এসব ঘটনা পড়লে মন ঘৃণায় ভরে ওঠে
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ২০ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৩৭:৫২ সকাল
[নিচের ঘটনাটি একটি অনলাইন পত্রিকা থেকে কপি পেষ্ট করা। ভীষণ দুঃখজনক বিষয়। সকলের জ্ঞাতার্থে এ ব্লগে পোষ্ট করলাম]
সারা নাজিফা
গত ৩ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে ছাত্রলীগ এবং কর্তৃপক্ষের যৌথঅভিযানের পর পালিয়ে আসা এবং কিছু কথা।
“ ২ তারিখ রাত থেকেই হলে ছাত্রলীগের activities ছিল চোখে পড়বার মত।পরদিন আশুরা উপলক্ষে রোজা রাখবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল অনেকেই।সেহরীর পর আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছিলাম।হঠাৎ ৮:৩০ এ কেউ একজন কল করে জানালেন ছাত্রলীগের মেয়েরা হলের নামাজরুম থেকে তিনজন মেয়েকে আটক করেছে এবং প্রতিটি রুমে তল্লাসী চালিয়ে কারও কাছে কুরআন শরীফ বা হাদীস বই আবার কাউকে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে আটক করছে।মনে হল হাতুরি দিয়ে কলিজায় কেউ ঘা দিয়েছে।রুম থেকে বেরোতেই দেখি এলাহী কারবার।একাধিক group এ বিভক্ত হয়ে ছাত্রলীগ হাতে লাঠি-সোটা নিয়ে হলের বিভন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে।
যেভাবে পালাতে হল—
কুরআন-হাদীস,ইসলামী বইপুস্তক রুমে রাখিনা।কিন্তু এটাও বুঝতে পারলাম অবস্থানগতভাবে ওদের ঘেরাও এর মাঝে রয়েছি এবং ল্যাপটপে থাকা সমস্ত ডকুমেন্ট মুছে ফেলবার আগেই ওরা আমায় ধরে ফেলবে।ধরা দেবার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাত্রি জাগরনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লাম। একসময় কেউ একজন শুভাকাঙখী ধাক্কা দিয়ে আমায় ঘুম থেকে জাগিয়ে দিয়ে একসেট পোশাক হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল ,“দু’মিনিটে চেন্জ করে বেরিয়ে পর।সবগুলো ফ্লোরে ছাত্রলীগ লাঠি-সোটা আর ছুরি নিয়ে তোমাকেসহ কয়েকজনকে সকাল থেকে খুঁজছে”।সময় তখন দুপুর ৩:৪৫।খোঁজ নিয়ে জানলাম,আমাদের অধিকাংশ বোন-ই এতক্ষনে বেরিয়ে যেতে পেরেছেন,শুধুমাত্র আমিই ঘুমুচ্ছিলাম।প্রায় দশ মিনিট পর বাদ্ধবীর জিন্স-টিসার্ট পরে মেকাপ নিয়ে যখন লীগের ব্যাচমেট মেয়েদের সামনে দিয়েই আসছিলাম তখন দেখলাম ওদের বেপরোয়া মূর্তি, সবগুলো ফ্লোরে সিঁড়ির মাথায় সতর্ক পাহারা সেই সাথে হলের সবচেয়ে ভাল-ভদ্র,পর্দানশীল এবং সাধারন মেয়েগুলিকে আটক করে ওরা শিবির ধরবার উল্লাসে মেতে উঠেছে।
চোখবুজে কান্নাচেপে পালাবার সময় শুনলাম , ওরা বলছিল শাহবাগের মঞ্চে নিয়ে তাদের বিচা্র করবে।একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা নাকি তাতে শান্তি পাবে।
শুনে আমার পা দুটো আর চলছিল না।একসময় ওদের থেকে নিরাপদ দুরত্বে এসে ওয়াশরুমে বোরখা পড়ে যখন হলগেটের কাছাকাছি পৌঁছলাম তখন দেখলাম গেটের ৫জন সিকুরিটি গার্ড একটা লিস্ট হাতে নিয়ে গেট দিয়ে বেরোবার সময় সবার আইডি কার্ড চেক করছে।বুঝতে পারছিলাম আইডি কার্ড চেক করার পর আমায় আটকে দেয়া হবে। ঘৃনায় মনটা বিষিয়ে উঠল। ওদের সামনে গিয়ে বললাম “দাদু,শিবিরের মেয়েরা নাকি এক্সটেনশন বিল্ডিং এ লীগের মেয়েদের হামলা করেছে(ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের ওরা শিবির বলে)আপনারা কিছু জানেন না”?৫জন হাঁদাই আমার কথা বিশ্বাস করে মারামারি দেখবার জন্য হলের ভেতরের দিকে এগিয়ে গেলে আমি পেছন থেকে পালিয়ে আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে নিরাপদে বগুড়ায় ফিরলাম।এই দিনটির কথা সারা জীবনেও ভূলবার নয়।
আমার কিছু অভিযোগ নেই তবে কিছু বলবার রয়েছে---
এমন ঘটনার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কোনও অভিযোগ বা অনুযোগ নেই আমার,কোন প্রশ্নও নয়।কেননা আরেফিন সিদ্দিকীকে উপাচার্য করা হয়েছে সরকারী নির্দেশ পালন করবার জন্য।তিনি নিজেই কুকুরলীগের পৃষ্ঠপোষক।আর কুকুরের বিচার কুকুরের দ্বারা কখনোই সম্ভব নয়।
বরং এ প্রশ্নগুলিই বারবার নিজের সামনে এসে দাড়ায়-
** নামাজরুম থেকে মেয়েদের আটক করবার পরও কেন তাদের উপর ব্রাশফায়ার না করে শুধুমাত্র লাঠি-রড দিয়ে মারধর করা হল? অথচ নাস্তিকমনা কর্তৃপক্ষের জন্য এটিই ছিল সবচেয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত।
**সেই সাথে যাদের লাগেজে গো্পনে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার প্রকাশনা রেখে ফাঁসানো হল কেন তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হলনা?তাহলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত।
** প্রতিবছর শরস্বতী পুজার জন্য কোটি টাকা বাজেট করা হলেও সার্বক্ষনিক সিসিটিভির নিয়ন্ত্রনে রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত মসজিদ এবং নামাজরুমগুলিকে। সেক্ষেত্রে নামাজরুমকে পূজার-ঘর বা টিভিরুম করবার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার মনে হলেও অসম্ভব তো নয়।সাহসী পদক্ষেপ নিতে এত দ্বিধা কেন কর্তৃপক্ষের?
**কথিত মানতাবাদী সংগঠন এবং নারী সংগঠনগুলি কেন এখন পর্যন্ত আটককৃত ছাত্রীদের ফাঁসির দাবী নিয়ে কোন বিবৃতি দিলনা ?তাদের স্বভাববিরুদ্ধ আচরন সত্যিই বিস্ময়কর!!!
সেক্যুলার বাংলাদেশ গড়তে চাইলে সবার আগে প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজরুমের দরজা বন্ধ করা এবং নামাজরুমের দরজা বন্ধ করতে চাইলে প্র্রয়োজন নামাজীদের বহিস্কার। তানা হলে মাঠে-ঘাটে যেখানে- সেখানে নামাজ রুম বানিয়ে নিতে যে তাদের সময় লাগবেনা খুব, একথা ন্যাড়ামাথা বামশুকরগুলি খুব ভাল করেই জানে।এরাই আমাদের ভাইভা বোর্ডে নেকাব করবার কারনে মার্কস কম দিয়ে থাকে।প্রকাশ্য ক্লাসরুমে বারবার শান্তনু মজুমদাররা (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ)হিজাব পরা ছাত্রীকে বলে, “এই পোশাকে কিভাবে প্রেজেন্টেশন মার্কস পাও দেখব আমি ”।আজ ওরাই ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে ধর্মভীরু মেয়েদের বহিস্কারের স্বপ্ন দেখছে।কেননা তারা আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামকে মুছে দিতে চায়।
নীরিহ-নিরস্ত্র মেয়েদের উপর আঘাত করে যারা নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে তাদের পরিনতিকে আল্লাহ্তায়ালা জালিমদের জন্য দৃষ্টান্ত বানিয়ে দিন। জানিনা এই জালিমের হাত থেকে কবে মিলবে আমাদের মুক্তি?কবে শেষ হবে এভাবে পালিয়ে বেড়ানো দিনগুলি?
বিষয়: বিবিধ
১৬২০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : দিকে দিকে, দেশবিদেশে হাতে নাতে শাস্তি মুসলিমরই পাছ্ছে, অন্য কেউ না।মন্তব্য করতে লগইন করুন