অসহযোগের বিকল্প নেই - ১
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ০৭ মে, ২০১৩, ০৫:২২:৪৮ সকাল
সরকারের গত ৪ বছরের কথাবার্তা, আচার আচরন, স্বেচ্ছাচার ও নির্মমতার মাত্রা - ইতোমধ্যেই গণ মানুষের কাছে শেখ হাসিনার এ সরকারকে অপরিচিত ও ভিনদেশী বলে বিমূর্ত করেছে।
অন্যদিকে সচেতন ও সমাজের উচুতলার মানুষ অনেক আগেই শেখ হাসিনার এ সরকারকে ভিনদেশী সরকারের লোকাল এজেন্ট হিসাবে আইডেন্টিফাই করেছিল। কিন্তু সচেতন মানুষ সমাজের উচুতলার হলে স্বভাবতঃই গাঁ বাঁচিয়ে চলে। আর তাই তাদের কোন ভূমিকা দেশ মাতৃকার জন্য পাবলিকলী নেই।
এর মধ্যে লিটারেলী এক্সেপশনাল ছিলেন মাহমুদুর রহমান। তিনি চেষ্টা করছিলেন এজেন্টরূপী এ সরকারের স্বরূপ উন্মোচনের পাশাপাশি, ভীনদেশী সরকারের ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা শাসন ও শোষন যন্ত্র এবং সে সাথে তাদের কর্ম কৌশলকে জনসন্মুখে এক্সপোজ করতে। আর সে সাথে তিনি জনগনকে বোঝাতে চাইছিলেন, কিভাবে তারা শোষিত ও নিষ্পেষিত হচ্ছে, কিভাবে তাদের শক্তি সমর্থ্যকে বিলীন করা হচ্ছে, কিভাবে তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতকে ধ্বংশ করা হচ্ছে এবং দিনকে দিন কিভাবে তা আরো বেশী হবে এবং ছড়িয়ে পড়বে।
ওনার এই উদ্যম ও কার্যক্রম এর পরের লাইনে বেশ কয়েকজন ই আছেন। যারা যথাসম্ভব গাঁ বাচিয়ে ইশারা ইংগিতে জনগনকে বলছেন এবং লিখছেন। সাধারন জনগনের বড় একটি অংশই তাদের বিচার - বিশ্লেষন কে লিংক করতে পারছেন না এবং স্বভাবতঃই করনীয় ও ঠিক করতে পারছেন না।
মাহমুদুর রহমান ৪ বছর ধরে লিখে, জেল জুলুম ও অত্যাচার সহ্য করে, গণমানুষের এক বিরাট অংশকে সরকারের কিছু স্বরূপ উন্মোচন করে দেখিয়েছেন। সরকারের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, সরকারের ইন্সটিটিউশনাল ধ্বংশযজ্ঞ, সরকারের দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমন পলিসি, সরকারের শিক্ষা, সাংস্কৃতি, ধর্ম, অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষা ধ্বংশের কলাকৌশল সহ আরো অনেক প্রোগ্রাম ও প্রজেক্ট। তিনি পরিষ্কারভাবে সরকারের মধ্যস্থিত এজেন্টদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন, শেভরন হতে শুরু করে কালো বিড়াল হয়ে পদ্মা সেতু। তিনি ফারমারস ব্যাংক হতে একাত্তর টিভি হয়ে মানবতাবিরোধী বিচারের শানে নযূল ও দেখিয়েছেন।
ফলাফল স্বরূপ, গণমানুষের একাংশ যারা মূলতঃ নিঃস্বার্থ, যারা মূলতঃ এ পৃথিবীর সুখ, শান্তি, অর্থ বিত্ত, স্বাধীনতা পরাধীনতা ইত্যাদি অপেক্ষা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য বেশী কাতর, বেশী চিন্তিত - তারা সরকারের সামনে নাংগা হাতে এসে দাঁড়ালো। তারা বারবার সরকারকে নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলল, তারা অর্থ সম্পদ কিংবা ক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত নয়, তারা টিপিক্যাল আন্দোলন কারীর ন্যায় অস্ত্রধারী নয়। তারা নিরীহ মেসোয়াক, তসবী ও জায়নামাজ ধারী বেহেস্ত প্রত্যাশী, দুনিয়া প্রত্যাশী নয়।
তারা কোন সংঘবদ্ধ গোষ্ঠি ছিল না, কোন সংঘবদ্ধ গোষ্ঠিকে প্রতিনিধিত্ব করছিল না। তারা গনমানুষের সুখ, সমৃদ্ধি কিংবা অধিকার দাবিতেও হাজির হয়নি। দ্রব্যমূল্য বেশী কিংবা বেতন ভাতা কম - এসব কিছুই তাদের দাবীর মধ্যে নেই। তারা মূলতঃ সরকারের কাছে এ আব্দার নিয়ে এসেছে, সরকার যেন তাদের এবং তাদের বংশধরদের পরকালকে নষ্ট না করে। তারা সরকার কে বলছিল, দয়া করে সরকার যেন তাদেরকে এ পৃথিবীর লোভ লালসা, অর্থ বিত্ত, ক্ষমতা, নারী ও গ্ল্যামার থেকে দুরে থাকতে দেন, যেন তারা একজন অতি সাধারন মানুষ হিসাবে, নিজের জীবনটাকে মৃত্যু নামক স্টেশান পয্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারেন।
ছিচকে চোর যেমন একটু শব্দেও ভয় পায়, ভাবে এ বুঝি ধরা পড়ে গেলাম, তেমনি দালাল এ সরকার, সারা বাংলাদেশের খেটে খাওয়া, অতি সাধারন এই মানুষগুলোর নিষ্পাপ চেহারা দেখে ঘাবড়ে গেল। তারা তাদের চেহারার কালিমা, মলিনতা, মাদকতা, লোভাতুর কামুকতার সাথে - সাধারন মানুষের চেহারা গুলো মেলাতে পারলোনা। তাদের ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় এ্যালার্ট হয়ে গেল। মনে হল ওদের দেশে তারা যে ভীনদেশী, তাদের চেহারা সূরূত যে এখন ভীনদেশী হয়ে গেছে - সেটা বুঝিবা ওরা জেনে যায় এবং এই বুঝি পাবলিকলী তারা ধরা পড়ে যায়। ভয়ে তটস্থ ছিচকে চোর রূপী এ এজেন্ট সরকার, কান পেতে শুনতে চায়নি ওরা আসলে কি বলতে চায়, চোখ খুলে দেখতে চায়নি ওরা আসলে কি দেখাতে চায়, নাক খুলে নিশ্বাস নিতে চায়নি ওরা আসলে কি শোংগাতে চায়।
অন্যদিকে ভীনদেশী প্রভুরা, যারা এ দেশের ট্রিলিয়ন ডলার এর শ্রমঘন্টা নাম মাত্র মূল্যে নিজদেশে পাচার করে চলেছেন, ট্রিলিয়ন ডলারের প্রাকৃতিক সম্পদ কুক্ষিগত করেছেন, আরো ট্রিলিয়ন ডলারের আনরেগুলেটেড কনজুমার মার্কেট নিশ্চিত করেছেন নিজ দেশের প্রডাক্ট ও সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রির জন্য - তারা পরিষ্কার বুঝলেন - 'পরকাল' কে এভাবে এক্সপোজ করলে, সামনে নিয়ে এলে - গ্রাজুয়েলী মানুষদের উপর এর প্রভাব পড়বে - এবং তা আগামীতে তাদের ট্রিলিয়নস অব ডলারের লভ্যাংশে ভাটার টান সৃষ্টি করবে।
স্বভাবতঃই অর্ডার এলো। স্টপ দিস। এজেন্ট সরকার ও আর পারছিলনা। আমরা তার করূন পরিনতি দেখলাম। সচেতন মানুষ দালালের ডেসপারেট আচরনের সাথে আর একবার পরিচিত হল।
বিষয়: রাজনীতি
১১২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন