ঐ ভাল ও খারাব শুধু আমিই কিন্তু ।

লিখেছেন লিখেছেন জিসান এন হক ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৪:৪১:২৫ রাত



হাসিনা ও খালেদা ম্যাডেম গং বাংলাদেশকে যা দিচ্ছে আমরা তাই অনুসরন করছি এবং স্রষ্টাকে যে ভাবে মানা উচিৎ এই হাসিনা ও খালেদা ম্যাডেম গংকে তার চেয়েও বেশী মান। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে:

ﻋَﻦْ ﺃُﻡِّ ﺣُﺼَﻴْﻦٍ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴﻪ ﻭﺳَﻠَّﻢ ﻻَ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﺨَﺎﻟِﻖِ

অর্থ: “উম্মে হুসাইন (রাHappy থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাHappy ইরশাদ করেছেন: স্রষ্টাকে অমান্য করে সৃষ্টিজগতের কারো আনুগত্য চলবে না”। (জামেউল আহাদীস: হা: ১৩৪০৫, মুয়াত্তাHappy قُلْ إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ ۚ قُل لَّا أَتَّبِعُ أَهْوَاءَكُمْ ۙ قَدْ ضَلَلْتُ إِذًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُهْتَدِينَ হে মুহাম্মাদ ! তাদেরকে বলে দাও, তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য যাদেরকে ডাকো তাদের বন্দেগী করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে৷ বলো, আমি তোমাদের ইচ্ছা-বাসনার অনুসরণ করবো না৷ এমনটি করলে আমি বিপথগামী হবো এবং সরল-সত্য পথ লাভকারীদের অন্তরভুক্ত থাকবো না৷ (আনাম-৫৬) وَإِنَّ كَثِيرًا لَّيُضِلُّونَ بِأَهْوَائِهِم بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِينَ অধিকাংশ লোকের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা জ্ঞান ছাড়া নিছক নিজেদের খেয়াল খুশী অনুযায়ী বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে থাকে৷ তোমার রব এ সীমা অতিক্রমকারীদেকে খুব ভাল করেই জানেন৷ (সুরা আনাম-১১৯)وَلَا تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَلَا تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَن ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا তুমি কি পার্থিব সৌন্দর্য পছন্দ করো ? এমন কোনো লোকের আনুগত্য করো না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির কামনা বাসনার অনুসরণ করেছে এবং যার কর্মপদ্ধতি কখনো উগ্র, কখনো উদাসীন৷ (কাহাফ-২৮) يُرْضُونَكُم بِأَفْوَاهِهِمْ وَتَأْبَىٰ قُلُوبُهُمْ وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ তারা মুখের কথায় তোমাদের সন্তুষ্ট করে কিন্তু তাদের মন তা অস্বীকার করে৷ আর তাদের অধিকাংশই ফাসেক৷ (তাওবা-৮) এই বিজয়ে বাংলাদেশের মুক্তিপিপাসু জনগণ এবং মুক্তিযুদ্ধারা ছিল নীরব দর্শক, আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ছিল বিনয়ী তাবেদার এবং কর্ণেল ওসমানী ছিলেন অসহায় বন্দী। এ যেন ছিল ভারতের বাংলাদেশ বিজয় এবং আওয়ামী লীগ সরকার এই নব বিজিত ভারতভূমির যোগ্য লীজ গ্রহনকারী সত্তা। সুতরাং যেমন সত্তা তেমনই তার শর্ত-আর যায় কোথায়! এতো গেল ১৬ ই ডিসেম্বর সম্পর্কে কিছু কথা। অনুরূপভাবে ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। নবম সেক্টরের অধিপতি হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্তৃপক্ষ আমাকে একরকম জোর করেই পেছেনের সারিতে ঠেলে দেয়। বারবার প্রচেষ্টা চালানো সত্তেও আমাকে সামনে আসতেই দেয়া হলোনা। আমার প্রতিপক্ষ ভারতীয় সেনবাহিনীর মেজর জেনারেল দালবীর সিংকে দিয়েই সেই আত্মসমর্পনের নেতৃত্ব বজায় রাখা হয়। অথচ দালবীর সিংয়ের অধীনস্ত সৈন্যরা যুদ্ধ ক্ষেত্রে সব সময়েই আমার বাহিনীর অনেক পেছনে অবস্থান করত ।

মুক্তিযুদ্ধাদের দীর্ঘ ন’টি মাসের অসীম ত্যাগ, তিতিক্ষা এবং আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে রচিত বিজয় পর্ব এভাবেই ভারতীয় শাসক চক্র দ্বারা লুন্ঠিত হয়ে যায়। সংগ্রামী, লড়াকু বাঙালী জাতি প্রাণপণ যুদ্ধ করেও যেন বিজয়ী হতে পারল না, পারল কেবল অপরের করুণায় বিজয় বোধ দুর থেকে অনুভব করতে। বিজয়ের সরাসরি স্বাদ থেকে কেবল বাঙালী জাতি বঞ্চিত হলো না। বঞ্চিত হলো প্রকৃত স্বাধীনতা থেকেই। সুতরাং সেই বঞ্চনাকারীদের কবল থেকে বঞ্চিতদের ন্যায্য পাওনা আদায় করার লক্ষ্যে আর একটি প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন কি এখনও রয়ে যায়নি? ইসলামহীন স্বাধীনতা, অথবা সাম্রাজ্যবাদ ও রাজতন্ত্র নির্ভরশীল ইসলাম সহকারে স্বাধীনতা এর কোনটিই বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুক্তির পথে সহায়ক হবে না। ইসলাম ভিন্ন বাংলাদেশে বসবাসরত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শতকরা ১০ভাগ মানুষও ধর্মভীরু এবং তারও ধর্ম সহকারেই স্বাধীনতা এবং মুক্তি কামনা করে। প্রকৃত ইসলামের সাম্যবাদী নীতি এবং ইসলামের ঐতিহ্যবাহী নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোন বিরোধ তো নেই-ই বরং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিধান রয়েছে ইসলাম ধর্মে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতাকে প্রশ্রয় দান ইসলঅম তো করেই না, অন্যান্য ধর্ম মতেও তদ্রপ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ ছিল, ধর্মযুদ্ধ ছিল না। সুতরাং যুদ্ধোত্তর কালে ধর্মের প্রতি উষ্মা কিম্বা কটক্ষ করার কোন যুক্তিই নেই, থাকতেও পারে না। জাতীয়তাবাদ প্রসংগ। রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে জাতীয়তাবাদ জুড়ে দেয়ার পেছনেও ইসলাম বিদ্বেষী মতলব রয়েছে। কারণ জাতীয়তাবাদও ধর্মনিরপেক্ষতাবদ- এর ন্যায়ই জাতিকে ধর্মবিমুখ করে তুলতে সহায়তা করে এবং ভাষা, কৃষ্টি এবং জাতীয় ঐতিহ্য ভিত্তিক মনমানসিকতা গঠন করে। এহেন মনমানসিকতা মানুষকে অহেতুক অহংকারী করে তোলে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে জাত্যাভিমান হিংসা বিদ্বেষের জন্ম দেয়। এই জাত্যাভিমান ইসলামী সাম্যবাদী চেতনার পরিপন্থী। তা ছাড়া ‘বাঙালী জাতীয়তাবাদ’ বাংলাদেশে বসবাসরত মুসলিম জনগণের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যগত ধ্যান-ধারণার প্রতিফলনও সঠিক অর্থে ঘটায়। বাংলাদেশের মুসলিম বাঙালী এবং পশ্চিম বাংলার হিন্দু বাঙালীর সাংস্কৃতিক চেতনার উৎসস্থলকে এক ও অভিন্ন করে দেখার কোন অবকাশ নেই। দুই বাংলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের রূপ বাহ্যত এক মনে হলেও সাংস্কৃতিক চেতনার উৎস বিপরীতমুখী। স্বাধীন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চেতনার উৎস হচ্ছে ‘তৌহীদবদ’ যা ইসলাম ধর্ম ভিত্তিক। অপরদিকে, পশ্চিম বাংলার জনগণের সাংস্কৃতিক চেতনার উৎস হচ্ছে ‘পৌত্তলিকতাবাদ’, যা হিন্দুধর্ম ভিত্তিক। সুতরাং বাঙালী ‘জাতীয়তাবাদ’ পশ্চিম বাংলার বাঙালী ভাই-বোনদেরকে যতটা অনুপ্রাণিত করবে বাংলাদেশের মুসলিম বাঙালীকে ততটা অনুপ্রাণিত করবে না। কারণ ‘বাঙালী জাতীয়তাবাদের সাংস্কৃতিক চেতনায় পৌত্তলিকতাবাদ-এর প্রভাব অধিক। এই দর্শনগত পার্থক্যের কারেণে উভয় বাংলার ভাষা, খাদ্য, পোশাক সহ সংস্কৃতির বাহ্যিক দিকের একটি সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে বিরাজ করছে এক সুকঠিন প্রাচীর, যা কখনো তাদেরকে এক হতে দেবে না। ‘বাঙালী জাতীয়তাবাদরে মধ্য দিয়ে সেই প্রাচীর ভেঙে চুরমার করা সম্ভব হবে না, তবে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর একটা অংশকে সেই প্রাচীর টপকিয়ে হয়ত ওপাড়ের সাথে একাত্ম করা যাবে। কিন্তু তাতে ফল হবে বিপরীত। এপারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনোগাষ্ঠীর মধ্যে জন্ম নেবে আজন্ম অবিশ্বাস এবং রেষারেষি। ভারতীয় শাসকচক্র মূলত উভয় বাংলা মধ্যে এই স্থায়ী রেষারেষিই কামনা করে। যার ফলে সবকিছু জেনেশুনেই ভারতীয় শাসকচক্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতির ৪র্থ স্তম্ভ হিসেবে ‘বাঙালী জাতীয়তাবদ’কে জুড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবী ‘মুসলিম বাঙালী’ এবং ‘হিন্দু বাঙালীর’ সংস্কৃতিগত পার্থক্য উপলব্ধি করতে না চাইলেও পশ্চিম বাংলার বু্দ্ধিজীবি সম্প্রদায় কিন্তু পার্থক্যটা অনেক পূর্ব থেকেই জানেন। এখনে একটা উদাহরণ দিলেই ধারণাটা কিছু পরিষ্কার হবে বলে আমরা বিশ্বাস। উভয়েই একই হিন্দুধর্মের লোক হওয়া সত্ত্বেও যখন উচ্চবর্ণ হিন্দু নিম্ববর্ণ হিন্দু হরিজনকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যা করে, সেই উচ্চবর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে মুসলিম বাঙালীদের গ্রহণযোগ্যতা আদৌ থাকতে পারে কি? কেন পারে না? সে উত্তর বাংলাদেশের মুসলিম বুদ্ধিজীবিরা দিতে লজ্জাবোধ করলেও পশ্চিম বাংলার বুদ্ধিজীবিরা অনেক পূর্বেই সে প্রশ্নের উত্তর যুগে যুগে দ্বাথীহীন কন্ঠেই দিয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

380744
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৯:০৬
আনিসুর রহমান লিখেছেন : ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। নবম সেক্টরের অধিপতি হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্তৃপক্ষ আমাকে একরকম জোর করেই পেছেনের সারিতে ঠেলে দেয়। বারবার প্রচেষ্টা চালানো সত্তেও আমাকে সামনে আসতেই দেয়া হলোনা। আমার প্রতিপক্ষ ভারতীয় সেনবাহিনীর মেজর জেনারেল দালবীর সিংকে দিয়েই সেই আত্মসমর্পনের নেতৃত্ব বজায় রাখা হয়। অথচ দালবীর সিংয়ের অধীনস্ত সৈন্যরা যুদ্ধ ক্ষেত্রে সব সময়েই আমার বাহিনীর অনেক পেছনে অবস্থান করত ।
আপনার এই ১৭-ই ডিসেম্বরের ইতিহাসকে সত্য বলে মেনে নেওয়ার অর্থই হ’ল, তার আগের দিন অর্থৎ ১৬-ই ডিসেম্বরের যে বিজয় অর্জিত হয়েছে বলা হচ্ছে তা কোন যুক্তিতেই বাংলাদেশীদের বিজয় না, তা অবশ্যই চাণক্য নীতির বিজয়, ব্রাহ্মবাদের বিজয় এবং যুদ্ধের ময়দানে পিছনে থাকা ভারতীয় বাহীনির বিজয়, কোন ভাবেই যুদ্ধের ময়দানে সস্মুখে থাকা দেশ প্রেমী মুক্তি বাহীনির বিজয় নয়। ধন্যবাদ
380755
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ বিকাল ০৫:১৫
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো /
২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৩:০৫
315137
জিসান এন হক লিখেছেন : বাতিলের তীর এখনও আপনাদের দলের দিকে যায়নি ,তাই সত্যপন্থি হওয়ার ব্যাপারে দলিল পাওয়া যায়নি।
380757
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ বিকাল ০৫:২৬
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : চমৎকার লেখা। বাস্তবে আপনার কোন সংগঠন নেই। আপনার চিন্তাধারার সাথে সিমিলার ইসলামী সমাজ।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ঃ কুশিয়ারা বাজার, রায়পুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা ।
ঢাকা কার্যালয়ঃ ৪নং দক্ষিন বাসাবো (কাজী অফিসের উত্তর পাশে) ঢাকা, ১২১৪ ।
মোবাইলঃ- +8801919-844210, +8801716-442136, +8801811-650628 +8801718-343870
E-Mail:- Website:- http://www.islamisomaj.org
380762
১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ দুপুর ০২:৫৮

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File