চাইছেন। আবার কোন কোন স্কলার রা প্রথম ও দ্বিতীয় ইউরোপীয়ান যুদ্ধের মূল শক্তি দুটির পেছনে যারা কলকাঠি নেড়েছে তাদের একটিকে ইয়াজুজ আর একটিকে মাজুজ বলতে চাইছেন। আর তারপরই দেখিয়েছেন বা দেখাতে চেয়েছেন জার্মান অক্ষের মধ্যে যারা যুদ্ধটাকে বাধিঁয়েছে এবং সম্প্রসারিত করেছে তারা মূলতঃ খাযারস তথা কনভার্টেড ইয়াহুদী তথা নন বনী ইসরাইলী ইয়াহুদী।

একই ভাবে বৃটেনেও যারা কাজ করেছে তারা মূলতঃ খাযারস ও কনভার্টেড ইয়াহুদী।

অবশ্যই কেউই ডেফিনিট করে বলেন নি। সবাই কোরান ও হাদীসের উল্লেখ করে - কারেকটারসটিক্স আলোচনা করে থিউরী দাঁড় করিয়ে বলেছেন - আল্লাহই ভাল জানেন।
255798
১৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৫৩
কাহাফ লিখেছেন : দারুণ তথ্যময় উপস্হাপনার জন্যে আন্তরিক মোবারকবাদ ভাই,এ সম্পর্কে আরো পোস্ট চাই........।
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১৭
199607
সাদাচোখে লিখেছেন : একটু ফ্রী হলেই লিখবো, ইনশাল্লাহ্‌। ধন্যবাদ দুনিয়াবী ইস্যুর বাহিরে এসে - এই ইস্যুতে আগ্রহ প্রকাশ করার জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File