বদনজরী ঃ পর্ব - ৬
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ১৮ মার্চ, ২০১৪, ০৫:২৬:১৬ বিকাল
আল্লাহ-তায়ালা নারীর জন্য পর্দার বিধান কেন দিয়েছেন তার কারণ সুরা আহ্যাবে উল্লেখ করেছেন, হে নবী! আপনি আপনার পত্নীদেরকে, আপনার কন্যাদেরকে এবং মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের মুখমন্ডলের ওপর টেনে দেয়। (এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি) এতে সহজেই তাদের পরিচয় পাওয়া যাবে। ফলে তারা নির্যাতিতা হবে না। আর আল্লাহ হলেন অতিশয় ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সুরা আহ্যাব - ৩৩ ঃ ৫৯)
আবার এই সুরার আর একটি আয়াতে আল্লাহ তা‘য়ালা বলেছেন, হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ স্ত্রীলোকদের মতো নও। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করো, তবে পর পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না। যাতে দুষ্টু মনের কোনো ব্যক্তি খারাপ আশা পোষণ করতে না পারে বরং সোজা সোজা স্পষ্ট কথা বলো। আর তোমরা নিজেদের ঘরে অবস'ান করবে, পূর্বেকার জাহেলিয়াতের যমানার (নারীদের) মতো নিজেদের প্রদর্শনী করে বেড়াবে না। নামায কায়েম করো, যাকাত আদায় করো এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো। আল্লাহ তাই চান যে, তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের পরিপূর্ণরূপে পবিত্র রাখতে। (সুরা আহ্যাব - ৩৩ ঃ ৩২-৩৩)
উপরের আয়াত থেকে এ কথা স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, আল্লাহর দরবারে নারীদের বাড়ি থেকে বের না হওয়াটাই কাম্য। সাংসারিক কাজকর্মের জন্যই তাদের সৃষ্টি। বিশেষ করে, সন-ান লালন-পালন থেকে শুরু করে নিজ সংসারের সব দিক সামলে নিয়ে তাকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে ভবিষ্যৎ দিনের দেশ, জাতি ও দ্বীনের কান্ডারী বানাবার মতো গুরু দায়িত্ব নারীদের ওপর দেয়া হয়েছে। একজন পুরুষ কখনো এ গুরু দায়িত্ব পালনে সক্ষম নয়। যদি কোন নারী সংসার বাদ দিয়ে বাইরে তার কর্মক্ষেত্র বানায়, তখন তার স্রষ্টার দেয়া স্বাভাবিক কাজগুলি থমকে যায় কিংবা বাধাগ্রস' হয়। প্রকৃতপক্ষে, একজন নারীকে স্রষ্টা যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা কখনো ভাড়া করা লোক দিয়ে আদায় করা যায় না। ফলে আগামীদিনের বংশধররাও প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস'ার দিকে ভালো ভাবে লক্ষ্য করলেই আমরা দেখতে পাই, এখন যে সব সন-ান বেড়ে উঠছে তারা কী প্রকৃত দেশ, জাতি ও দ্বীনের কান্ডারী হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে পারছে? মূলতঃ শরীয়তের কাম্য প্রকৃত পর্দা হলো গৃহের অভ্যন-রে অনুসৃত পর্দা। শরীয়ত সমর্থিত প্রয়োজন ছাড়া নারীদের ঘর থেকে বের হওয়া হারাম।
বাবা-মা‘র দায়িত্ব হলো ছোট বেলা থেকেই সন-ানকে ধীরে ধীরে সব রকম আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়া।
যেমন ঃ অন্য কারো ঘরে তো বটেই এমন কি বাবা-মা‘র ঘরে ঢুকতে হলেও অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে। এ শিক্ষার চর্চা সন-ানের মধ্যে এমন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যাবে যে, তারা বাইরে কারো বাড়িতে বা অফিসে ঢুকতে হলেও অনুমতি নিয়েই ঢুকবে। তাতে করে তাদের আমল আখলাকও ভালো হবে এবং তারা নিজেদেরকে ভদ্র ও সভ্য হিসেবে প্রমাণ করতে সক্ষম হবে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমাদের ছেলেরা যখন বুদ্ধির পরিপক্কতা পর্যন- পৌঁছবে, তখন তারা যেন অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। যেমন তাদের বড়রা অনুমতি নিয়ে ঘরে ঢোকে তাদের পূর্বে। এভাবেই আল্লাহ তার আয়াতসমূহ তোমাদের সামনে উন্মুক্ত করে দেন, তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। (সুরা নূর - ২৪ ঃ ৫৯)
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১০৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন