মুসলমানরাই জঙ্গী!!!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ টাইমস্ ০৪ মে, ২০১৪, ১০:২২:২৭ রাত
বাহ! ভালতো ভালনা.... ভারতে মাত্র ৩২ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে, তারা কিন্তু জংগী না!! যাদের দেশে হত্যা হয়েছে তাদের দেশও জঙ্গী দেশ না! যারা বাবরি মসজিদ ভেঙ্গেছে এবং সেখানে মন্দির নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে তারাও কিন্তু জঙ্গী না!! জঙ্গী শুধু মুসলমান। মুসলমান যদি অত্যাচারিত হইয়া ঠিক ওখানেই ২/১টা হিন্দুরে মেরে ফেলত? চারিদিকে হইচই রব উঠত, আইলরে জংগী আইল, সব শেষ কইরা ফালাইল। ৩২জন মুসলমানকে যারা মারছে তারা কিন্তু জংগী না! তারা সন্ত্রাসী না!! তারা বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি না!! বাংলাদেশে কোন ইসলামিস্ট দ্বারা কোন অমুসলিম নির্যাতনের শিকার হয়নি। অথচ চেতনাধারীরা বিভিন্ন অজুহাতে কিছুদিন পরপর চিৎকার করে দেশ জঙ্গীতে শেষ হয়ে গেল! পরে দেখা যায় চেতনাধারীরাই সংখালঘু নির্যাতনে জড়িত!!! আমাদের দেশে কয়টা সংখ্যালঘু ইসলামিস্টদের দ্বারা হত্যা হয়েছে? অথচ আমাদের দেশের মুনাফিকরা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে জংগীদের আস্তানা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়! যখন সন্ত্রাসকারী আমেরিকা ও তাদের দোসররা বলে বাংলাদেশে জংগী উথ্থান হচ্ছে, তখন চেতনাধারীরা তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। মায়ানমারে হাজার হাজার মুসলমান হত্যা করা হয়েছে, তারপরও তারা জংগী না! জংগী শুধু মুসলমান! এর কারণ কী? এর জন্য কারা দায়ী? এর কারণ ইসলাম কোন অসভ্যতাকে সমর্থন করেনা, নারী-পুরুষের অবাধ মিলমিশা সমর্থন করেনা, ইসলাম পুঁজিবাদ ও সম্রাজ্যবাদকে সমর্থন না করে ন্যায়ভিত্তিক(যাকাত) অর্থ ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা বলে, ইসলাম ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলে, আর? আর ইহুদীদের অপপ্রয়াশ, তাই মুসলমানদের জংগী বানানোর চেষ্টা চলে প্রতিনিয়ত। অন্যদিকে বিভিন্ন কৌশলে মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ-সংঘাত লাগিয়ে দিয়ে তাদের ব্যাস্ত রাখা হয়েছে অধপতনের দিকে। যার ফলে তারা শিক্ষা, চিকিৎসা, বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ছে। পিছিয়ে পড়েছে শক্তিসালী প্রচার মাধ্যম মিডিয়া প্রতিষ্ঠায়। সকল মিডিয়া ইসলাম বিরোধীদের হাতে, যারফলে তারা যা বলে আমরা তাই শুনি। সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার কোন সুযোগ নেই মুসলমানদের। যখন মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ-সংঘাতে, যুদ্ধ নিয়ে ব্যাস্ত তখন ইহুদিরা তাদের সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যাস্ত! ইতিমধ্যে তারা ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড, মিশর দখল করে নিয়েছে। আথচ তাদের সহায়তা করছি আমরা মুসলমানরাই! কিভাবে? আমরা সবাই জানি পেপসি কোম্পানির আয় পায় ইসরাইল, কিন্তু আমরা কি এখনো পেপসির পণ্য বর্জন করেছি? বরং আমরা অনেকেই পেপসির পন্য ছাড়া ক্রয়ই করিনা! অন্যদিকে দেশে-বিদেশে ইসলাম বিরোধীদের সহায়তা করছে কারা? মুসলমানরাই। সামান্য সুবিধা পাওয়ার জন্য নিজের ভাইদের লাশ তুলে দিচ্ছি তাদের হাতে! মিশরে সিসি ইহুদী, কিন্তু সেনাবাহিনীর অন্য সবাই কি ইহুদী? নিশ্চয় না। কিন্তু তারা কি পিছপা হচ্ছে ব্রদারহুড কর্মী নিধনে? সিসি বাহিনীকে সহায়তা করছে অন্য বিরোধীদলগুলোও! আমরা কেউ সুন্নি, কেউ শিয়া, আবার কেউ ইত্যাদি ইত্যাদি। ইসলামেতো কোন জাত-বর্ণ নেই, তাহলে এসব আসলো কোথা থেকে? কোন বিষয়ে মতের মিল না হলেই আলাদা দল তৈরি করতে হবে! তারপরও ধরে নিলাম হয়ে গেছে কিন্তু তাই বলে এ নিয়ে নিজেরা বিরোধে জড়ানোর কোন মানে আছে! কেন আমরা এইসব নিয়ে বিরোধ করব? আমাদের পরিচয় কি একটাই নয় যে আমরা মুসলমান। এ বিষয়েতো কোন দ্বিমত নেই। এই প্লাটফর্মে থেকে আমরা কি পারিনা জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। আমি মনে করি এই বিষয়ে আমাদের আলেম সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কুরআন-সুন্নাহকে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে। এজন্য নিজেদেরকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং যারা এ কাজগুলো করছে তাদের সমালোচনায় লিপ্ত না হয়ে তাদের সহায়তা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে বলি, অনেককেই দেখেছি ড. জাকির নায়েকের কঠোর সমালোচনায় ব্যাস্ত! এমন একজনকে প্রশ্ন করলাম তিনি কী কী বিষয়ে ভূল বলেন? উত্তরে বললেন সবই ঠিক আছে্ কিন্তু তিনি ইসলামের বর্ণনা করার সময় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় গ্রন্থের রেফারেন্স দেন কেন?!! আজব!!!প্রশ্ন। এজন্য উনি মনে করেন ড. নায়েক ঠিক না!! আমি বললাম তিনিতো ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই অন্য ধর্মীয় গ্রন্থের বিবরণ দেন। এতেও তিনি সন্তুষ্ট নয়!! পাকিস্তানের একটি বিষয়ে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, পকিস্তানে অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মুসলমান অথচ সেখানে কয়েকদিন পরপর বোমা হামলা হয়! কারা এই হামলা করে? ইসলামী জংগীরাই! how is it possible!! মুসলমানের উপর মুসলমানরাই বোমা হামলা করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য!! এটা কখনোই সম্ভব না। হয় সত্যিকারার্থে এরা একেকটা পাগল, আর না হয় এরা সম্রাজ্যবাদের এজেন্ট, যেটা আমি আগেই বলেছি যে মুসলমানদের দমিয়ে রাখার জন্য ফাঁদ এবং তাদের অর্থায়ণ করে সম্রাজ্যবাদিরাই। দ্বিতীয়টিই আমার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়। ফিরে আসি বাংলাদেশে.. কয়েকদিন পরপর আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেহাদী বইসহ গ্রেপ্তার করার খবর মিডিয়ায় দেখতে পাই! তবে আজো সেই জেহাদী বইগুলোর নাম মিডিয়ায় দেখিনি! আমার মতে বইগুলোর তালিকা প্রকাশ করা উচিত যাতে জনগণ দেখতে পারে সেইসব নিষিদ্ধ বই কোনগুলো। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ অনেকবার বলেছেন-''ওয়াজাহিদূ ফি চাবিলিল্লাহি'' অর্থ: তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ কর। তাহলেতো অনায়াসে বলা যায় সবচেয়ে বড় জিহাদী বই আল-কুরআন। যাদের ঘরে আল-কুরআন আছে তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা উচিত নয় কি? জিহাদ অর্থ চেষ্টা করা, প্রচেষ্টা চালানো। আল্লাহর দ্বীনকে যমীনে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রচেষ্টা চালানোই জিহাদ। সেটা হতে পারে ওয়াজ করে, হতে পারে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে, এমনকি ইন্টারনেটের মাধ্যামে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের প্রচেষ্টা চালানো এবং অন্যায়ের বিরোধিতা করা। সর্বশেষ প্রচেষ্টা হল শত্রুপক্ষ আক্রমণ করলে তাদের সাথে যুদ্ধ করা। আর যুদ্ধ করার বিষয়টিকে পবিত্র কুরআনে ''কিতাল'' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এটিই যদি হয় জিহাদ তাহলেতো এই জিহাদ করার মুসলমানের ফরয। অথচ আমাদের দেশে জিহাদী বই রাখার অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হয়! ইসলামের এই বিধান পালনে যে বা যারা বাধা দেয় তারা নিশ্চয় ইসলাম বিরোধী।
তবে হ্যাঁ যদি কোন বইয়ে ইসলামকে বিকৃত করে সন্ত্রাসবাদ প্রচার করা হয়, পাকিস্তানের মত নিজেদের ভাইয়ের ওপর বোমা হামলা করতে উতসাহিত করা হয়, তাহলে অবশ্যই তা প্রতিরোধ করতে হবে। তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আলেমগণকে জিহাদের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আমদের সাধারণ মানুষদের সামনে আনতে হবে। এই বিষয়ে ব্যপক প্রচারণা চালাতে হবে। ভারতে নিহত ৩২জন মুসলমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শেষ করছি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন