ঃ রমজান আলোচনা ঃ পর্দা (পর্ব -৫)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ১০ জুলাই, ২০১৪, ০১:০৬:৩৪ রাত
[পর্দা সম্পর্কে চলমান আলোচনা যা ইভটিজিং - কারণ ও প্রতিকার বই থেকে নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমরা দেখার চেষ্টা করব এ ব্যাপারে আধুনিক বিজ্ঞান কী বলছে]
পর্দার বিজ্ঞানসম্মত উপকারসমূহ
একজন নারী কেন পর্দা করে চলবে তার বিজ্ঞান সম্মত সুস্পষ্ট ১৭টি উপকার নিম্নে উল্লেখ করা হলো (যদিও তাদের দেশের বর্তমান সংস্কৃতি এর উল্টো কথা বলে) ঃ
১. আপনি আপনার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করছেন। আপনি যখন পরিপূর্ণভাবে পর্দা মেনে চলছেন তখন তাঁর নির্দেশ পালন করছেন। এর ফলে আপনি প্রতিদান হিসেবে তাঁর কাছে উত্তম পুরষ্কার আশা করতে পারেন। [উদাহরণ হিসেবে বলা যায় - ধরুন, বাংলাদেশের সরকার প্রধান আপনাকে কোন পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। এ পুরস্কার মূল্যের বিচারেও কী কখনো ছোট হতে পারে? নিশ্চয়ই তিনি দামী পুরস্কার দেবেন। ঠিক একই ভাবে চিন্তা করা যায় যে, যিনি এ সমগ্র সৃষ্টিজগতের অধীস্বর, যাঁর ভান্ডারে কোন কিছুরই অভাব নেই তিনি যখন তাঁর কোন বান্দার উপর সন্তুষ্ট হয়ে কোন পুরস্কার দেবেন তাঁর সত্ত্বার বিচারে সে পরিমাণ বা মূল্য যে কত বিশাল হতে পারে তা আমাদের কল্পনাতেও আসবে না।]
২. পর্দা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার সৃষ্টিগত সৌন্দর্যের প্রতিরক্ষা স্বরূপ। আপনি যে কোন পুরুষের কাছে প্রদর্শনযোগ্য নন বরং আপনি অনেক মূল্যবান।
৩. এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার সতীত্ব হেফাজতকারী।
৪. আল্লাহ পর্দার মাধ্যমে আপনার আত্মা ও মনকে বিশুদ্ধ করে দেন।
৫. আল্লাহ পর্দার মাধ্যমে আপনার ভেতর এবং বাইরের চেহারার সৌন্দর্য বর্ধন করেন। বাহ্যিকভাবে পর্দা সৃষ্টিকর্তার প্রতি আপনার সরলতা, পবিত্রতা, দোষশূন্যতা, লাজুকতা, নম্রতা, লজ্জাশীলতা, শান্তভাব, পরিতৃপ্ততা এবং কর্তব্যপরায়ণতাকে প্রকাশ করে। আর ভেতরগত দিক থেকেও আপনি এ বিষয়গুলি লালন করেন।
৬. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার নারীত্বকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আপনি একজন নারী যিনি তাঁর নারীত্বকে সম্মান করছেন। আল্লাহ চান আপনি অন্যের দ্বারা সম্মানিত হোন এবং পাশাপাশি আপনি নিজে নিজেকে সম্মান করুন।
৭. আল্লাহ পর্দার মাধ্যমে আপনার মর্যাদাকে অনেক উচ্চে আসীন করেছেন। যখন কোন আগন্তক আপনার দিকে তাকায় তখন সে আপনাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কারণ সে দেখছে যে আপনি নিজেকে সম্মান করতে জানেন।
৮. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার সম্মানকে ১০০% নিরাপত্তা দিয়েছেন। কোন পুরুষ আপনার দিকে কামনার দৃষ্টিতে তাকাতে পারে না কিংবা আপনাকে যৌনমূলক কোন এ্যাপ্রোচও করতে পারে না। শুধু তা-ই নয়, তারা আপনার সাথে যৌনমূলক কোন কথাও বলতে পারে না। বরং একজন পুরুষ আপনাকে মর্যাদার উচ্চ আসনে তুলে ধরে এবং তা শুধুমাত্র আপনার দিকে একবারের দৃষ্টিতেই।
৯. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ আপনাকে একজন সম্ভ্রান্ত নারীতে পরিণত করেছেন। আপনি মর্যাদাহীন নন বরং অভিজাত, কেননা আপনি উলঙ্গ বা খোলামেলা চলাফেরা না করে পর্দার মাধ্যমে নিজেকে আবৃত করে রেখেছেন।
১০. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ একজন মুসলিম নারী হিসেবে আপনার সমকক্ষতা প্রমাণ করেছেন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে পুরুষ প্রতিপক্ষের সমান মূল্যবান করেছেন এবং সুন্দর অধিকার ও স্বাধীনতা প্রদান করেছেন। আপনি পর্দা মেনে চলে এসব সম্মানের অধিকারী হতে পারেন।
১১. আল্লাহ পর্দার মাধ্যমে মুসলিম নারী হিসেবে আপনার ভূমিকাকে সুন্দরভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আপনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী একজন বিশিষ্ট নারী। আপনি অলস নন বরং কর্মজীবি একজন নারীর প্রতিচ্ছবি। আপনাকে যে কোন ব্যক্তি হালকা ভাবে গ্রহণ না করে সম্মানের সাথেই করে থাকে।
১২. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার স্বয়ংসম্পূর্ণতাকে প্রকাশ করে থাকেন। আপনি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম যে আপনি মহান রবের অনুগত দাসী। আপনি কোন ভাবে কোন কারো কাছে মাথা নত করেন না। আপনি কোন ব্যক্তি, সমাজ কিংবা জাতির ক্রীতদাস নন বরং আপনি মানুষের সৃষ্ট সকল ধরণের সিস্টেম থেকে মুক্ত এবং স্বাধীন।
১৩. পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার অভিব্যক্তি প্রকাশ এবং চলাচলের স্বাধীনতা দান করেছেন। নির্যাতনের কোন প্রকার ভীতি ছাড়াই আপনি চলাফেরা করতে সক্ষম। আপনার পর্দা এ ব্যাপারে আপনাকে অনেক বেশি আস্থা প্রদান করে।
১৪. আল্লাহ চান সকল ব্যক্তিই আপনাকে শ্রদ্ধার সাথে একজন মুসলিম নারী হিসেবে বিবেচনা করুক। এক্ষেত্রে পর্দা হলো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মাধ্যম যা সহজেই আপনাকে যে কোন ব্যক্তির নিকট থেকে সম্মান আদায় করে দিতে পারে।
১৫. আল্লাহ চান আপনার সম্পূর্ণ সৌন্দর্য শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির উপভোগের জন্য সংরক্ষিত থাকুক। আর তিনি হলেন আপনার স্বামী।
১৬. আল্লাহ আপনাকে পর্দা মেনে চলার মাধ্যমে সুন্দর এবং সার্থক দাম্পত্য জীবন উপভোগকারী হবার জন্য সাহায্য করেন। কারণ আপনি আপনার সৌন্দর্যকে শুধুমাত্র একজন পুরুষের জন্য সংরক্ষিত রাখেন। এর ফলে আপনার প্রতি তার ভালবাসা, স্নেহ, সম্মান এবং শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং, পর্দা আপনার সুখী, সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবদান রাখে।
১৭. আল্লাহ পর্দা ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাজে স্থায়ী শান্তি আনতে চান। এবং এটাই সত্যি। কোন পুরুষ অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে দূর্নীতির কারণ হতে পারেন না কেননা আপনি একজন মুসলিম নারী - আপনি তার প্রচন্ড আবেগকে শান্ত করতে পারেন। যখন কোন পুরুষ আপনার দিকে তাকায় তখন সে আপনাকে ব্যভিচারের জন্য প্রলুব্ধ করে না বরং সে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে....
সুতরাং, পর্দা মেনে চলা একজন নারী অসম্মানীত নন বরং মর্যাদাবান, নীচু শ্রেণীর নন বরং সম্ভ্রান্ত, পরাধীন নন বরং স্বাধীন, নোংরা নন বরং পবিত্র, ক্রীতদাস নন বরং স্বাধীন-সার্বভৌম, খোলামেলা বা উলঙ্গ নন বরং সুরক্ষিত, হাসির পাত্রী নন বরং সম্মানীত, নিরাপত্তাহীন নন বরং আস্থাশীল, পাপী নন বরং অনুগত, ব্যভিচারিনী নন বরং সুরক্ষিত অলংকার.......
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৩১৪ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যেহেতু পর্দা ফরজ সেহেতু মুসলমান কোন নারী এটা এড়িয়ে কিছু করতে পারার অধিকার রাখে না।
অাপনার বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগল । ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন