ইউশা এবং পেঙ্গুইন - ২
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ০৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:১৬:১৭ রাত
শোনো, এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিশেষ কিছু মতা দিয়েছেন সে জন্য। আমাদের চামড়ার নিচে চর্বির মোটা ও পুরু একটা স্তর আছে। এই চর্বিই আমাদেরকে অতিরিক্ত ঠান্ডার মধ্যেও সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখে, যেটা অন্য অনেক প্রাণীর নাই। যখন শীত আসে তখন আমরা উপকূল বরাবর আরো দক্ষিণে চলে যাই।
ইউশার মনে পড়ল, তার মানে তোমরা তখন মাইগ্রেট করে অন্য জায়গায় চলে যাও? আচ্ছা, তোমাদের আর অন্য কী কী আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে যেটা আমি এখনও জানি না? এই যেমন ধরো, আজকে আমি যে ডকুমেন্টারী দেখলাম সেখানে বলল, তোমাদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার আগে পর্যন্ত তোমরা ডিমের খুব বেশি যত্ন নাও। তুমি কী এ ব্যাপারে আমাকে কিছু বলবে?
পেঙ্গুইনটি হেসে বলল, অবশ্যই। অন্য কিছু প্রাণীর মতোই পুরুষ প্রজাতির পেঙ্গুইন বেশির ভাগ সময় ডিমে তা দেয়। জানো, তারা স্ত্রী পেঙ্গুইনের চেয়েও বেশি সময় ডিমে তা দেয়। এবং তারা এ কাজটা করে দীর্ঘ ৬৫ দিন ধরে মাইনাস ২২ ডিগ্রী ফারেনহাইট (মাইনাস ৩০ সেলসিয়াস) তাপমাত্রায়। শুধু তা-ই নয়, এ দীর্ঘ সময় তারা এক মুহুর্তের জন্যেও ডিম ছেড়ে যায় না। আর নতুন যে বাচ্চাটা জন্ম নেবে তার জন্য এ সময়ে মা পেঙ্গুইন যায় খাবারের খোঁজে।
জন্ম নেয়ার পর প্রথম এক মাস বাচ্চা পেঙ্গুইন তারা বাবা-মায়ের পায়ের ওপর থাকে। যদি তারা তাদেরকে দুই মিনিটের জন্যেও রেখে অন্য কোথাও যায় তাহলে তারা বরফে জমে মারা যাবে।
ইউশা ঘাড় নেড়ে বলল, কী সাংঘাতিক! তার মানে এ সময়টা তোমাদেরকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু এতটা কীভাবে সম্ভব?
যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই আল্লাহই সকল প্রাণীকে সে জ্ঞান দিয়ে দিয়েছেন যে, তাকে কীভাবে কী করতে হবে। আমরা শুধু সেটুকুই করি যা আল্লাহ আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন।
ইউশা বলল, তুমি ঠিক বলেছো। আমাদের মহান স্রষ্টা তাঁর প্রত্যেকটা সৃষ্টিকে ঠিক ততটুকুই জ্ঞান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যেটুকু তার জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন। সে কোথায় থাকবে আর কীভাবে তার খাবারের খোঁজ করবে সবই তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন। তোমাদের জীবনের দিকে তাকালেই এ বিষয়টা খুব ভালো করে বুঝা যায়।
পেঙ্গুইনটা এবার ঘুড়ে দাঁড়াল। তুমি অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যেও আরো অনেক অদ্ভুত এবং মজার মজার সব উদাহরণ দেখতে পাবে। তারা প্রত্যেকেই কিন্তু আল্লাহর দেয়া এসব জ্ঞানের জন্য তাঁর কাছে শুকরিয়া জানায়।
আমি আজ আর দেরি করতে পারছি না। অনেকক্ষণ হয়ে গেল। এবার আমাকে অবশ্যই যেতে হবে। আমার পরিবারের সদস্যরা সব আমার জন্য অপো করছে।
হঠাৎ ইউশা সুন্দর একটা মিউজিক শুনতে পেল। পরক্ষণেই বুঝতে পারল এখন সকাল হয়েছে এবং তার টেবিল ঘড়িতে এ্যালার্ম বাজছে। তার মনে হলো, ঘুমের মাঝেই সে খুব সুন্দর একটা ভ্রমণ করে এসেছে।
(সমাপ্ত)
বিষয়: সাহিত্য
১৩৭৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন