মৌন এবং বিশাল এক হাতি - ২
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:২৪:৫৭ রাত
তাকে অভয় দিয়ে মা হাতিটা আবার বলতে শুরু করল, আর কোনো প্রাণীর এমন সুঁড় নেই। আমরা এজন্য গর্ব করি। শোনো, আমাদের এ সুঁড়টার মাথায় দুইটা ছিদ্র আছে। ঐটাই আমাদের নাসিকা, যা দিয়ে আমরা নিশ্বাস নিই। এ নাসিকার দুই মাথা আবার একটু বাড়তি মতো। বলতে পারো তোমাদের যেমন হাতের আঙ্গুল আছে, তা দিয়ে তোমরা বিভিন্ন জিনিষ ধরতে পারো, আমরাও ঠিক তেমনি নাসিকার ঐ বাড়তি অংশ দিয়ে আঙ্গুলের কাজ করি। এটা দিয়ে আমরা কোনো খাবার এবং পানি তুলে মুখে দিতে পারি, কোনো জিনিষ উপরে তোলা বা সরানোর কাজ করতে পারি এবং যে কোনো কিছুর ঘ্রাণও নিতে পারি। এর মধ্যে আমরা ১ গ্যালন (৪ লিটার) পর্যন্ত পানি ধরে রাখতে পারি। এক কথায় তোমরা হাত দিয়ে যা কিছু করতে পারো আমরা আমাদের সুঁড় দিয়ে তার চেয়েও বেশি কাজ করতে পারি। তুমি কী জানো যে, আমরা এটা দিয়ে একদম ক্ষুদ্র বস্তু পর্যন্ত তুলতে পারি?
আমাদের সুঁড়ের এতসব কাজের কথা জেনে তোমার খুব হিংসে হচ্ছে না? তুমি কী মনে করছ যে, আমরা এ সুঁড়টা দৈবক্রমেই পেয়েছি? না, তা নয়। আমরা এটা এমনি এমনিই পাইনি। এটা সমস্ত জগতের প্রতিপালক যিনি মহান স্রষ্টা, সেই আল্লাহর কাছে থেকে আমাদের জন্য একটা বিরাট বড় নেয়ামত বা উপহার। একবার চিন্তা করে দেখো, যদি আমাদের এ সুঁড় না থাকত, তাহলে আমরা কীভাবে সব কাজ করতাম? যিনি আমাদেরকে এ আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তিনিই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কাজেই তাঁর কোনো কাজ নিয়ে কখনো সন্দেহ করে কোনো প্রশ্ন করতে যেও না।
আচ্ছা, তোমাদের তো অনেক খাবার লাগে। এটা খুঁজে পেতে তোমাদের সমস্যা হয় না?
এবার মা হাতিটা বলতে শুরু করল, মন দিয়ে শোনো। পৃথিবীতে আমরাই সবচেয়ে বড় প্রাণী। একটা পরিপূর্ণ বয়সের হাতি প্রতিদিন প্রায় ৭৩০ পাউন্ড (৩৩০ কেজি) পরিমাণ গাছ-পালা খায়। প্রতিদিন আমাদেরকে খাওয়ার জন্য ১৬ ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়।
মৌনকে মনে মনে কিছু চিন্তা করতে দেখে হাতিটা বলল, তুমি কি কোনো প্রশ্ন করতে চাচ্ছো?
হ্যাঁ। তোমাদের দাঁত কোথায়? তোমরা কী প্রতিদিন আমাদের মতো ব্রাশ করো?
এই যে, আমার মুখের দুই পাশে তুমি দুইটা লম্বা, ধারালো সাদা রংয়ের লাঠির মতো যে বস্তু দেখতে পাচ্ছো এটাই আমার দাঁত। তোমাদের মতো আমাদের দাঁত ব্রাশ করার প্রয়োজন হয় না। প্রতিদিন আমরা যেহেতু প্রচুর পরিমাণে লতা-পাতা খাই, সেগুলো দাঁতে বা দাঁতের ফাঁকে জমার সুযোগ পায় না। তারপরও যেটুকু থাকে যখন আমরা পানি খাই তখন সেগুলি ধুয়ে যায়।
(চলবে)
*** [আগামী একুশে বইমেলায় (২০১৫) ছোট্ট সোনামনিদের জন্য প্রকাশিতব্য আমার বইয়ের একটি গল্প আপনাদের মূল্যায়ন ও মতামতের জন্য উপস্থাপন করলাম। ধারাবাহিকভাবে সবগুলিই উপস্থাপনের ইচ্ছা আছে। আশা করি, আপনাদের মূল্যবান মতামত আমার কাজে লাগবে।]
বিষয়: সাহিত্য
১১৭০ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু-
আসল "দাঁত" তো থাকে মুখের ভেতরে, বাইরের এদুটো তো সঠিক অর্থে "দাঁত" নয়..
এজন্য "গজদন্ত" শব্দটি বাংলাভাষায় ভিন্নরকম অর্থ প্রকাশে বহুলপ্রচলিত!
তথ্যটি সংযুক্ত করে দিলে ভালো হয়-
শিশুরা একটা ভুল শিখে নিলে বদলানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে!
আবু সাইফ বড্ড বিপদে আছেন, আপনাদের নেকনজর প্রয়োজন
মন্তব্য করতে লগইন করুন