স্বপ্ন ভাইয়ের কাছে যা শিখল - ২
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ১৬ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:৫৮:১০ রাত
আল্লাহ সবচেয়ে বেশি খুশি হন সে ব্যক্তির ওপর যে আল্লাহর দেয়া অসংখ্য নেয়ামত পেয়েও ভুলে যায় না যে এটা আল্লাহর দেয়া দান বা অনুগ্রহ এবং সে অনুযায়ী কাজ করে। আমাদের সকলেরই সেটা লক্ষ্য রাখা উচিত এবং সে অনুযায়ী চলা উচিত। কোনো ঘটনাতেই আমাদের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো বা উদ্ধত আচরণ করা ঠিক নয় বরং সব সময় সংযত আচরণ করা উচিত।
কিন্তু ইবলিস শয়তান সারাক্ষণ আমাদের মনে কু-মন্ত্রণা দিতে থাকে। মানুষ যেন তার অর্থ-সম্পদ, ধন-দৌলত নিয়ে গর্ব করে, অহংকার করে সে পরামর্শ দিতে থাকে প্রতি মুহুর্তে। তোমার কী মনে আছে, গতকালই আমরা ক্বারী সাহেব হুজুরের কাছে কুরআন শরীফ পড়ার সময় এ রকম একটি আয়াত পড়েছিলাম? আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ইহা এজন্য যে, যা কিছু তোমরা হারাও তজ্জন্য যেন দুঃখিত না হও, এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তজ্জন্য যেন উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোনো অহংকারী, গর্বিত-উদ্ধতকে ভালোবাসেন না। (সুরা হাদীদ ঃ আয়াত - ২৩)
স্বপ্ন ঘাড় নেড়ে বলল, তাহলে আমাদের যাদেরকে আল্লাহ বেশি নেয়ামত দেননি তাদের ভেঙ্গে পড়া উচিত নয়। আবার যাদের অর্থ-সম্পদ হারিয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে গেছে তাদেরও দুঃখিত হওয়া বা হতাশ হওয়া উচিত নয়। তাই না ভাইয়া?
হ্যাঁ, ঠিক তাই। তুমি ঠিক ধরতে পেরেছো। আসলে এ জগতে যা কিছু আছে তার সব কিছুর মালিকই হলেন একমাত্র আল্লাহ। তিনি তাঁর অফুরন্ত ভান্ডার থেকে বান্দাকে যাকে যতটুকু নেয়ামত দিতে ইচ্ছা করেন তাই দেন। সেটা কম বা বেশি যাই হোক না কেন তা এ জগতে আমাদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপই।
আচ্ছা ভাইয়া, আল্লাহ তো কুরআন শরীফে এক জায়গায় বলেছেন, আর আপনি কখনও দৃষ্টিপাত করবেন না ঐসব বস্তুর প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পার্থিব জীবনের চাকচিক্য স্বরূপ উপভোগ করতে দিয়ে রেখেছি, তা দ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে। আর আপনার রবের দেয়া রিযিক বহু গুণে শ্রেয় ও অধিক স্থায়ী। (সুরা ত্বা হা ঃ আয়াত - ১৩১) তাহলে ফাহিম যা করেছিল তা ভুল ছিল, কিন্তু তার কথায় তার বন্ধুরা যেভাবে মোহিত হয়েছিল এবং প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল সেটাও তো ঠিক ছিল না। আল্লাহ এসবে কী অসন্তুষ্ট হবেন না? যদিও তিনিই আমাদেরকে পোশাক-আশাক, খাবার-দাবার, বাড়ি-গাড়ি এগুলি সব দিয়েছেন। তাই নয় কি?
মাহী এক মুহুর্ত চিন্তা করে বলল, নিশ্চয়ই। ব্যাখ্যা করার জন্য এটা খুবই ভালো একটা পদ্ধতি। শোনো, আমি তাহলে এবার উদাহরণ হিসেবে তোমাকে কুরআন থেকে একটা গল্প বলি।
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা দুইজন মানুষের উদাহরণ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের দুটি আঙ্গুরের বাগান ছিল। দুটি বাগানই আল্লাহ প্রচুর পরিমাণ খেজুর গাছ দিয়ে বেস্টন করে দিয়েছিলেন। আর এর মাঝে বিভিন্ন শস্যক্ষেত্র দিয়ে পরিপূর্ণ করে রেখেছিলেন। বাগান দুটির মধ্যে একটি ঝর্ণা বহমান ছিল। ফলে বাগান ফল-ফলাদি ও শস্যাদি দিয়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। একদিন এ বাগানের মালিক কথা প্রসঙ্গে তার এক বন্ধুকে বলল, আমি ধন-সম্পদেও তোমার চেয়ে বেশি এবং জনবলেও তোমার চেয়ে অধিক শক্তিশালী। (সুরা কাহাফ ঃ আয়াত - ৩৪)
(চলবে)
বিষয়: সাহিত্য
১০৭৪ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শয়তানের কু-মন্ত্রণা হেফাজত করুন । আমীন ।
আফরামনি, অনেকদিন পর আমার কোনো লেখায় তোমার কমেন্ট পেলাম। ধন্যবাদ।
ওয়ালাইকুম সালাম। গত ৪/৫ দিন আমি অনেক চেষ্টা করেও এই ব্লগে ঢুকতে পারছিলাম না। যাক, অন্য লেখাগুলোও পড়ুন এবং বলুন যে ছোট্ট সোনামনিদের জন্য বই বের করলে তাদের কোনো কাজে লাগবে কি না...
কুমন্ত্রণা দেয়া তার কাজ - কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করা আমার কাজ।
তাই সিদ্দান্তটা আমার নিজের।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন