ঃ রমজান আলোচনা ঃ পর্দা (পর্ব - ৩)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ০৭ জুলাই, ২০১৪, ০৪:৩৭:০৮ বিকাল
[পর্দা নিয়ে কথা বললেই এক শ্রেণীর নারী-পুরুষ হৈ হৈ করে ওঠেন আর বলেন আমাদেরকে মধ্যযুগে / অন্ধকারযুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য ষড়যন্ত্র। এরা মৌলবাদী, এরা নারীদেরকে সম্মান দিতে জানে না। নারীকে শুধু ভোগের বস্তু বলে মনে করে। কিন্তু আসলেই কী তাই?
একমাত্র কুরআন ছাড়া আর অন্য সব ধর্মগ্রন্থই পরিবর্তিত হয়েছে, এটা এখন প্রমাণিত সত্য। চলুন তারপরও আমরা দেখি অন্যান্য ধর্মে পর্দা সম্পর্কে কী নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এ তথ্যগুলিও আমার ইভটিজিং - কারণ ও প্রতিকার নামক বই থেকে নেয়া। আশা করি আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা পাল্টে যাবে]
খ্রীষ্ট ধর্ম ঃ
১। আমি ইহাও চাই, যেন স্ত্রীলোকগণ ভদ্র ভাবে ও ভাল বিচার বুদ্ধি ব্যবহার করে উপযুক্ত কাপড়-চোপড় দিয়া শালীনতার সাথে নিজেদের সাজায় এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন নানা রকমে চুলের বেণী বাঁধিয়া, সোনা ও মুক্তার গহনা পরিয়া আর দামী দামী কাপড়-চোপড় দিয়ে নিজেদের না সাজায়। তাহার বদলে যেন তাহারা ভাল ভাল কাজ দিয়া নিজেদের সাজায়। (১ টিমোথী - অধ্যায় ২ - অনুচ্ছেদ ৯-১০)
২। যে স্ত্রীলোক মাথা না ঢাকিয়া মুনাজাত করে বা নবী হিসেবে কথা বলে, সে তাহার মাথাকে অসম্মান করে, কারণ তাহাতে সে মাথা কামানো স্ত্রীলোকের মতই হইয়া পড়ে। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ৫)
৩। যদি কোন স্ত্রীলোক মাথা না ঢাকে তবে সে তাহার চুলও কাটিয়া ফেলুক। কিন্তু স্ত্রীলোকের পক্ষে চুল কাটিয়া ফেলা বা মাথা কামাইয়া ফেলা লজ্জার বিষয় বলিয়া সে তাহার মাথা ঢাকিয়া রাখুক। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ৬)
৪। অধীনতার চিহ্ন হিসেবে স্ত্রীলোকের মাথা ঢাকা উচিত। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ১০)
৫। স্বাভাবিক বুদ্ধি দিয়া ইহা কি বুঝা যায় না যে, পুরুষ যদি লম্বা চুল রাখে তবে তাহাতে তাহার অসম্মান হয়, কিন্তু স্ত্রীলোক যদি লম্বা চুল রাখে তবে তাহাতে তাহার গৌরব হয়। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ১৪)
৬। নিজেকে ঢাকিবার জন্যই তো স্ত্রীলোককে লম্বা চুল দেওয়া হইয়াছে। (ফাষ্ট করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ১৫)
৭। যদি কেহ ইহা লইয়া তর্ক করিতে চায় তবে ইহা বলিব যে, অন্য কোন নিয়ম আমাদের মধ্যেও নাই বা খোদার চার্চসমূহের মধ্যেও নাই। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১১ - অনুচ্ছেদ ১৬)
৮। চার্চে স্ত্রীলোকদের নিশ্চুপ থাকা উচিত। কারণ কথা বলিবার অনুমতি তাহাদের দেওয়া হয় নাই। (১ করিন্থীয় - অধ্যায় ১৪ - অনুচ্ছেদ ৩৪)
৯। তেমন ভাবে বয়স্কা স্ত্রীলোকদের বলিবে, তাঁহাদের চাল-চলনে যেন খোদার প্রতি ভক্তি থাকে এবং তাঁহারা যেন ভালো শিক্ষা দেন। পরের নিন্দা করা বা মাতাল হওয়া তাঁহাদের উচিত নয়। তাহা হইলে তাঁহারা যুবতী মেয়েদের শিখাইতে পারিবেন, যেন তাহারা স্বামী ও ছেলেমেয়েদের মহব্বত করে, নিজেদের দমনে রাখে, সতী থাকে, সংসারের দিকে খেয়াল করে, দয়ালু হয় এবং স্বামীর অধীনে থাকে, যাহাতে কেহ খোদার কালামের অসম্মান করিতে না পারে। (তীত - অধ্যায় ২ - অনুচ্ছেদ ৩-৫)
১০। তোমরা শুনিয়াছ, এই কথা বলা হইয়াছে, ‘ব্যভিচার করিও না।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলিতেছি, যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের দিকে কু-নজরে তাকায়, সে তখনই মনে মনে তাহার সঙ্গে ব্যভিচার করিল। (গ্রজবেল অব মথি - অধ্যায় ৫ - অনুচ্ছেদ ২৭-২৮)
১১। স্ত্রীলোকগণ এমন কোন পোশাক পরিধান করিবে না যা পুরুষরা পরে। আর পুরুষরা এমন কোন পোশাক পরিধান করিবে না যা স্ত্রীলোকেরা পরিয়া থাকে। যাহারা এমনটি করিবে তাহারা প্রভুর ঘৃণার পাত্র হইবে। (বুক অব ডিওটারনমি - অধ্যায় ২২ - অনুচ্ছেদ ৫)
১১। তোমার সৌন্দর্য তোমার পরিপাটি চুল, দামী গহনা, উন্নত সাজ-সজ্জা কিংবা পোশাক-আশাক থেকে প্রকাশ পাওয়া উচিত নয়। তারচেয়ে বরং এটা হওয়া উচিত তোমার অন্তরস্থিত বিষয়, যা তোমার শান্ত আত্মা ও অমলিন সৌন্দর্যকে বুঝায়। আর এটাই খোদার দৃষ্টিতে বেশি মূল্যবান। এজন্যই অতীতের পূণ্যবতী নারীদের থেকে আমরা জানতে পারি যে, তাঁরা নিজেদেরকে আরো বেশি সুন্দর করার জন্য খোদার কাছে সঁপে দিতেন। (১ পিটার - অধ্যায় ৩ - অনুচ্ছেদ ২ - ৫)
১২। অনেক রোমান ক্যাথলিকদের মতে, Linus ই প্রথম নারীদের পর্দা প্রথার কথা উল্লেখ করেন। তাঁরা এ সম্পর্কে বলেন, ..... তিনি নারীদের জন্য পবিত্র স্থানসমূহ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের মাথা ঢেকে যাবার ব্যবস্থা করলেন ....। (Lopes A. The Popes: The lives of the pontiffs through 2000 years of history. Futura Edizoni, Roma, 1997, p-1) (২ সেন্ট লিনাস ঃ ৬৭-৭৬)
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৫৬১ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন