বদনজরী ঃ পর্ব - ১৫

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ২২ মার্চ, ২০১৪, ০১:৫৬:২২ দুপুর

পর্দা ছাড়া চলাফেরা করলে শুধু যে নারীই শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস- হবে তা নয়। বরং পুরুষও ক্ষতির শিকার হবে। একজন পুরুষ যখন কোন নারীর দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকায় তখন তার দৃষ্টির ফলে শুধু যে নারীর দেহেই কেমিক্যাল রি-এ্যাকশন হয় তা-ই নয় বরং এর নেগেটিভ প্রভাব পুরুষটির দেহেও পরে। পক্ষান-রে কোন নারী যখন কোন পুরুষকে নিয়ে কু-চিন-া করে কিংবা কল্পনাবিলাসী হয় তার প্রভাবও ঐ পুরুষটির দেহে পরে। পুরুষটির দেহে তখন এক ধরণের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয় একদম সেল লেভেলে। ফলশ্রুতিতে দেখা দেয় নানা রকম শারীরিক সমস্যা। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে স্ত্রীর সাথে যৌন মিলনের আগ্রহ কমে যাওয়া কিংবা হারিয়ে ফেলা। টেষ্টোষ্টেরন হরমোন পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ কমে যাওয়া কিংবা মৃত শুক্রাণু উৎপাদন। যার ফলে সন-ান উৎপাদনে দেখা দিবে নানা সমস্যা। আর এসব কারণে সংসারেও দেখা দিতে পারে নানা রকম অশানি-, ঝগড়া, ফ্যাসাদ, মারামারিসহ আরো বহুবিধ সমস্যা। যে সকল ডাক্তার নিঃসন-ান দম্পতিদের নিয়ে কাজ করছেন তাঁদের চেম্বারে গেলেই দেখা যাবে এ ধরণের কত রোগী সেখানে।

মহান আল্লাহ তা‘আলা বেশ ভালো করেই জানেন যে, আমাদের চিন-াগুলি কীভাবে ট্রান্সফার ও রিসীভ হয় এবং নারী-পুরুষ উভয়কেই ক্ষতিগ্রস- করতে পারে। এজন্যই তিনি আমাদের উপকারের জন্য বিভিন্ন রকম বিধি-বিধান দিয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে একটি ভ্রান- ধারণা প্রচলিত আছে যে, মানুষ শুধু তার কর্মের জন্যই দায়ী হবে। কিন' আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের জানাচ্ছেন যে, কর্ম ছাড়াও মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে তার

চিন-া-ভাবনা, অভিপ্রায় এমন কি তার অন-রের গভীরে যা লুকানো আছে তার জন্যেও। তিনি বলেছেন, আসমান-জমিনে যা কিছু আছে তার সবই আল্লাহ তা‘আলার জন্যে, তোমরা তোমাদের মনের ভেতর যা কিছু আছে তা যদি প্রকাশ করো কিংবা তা গোপন করো, আল্লাহ তা‘আলা (একদিন) তোমাদের কাছে থেকে এর (পুরোপুরিই) হিসাব গ্রহণ করবেন; (এরপর) তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে মাফ করে দেবেন, (আবার) যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি শাসি- দেবেন; আল্লাহ তা‘আলা সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। (সুরা বাকারা ঃ ২৮৪)

কার মনে কী আছে আল্লাহ সেটা জানেন। চেতন-অবচেতনের চিন-া-ভাবনা অন্য সবার কাছে থেকে লুকিয়ে রাখা গেলেও আল্লাহর অগোচরে থাকে না। মানুষ ও তার মনের মধ্যখানে অবস'ান নেন আল্লাহ। তাই মানুষ কিছুই গোপন করতে পারে না তাঁর কাছে। তার মনে কী সন্দেহ উদ্রেক করে, শয়তান কী কু-মন্ত্রণা দেয়, মুমিনদের সম্পর্কে সে কী ভাবে, কুরআনে তার আস'া কতটুকু, ইবাদতকালে তার মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এসব কিছুই একে একে আল্লাহর গোচরীভূত হয় এবং এসব কিছুই ফেরেশতাদের দ্বারা নথিভুক্ত হয়।

প্রকৃতপক্ষে, পর্দার বেশ কিছু স্বাস'্যগত উপকারও রয়েছে। এছাড়াও আচরণগত বিজ্ঞান সংক্রান- গবেষণায় দেখা গেছে যে, বোরকা বা হিজাব নারীদের জন্য সবচেয়ে উন্নতমানের পোশাক। মেডিক্যাল টেষ্টে দেখা যায়, একজন নারী তার দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার শতকরা ৪০-৬০ ভাগ মাথার মাধ্যমে হারায়। অর্থাৎ, ঐ পরিমান তাপ মাথা দিয়ে বেরিয়ে যায়। কাজেই যখন সে বোরকা পরিহিত থাকে তখন ঐ তাপ শরীরে সঞ্চিত থাকে যা তাকে তার শারীরিক ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে। আবার শীতের দিনে এ তাপ ধারণের ফলে তাকে অন্যদের তুলনায় (যারা বোরকা পরেনি) ৫০% কষ্ট কম পেতে হয়। আল-জাওজিয়ার প্রথাগত ইসলামিক মেডিক্যাল টেস্টে দেখা যায়, মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হলে দেহের ওপর ৪টি মৌলিক উপাদান যথা আগুন, পানি, বায়ু ও মাটির ব্যাপক মন্দ প্রভাব পড়ে যার ফলে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

(চলবে্)

বিষয়: বিবিধ

১১৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

196120
২২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:৩৪
নিভৃত চারিণী লিখেছেন : ধন্যবাদ
২২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:৫৯
146258
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও।
196173
২২ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:০০
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : ওয়াও বোরকার এত গুণাবলি। তাহলে সবাইকে বোরকা পরতে উদ্ধুদ্ধ করতে হয়। ধন্যবাদ
২২ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৩
146318
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : প্রশংসা করলেন না সমালোচনা করলেন বুঝতে পারলাম না। তবে ব্যাখ্যা কিন্তু সঠিক।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File