বদনজরী ঃ পর্ব - ১০
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ২০ মার্চ, ২০১৪, ০৯:২৩:২৬ সকাল
যখন ‘নারী প্রগতি’, ‘নারী মুক্তি’, ‘নারী স্বাধীনতা’ ইত্যাদি নামে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা, উলঙ্গপনা ও বেলেল্লাপনার বিরুদ্ধে বলা হয় এবং নারীদের ইসলামী পর্দা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলা হয়, তখন এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীরা বলে ওঠে এগুলো প্রগতি পরিপন'ী, এগুলো সেকেলে জিনিস, বিজ্ঞানের যুগে এসব অচল। এগুলো দিয়ে উন্নতি করা যাবে না, এভাবে আমাদের সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, মৌলবাদীরা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, ইত্যাদি। তারা বলে এবং বুঝাতে চায়, পশ্চিমা বিশ্বে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার যে কালচার এখন চালু হয়েছে তার ফলেই তারা উন্নতি করেছে। কাজেই আমাদেরকেও উন্নতি করতে হলে সে রকম খোলামেলা কালচার চালু করতে হবে। কিন' এ রকম অবাধ মেলামেশার দ্বারা কী আদৌ উন্নতি করা সম্ভব? তারা কী এসব কারণে উন্নতি করতে পেরেছে? বরং তাদের উন্নতির মূলে আছে সততা, নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা, সময়ানুবর্তিতা, সত্যবাদিতা ইত্যাদি গুণাবলী। কিন' এ সবই তো ইসলামের শিক্ষা। অথচ আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী নামের পরজীবীরা পশ্চিমাদের এসব ভালো গুণকে চোখে দেখে না। আর আমরা সাধারণ মানুষ তো খারাপ জিনিসই আগে গ্রহণ করি। ডাষ্টবিনের উচ্ছিষ্ট নোংরা আবর্জনা যাদের খাদ্য তারা কখনো ডেচ্কির ভেতরের সুস্বাদু খাবার কিংবা পোলাও-কোর্মা চোখে দেখবে না সেটাই স্বাভাবিক। কাজেই আমাদেরকেও এখন চিন-া-ভাবনা করে দেখতে হবে যে, আমরা কাদেরকে অনুসরণ করবো।
অনেক মা বোন নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি বিধান পালন করাকে জরুরী মনে করেন, কিন' পর্দা মানাকে জরুরী মনে করেন না। অথচ পর্দার বিধান ফরয। পর্দা লঙ্ঘন করা হারাম। পর্দা লঙ্ঘন করলে কবীরা গোনাহ হয়। আবার অনেকে ভাবেন, পর্দা মেনে চলতে গেলে দম আটকে মরে যাবেন। তাঁরা পর্দাকে খুব কঠিন বিষয় মনে করেন। তাঁরা ভাবেন পর্দা মেনে চলা সম্ভব নয়। আমাদের বিশেষ ভাবে মনে রাখা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে এমন কোন বিধান দেননি যা মানা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে রাসুল (সঃ) এর সাহাবীগণই হলেন উৎকৃষ্ট মাপকাঠি যাঁরা সবগুলি বিধান অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আমাদের সামনে দৃষ্টান- তৈরি করে রেখেছেন। এখন আমাদের যাঁরা ভাবছেন যে, পর্দার বিধান মেনে চলা সম্ভব নয়, তাঁরা কখনো চিন-া করে দেখেন না যে, যাঁরা মেনে চলছেন তাঁরা কীভাবে পারছেন। তাঁরা তো দম আটকে মরে যাচ্ছেন না। বরং তাঁদের পক্ষে পর্দা ছাড়া চলাটাই একটা অসম্ভব ব্যাপার।
অনেকে মনে করেন, পর্দা মেনে চলতে গেলে আত্মীয়-স্বজনরা অসন'ষ্ট হয়, অনেকে টিট্কারী করে, কারো বাড়িতে ইচ্ছে মতো বেড়াতে যাওয়া যায় না, সকলের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা যায় না। আপনারা কী ভেবে দেখেছেন যে, আপনার আত্মীয়কে খুশী করা জরুরী নাকি আল্লাহকে? আল্লাহকে অখুশী বা অসন'ষ্ট করে অন্য কাউকে খুশী করা কি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বহন করে?
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
৯৮৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন