আওয়ামিলিগাশ্রিত ইসলাম বিরোধী শক্তি থাকতে বাংলাদেশে উদীয়মান ৩য় শক্তি 'ইসলামিক বিপ্লবের' পথ কতদূর? (বর্তমান বিশ্ব ইসলামি আন্দোলনের অভিজ্ঞতার আলোকে একটি বিশ্লেষণ)
লিখেছেন লিখেছেন জহির আহমেদ ০৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:০৩:৩১ রাত
সাদা বাহিনী দেখে ঢাকাবাসীর সাথে বিশ্ববাসী যা দেখল তাতে দেশীয় নাস্তিক এবং তাদের প্রতিবেশী দাদারা শুধু নাখোশই না বরং কিছুটা শঙ্কিত এবং খামুশ! বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের এ শক্তি বিশ্ববাসি আরেকবার দেখেছিল তাছলিমা নাছরিনকে বিতাড়নের সময়।এই মুহূর্তে নাস্তিকদের গুরু Richard Dawkins এর মৃত্যুর ক্ষতটা নাস্তিকদের কাছে আবার নতুন করে কাঁচা হল। গুরু বেঁচে থাকলে শিষ্যরা বাংলাদেশ নিয়ে আলাদা করে কোন সুত্রের জন্য গবেষণার অনুরোধ করতে পারত।আপাতদৃষ্টিতে নাস্তিকদের এতীম এতীম লাগছে!
যাইহোক, ৯১% মুসলামনের এই দেশে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্টা আমেরিকা/ ইউরুপের কোন দেশের মত কঠিন হবেনা এটা এখনো ইসলামপন্থিদের বু্ধোগম্য না হয়ে থাকলে একবার আমেরিকায় ঘুরে আসার আমন্ত্রণ থাকল। ৬ এপ্রিল থেকে নাস্তিকেরা যে মেসেজ পেল তাতে তারা এটা নিয়ে তাদের প্রতিবেশী দাদাদের সাথে খুব দ্রুত পরামর্শ করে ঠিক-ই পরবর্তী কৌশল ঠিক করে নেবে।
ইসলামপন্থীদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা বা পরিকল্পনা কি?সামনের পরিকল্পনা কি বা আধৌ কোন পরিকল্পনা আছে? না কি এখানেই ইতি?এই কয়েকটা হরতাল,অবরোধ দিলাম নাস্তিকরাত আপাতত থেমে যাবে অথবা থেমে গেল আর দরকার কি? যেহেতু ঠিকমত মসজিদে আযান দিয়ে নামাজ পড়তে পারছি! এভাবে রাস্তায় বেরিয়ে নাস্তিকদের হুমকি দিতে পারছি! মধ্যে-মধ্যে নাস্তিকদের এরকম আস্ফালন দেখে নিজের ঈমান একটু জ্বালাই করে নিলাম; আর কি?
কিন্তূ,বাস্তবতা হচ্ছে এই দেশে আওয়ামীলীগের মত ইসলামবিরোধি শক্তি যতদিন থাকবে এভাবেই কখনো যোদ্ধাপরাধি কখনো গনজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে ধাঁধা লাগিয়ে ইসলাম্পন্থিদের নির্মুলের চেষ্টায় লিপ্ত থাকবে ।বিশ্ব ইসলামি আন্দোলনের ইতিহাস বলছে সময় যত গড়াবে ইসলাম বিরোধি এ শক্তি আরো শক্তিশালী হবে। আজ থেকে ১০ বৎসর আগের সংখ্যার সাথে এদের এখনকার সংখ্যার মিল খুব বড় না হলেও অনেক বড়।আগে কখনো এরা প্রকাশ্যে নাস্তিক বলার সাহস করে নাই কিন্তু,এখন করে এবং করবে। সময় যত গড়াবে এরা সমাজে,প্রশাসনে সর্বত্র এদের বিচরন আরো শক্তিশালী হবে।
কার স্বার্থে এবার আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ৫৭জন মেধাবী এবং দেশপ্রেমী অফিসার প্রথমেই মেরে ফেলে?এরপর কিভাবে আস্তে আস্তে প্রশাসনের সবজায়গায় ডানপন্থীদের পরিবর্তন করে তাদের মানুষ কয়েকস্তর করে ফেলেছে।আজ মিডিয়া কিভাবে ইসলামপন্থীদের নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছে। সবগুলা মিডিয়াই তাদের দখলে। কার স্বার্থে সরকারের মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশে যাদের একটাও আসন নাই বরং নির্বাচনে জামানত হারায় এরকম লোকেরা আজ দাপুটে মন্ত্রি! সরকার পরিবর্তনের আরো দু/একটি টার্ম পেরিয়ে গেলে এরা আরো বেশি শক্তিশালী হবে। মিশরের দিকে যদি থাকাই সেখানে দীর্ঘদিন থেকে সেকুলার শাসিত সরকার থাকায় মুসলিম সভ্যতার অন্যতম ভূমিতে আজ ইসলামপন্থীরা কঠিন পরিস্তিতির মুখোমুখি। সেখানে সর্বত্র নাস্তিকেরা তাদের জায়গা শক্ত করে নিয়েছে। এখন ইসলাম্পন্থি সরকারকে এরা জোরপুর্বক ক্ষমতা সরিয়ে দিতে চাচ্ছে।
আর কত অপেক্ষা?কত দূর কাঙ্ক্ষিত সেই তৃতীয় শক্তি ইসলামিক বিপ্লবের? না কি সেই সময়টা এখনো আসেনি ? সময়টা অবশ্যই এখনি কারন,এই সুযোগ সব সময় আসেনা। সকল ইসলামপন্থিদের দরকার সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এক রশ্মিতে এসে আল্লাহর রজ্জুকে উঁচুতে ধরে সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলা।
ঐক্যের প্রশ্নে এখন জামায়াতি-ইসলামের যেমন অনেক ছাড় দেওয়া উচিত তেমনই সমমনা সকল ইসলামী দলকেও বাস্তবতা বুঝে অনেক ছাড় দিতে হবে। ইসলাম প্রতিষ্টার লড়াইয়ে যদি,সেই আগের মতই মনে করতে থাকেন জামায়াতের সাথে কিসের ঐক্য? তাহলে বাস্তবতা হল রাজনীতির কঠিন এ ময়দানে ঝানু অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জামায়াতি-ইসলামির মত দল ছাড়া আওয়ামীলীগের মত একটি ইসলামবিরোধি দল এ দেশে থাকতে ইসলাম প্রতিষ্টার আশাটা অলৌকিক কিছু ছাড়া সম্ভব না।
আমাদেরকে খুব কম সময় নিয়েই একটিমাত্র প্ল্যাটফর্মে এসে এ ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় কি তা নিয়ে খুব দ্রুত এবং কৌশলী হয়ে এখনি এগিয়ে আসতে হবে। অবসান ঘঠাতে হবে জামায়াতি-ইসলাম, খেলাফতে ইসলাম, জমিয়তে ইসলাম নামক বিভক্তি।আমরা যদি সত্যিই ইসলামি রাষ্ট্র চাই; মুছে দিতে হবে সকল ভেদাভেদ। এদেশের সাধারণ মানুষ কি চায় তা নতুন করে গবেষণার দরকার নেই।এই মুহূর্তে নিজেদের মধ্যে বিভেদ-বিদ্বেষ, ছোটখাট মতভিন্নতা ভুলে গিয়ে একটিমাত্র প্ল্যাটফর্মে আসাই হবে বিজয়ের একমাত্র চাবিকাঠি। যেমনটি মিশরে সকল ইসলামী দল মিলে ৪০বৎসরের প্রতাপশালী শাসকের সর্বশক্তি উপেক্ষা করে ইসলামের চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে এনে সরকার গঠন করেছে।তারা যদি তাহরির স্কয়ার বানাতে পারে আমরা কেন পারবোনা??
চিন্তা করে দেখুন সকল ইসলামপন্থি এক হয়ে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিলে ইসলামী আন্দোলনটা কোথায় চলে যেতে পারে!!মিশরে কি সকল ইসলামি দল মিলে সেকুলারদের হঠিয়ে সরকার গঠন করে নাই? এখনি সুযোগ!! এই সুযোগ তৈরি হতে হয়ত আরো কয়েকযোগ লেগে যেতে পারে!!আজ এটা খুব-ই পরিষ্কার হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতা ইসলামের জন্য যে কারো ডাকে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত!!
সেকুলার রাষ্ট্র চান না; একটি আধুনিক যোগপযোগি ইসলামী সরকার চান,এমন প্রত্যেকের উচিত যার যার অবস্থান থেকে এই একটি দাবি নিয়ে আলেম-সমাজ সহ জনসাধারণ্যে এই দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে সিরিয়াসলি সর্বোচ্চ চেষ্টা করা।
অন্যথায়,আওয়ামীলীগের মত একটা দল এ দেশে যতদিন থাকবে ইসলাম প্রতিষ্টার এ পথ শুধু অন্তহীন পথের দিকেই এগোবে!
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন।
(আল কোর'আন 8:65)
বিষয়: রাজনীতি
১৪০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন