ইসলামই বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার একমাত্র উপায়।

লিখেছেন লিখেছেন উসামা ইউসুফ ৩০ নভেম্বর, ২০১৩, ০৪:৪৯:২৪ বিকাল

ছবিটি আগে দেখুন তার পর বিশ্লেষণ পড়ুন।



হতো এভাবেই ৭১ এ বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। কাদের সিদ্দিকির মতে পাকিস্থান আমলের ২৩ বছরে ২১ জন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল; স্বাধীন বাংলাদেশে এক দিনেই ৫০ জনের বেশি পুলিশের গুলিতে মৃত্যু আমরা একাধিক বার দেখেছি। তখন ছিল আওয়ামীলীগ ও পিপলস পার্টি, এখন আওয়ামীলীগ ও বি এন পি। এভাবে চলতে থাকলে প্রত্যেকটি গ্রাম স্বাধীনতা চাইবে এক সময়। আমরা ভাঙতে পারি, কিন্তু গড়তে পারি না। ভারত গড়তে জানে, তারা সিকিম, হায়দ্রাবাদ, কাশ্মীরকে (যারা স্বাধীন ছিল) নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। আমারা দুই ভাগ হয়েছি। আজো বাংলাদেশের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। কিন্তু আজ '৭১ এর মত স্বাধীনতা ঘোষণার সুযোগ নেই, কেননা দুইটি দলই সর্ব বাংলাদেশী দল। সমগ্র বাংলাদেশ জুড়িয়েই রয়েছে দুই দলেরই ভোটার। তাই কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে (যেমনটি হয়েছিল পাকিস্থান আমলেঃ পূর্ব পাকিস্থানে আওয়ামীলীগ ও পশ্চিম পাকিস্থানে পিপিপি) রাজনীতি করার সুযোগ আর নেই। ফলে এই দুই দল বাংলাদেশকে দ্বিখণ্ডিত করতে পারবে না।

'৪৭ পরবর্তী সময়ে ভারত যে ভূমিকা নিয়েছিল, আজও সেই ভুমিকাতেই আছে। তখনও তারা সমগ্র পাকিস্থানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন না করে একটি দলের সাথে সম্পর্ক রেখেছিল এবং তাদের সব রকমের সহায়তা দিয়েছিল, আজো তাই দিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা পাকিস্থান কে ভেঙে দুই ভাগ করে প্রধান শত্রুর শক্তি প্রায় অর্ধেক কমিয়েছে। এখন তাদের লক্ষ্য হল বাংলাদেশের মানুষকে দুই পৃথক শিবিরে ভাগ করে আবারও শক্তি ক্ষয় করা এবং নিজেদের প্রভুত্ব বজায় রাখা। আজ বাংলাদেশের মানুষ দুটি শিবিরে বিভক্ত।

পাকিস্থান আমলে পাকিস্থান পৃথকের জন্যে যেমন আগরতলা ষড়যন্ত্র হয়েছিল, ঠিক তেমনই প্রক্রিয়া আজো বর্তমান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দিল্লীতে গিয়ে কি চুক্তি করে এসেছেন তা দেশের মানুষ জানে না। সেটা গোপন রাখা হয়েছে; কোনোদিন যেন প্রকাশ না পায় তার জন্য বৈদেশিক চুক্তির একটি কপি সংসদে জমা রাখার যে বিধান ছিল তা রহিত করা হয়েছে। '৬৯ এ যেমন বলা হচ্ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মিথ্যা (কিছুদিন আগে ডেপুটি স্পীকার স্বীকার করেছেন যে ওই মামলাটি সঠিক ছিল), আজো দিল্লি চুক্তি সম্পর্কে একই কথা বলা হচ্ছে।

বাংলাদেশকে আর দ্বিখণ্ডিত করার দরকার নেই, আছে দখল করে নেয়ার। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব ব্যাবস্থায় কোন দেশ দখল করে নিতে যে পরিমান সামরিক ও কুটনৈতিক শক্তি থাকা দরকার তা ভারত এখনো অর্জন করতে পারে নি। তাদের পরিকল্পনা তাই নেপালের মত বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করা; নেপাল এখন সম্পূর্ণ ভাবে ভারত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত; ভারতীয় সেনা বাহিনীর অবাধ উপস্থিতি রয়েছে সেখানে। তারা সেখানে যেকোনো অভিযান চালিয়ে যে কাউকে হত্যা করতে পারে। ঠিক একই পরিকল্পনা বাংলাদেশের ক্ষেত্রও তাদের রয়েছে। তাদের পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে, বাংলাদেশে তাদের অলিখিত সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু নেপালের ক্ষেত্রে যা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে সেই একই ফর্মুলা কাজ করবে না, কেননা ভারত ও নেপালের মধ্যে কোন আদর্শিক দন্দ নেই। উভয়ই হিন্দু প্রধান রাষ্ট্র; কিন্তু বাংলাদেশের ৯০% মানুষ মুসলমান। অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের প্রধান বাঁধা হবে ইসলাম, আর এই আদর্শই ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করেছিল। বাংলাদেশের মানুষ হিন্দুত্বকে ঘৃণা করে, তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি লেগে পাকিস্থান থেকে বের হয়ে এসেছে তাই বলে ব্রাহ্মণদের অধীনস্থ হওয়ার জন্য নয়।

তবে বাংলাদেশকে খণ্ডিত করার প্রক্রিয়া অন্য ভাবে কার্যকর আছে, সেটা হল পার্বত্য অঞ্চলে। এই বিভক্তির সৃষ্টি করা হয়েছে, যেমনটি হয়েছিল '৪৭ পরবর্তী সময়ে। হয়ত একদিন পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে পৃথক হয়ে যাবে; পূর্ব পাকিস্থান যে পন্থায় কাজ করছিল, পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়িরাও একই ভাবে আগাচ্ছে। এখানেও ভারতীয় পরিকল্পনা কাজ করছে, পাশাপাশি কার্যকর আছে পশ্চিমাদের খ্রিটান অধ্যুষিত রাষ্ট্র তৈরির পরিকল্পনা।

যে ইসলামিক আদর্শ মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠন করেছিল, যার ব্যাবহারিক প্রয়োগের অভাবে পাকিস্থান খণ্ডিত হয়েছিল; সেই ইসলামকেই আজ বেশি প্রয়োজন। ইসলামই পারে বাংলাদেশের অখণ্ডতাকে রক্ষা করতে। পাকিস্থান সৃষ্টি হয়েছিল মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে; কিন্তু জন্মের সঙ্গে সঙ্গে সে জাতীয়তাকে আস্থাকুড়ে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। যদি ইসলামের প্রচার ঠিক মত হত, যদি তৎকালীন নেতারা মুসলিম জাতীয়তা নিজেদের মধ্যে ধারন করতে পারতেন তবে কখনই পাকিস্থান খণ্ডিত হতো না। স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবিচারের বিরুদ্ধচারনে, কিন্তু মুসলিম জাতীয়তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নয়। তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক আদর্শ তাই আজো মুসলিম জাতীয়তাবাদ; বাংলাদেশের জনগন তাই আজো নিজেদের মুসলিম জাতি হিসাবেই মনে করে। তাই হিন্দুত্তবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে প্রয়োজন ইসলামিক আদর্শে ( সম্ভব না হলে অন্তত মুসলিম জাতিয়তাবাদে) বাংলাদেশের মানুষকে একত্রিত করা, আদর্শের ব্যাপক ভিত্তিতে প্রচার ও প্রসার চালানো, নয়ত হিন্দুস্থান এ লিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কোন ভাবেই ঠেকান সম্ভব হবে না। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নির্ভর করছে ইসলাম ও মুসলিম জাতীয়তার উপর; এই আদর্শই পারে বাংলাদেশের মানুষকে একত্রিত করে। এই আদর্শ কতটা আমরা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারব তার উপর নির্ভর করছে আমরা কতদিন স্বাধীন থাকব ও বাংলাদেশ কতদিন অখণ্ডিত থাকছে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File