ইসলাম ধর্মে কোন জন্তুকে জবেহ করে খাওয়ার কারণ ও দর্শন

লিখেছেন লিখেছেন আবুল বাশার আল কলি ৩১ মার্চ, ২০১৩, ১০:৪২:৫১ সকাল

প্রথমে আলোচনা করব জবাই করার গুরুত্ব নিয়ে কারণ এতে (নিজে থেকে) মারা যাওয়া, আঘাত পেয়ে মারা যাওয়া, উচ্চস্থান হতে নিচে পড়ে যাওয়ার কারণে মারা যাওয়া, কন্ঠরোধে মারা যাওয়া, আল্লাহর নাম নেয়া ছাড়া অন্যে কারো নামে জবেহ করা, হারাম কিন্তু জবেহ করা হয়েছে প্রভৃতি সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে এবং যে সব জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ বা বলি দেয়া হয়েছে, ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্টন বা তীড় ছুড়ে ভাগ করা হয় সেসব ক্ষেত্রে বুঝতে সহায়তা করবে। যদি কোন জন্তুকে জবেহ করা হয় আর আল্লাহর নাম নোয়া না হয় তাহলে কি ঘটতে পারে? এখানে দৃশ্যমান কোন কিছু ঘটবে না যেমন স্বাদ, গন্ধ, ভিটামিনর ঘাটতি কিংবা ফিজিক্যাল কোন পার্থক্য। আমরা এটাকে স্রস্টার সাথে তার সৃষ্টির জীবনের সাথে সম্পর্কিত করতে পারি। আমরা জানি এই মহাবিশ্বের এক স্রস্টা আছেন আর আছে সব সৃস্টি। স্রস্টার যেহেতু কোন কিছুর প্রয়োজন নেই সেহেতু আল্লাহ সকল জিনিসকে মানুষের সেবায় বা প্রয়োজন পূরণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তবে সৃষ্টি হিসাবে তো সবই সমান। যেমন গরু, ছাগল, মানুষ, মুরগী, ভেড়া ইত্যাদি। আর আমরা অহরহ গরু, ছাগল, ভেড়া জবেহ করে খাচ্ছি। অন্য জন্তু আমরা কেন খাচ্ছি এবং কোন অধিকারে? নিশ্চয়ই কোন অধিকার আছে এবং তা আল্লাহ পাক আমাদের দিয়েছেন। স্রস্টা তার সৃষ্টি বলয়কে (Chain or circle) চলমান, অব্যাহত রাখার জন্যই এক সৃস্টিকে আরেক সৃষ্টির ভোগ্য বা খাদ্য বানিয়েছেন। যাকে জীবনের ভারসাম্য বা চেইন হিসাবে উল্লেখ করা যায়। আমরা মুরগী খাই, মুরগী পোকা মাকড় খায় আবার পোকা মাকড় আবজর্না থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে বা অন্য কিছু খেয়ে বেঁচে থাকবে ফলে সৃষ্টিজগতের সকল কিছুই বাঁচবে এবং সৃষ্টি জগতের ভারসাম্য বা জীবন চলমান থাকবে। সুতরাং আমরা যদি এসব জন্তুকে আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করে খাই তাহলে বুঝা যাবে গায়ের জোরে খাচ্ছিনা বরং যিনি এসব আমাদের জন্য দান করছেন তার বিধান বা আইন অনুসারে খাচ্ছি। স্রষ্টার এই বিধানকে এক দিকে স্বীকৃতি দিচ্ছি অন্য দিকে জবেহ করার সময় সেই বিধানকে স্বরণ করছি। আল্লাহর এই বিধানকে স্বরণ করা বা স্বীকৃতি দেয়ার মধ্যে বড় লাভ হলো আমি ভোগ দখলের ক্ষেত্রে আমার গায়ের জোরকে বা শক্তিকে বড় করে দেখছিনা বরং আল্লাহর দেয়া অধিকার হিসাবেই ভোগ করছি। এই দৃষ্টিভঙ্গি যখন মানুষ গ্রহণ করবে তখন জীবনের অন্য ক্ষেত্রেও তা করার চেষ্টা করবে। এই জীবন দর্শন যখন মানুষ অনুসরণ করা শুরু করবে তখন কোন পশু পাখিই আর ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। তার দ্বারা কোন অন্যায়, জুলুম আর অত্যাচারের ঘটনা ঘটবে না। সুতরাং আমরা বলতে পারি কোন সৃষ্টিকে হত্যা করার কোন অধিকার আমাদের নেই যদি করতেই হয় তাহলে আল্লাহ তায়ালার নিয়ম অনুযায়ীই করতে হবে। আর স্রষ্টার নিয়ম মেনে তা করলেই শুধু তা হালাল হয় এবং তা বৈধ হয়ে যায়। আবার বলা যায় তা পবিত্রও হয়। ঠিক একইভাবে বলা যায় যদি স্রষ্টা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবাই করলে তা হালাল হবে না। তাহলে হারাম জন্তুকে কি জবেহ করে খাওয়া যাবে? এটিকে একক কোন কথায় সমাধান টানা যাবে না। এক কথায় এর উত্তর না কিন্তু কেন তা জানতে অবশ্যই হারাম জন্তুর অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে যা পরে বিস্তারিত আলোচনার আশার রাখি। (ইনশাআল্লাহ)।

বিষয়: বিবিধ

১১৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File