এই উম্মতের ২১ জন মানুষের জীবনী সম্পর্কে কিছু জানি।
লিখেছেন লিখেছেন ফয়সাল সরকার ১১ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:৫২:১১ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন,ভাল থাকেন এই কামনাই করি।বন্ধুরা আজকে আপনাদের সামনে আমাদের এই উম্মতের ২১ জন মানুষের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরলাম।
১ আবু বকরঃ
আবু বকরের সাহসিকতার সাক্ষী এই উম্মতের আরেক বীর, আলি ইবন আবি তালিব। যখন আলী খলিফা হলেন, তাকে প্রশ্ন করা হল, “মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী কে?
তারা বলল, ‘আপনি’
তিনি বললেন, ‘আমি কখনো কারও সাথে দৈতযুদ্ধে হারিনি। কিন্তু লোকদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী হলেন আবু বকর। বদরের যুদ্ধে আমরা রাসুলুল্লাহ সা) এর জন্য একটি ছাউনি নির্মান করেছিলাম এবং আমাদের প্রশ্ন করা হল, কে হবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেহরক্ষী? আবু বকর তাঁর তরবারী খাপ মুক্ত করে সেখানে এলেন, এবং সারাদিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রক্ষা করলেন। মক্কাতে একবার, কুফফাররা রাসূল সা) কে আক্রমণ করেছিল, যেই কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তাকেই অন্যেরা আটক করছিল এবং মারধর করছিল, আর বলছিল, ‘তোমরা কি সব দেব দেবীর পরিবর্তে একজন দেবতা স্থির করেছ?’ কেউই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যাওয়ার সাহস করছিলেন না, একমাত্র আবু বকর ব্যতিক্রম। তিনি গেলেন, এবং তাদের সাথে লড়াই বাঁধিয়ে দিলেন, এবং বলছিলেন, ‘তোমরা কি একজন লোককে শুধুমাত্র এই কারণে হত্যা করতে যাচ্ছ যে সে বলে, ‘আল্লাহ আমার রব!’এরপর আলী প্রশ্ন করলেন, ‘কে উত্তম, আবু বকর না ফেরাউনের সভাসদের সেই ব্যক্তিটি?’ (ফিরাউনের সভাসদদের মধ্যেও এক ব্যক্তি অনুরূপ মন্তব্য করেছিল যখন ফিরাউন সিদ্ধান্ত নিল মূসাকে হত্যা করবে)লোকেরা নীরবতা অবলম্বন করলো। তিনি বললেন, ‘তোমরা উত্তর করছ না কেন? আল্লাহর নামে, আবু বকরের জীবনের একটি মুহুর্ত উত্তম, সারা দুনিয়া যদি ভর্তি হয়ে যায় সেই ফিরাউনের সভার ঈমানদার ব্যক্তিদের মত ব্যক্তি দিয়ে। ফিরাউনের সভাসদের সেই ব্যক্তিটি নিজের ঈমানকে গোপন রেখেছিল, আর আবু বকর তাঁর ঈমানকে প্রকাশ করেছিলেন’।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পর এই উম্মতের সবচেয়ে সাহসী ব্যক্তি হলেন আবু বকর। বদরের যুদ্ধের ঘটনা থেকে, উহুদ, খন্দক, হুদায়বিয়া,হুনাইন ইত্যাদি থেকে একজন ব্যক্তির উচিত তার অন্তরের দৃঢ়তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা। সব বিপর্যয়ের বড় বিপর্যয়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর তিনি যে ভূমিকা পালন করেছিলেন
সেটাই যথেষ্ট তার অবিচলতা, দৃঢ়তা, এবং মুসলিম উম্মাহকে শক্তিশালী করার ক্ষমতা সম্পর্কে জানান দেয়ায় জন্য। সেটা ছিল এমন এক মুহুর্ত যখন অন্তর বিচলিত ছিল, উম্মাহ বিপর্যস্ত ছিল। যখন সবার অন্তর কাঁপছিল, সিদ্দিকের অন্তর সুদৃঢ় ছিল। যদি দাড়িপাল্লার একদিকে আবু বকরের অন্তর আর বিপরীত দিকে সমস্ত উম্মাহর অন্তর স্থাপন করা হয়, তাহলে আবু বকরের অন্তরই ভারী হবে। মুরতাদদের সাথে আবু বকরের যুদ্ধ ঘোষণার সাহসী সিদ্ধান্ত, এই সাহসিকতাকে যদি সারা পৃথিবীর সমস্ত কাপুরুষদের অন্তরে বন্টন করে দেয়া যায়, সেটা তাদেরকে সাহসী করে তুলবে।
২ খাত্তাবের পুত্র উমরএটা উল্লেখ করাই যথেষ্ট হবে যে, উমরের ভয়ে ভীত হয়ে শয়তান সেই পথ পরিহার করে চলত। আল্লাহর রাসূল সা) উমরকে বলেছিলেন, ‘হে খাত্তাবের পুত্র, যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ, শয়তান তোমাকে এক রাস্তায় দেখলে সে অন্য রাস্তা ধরে’। (বুখারী) তার ইসলাম গ্রহণের ফলে মুসলিমদের শক্তি বৃদ্ধি পেল। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ বলেন, ‘উমর মুসলিম হবার আগ পর্যন্ত আমরা প্রকাশ্যভাবে কাবার কাছে সালাত আদায় করতে পারতাম না’।
৩ আলি বিন আবি তালিবতিনি ছিলেন এই উম্মাহর একজন সিংহপুরুষ। তিনি একমাত্র তাবুক যুদ্ধ ছাড়া আর কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেননি, কারণ সেই সময়ে রাসূল সা) তাঁর অনুপস্থিতিতে তাকে মদীনার দায়িত্বে নিয়োজিত রাখেন। খায়বারের যুদ্ধের সময় রাসূল সা বলেন, ‘আগামীকাল আমি যুদ্ধের ব্যানার এমন এক ব্যক্তির হাতে তুলে দিব, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাকে ভালোবাসেন। তিনি যুদ্ধের ময়দানে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেন না, এবং আল্লাহ তাঁর হাতেই আমাদের বিজয় দান করবেন’। সব সাহাবাই সেই সম্মান মনে মনে চেয়েছিলেন। পরের দিন, রাসূল সা) আলীকে ডাকলেন এবং তাকে যুদ্ধের ব্যানার তুলে দিলেন। মুস’আব আল যুবাইরি বলেন, ‘আলি যুদ্ধের ময়দানে খুব সতর্ক থাকতেন। তিনি তার শত্রুর প্রতি ক্ষিপ্র গতিতে ঘুরতেন আর যখন তিনি তাঁর শত্রুর দিকে হামলা করতেন, তিনি নিজের চতুর্দিক থেকে নিজেকে রক্ষা করতেন, আর যখন ফিরে আসতেন তখন তিনি নিজেকে আরও সতর্কতার সাথে রক্ষা করতেন। কেউ তাঁর কাছে যাওয়ার সাহস করতো না, তার ঢাল একমুখী থাকত। এটা শুধুমাত্র সামনের দিক থেকে তাকে রক্ষা করতে পারতো। যখন তাকে প্রশ্ন করা হল, ‘আপনি কি এই ভয় করেন না যে, আপনার পিছন দিক থেকে হামলা হতে পারে?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আমি আমার শত্রুকে কখনো এই সুযোগই দেই না যে, সে আমার পিছন থেকে এসে হামলা করতে পারবে’।
৪ তালহা বিন উবায়দুল্লাহতিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজনের একজন। তিনি উহুদের যুদ্ধে নিজের দেহকে ঢাল বানিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রক্ষা করেছিলেন এবং ৭০ টির বেশি আঘাত পেয়েছিলেন। এমনকি যখনই রাসুলুল্লাহ সা) কুফফারদের দিকে তাকাতে চাইতেন তালহা তাকে অনুরোধ করতেন বিরত থাকার জন্য এবং নিজের দেহ দিয়ে আড়াল করে রাখতেন।
৫ আল যুবাইর আল আওয়ামতিনিও জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজনের একজন। তিনিই প্রথম মুসলিম যিনি তরবারী খাপমুক্ত করেছিলেন। মক্কার ইসলামের প্রাথমিক যুগে একটি গুজব রটানো হল যে, আল্লাহর রাসূলকে অপহরণ করা হয়েছে। আল যুবাইর তার তরবারী কোষমুক্ত করলেন এবং তাঁর সন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন। তিনি রাসুলুল্লাহর দিকে দৌড়ে গেলে, রাসুল সা) তাকে প্রশ্ন করেন, “যুবায়ের, কোন সমস্যা?”
তিনি বলেন, “আমি শুনেছিলাম, আপনাকে অপহরণ করা হয়েছে, তাই আমি তাদের সাথে লড়াই করতে এসেছিলাম’। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জন্য দুয়া করেন।
৬ সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস
তিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজনের একজন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জন্য দুয়া করেছিলেন, ‘হে আল্লাহ ! তার তীরগুলোকে লক্ষ্যভেদ করিয়ে দাও, তার দুয়া কবুল করে নাও’। উমর তাকে কাদিসিয়াহ’র যুদ্ধের সেনাপতি নিযুক্ত করেছিলেন। মুসলিমরা বিজয়ী হয়েছিল, এবং তিনি তাদেরকে পারস্যে নেতৃত্ব দিতে থাকেন যতক্ষণ না তিনি অধিকাংশ এলাকা বিজয় লাভ করেন এবং রাজধানীতে প্রবেশ করেন, আল মাদায়েন। সাদ , তিনি কুফা এবং বাসরা নগরী প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। যখন তিনি মৃত্যুশয্যায় তিনি ওসীয়ত করেছিলেন যেন তার দেহকে একটি পুরনো ঊলের কাপড়ে কাফন দেয়া হয়। তিনি বলেন, এটা পরেই আমি বদরের যুদ্ধ করেছিলাম এবং এই দিনের জন্য তা সংরক্ষণ করে রেখেছি।
৭ আবু উবাইদাহ বিন আল যাররাহ
তিনিও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজনের একজন। উমার তাকে শাম বিজয়ী বাহিনীর দায়িত্ব প্রদান করেছিলেন। তিনিই ছিলেন ইয়ারমুকের সেই বিখ্যার যুদ্ধের সেনাপতি। তিনি শামে যখন প্লেগ রোগ ছড়িয়ে পড়ে সেই রোগে মৃত্যুবরণ করেন।
৮ হামযা বিন আবদুল মুত্তালিবতিনি আসাদুল্লাহ- আল্লাহর ও তাঁর রাসূলের সিংহ। যখব বদর যুদ্ধের পর উমাইয়া বিন খালাফ যে বন্দী হয়েছিল সে আব্দুর রহমান বিন আউফকে প্রশ্ন করল, ‘তোমাদের মধ্যে ঐ লোকটী কে ছিল যার বুকে উট পাখির পালক লাগানো ছিল?’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘তিনি ছিলেন হামযাহ’। উমাইয়া বললো, ‘সেই আজকে আমাদের সর্বনাশ করে ছেড়েছে’। তিনি উহুদ যু
৯ জাফর বিন আবি তালিব
তিনি তাঁর ভাই আলির থেকে বছর দশেকের বড়। মু’তার যুদ্ধে তিনি পর্যায়ক্রমে ২য় ব্যক্তি হিসেবে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যখন যায়িদের পর দায়িত্ব বুঝে পান, তিনি ডানহাতে যুদ্ধের ব্যানার বহন করছিলেন, এরপর যখন ডান হাতটী কাটা গেল তিনি বাম হাতে সেই পতাকা তুলে ধরেন, আর বাম হাত কাটা পড়লে তিনি দুই বাহু দিয়ে পতাকাকে আঁকড়ে ধরে রাখেন, যতক্ষণ না তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপর লোকেরা তাঁর দেহে ৯০টিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন খুঁজে পায়।
১০ মুয়ায বিন আমর বিন আল যামুহ
তিনি ছিলেন এই উম্মাহর ফেরাউন আবু জাহেলের জবাইকারী। তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন আবু জাহেলকে আমার টার্গেট স্থির করে নেই। যখন আমি তাকে পাই, আমি তাকে আক্রমণ করি, এবং আমার তরবারী দিয়ে হামলা করি আর তার পা দ্বিখন্ডিত করে দেই। এরপর তার সন্তান ইকরিমাহ আমার ঘাড়ে আঘাত হানে এভাবে আমার বাহু বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শুধু একটি চামড়ার উপর সেই কাটা বাহু ঝুলে থাকে। কিন্তু, এতে আমার যুদ্ধ করতে অসুবিধা হচ্ছিল, দিনের অধিকাংশ সময় সেটা আমার পিছনে ঝুলতে থাকে। কিন্তু, বেশি অসুবিধা দেখে দিলে, আমি পা দিয়ে চেপে ধরে আমার সেই বাহুকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলি।
১১ আল বারাহ বিন মালিকতিনি আনাস বিন মালিকের ভাই, যিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খাদেম ছিলেন। তিনিই এই উম্মাহর বীর পুরুষদের একজন। আনাস একদিন দেখলেন তাঁর ভাই বারাহ কি যেন কবিতা গুনগুন করছেন, তাই তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘ও আমার ভাই, কবিতা পড়ছো নাকি? কেমন হয় যদি এটাই তোমার শেষ কথা হয়ে যায়? ’ [যখন কুর’আন নাযিল হচ্ছিল, তখন সাহাবারা কুর’আন বাদে অন্য কিছু তিলাওয়াত কিংবা আবৃত্তি করাটা অপছন্দ করতেন। এ কারণেই আনাস তাঁর ভাইকে সতর্ক করে বলছিলেন, ভাই এই কবিতা আবৃত্তি করা অবস্থায় যদি আপনার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে কিভাবে তুমি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে? আরেকটি বর্ণনায় তিনি বলছিলেন যে আল্লাহকে স্মরণ করো ]
আল বারাহ বলেন, ‘না ! আমার মত লোক বিছানায় মরতে পারে না, আমি ৯৯জন কাফির মুনাফিককে হত্যা করেছি’। (মুসান্নাফ ইবন বিন শাইবা)উমর তাঁর মিলিটারি জেনারেলদের কাছে লিখে পাঠালেন যে বারাহ বিন মালিককে কখনো নেতৃত্বের কোন পদ দিও না, কারণ সে মুসলিমদের মধ্যে একটু বেশি বেপরোয়া (অর্থাৎ এত আক্রমণাত্বক যে সাধারণ মুসলিমদের বিপদ হতে পারে !) (আল হাকিম)
একটি উদাহরণ, মুসায়লামা মিথ্যুক নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি অবরুদ্ধ ফটক খোলার জন্য অপর মুসলিমদের বললেন, তোমরা আমাকে একটি ঢালের উপর বসিয়ে দাও, এরপর বর্শার মাথার ঢাল বহন করে দেয়ালের উপর দিয়ে ঢাল সহ আমাকে ছুঁড়ে মার ! এরপর তাকে ছুঁড়ে মারা হল, তিনি সেই দূর্গের ফটক খুললেন ঠিক, কিন্তু এরপর তার দেহে ৮০টিরও বেশি জখম হল। (আল ইসাবাহ)
তাস্তুরের যুদ্ধে, আল বারাহকে বললেন, আপনি বাইয়াত গ্রহণ করুন বিজয় পর্যন্ত
আল বারাহ বলেন, ‘ইয়া আল্লাহ ! আমি এই মর্মে বাইয়াত গ্রহণ করছি যে, আপনি আমাদেরকে তাদের কাঁধের উপর স্থাপন করুন, (আমাদের বিজয় দান করুন) এবং আমাকে আপনার নবীর পথে নিয়ে নিন (মৃত্যু)। তিনি শত্রুদের আক্রমণ করলেন, এবং মুসলিমরা তাকে অনুসরণ করল, পারস্যবাসীরা পরাজিত হল। এবং আল বারাহ শহীদ হলেন। আল্লাহ তাঁর বাইয়াতকে তাঁর শপথকে পূর্ণ করে দিলেন।
আনাস বলেন, যখন আবু মূসাকে আল বাসরার গভর্ণর পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল তিনি আল বারাহকে বলেন যেকোন নেতৃত্বের পদ নির্বাচন করে নিতে, এবং তার সরকারের সেই পদেই তাকে নিযুক্ত করা হবে। আল বারাহ বলেন, ‘আমি এসব কিছু চাই না। বরং আমি চাই, আমাকে আমার ঘোড়া, বর্শা, ঢাল, তরবারী এগুলো দিয়ে দিবেন এবং আমাকে জিহাদে প্রেরণ করবেন। সেই বাহিনীর প্রথম নিহত ব্যক্তি হলেন আল বারাহ ’ (ইমাম আবু শাইবাহ)
১২ আবু দুজানা (সাম্মাক বিন খারশাহ)
উহুদ যুদ্ধের পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি তরবারী বের করলেন এবং বললেন, ‘কে আছ এই তরবারী দিয়ে লড়াই করবে এবং একে প্রাপ্য হক দিবে?’
কিছু লোক উঠে দাঁড়াল এবং এটা চাইল, কিন্তু আল্লাহর রাসূল তাদের কাউকেই দিলেন না। এরপর আবু দুজানা উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ ! এর হক কি ?’ তিনি বলেন, ‘আর তা হল তুমি এটা দিয়ে শত্রুদের মুখে আঘাত করবে যতক্ষণ না তা বাঁকা হয়ে যায়’।
আবু দুজানা বলেন, ‘আমি এটা গ্রহন করব ইয়া রাসুলুল্লাহ’। এবং তিনি তাকে সেটা দিলেন। আল যুবাইর বিন আল আওয়াম বলেন, ‘আমি কিছুটা মন খারাপ করেছিলাম, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফুপাতো ভাই। আমি চাইলাম, আর তরবারীখানা পেলাম না, কিন্তু আবু দুজানা পেয়ে গেল। কাজেই আমি আবু দুজানাকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং সে কি করে তা দেখার জন্য। আবু দুজানা একটি লাল পট্টি নিয়ে মাথায় বাঁধলেন, আনসাররা বলেন, ‘আবু দুজানা তার মৃত্যুর রুমাল বেঁধে নিয়েছে! এরপর তিনি শত্রুদের আক্রমণ করলেন এবং যাকে সামনে পেলেন তাকেই হত্যা করলেন’।
এবং যুদ্ধের পূর্বে তিনি শত্রুসারির সামনে গর্বের সাথে হাঁটলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘এটা এমন হাঁটা যা আল্লাহ ঘৃণা করেন, কিন্তু এই অবস্থা ব্যতিক্রম’।
ইয়ামামার যুদ্ধে, তিনি নিজেকে একটি দেয়ালের উপর দিয়ে ছুঁড়ে দেন যা শহরকে ঘিরে রেখেছিল এবং পড়ে গিয়ে নিজের পা ভেঙ্গে ফেলেন। তিনি সেই ভাংগা পা নিয়েই যুদ্ধ চালিয়ে যান যতক্ষণ না শাহাদাত বরণ করেন।
১৩ খালিদ বিন আল ওয়ালিদ
তিনি আল্লাহর নির্বাচিত তলোয়ার। যখনই তিনি মুসলিম হলেন, রাসূলুল্লাহ সা) তাকে শত্রুদের সাথে লড়াই এর কাজে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি জীবনে কোন যুদ্ধে পরাজিত হননি। খালিদ বিন আল ওয়ালিদ বলেন, ‘যদি আমার একজন সুন্দরী নারী যাকে আমি ভালোবাসি তাকে বিয়ে করার অবস্থা সামনে থাকে, অথবা যদি আমাকে এই সুসংবাদ প্রদান করা হয় যে, তোমার একজন পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করেছে, এটাই আমার নিকট কম প্রিয় হবে এবং আমার অন্তরে কম পছন্দের হবে, বরং এক বরফের ন্যায় শীতল রাত্রিতে যদি আমাকে বলা হয়, একটি বাহিনী তোমার শত্রু হিসেবে আগামীকাল সকালে তোমার অপেক্ষায় আছে আমি সেটাই বেশি পছন্দ করব।
আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি, জিহাদে যাও !’ এই কথাগুলো ছিল খালিদের মৃত্যুশয্যায় বলা।
বিস্তারিত পরতে এখানে eratunes
বন্ধুরা যদি এই টিউনটি ভাল লেগে থাকে তাহলে আমাদের এই পেইজ এ eratunesএকটা লাইক দিবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
সকল ব্লগার ভাইদের কে এই ব্লগ Click this linkএ পোষ্ট করার জন্য অনুরোধ রইল।
সুত্রঃ sorolpath
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন