চোরের মার গলা বড়
লিখেছেন লিখেছেন জিসান এন হক ৩০ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৪৪:০৩ বিকাল
হিন্দুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা করছে জামায়াত-শিবির। আওয়ামীলীগের এম পি মন্ত্রীসহ খোদ প্রধান মন্ত্রি হাসিনাও বলতেছেন ।কিন্ত সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে না পারায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তোপের মুখে পড়েছে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।গেল কয়েক দ্বীন আগে হিন্দুদের ধর্মীয় উপাসনালয় ভাংতে গিয়ে ধরা খেল আওয়ামীলীগ কর্মী,কিন্ত পাগল আখ্যা দিয়ে ছেড়ে দিল। গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পরিষদের সঙ্গে ১৪ দলের এক বৈঠক হয় ।
সভার শুরুর দিকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সম্প্রতি সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন চলছে তাতে অধিকাংশ জায়গায় প্রশাসনের শিথিলতা ছিল।
প্রশাসন ঠিকমত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অনেক জায়গায় মন্দির ভাঙার কিংবা পুড়িয়ে দেয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পরেও প্রশাসন সেখানে যায়নি’ অভিযোগ করেন।
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘হামলা আমাদের ওপর হবে এটা আমরা জানি। অবশ্যই এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। কিন্তু আমাদেও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ নই। এসব হামলা মোকাবেলায় ১৪ দলের বাইরে যেসব মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল আছে তাদের সঙ্গে ছোটখাট যেসব বিরোধ আছে সেগুলো মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারী দল হিসেবে কেন এসব ঘটনা মোকাবেলায় ১৪ দল ব্যর্থ হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখতে হবে।’
কানুতোষ মজুমদার বলেন, এসব ঘটনা বন্ধ করতে সরকারকে তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় কমিটি করে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমাদের ওপর এখনো কেন নির্যাতন হচ্ছে কিংবা মন্দির ভাঙা হচ্ছে? এত শক্তিধর সরকার মনে হয় স্বাধীনতার পর আর ক্ষমতায় আসেনি। তারপরও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
১৪ দল নেতাদের উদ্দেশ্য করে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের নিরাপত্তা না দিতে পারেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমরা আজ থেকে আর কোনো মন্দির ভাঙা কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের খবর শুনতে চাই না।’
সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুই দিনব্যপী মন্দির ভাঙা এবং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চললেও আমার কোনো মন্ত্রী বন্ধুরা কিছুই করলেন না। একের পর এক সারাদেশে ঘটনা ঘটেই চলল, কিন্তু কোনো মন্ত্রীর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি।’
বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তারও যাওয়ার সুযোগ হলো না।’
সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘এসব ঘটনাকে বলা হলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। শুরু থেকেই বলা হচ্ছে জামায়াত-বিএনপি এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিন্তু গত(২৭/০৩/১৩) কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রোগ্রামে না যাওয়ার কারণে এক হিন্দুর বাড়ি-ঘর আওয়ামী লীগ নেতারা পুড়িয়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন বর্তমানে যে ঘটনগুলো ঘটছে এর দ্বায়ভার কে নেবে?’
কাজল দেবনাথ বলেন, ‘সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যেসব ঘটনা ঘটছে এটা সরকার কিংবা পুলিশ বাহিনী একা সামাল দিতে পারবে না। আমাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। ১৪ দলের নেতারা এলাকায় না গেলে পুলিশ, র্যা ব কিংবা বিজিবির গুলি এই ঘটনা সামাল দিতে পারবে না।
উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি এই ঘটনা মোকাবেলায় কয়েকটি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এতগুলো ঘটনা ঘটল অথচ এসব ঘটনার জন্য অভিযোগ করতে সরকারি কোনো সেল গঠন করা হয়নি ।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আওয়ামী লীগের লোকজন সুশীল চন্দ্রের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হবিবর রহমান ও সইদুল নামে আওয়ামী লীগের দু’কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আলোকছিপী মৌজার ১২৫ ও ৬৭ নং খতিয়ানের ১১১৮ ও ৪৫৫ দাগের জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ বিশ্বামপুর গ্রামের মরহুম ঈসরাইল মন্ডলের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম মন্ডল ও আলোকছিপী গ্রামের নরেন চন্দ্রের পুত্র সুশীল চন্দ্রের মধ্যে জমিসংক্রান্ত কোন্দল চলতে থাকে। এরই মধ্যে তফসিলভুক্ত দাগ খতিয়ানের জমির মালিকানা দাবি করে সুশীল চন্দ্র বাদী হয়ে অর্পিত সম্পতি প্রত্যবর্তন ট্রাইব্যুনাল ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৫১২/১৩। ০১-০৭-২০১৩ তারিখে ধার্য আছে।
অথচ দলের নেতা আবদুর রহিম মন্ডলের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের সুশীল চন্দ্রের বাড়িতে ঢুকে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় এবং বাড়ির লোকজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। আহতরা হলেন সুশীলের বড় ভাই মদন কুমার ও স্ত্রী শান্তি বালা। গত (২৮/০৩/১৩) বৃহস্পতিবার রাতেই জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থল পবিদর্শন করেন। গত (২৯/০৩/১৩) শুক্রবার সকাল ১১টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য দবিরচল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন । তিনি জানান, এ ঘটনায় জামায়াত-শিবির কিংবা বিএনপি জড়িত নয়।
অবশ্যই তদন্ত করলে জানা যাবে বা স্বাধীনতার পর এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়নি যার ভিত্তিতে জামায়াত শিবিরের উপর এই অভিযোগ লেপন করা যাবে । কিন্ত আওয়ামীলীগ বরাবরের মতই ঐ সমস্ত ঘটনার দায়ে- দায়িত্ব জামায়াত –শিবিরের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।গুনিজনেরা বলতো চোরের মার গলা বড়, তা যে আওয়ামীলীগের বেলা প্রযোজ্য হবে তা ভাবতেও অভাগ লাগে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন