পাশ্চাত্যের কাছে আওয়ামীলীগ ছাড়া বিকল্প কই?
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:০৫:৪২ রাত
আজকে এটা প্রমানিত যে, শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশ্ব ও আঞ্চলিক মোড়লদের শতভাগ সেবা ও সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। আর এর বিনিময়ে বাংলাদেশ শাসন করার অলিখিত লাইসেন্স পেয়েছেন।
বাংলাদেশের মানুষ ও বিরোধীদল - নীতি ও নৈতিকতাহীন বিশ্বব্যবস্থায় আজ শুধু বন্দীই হয়নি বরং আপাদমস্তক দাসত্বের শৃংখলে জড়িয়ে পড়েছে।
এ অবস্থা শুধু বাংলাদেশের নয়। বাংলাদেশের বাহিরে আরো অনেক দেশের অবস্থাও কম বেশী অনুরূপ। অন্যান্য দেশের মানুষের সাথে এ দেশের মূল পার্থক্য এই যে - এখানে সিস্টেমেটিক্যালী ব্যাক্তি মানুষকে দাসের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে তার রক্ত মাংশ যেমন চুষে নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনি তার মাথা মগজ ও হৃদয়টাকে দাসবৃত্তিতে আসক্ত করে ফেলা হচ্ছে।
একটা উদাহরন দিয়ে ব্যাপারটা বিশ্লেষন করার চেষ্টা করি। বর্তমান বাংলাদেশে রপ্তানীতে নিযুক্ত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ৫০০০, যা প্রায় ৪০ লক্ষ বাংলাদেশীকে খাটায়। এ সকল বাংলাদেশী সপ্তাহে ৬ দিন গড়ে ১০ ঘন্টা করে কাজ করে। তার মানে মাসে ২৬০ ঘন্টা কাজ করে গড়ে আয় করে ৮,০০০ টাকা বা ১০০ ডলার।
বাংলাদেশের উৎপাদিত এ গার্মেন্টস এর ৬০% ই ইউ এবং প্রায় ৪০% ইউএস ও কানাডাতে রপ্তানী হয়। সে ক্ষেত্রে মূলতঃ এই ৪০ লক্ষ বাংলাদেশী মাসে ২৬০ ঘন্টা হিসাবে সর্বোমোট (৪০ লক্ষ * ২৬০) ১০৪ কোটি শ্রম ঘন্টা - ই ইউ, ইউ এস ও কানাডাকে দেয়। যেখানে উক্ত দেশগুলোতে ১০৪ কোটি শ্রম ঘন্টার নুন্যতম মূল্য ১,২৪৮ কোটি ডলার, সেখানে এই খাতে উক্ত দেশগুলোকে বর্তমানে আলটিমেটলী ব্যয় করতে হয় মাত্র ৪০ কোটি ডলার।
তার উপর এ সমস্ত দেশ সমূহ উক্ত শ্রমিকদের শ্রম পাবার জন্য কোন অবকাঠামোগত ব্যয় তথা থাকার জন্য ঘর ও সংশ্লিষ্ট রাস্তাঘাট, কোন পাবলিক হেলথ ব্যয় কিংবা আইনশৃংখলা রক্ষা ব্যয় ইত্যাদি কিছুই করতে হয়না। উল্টো এ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যয় বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশের ঐ সকল মানুষকে - যারা এই শ্রম হতে কোন বেনিফিট পাচ্ছে না। অথচ মাত্র ২০০ বছর আগেও এ সব দেশ আফ্রিকা হতে জাহাজ ভরে যে সব মানুষকে স্লেভ হিসাবে নিয়েছিল - তাদের জন্য বাসস্থান, চিকিৎসা, আইনশৃংখলা ইত্যাদিতে ব্যয় করতে বাধ্য ছিল।
এছাড়া ঐ সমস্ত দেশ সমূহ তার দেশের ভোক্তা শ্রেনীর জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে সস্তায় কাপড় চোপড় সাপ্লাই দিতে পারছে - যার পরিনতিতে এ খাতে একজন মানুষের ব্যয় কম হচ্ছে বিধায় সে ঐ উদ্বৃত্ত টাকা অন্য কোন জীবন যাপন মানোন্নয়ন পারপাসে ব্যয় করতে পারছে।
এমন একটি অবস্থায় বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ কিংবা অবকাঠামোগত অর্থনৈতিক এ্যাকটিভিটি হতে এ দেশসমূহের বখরা বা লাভালাভের হিসাব, সাথে ঐ সব দেশের পন্যের মনোপলি নিশ্চিত করা সহ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সমর্থন ও লাভালাভের মূল্যমান এর হিসাব - ইত্যাদির কথা বাদ দিলেও বলুন কেন ঐ সব মুনাফাখোর রা, ঐ সব সুবিধা বাদী মোড়ল রা - বর্তমান সরকারকে সাপোর্ট না করে অন্য কাউকে করবে? যেখানে এই সরকার এর দ্বারাই শুধু সম্ভব নিরবিচ্ছিন্নভাবে এসকল মোড়লকে এই সেবা দিয়ে যাওয়া।
ইতোমধ্যে এটা প্রমানিত - অন্য কোন দল সরকার গঠন করলে আওয়ামীলীগ এর আন্দোলন সংগ্রামকে প্রতিহত করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় - যা কিনা তাদের আয়ের এ সাপ্লাই লাইনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
বিষয়: বিবিধ
১১১৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা বাংলাদেশীরা আমাদের সত্যিকার নির্ভরশীলতা যার উপর - তাকে ভুলে এখন পাশ্চাত্যের এমন সব শোষকের উপর আমাদের আশা ও ভরসা শপে দিয়েছি। আপনাকে ধন্যবাদ।
শুধু দরকার দজ্জাল, শয়তান ইত্যাকার মত দুনিয়াবী বিষয়াদিকে শুধুমাত্র চর্ম চোখে না দেখে - চর্ম চোখ ও মেনর চোখকে ব্যবহার করে দুনিয়াবী বিষয়াদীকে দেখা ও বিচার বিশ্লেষন করা। আল্লাহ মুসলমানদের চর্মচোখের পাশাপাশি মনের চোখ ও দেখতে বলেছেন। ধন্যবাদ।
তারপরও নির্দ্বিধায় বলা যায় এই গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটা রহমত।
আর আমরা মুসলমান যতদিন আল্লাহর গোলামী না করবো ততদিন আমাদেরকে মানুষের গোলামি করতে হবেই কোন সংন্দেহ নাই।
আর আমাদের দেশে আওয়ামীলীগই হচ্ছে যোগ্য সরকার। এর থেকে ভালো সরকার আশা করাটাও বোকামি যতদিন আমরা ঠিক না হই।
১, ইলিশ মাছ কিনতে গেলাম ৭৫০ গ্রাম এর কথা বলে ৬০০ গ্রামের কিছু উপরে মাছ দিয়ে আমার হাতে ধরা পড়ে গেলো।
২, বাসে যদি ভাড়া না জানেন অবশ্যই প্রতারিত হবেন নিঃসন্দেহে।
৩, প্রতিটা স্কুল এখন ব্যাবসার বড় একটি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক জোড়জবস্তি করে প্রাইভেট পড়াবে।
৪, মোটকথা সবজায়গায় এই অনৈতিক অবস্থা।
এই অনৈতিকতা থেকে আমাদেরই ফিরে আসতে হবে আমাদের জনগনকে ফিরে আসতে হবে তাহলেই আমারা ভালো শাষক গোষ্ঠীর আশা করতে পারি।
জনাব পৃথিবীর উন্নত কোন দেশ কি এই ওজনে কম দেয়ার চিন্তা করতে পারে?
আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল, কোন দেশের মাথা - মগজ পঁচে গেলে, সে দেশের পুরো শরীরে যেমন করে পঁচন ধরবে বাংলাদেশের বেলায় তাই হয়েছে - অমন করে পঁচে গলে যাচ্ছে।
আমার দেশের ৪০ লক্ষ মানুষকে কয়েকটি দেশ - কোন রকম দায় দায়িত্ব না নিয়ে ক্রীতদাশের ন্যায় ব্যবহার করলে - কোন যুক্তিতে আমি ঐ খাতকে আশীর্বাদ বলবো? তার উপর এই দাশ সরবরাহের পরিনামে আমি পাচ্ছে
১। অপরিকল্পিত শহরমুখী মাইগ্রেশান
২। অতিরিক্ত বস্তি ও গনসাস্থ্যের বিপর্যয়।
৩। মায়ের স্নেহ ও ভালবাসা বঞ্চিত এক বিরাট শিশুশ্রেনী - যারা আলটিমেটলী ক্রাইম ও মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
৪। অতিরিক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন তথা তাদের বেতন ভাতা ব্যায়।
অথচ - এই ৪০ লক্ষ এ্যাবসুলুট স্লেইভ - ফ্রী ম্যান হিসাবে যদি দেশের জন্য দিনে ১ স্কয়ার ফুট মাটির রাস্তা ও বানাতো তবে মাসে ৪০*১*৩০ > ১২ কোটি স্কয়ার ফুট রাস্তা পেত দেশবাসী। ৪০ লক্ষের অধিক বাচ্চা সুষমভাবে বড় হত, কোটি মানুষের ও বেশী মানুষ তুলনামূলক পরিচ্ছন্ন বাসস্থানে থাকতো, তুলনামূলক কম ক্রাইম ও কম ড্রাগ ট্রেড হত।
ধন্যবাদ।
তিনি আমাদেরকে আজকের কাফের মুশরিকদের এই আগ্রাসনের ব্যাপারেও সচেতন করেছিলেন। রাসুল সঃ ও আমাদের কে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন।
সুতরাং আমাদেরকে এই জামানা সম্পর্কে জানতে হবে - যেখানের মূল উপজীব্য ছিল রিবা, ছিল প্রতারনা, ছিল বিশ্বাসীদের প্রতি উপহাস ও নির্বিচারে হত্যা, ছিল মুসলমানদের জন্য শ্বাসরূদ্ধকর অবস্থা তৈরী হবার কথা, সে সাথে ছিল আল্লাহর পরিবর্তে অন্যের উপর (দজ্জালের উপর) ডিফেন্ডেন্সী সৃষ্টি করার কথা।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন