৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রস্তুস্তি নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন লিখেছেন ক্যরিয়ার স্পেশালিস্ট ০১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৪১:২০ বিকাল

সুপ্রিয় ৩৪তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীগণ ,

আমার পক্ষ থেকে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা এবং সাধুবাদ যে আপনারা সবচেয়ে ক্লান্তিকর ও পরিশ্রমের এক বিশাল পথে সাফল্যের জন্য আশায় বুক বেধেছেন এবং রণ সাজে ৩৪ তম বিসিএস নামক যুদ্ধে নামার পরিকল্পনা করছেন ।

বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিসিএস এখনও সমাজের সবচেয়ে সম্মানজনক চাকরি। দু-একটি ক্ষেত্র ছাড়া চাকরি নিরাপত্তা এবং সামাজিক মর্যাদা নির্ধারণে বিসিএসের বিকল্প বাংলাদেশে নেই। বেসরকারির বিশাল বাজার বাঙালি যুব মানসে এখনও আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। এ কারণে চাকরিপ্রার্থীরা এখনও বিসিএসকেই চাকরি তালিকার শীর্ষে রাখেন। দেশের রাজনৈতিক সরকার জনগণের স্বার্থে যেসব সি্দ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারি কর্মচারীদের ওপর বর্তায় এবং সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন বিসিএস কর্মকর্তারা। সুতরাং এ চাকরির মাধ্যমে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে যেভাবে সরাসরি সেবা দেয়া যায়, অন্য কোনো চাকরির মাধ্যমে তা অসম্ভব।

শুরু করার আগে আমি একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলতে চাই আমি নিজেই যথেষ্ট যোগ্য নই আপনাদের পরামর্শ দেয়ার জন্য , আমি শুধু যতটুকু নলেজ অর্জন করেছি এই গ্রুপ থেকে এবং প্রিলিমিনারি ও রিটেন পরীক্ষা দিয়ে তাই শেয়ার করছি ।

সব কিছু করার আগে আমি কয়েকটি জিনিসকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি ।।

১। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা রাখা

২। লক্ষ্যকে সবসময় স্থির রাখা

৩। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা

৪। কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখা

৫। ধৈর্য ধারন করা

৬। কঠোর পরিশ্রম করা

অনেকের মতে প্রিলি পরীক্ষাটি বিসিএস এর অন্যান্য সকল পরীক্ষা থেকে সবচেয়ে কঠিন; বিশেষ করে যারা প্রথম বারের মত পরীক্ষা দিবেন। সুতরাং যুদ্ধে শত্রুকে পরাজিত করতে হয় যেমন বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে তেমনি বিসিএস প্রিলিমিনারিকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে হবে কলাকৌশল অবলম্বন করে।

দৈনন্দিন কী কী বিষয় চিন্তায় থাকা উচিত পত্র-পত্রিকা যতটুকু পড়বেন মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। তথ্য আত্মস্থ করবেন এবং তা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। রেডিও-টিভির নিউজ শুনবেন, বুঝতে চেষ্টা করবেন এবং শেয়ার করবেন। জাতীয় ও আন্তজার্তিক চলমান ঘটনাবলি বোঝার চেষ্টা করবেন। বিভিন্ন রেডিও-টিভির চ্যানেলের ইংরেজি নিউজ বোঝার চেষ্টা করবেন, আপনার ইংরেজি বোঝার ক্ষমতা বেড়ে যাবে। ভ্রমণ যখন করবেন, প্রতিটি ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শন মনে রাখার চেষ্টা করবেন।

কিছু বই শুরু থেকে আপনার সঙ্গী হওয়া উচিত অথবা আপনার সংগ্রহে থাকা উচিত

যেমন—

১। ১০-৩৩ তম বিসিএসের সকল প্রশ্ন এবং পিএসসি নন ক্যাডারের সকল প্রশ্নের জন্য একটা জব সলুসন বই (সম্ভব হলে ১০-৩৩ তম রিটেনের ইংরেজি,বাংলা, আন্তর্জাতিক এর শর্ট প্রশ্ন গুলো পড়ে নিবেন, বিভিন্ন বছরে এগুলো থেকেও কমন এসেছে)

২। বাংলাদেশের সংবিধান

৩। নিজের সংগ্রহে বাংলাদেশ ও আন্তজার্তিক ম্যাপ

৪। ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর একসেট বই (ব্যাকরণ ,গনিত,সাধারণ বিজ্ঞান , ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি , সমাজিক বিজ্ঞান)

৫। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির গণিত এবং সাধারণ বিজ্ঞান

৬। বাংলা একাডেমীর বাংলা ও ইংরেজি অভিধান, একটি বাংলা টু বাংলা অভিধান

৭। বাংলার জন্য সৌমিত্র শেখরের “ বাংলা ভাষা জিজ্ঞাসা” এবং “ হুমায়ুন আজাদ- এর লাল নীল দীপাবলী পড়বেন।

৮। ইংরেজির জন্য “A Passage to English Language” by SM Zakir Hossain, “Common Mistakes in English” by T.J.Fitikides and “Exclusive BCS English” by Md. Alauddin Bhuiyan.

৯। সাধারন জ্ঞানের জন্য আজকের বিশ্ব

অনেকে ভাবছেন কোচিং করাটা কতটুকু জরুরি এবং তাতে কতটুকু লাভবান হয়া যাবে, আমি বলব যদি আপানার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে কোচিং করতে পারেন এবং তাতে লাভবান হওয়া যাবে ,আমি কনফিডেন্সে কোচিং করেছিলাম এবং তাদের সকল পরীক্ষা গুলোই দিয়েছি ফলস্বরূপ আমি আমার ভুল ত্রুটিগুলো এবং কিভাবে সময় মেইন্টেইন করে প্রিলি দিতে হয় তা বুঝে ছিলাম। আরেকটা সবচেয়ে বড় কথা হল লোভ কন্ট্রোল করতে শিখেছিলাম । তারপরেও ৩৩ তমতে ৪টা ভুল করেছিলাম। কোচিং করা নিয়ে অনেকে দ্বিমত পোষণ করে থাকেন এবং করাটাই স্বাভাবিক । আর যারা বেশি মেধাবী এবং বেসিক অনেক ভাল তাদের কোচিং না করলেও হয়তো চলবে ।

কিছু কৌশল যেগুলো আমার কাছে ভাল মনে হতঃ

১। গ্রুপ ডিসকাশন

২। রুটিন করে পড়া ৩। যেহেতু সময় অনেক আছে তাই দিনে ২-৩ ঘণ্টা নিয়মিত পড়ুন

৪। বেশি বেশি পরীক্ষা দেয়া ৫। লোভ কন্ট্রোল কর ৬। পরীক্ষার রুমে অন্যের উপর নির্ভর না করা

৭। চোখ কান খোলা রেখে কিছু কিছু জিনিস নিজের আশপাশ থেকে জানতে পারেন

৮। ভুল করেও বাজারের ভুলে ভরা বই পড়বেন না ,এসব বই সমসময় আপনাকে বিভ্রান্তের দিকে নিয়ে যাবে ।

৯। ইংরেজি, গনিত ও বাংলার উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিবেন

১০। সাধারন বিজ্ঞানের জন্য প্রিভিয়াস প্রশ্ন গুলো পরলেই চলবে

১১। সাধারন জ্ঞানের পিছনে বেশি সময় লস করা বকামি হবে

১২। কারেন্ট ইস্যু বিসিএসে খুব কম আসে তাই এটা নিয়ে মাথা ঘামানো উচিৎ হবে না

সবশেষে বলব, বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দরকার সঠিক নির্বাচন এবং সেই অনুপাতে প্রস্তুতি সময়ের ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। আপনার প্রাথমিক প্রস্তুতি যথাযথ হলেই উন্নততর জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া খুবই সহজ। আর সপ্ন দেখুন তবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নয় জেগে জেগে ।

বিষয়: Contest_mother

১৭৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File