হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা ঃ পর্ব - ২৬

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ০৫ জুন, ২০১৪, ১২:৩০:১০ দুপুর

উইকিপিডিয়া বলছে, The Constitution of India is the longest written constitution of any sovereign country in the world, containing 448 articles, 12 schedules and 100 amendments, with 117,369 words in its English language version, while the United States Constitution is the shortest written constitution, at 7 articles and 27 amendments.

এখন আমরা দেখার চেষ্টা করি, সংশোধন অর্থ কী? সংশোধন এর ইংরেজী হলো Rectify বা Correction। বাংলায় বিশুদ্ধকরণ, নির্ভুলকরণ বা সঠিকীকরণ। অর্থাৎ, আগে ভুল ছিল এখন তা ঠিক করা হলো। তাহলে একটা ভুল এতগুলো মাথা একত্রে কতবার ভুল করে? তার অর্থ দাঁড়ায়, মানুষের জ্ঞান নিঃসন্দেহে অত্যন্ত সীমিত।

অর্থাৎ, মানবরচিত কোনো সংবিধান তা যে জাতিরই হোক না কেন তা সমকালীন সময়ের জন্যই কখনো ঠিক বা কখনো সমস্যাপূর্ণ হয়ে দেখা দেয়। কখনোই তা সর্বকালের জন্য কল্যাণকর বিধিবিধান হতে পারে না। কেননা মানুষ তো গায়েবের খবর জানে না কিংবা সামনে অনাগত কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তাও তার জানা নেই। কিন্তু যে মহান স্রষ্টা আমাদের সৃষ্টি করলেন, তিনি তো ভাল-মন্দের সব কিছুই জানেন। শুধু দু-চার বছর আগে-পরেই না বরং সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবই তিনি জানেন। কাজেই তাঁর দেয়া বিধানই কী শ্রেষ্ঠ বিধান হবার যোগ্যতা রাখে না? যাঁরা কুরআন-হাদীসকে সর্বকালীন মনে না করে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্য বিধান বলে মনে করেন তাঁরা কী প্রকারান্তরে স্রষ্টার বিধানের ওপর নিজেদের জ্ঞান ও বিচক্ষণতাকে বড় করে দেখছেন না? প্রকাশ্যে বা মুখে অস্বীকার না করলেও কর্মের দ্বারা কী এক প্রকার অস্বীকার করা হচ্ছে না? ঈমান তো তার নাম যা অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মের মাধ্যমে তার স্বীকৃতি। শুধুমাত্র চার কালেমা পড়লাম আর সারাজীবন নাস্তিকতায় লিপ্ত থাকলাম কিংবা নাস্তিকদের মতো চলাফেরা করলাম তাহলেই আমি ঈমানদার দাবী করতে পারি না।

যাঁরা আজ হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে গ্রহণ করা যাবে না বলে একদম বাতিল করে দিচ্ছেন তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে সর্বপ্রথম আমাদের সংবিধান রচিত হয় এবং তৎকালীন সংসদে তা গৃহীত হয়ে মূল্যবান দলিলের স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর বিভিন্ন প্রয়োজনে সময়ে অসময়ে তা সংশোধন করা হয়েছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী পাশ করে গণতন্ত্রের পরিবর্তে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল। ন্যায়-অন্যায়ের প্রসঙ্গে না গিয়ে আমি বলতে চাই, চতুর্থ সংশোধনী পাশ করার আগে যে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু ছিল তার সঙ্গে বাকশালী ব্যবস্থা অসাংবিধানিক কিংবা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল কি না? এ ব্যবস্থা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকীস্বরূপ ছিল কি না?। এ ব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা মূল্যবোধ ও আদর্শের পরিপন্থী ছিল কি না?

(চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১০০৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

231023
০৫ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
০৭ জুন ২০১৪ সকাল ১০:১১
178409
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : ধন্যবাদ, সাথেই থাকুন।
231193
০৬ জুন ২০১৪ রাত ১২:৫৪
মুিজব িবন আদম লিখেছেন : বেশীর ভাগ সময় সংবিধান সংশোধন হয়েছে শাসকের স্বার্থে, জনগণের জন্য নয়। কেবল জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়া।
০৭ জুন ২০১৪ সকাল ১০:১২
178410
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : ঠিক বলেছেন। আমাদের নিয়তটাই তো খারাপ।
231873
০৭ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:২৮
আমি মুসাফির লিখেছেন : বর্তমান শাসকরা যায় করবে তা সংবিধান হিসাবে মানতে হবে অন্যরা যা করবে তা সংবিধানের বাইরে ধরে নিতে হবে। এটা শাসকদলের এক মারাত্মক রোগ। তাই তাদের কাছে এটা পেশ করা আদৌ ঠিক না। এরা নিকৃষ্ট এরা ঘৃণিত।
০৮ জুন ২০১৪ সকাল ১০:০৭
178901
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : মানসিকতা পরিবর্তন দরকার।
233152
১০ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
মরুভূমির জলদস্যু লিখেছেন : মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ভাই এই ধরনের সিরিজের পড়ার নিমন্ত্রণ আমাকে পাঠিয়েন না।
১০ জুন ২০১৪ সকাল ১১:১৮
179834
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : তাহলে তো আপনাকে আমার প্রিয় তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। কেননা, আমি ব্যক্তিগতভাবে কারো কাছে পাঠাই ন। সব প্রিয়দের কাছেই এক ক্লিক এ যায়। তাছাড়া এ বিষয়টি কী খারাপ মনে হচ্ছে আপনার কাছে?
১৪ জুন ২০১৪ সকাল ১০:২৭
181347
মরুভূমির জলদস্যু লিখেছেন : আমি ধর্ম নিয়ে কারো মতামত টাইপ লেখা আর রাজনিতী নিয়ে কোনো লেখা পড়ি না।
যেহেতু পড়িনা খারাপ-কি ভালো তাও বলেতে পারি না। পড়িনা বলেই পড়ার নিমন্ত্রণ পাঠাতে নিষেধ করেছিলাম, আর অন্য কোনো কারণ নেই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File