বাংলা সনের প্রবর্তন ও পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ! ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কর্তব্য ।

লিখেছেন লিখেছেন এস আর চৌধুরী ১৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:৫২:৩৯ দুপুর



মোগল সম্রাট আকবর ফসল কাটার মৌসুমে খাজনা আদায়ের সুবিধার্তে বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। আর এ দুরূহ কাজটি সম্পাদনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন সময়ের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সুপণ্ডিত, বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী, সম্রাটের অন্যতম আমাত্য আমির ফতেহ্উল্লাহ সিরাজীকে। তিনিই তৎকালীন বাংলার কৃষক সমাজের কৃষি উৎপাদনের মৌসুম তথা ফসল ঘরে তোলার সময়টাকে গুরুত্ব দিয়ে হিজরি সন ও শতাব্দের সঙ্গে সৌর সন তথা খ্রিস্টাব্দের সমন্বয় করে বঙ্গাব্দের প্রবর্তন করেন। সে হিসেবে ইংরেজি ১৫৫৬ সালের ১১ এপ্রিল ছিল বাংলা সনের শুভযাত্রা। ওই সময় এ বাংলা সনকে বলা হতো ফসলি সন। এতে মোগল সম্রাটদের খাজনা আদায়ের সুবিধার পাশাপাশি বাঙালি পেয়ে যায় নিজস্ব বর্ষপঞ্জি। পরবর্তী সময়ে চান্দ্র মাস অনুযায়ী হিজরি সন ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইংরেজি সনসহ নানা হিসাব-নিকাশ করে ১৪ এপ্রিল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ধারা সূচিত হয়।

এই ইতিহাসের অনুযায়ী, বাংলা সনের প্রবর্তন হয়েছিল মুলতঃ কৃষিপ্রধান অঞ্চল বাংলার সাধারন নাগরিক কৃষকের নিকট হতে খাজনা আদায়ের উদ্দেশ্যে । ইহা চালু হয়েছিল গরীব কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের মাঝে শোষক শ্রেনির অংশিদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে । কিন্তু কালের পরিক্রমায় বাংলা সনের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালির প্র্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। প্রথম দিকে ইহা অসাম্প্রদায়িক ও সার্বজনীন থাকলেও পরর্বতীতে ধীরে ধীরে ইহা অসাম্প্রদায়িকতার বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলে। বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় রীতি-নীতির প্রাধান্য বিস্তার লাভ করে। বিভিন্ন পূজা পার্বনের অনুষ্ঠানের আদলে বিভিন্ন প্রাণীর মূর্তি সংযোজন করে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান পরিপালিত হতে থাকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সংস্কৃতি ছাড়াও নারী পুরূষের অবাধ মেলামেশা, বাঙালী ললনাদের খোলামেলা পোশাক ও অবাধ বিচরনের কারনে বেশিরভাগ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ইসলামি গভীর জ্ঞান সম্পন্ন আলেম ওলামাগণ দির্ঘদিন থেকেই ইহার বিরোধীতা করে আসছে ।



সর্বশেষ পহেলা বৈশাখের উৎসবে যুক্ত হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা । বাংলাদেশের যশোরে কিছু সাংস্কৃতিককর্মি ১৯৮৪ সালে এ মঙ্গল শোভা প্রথম শুরু করে | এ মঙ্গল শোভা যাত্রায় লক্ষী পেঁচা, কচ্ছপ, বাঘ, হাতি, লক্ষ্মীর সরা আর হাতপাখার নেতৃত্বে অংশ নেয় হাজার হাজার উঠতি বয়সি তরূন-তরূণী ।কথিত মঙ্গলের আহ্বান এবং অশুভকে পরাজিত করার শপথ নিয়ে মানুষরা এ মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নেয়। লক্ষী পেঁচা, কচ্ছপ, বাঘ, হাতি, লক্ষ্মীর সরা আর হাতপাখার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে পুরো রমনা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মিছিল।



এটা নিশ্চিৎ করেই বলা যায় যে, ইসলাম সম্পর্কে যে লোকটি একেবারে যৎকিঞ্চিৎও জানে সেও নির্দিধায় বলবে- একটি কাজও ইসলাম সম্মত নয় এবং আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পছন্দনীয় নয়। বরং মুসলমানের ঈমান আমলের উপর বড় আঘাত ।

কাজেই প্রতিটি মুসলমানেরই বিষয়টি চিন্তা করা এবং এর থেকে ফিরে নিজের ঈমান, আমল হিফাযতে সচেতন হওয়া একান্ত কর্তব্য।

বিষয়: বিবিধ

২২৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File