অসহিষ্ণু আমরা, আমাদের বিবেক
লিখেছেন লিখেছেন রোহান সাইফ ২৬ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৪২:৪৪ সন্ধ্যা
গা ছমছমে ভাব নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আবিরাম চোখের পলক ফেলছি। চশমার পাওয়ারে কোনো সমস্যা থাকতে পারে। শীঘ্রই ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। হরহামেশা বাড়ি থেকে বের হলেই এরকম কত কিছু মনে হয় আমার। ইদানিং বুকের ডান পাশটায় ধুকপুক করে। বিষয়টা অস্বাভাবিক হতে পারে। যা-ই হোক মূল ঘটনার চেয়ে অন্য কথা-ই বেশি বলছি। সম্মানিত পাঠকগণ বিরক্ত হচ্ছেন।
রাস্তায় চলার পথে কত কথা-ই শুনতে হয়। কেউ অত্যাধিক দেশপ্রেমিক, কেউ সরাসরি দেশ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন আবার কারো দেশ নিয়ে কোনো চিন্তা-ই টাচ করে না। তারা মনে করেন, আমি ছাড়া দেশের সকল মানুষ কিংবা দেশের যা খুশি তাই হোক। এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। নিজে বাঁচলে বাপের নাম জাতীয় চিন্তাধারা।
আমারও মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে এসব মানুষের সাথে আলোচনায় অংশ নেই কিন্তু পারি না। হয়ে ওঠে না। মানুষের সাথে মিশতে পারি না। এটা অনেক আগের কথা। এখন মানুষের সাথে মিশতে পারি। বন্ধুত্ব করতে পারি। সুখ দুঃখের আলোচনা করতে পারি। দেশ এবং মানুষ নিয়ে ভাবনা শেয়ার করতে পারি।
আমি অবশ্য আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাই না। যখন দেখি বিপরীত ধর্মী কোনো কথা কেউ বলে ফেললেন। আমি তখন যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করি। যুক্তি পছন্দ হলে আমার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। আমি খুশি মনে কর্মস্থলে কিংবা বাড়ি ফিরতে পারি।
উইলিয়াম নামে আমার এক বন্ধু রয়েছে। অসাধারণ বলেন। তার মজাদার কথার মধ্যে দিয়ে তুলে আনেন দৃষ্টিতে ধরা পড়া সমস্ত বিষয়। অনেকেই তার যুক্তি এবং বর্ণনাভঙ্গির ভক্ত। তাকে আমার খুব হিংসে হয়। অবশ্য আমারও ভালো লাগে। তার লেখা পড়ি এবং হাসি। কখনো হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়।
এখানে আমি কিন্তু মনে যা আসছে তারই বর্ণনা করছি। জানি না মূল জায়গায় পৌঁছাইতে পারবো কি-না!
অনেক বন্ধুকে হারিয়েছি। তাই অভিযান চলছে সেই বন্ধুদের আবার ফিরে পাই কি-না! চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেখা যাক বন্ধুত্বের মূলনীতিটাই হলো যোগাযোগ। হয় তো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বলেই আমার বন্ধুরা হারিয়ে গিয়েছে। আশার কথা হলো- আবার ফিরে আসছে। ফিরে আসতেই হবে। আমি বন্ধুদের ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছি। অনেক নতুন বন্ধুও তৈরি হচ্ছে। নতুন করে অবাক হচ্ছি আমি।
প্রতিদিন বাসে কোনো না কোনো ঝামেলা দেখতে হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিটিং বাসগুলোতে দাঁড়িয়ে মানুষ নেয়াকে কেন্দ্র করে। আর তেলের দাম বৃদ্ধিতে ২-১ টাকা করে যে বাড়িয়েছে বাসমালিকগণ সে বিষয়টাকে কেন্দ্র করে। সরকার ঘোষণা দিয়েছিল ঢাকা-চট্টগ্রামে বাস ভাড়া বাড়বে না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। একদিকে যাত্রীরা অতিরিক্ত টাকা দিতে চায় না। অপরদিকে ড্রাইভার/হেলপার/কন্ডাকটর যা-ই বলি না কেনো যাত্রীদের ছাড়ে না। তবে, একটা বিষয় ইদানিং স্বস্তি দেয়- যাঁরা বাসে যাতায়াত করছেন তারা সত্যিই ভদ্র মানুষ। গ্যাঞ্জাম করেন না। তবে দু-একজন ব্যতিক্রমতো আছেন। এদেরও সহিষ্ণু হওয়া উচিত। আর আমরা যাদের উপর নির্ভর করি- বিশেষ করে পরিবহনের এসব নেগেটিভ বিষয় নিয়ে আমাদের পদক্ষেপ কি হতে পারে?
যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম- মনে আতংক বিরাজ করে সবসময়। আর এ জন্য দায়ী বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। সরকারের যে হীনষ্মন্যতার পরিচয় জনগন পাচ্ছে তা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। আর বিরোধীপক্ষগুলোও সঠিক সিদ্ধান্তে, সঠিক নিয়মে পা ফেলছেন না এটা দৃষ্টির বাইরে নয়। তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি? কবে পরিত্রাণ পাবো? আজ পর্যন্ত আমরা অসিষ্ণু। অসহিষ্ণু আমাদের বিবেকও।
বিষয়: বিবিধ
১০১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন