হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা ঃ পর্ব - ১৯
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ২৬ মে, ২০১৪, ০২:৪১:০১ দুপুর
এদের দাবি মেনে নেয়ার অর্থ হচ্ছে পাকিস্তানের নীতি গ্রহণ করা উল্লেখ করে গণঐক্যের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশকে তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য একটা গোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগেছে। সরকার সমঝোতার নামে দেশকে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে না, দেশের উন্নয়ন ধ্বংস করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
হেফাজত যে ১৩ দফা দাবি পেশ করেছে তার একটিও বাংলাদেশের পক্ষে নয় দাবি করে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, এদের একটি দাবি মেনে নিলেও দেশ অচল হয়ে যাবে। তাদের কথায় শিক্ষানীতি, নারীনীতির বাস্তবায়ন বন্ধ করা যাবে না। তাদের কথায় নারীরা ঘরে ফিরবে না দাবি করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন বাংলার নারী পোশাককর্মীরা। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের ৯০ শতাংশ শ্রমিক নারী। এসব নারী যদি কাজ বন্ধ করে ঘরে চলে যান, দেশের অর্থনীতির কি হবে- এই প্রশ্ন রাখেন তিনি। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
অনতিবিলম্বে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাতিলের দাবি জানিয়ে জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কর্মজীবী নারীর সভাপতি শিরিন আখতার বলেন, এসব দাবি অবৈধ। কারণ, এ সকল দাবি স্বাধীনতা, সংবিধান ও নারী অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব মানলে দেশ মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে। হেফাজতের দাবি স্পর্ধার শামিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষানীতি ও নারীনীতির ওপর এদের আক্রমণ সভ্য জাতির ওপর আক্রমণের নামান্তর। অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন কনা বলেন, বিরোধী দল হেফাজতকে সমর্থন জানিয়েছে, একসঙ্গে সমাবেশ করেছে; আর সরকার এদের সমাবেশ করতে দিয়ে সহযোগিতা করেছে। আর এখন যদি এদের একটি দাবিও মেনে নেয় তাহলে দেশের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। জাতি কয়েকশ বছর পিছিয়ে যাবে। এদের রুখে দাঁড়ানোর সময় এখনই। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
খেলাঘরের সভাপতি মাহবুবা খানম বলেন, হেফাজত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ধূলিসাৎ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি তাদের মক্কা-মদিনায় চলে যাবার আহ্বান জানান। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, ১৩ দফা যদি মানতে হয়, তবে সেনাবাহিনীতে যে নারী সদস্যরা রয়েছেন, তাদেরও বোরকা পরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীকে রাজনীতি ছেড়ে বোরকা পরে ঘরে ফিরে যেতে হবে। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
অভিনেত্রী ও নারীনেত্রী রোকেয়া রফিক বেবী বলেন, এদের প্রতিটি দাবিই সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী। এদের অশ্লীল দাবি দেশকে আইয়্যামে জাহেলিয়ার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র এস এম কামরুজ্জামান সাগর বলেন, বাংলাদেশকে প্রকৃত তালেবান রাষ্ট্র করার নীলনকশা এই ১৩ দফা। জামাত-শিবির নিষিদ্ধের গণদাবিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যই তাদের এই ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, যতো ষড়যন্ত্রই হোক, মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দাবানো যাবে না। হেফাজতের কোনো দাবি মানতে দেয়া হবে না। (দৈনিক ভোরের কাগজ, ৮ এপ্রিল ২০১৩, অনলাইন সংখ্যা)
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১১১৭ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন হেফাজতকে আরো মজবুত ভিত রচনা করে এই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
তবে নিজে ঠিক থাকার চেষ্টা করা ভাল, অন্যকে নসিহত করার চেয়ে । নসিহত করতে গেলে কথা উঠবে , আমরা কি অবুঝ ?
উনাদেরকে উনাদের মত চলতে দিন ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন