হরতালে মাঠে নেই ছাত্রদল, নাখোশ বিএনপির হাইকমান্ড

লিখেছেন লিখেছেন বাবু আকন ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ১১:৩২:৪৬ সকাল

সংগঠনে নিয়মিত ছাত্র না থাকায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আন্দোলন সংগ্রামে কোনো ভুমিকাই রাখতে পারছে না। আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার মত নেই কোন নেতা আর কর্মীবাহিনী। আর তাইতো বিএপির ভ্যানগার্ড বলে পরিচিত ছাত্রদল মাঠে নেই দলের এই দূর্দিনে। লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে ছাত্র সংগঠনটি। দলের সর্বোচ্চ এই আন্দোলন মূহুর্ত্তে তাই রাজপথে নাই ছাত্রদলের নেতারা।

রোববার বিরোধী জোট ঘোষিত হরতালে রাজপথে দেখা মেলেনি এই ছাত্র সংগঠনের নেতাদের। রাজধানীর কোথাও কোনো মিছিল-পিকেটিং করতে পারেনি তারা।

ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, কেন্দ্রের সকল প্রোগ্রামে থাকার চেষ্টা করি। এবার হরতালে কেন্দ্রে কোন প্রোগ্রাম না থাকায় ঘরে শুয়ে শুয়ে টিভি দেখছি। কেন্দ্রিয় কমিটির আরেক নেতা বলেন, কেন্দ্রের কোন দিক নির্দেশনা না থাকায় আন্দোলনে সংগ্রামে মাঠে থাকার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। কেন্দ্রিয় কমিটির প্রায় ডজন খানেক নেতার সঙ্গে কথা বলে একই রকম উত্তর পাওয়া যায়। তারা সবাই ডিফারেন্ট নিউজকে জানান, কোন আন্দোলন সংগ্রামে ডাক দেওয়ার পরের ঘন্টা থেকেই মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে দেয় সুপার ফাইভের সব নেতাই। কারণ তারা কেউই ঝামেলাই জড়াতে চান না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে এবারের কেন্দ্রিয় কমিটি দলের সংকটময় মুহুর্তে গঠিত হলেও এপর্যন্ত কোন আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা না থাকার ফলে জেলে যাননি কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। ছাত্রদলের অবস্থা যে হ-য-ব-র-ল তা সর্বমহলে অবগত।

ছাত্রদলের এসব কেলেঙ্কারীর কারণে নাখোশ বিএনপির হাইকমান্ড। ছাত্রদল মাঠে নেই কেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া ডিফারেন্ট নিউজকে বলেন, যেহেতু কমিটি গঠনের আগে আমাদের কোন মতামত নেয়া হয়নি সেহেতু এই সংগঠনটি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য দিতে পারব না। তবে আমার জানামতে, সংগঠনটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির অপর এক সদস্য লে: জে: মাহবুবুর রহমান ডিফারেন্ট নিউজকে বলেন, ছাত্রদলের সুবর্ণ যুগ এখন আর নেই, ছাত্রদলকে গতিশীল করতে আগামী স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উপস্থাপন করব।

বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন যুগ্ম মহাসচিব ডিফারেন্ট নিউজকে বলেন, ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অছাত্র ও ব্যবসায়ীদের দিয়ে একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় বর্তমান কমিটি গঠন হওয়ার ফলে মাঠে নেই নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনকারী এক সময়ের মাঠ কাপানো এই সংগঠনটি। যদি ছাত্রদলের কমিটি ত্যাগী, যোগ্য ও প্রকৃত ছাত্রদের দিয়ে গঠন করা হতো তবে আজ ফ্যাসিবাদী সরকারকে হঠানোর জন্য একমাত্র ছাত্রদলই যথেষ্ট ছিলো।

ছ্ত্রাদলের কেন্দ্রীয় একজন সহসভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিফারেন্ট নিউজকে জানান, এবারের কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়রিটি না মানা, সংস্কারপন্থীদের স্থান দেয়া, ত্যাগীদের বাদ দেয়া কর্মীদের অবমূল্যায়িত করা ও টাকার বিনিময়ে বহজাতিক পেশাজীবীদের স্থান দেয়ার ফলে চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। তাইতো আন্দোলনে মাঠে নেই নেতাকর্মীরা। কারণ টাকা দিয়ে পদ পাওয়া গেলে মাঠে থেকে লাভ কি? বিএনপির হাই কমান্ডের উচিত অতি দ্রুত কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে ত্যাগী ও যোগ্যদের দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা।

ছাত্রদলের কেšদ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, জুয়েল হাবিব কে আগে মাঠে নামতে বলেন তারপর আমরা নেতা কর্মী নিয়ে মাঠে নামব। তিনি ক্ষোভের সুরে আরো জানান, যোগ্যতা অনুযায়ী পদ পাইনি। তাই মাঠে থাকার চেষ্টা করি না। ১/১১তে সংস্কারপন্থী নেতা ও বর্তমান কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক ইখতিয়ার কবির বলেন, এখনও দেশের বাড়ীতে আছি আন্দোলন শেষ না হলে ঢাকায় আসব না।

সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য কেন্দ্রিয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে রিপোর্টে কথিত বক্তব্য এর সাথে মিল পাওয়া যায়। ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় দপ্তর থেকে পাওয়া তাদের যোগাযোগের নাম্বার দুটো বন্ধ পাওয়া যায়।

বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধূরীর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

সংগ্রহীত: dnewsbd.com

বিষয়: বিবিধ

১৩৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File