ইউরোপের পার্লামেন্ট ও বাংলাদেশের রাজনীতি
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:২৫:১৮ সকাল
ফরহাদ মজহারের কলাম থেকে
১.
সোজা-সরল সাধারণ মানুষগুলোকে ধোঁকা দেওয়া সহজ
তথাকথিত ‘নির্বাচন’ নামক তামাশার পরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বেশ কিছু প্রস্তাব নেয়। বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম পার্লামেন্টে গৃহীত অনেকগুলো প্রস্তাবের মধ্যে সব বাদ দিয়ে বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্কছেদ ঘটাতে হবে বলে হইচই শুরু করে দিয়েছিল। মনে হচ্ছিল ইউরোপিয়ানদের আর খেয়েদেয়ে কাজ নাই বাংলাদেশে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের সম্পর্ক ছিন্ন করাই সাহেবদের একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে হয়েছে, বিএনপি এতে ঘাবড়ে গিয়েছে। ভড়কে গিয়ে বিএনপি ইসলামপন্থিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিচ্ছেদ ঘটাতে চাইছে এই গুজবও ছড়িয়েছে বেশ। তাই ‘ভড়কে গিয়ে ভুল করা যাবে না’ শিরোনামে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবগুলো ধরে ধরে আরেকটি দৈনিকে আলোচনা করেছি (দেখুন দৈনিক যুগান্তর ১ জানুয়ারি ২০১৪)। দেখাতে হয়েছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের প্রায় সবগুলোই মতাসীনদের বিপ।ে ঘাবড়ে যাবার কথা শেখ হাসিনার। খালেদা জিয়া তাহলে কেন আন্দোলনে বিরতি দিলেন সেটা একটা প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের সোজা-সরল মানুষগুলোকে ধোঁকা দেওয়া সহজ। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর সরকারি প এই দুর্বলতা জানে। বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল ভুয়া, সেটা কূটনীতিবিদেরাও মানেন। শুধু তাঁদের ভাষা ভিন্ন, ‘নট ক্রেডিবল’Ñ কিন্তু কথা একই। সেই ভুয়া নির্বাচন হয়ে যাবার পর বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একটি প্রস্তাবকে এত বেশি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করেছে, যাতে মনে হয় ইউরোপিয়ানরা নতুন কাজ হাতে নিয়েছে। সেটা হোল, খালেদা জিয়াকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ও সংসর্গ ত্যাগ করতে বাধ্য করা। তারাই নাকি সকল সন্ত্রাস ও সহিংসতার মূল কারণ। ১৬ জানুয়ারিতে গৃহীত অন্য সব গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তাদের প্রচারের কোলাহল দিয়ে বেমালুম গায়েব করে দেবার চেষ্টা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট আসলে কী এবং তাদের প্রস্তাব আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কি না এ ব্যাপারে বাংলাদেশে আমাদের ধারণা অস্পষ্ট। যে কারণে মতাসীনদের সমর্থক গণমাধ্যমগুলোর কোলাহলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবগুলোকে কিভাবে মূল্যায়ন করা উচিত জনগণ বুঝে উঠতে পারছে না। গণ-আন্দোলনের তরফে যার বিচারক জনগণ। সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ে যাচ্ছে। অতএব আগের লেখারই সম্পূরক হিসেবে এই লেখা। এই লেখাটির সাথে ‘ভড়কে গিয়ে ভুল করা যাবে না’ লেখাটি পড়ে এলে খুশি হবো।
‘পার্লামেন্ট’ কথাটার একটা বিশেষ ধরনের দ্যোতনা আছে। ধরে নেওয়া হয় এখানে আইন প্রণয়ন করা হয়। যে কারণে বাংলাদেশে অনেকেরই ধারণা ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট মানে যেখানে ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য আইন তৈরি হয়। কিন্তু পৃথিবীতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টই এমন এক পার্লামেন্ট যা আসলে ‘পার্লামেন্ট’ নয়। যেখানে ‘কার্যকর’ আইন পাস করা হয় না। ‘কার্যকর’ কথাটা বলছি এ কারণে যে যদি প্রস্তাব পাস ছাড়াও তেমন কিছু হয়, তার চরিত্র প্রধানত কাগুজে ব্যাপারই হবে। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সঙ্গে মিলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এক ধরনের ‘আইন’ পাস করে বটে, কিন্তু সেগুলোকে আইন বলা মুশকিল। আধুনিক রাষ্ট্রে যাকে আইন প্রণয়নী সংস্থা (legislative assembly) বলা হয়, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সেই অর্থে সত্যিকারের আইন বা বলবৎযোগ্য আইন প্রণয়নের অধিকারী নয়। সেই অধিকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর জাতীয় পার্লামেন্টের। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কোন প্রস্তাব ইউরোপীয় রাষ্ট্রের পার্লামেন্ট বিবেচনায় নিতে পারে, কিম্বা না-ও পারে। কোন বাধ্যবাধকতা নাই। এই অর্থে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাব কোন আইনের মতা বা কার্যকারিতা ধারণ করে না। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলেরও আইন প্রণয়নের কোন ‘আইনি মতা’ (legislative power) নাই। লিসবন চুক্তির (Treaty of Lisbon) মধ্যে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কাজের পরিধি ও মতা সীমাবদ্ধ। দুই হাজার নয় সালের ডিসেম্বর থেকে লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়া শুরু করেছে। বলা হয়, চুক্তির কার্যকারিতার ফলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মতা বেড়েছে, সেটা কোনভাবেই আইন প্রণয়নী মতা নয়।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এত কিছুর খবর জানে না। ফলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন প্রস্তাব তোলা হলে তাকে তারা অতিরিক্ত রাজনৈতিক গুরুত্ব দিয়ে ফেলে, বুঝতে পারে না। একে তো বিদেশীরা কিছু বললে মানুষ ভড়কে যায়, তারপর আবার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট। বিশেষত শিতি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে এই বিকার প্রবল। দুই শ’ বছরের বিদেশী শাসনে রপ্ত অভ্যাস তো সহজে যাবার নয়। এই শ্রেণীরই অনেকে মনে করে বাপ রে বাপ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে যখন প্রস্তাব পাস হয়েছে তখন সারা ইউরোপে বুঝি এই প্রস্তাবই রীতিমতো আইন হয়ে যাবে। টেলিভিশান টকশোতে দেখেছি শিতিদের কথাবার্তা এই ধারার। এতে সাধারণ মানুষ কিছুটা ভাবনায় পড়ে যায়। বিদেশীদের কথাবার্তা মূল্যায়ন করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে।
আসলে নৈতিক গুরুত্ব ছাড়া ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাব আর কোন তাৎপর্য বহন করে না। নৈতিক গুরুত্বের অর্থ কোন ঘটনাকে নৈতিক ভাবে বিচারের েেত্র জনগণের মতামত প্রভাবিত করা। বাংলাদেশে হিংসা ও সন্ত্রাস ঘটছে, মানুষ মারা যাচ্ছে। নৈতিক দিক থেকে এটা বন্ধ করা উচিত। খালেদা জিয়াকে বলা হোল জামায়াতে ইসলামী আর হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে আপনি দূরে থাকুন। এতে ইউরোপে একটা জনমত তৈরি হোল যে বিরোধী দলের উচিত ইসলামপন্থীদের কাছ থেকে দূরে থাকা। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের অনুমান আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়েই গণতন্ত্রী দল, কিন্তু এখন বাগড়া বাধাচ্ছে ইসলামপন্থীরা। ইসলাম গণতন্ত্রবিরোধীও। শুধু তা-ই নয়, ইসলাম একটি বর্বর ও হিংস্র ধর্ম, এরা ধর্মের নামে জেহাদ করে। খ্রিষ্টীয় ইউরোপে এই বর্ণবাদী চিন্তার আধিপত্য প্রবল। ফলে বিএনপিকে জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে দূরে থাকার কথা বলা হয়েছে। এতে অবাক হবার কিছুই নাই।
২.
তবু আমি বিস্মিত!!!
তবে আমি অন্য কারণে অবাক হয়েছি। আওয়ামী লীগপন্থী লবিওয়ালা আর ও দিল্লির প্রচারের পরও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বলেনি, সহিংসতা ও সন্ত্রাস শুধু ইসলামি দলগুলোই করেছে; আর, মতাসীনরা ধোয়া তুলসী পাতা। না, বরং উভয় পকেই নিন্দা করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে এখন প্রতিষ্ঠিত যে আওয়ামী লীগ নিজেও একটি সন্ত্রাসী ও সহিংস দল। অতীতে লগি-বৈঠার মতো ঘটনা ঘটাবার পরও এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। এটা একটা বিরাট ঘটনা। এই পরিপ্রেক্ষিতিই ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট একটা গড়ে হরিবোল প্রস্তাব পাস করেছে। সেটা হোল, সকল পক্ষই সন্ত্রাস ও সহিংসতা পরিহার করতে হবে।
বিস্মিত হবার দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে সরাসরি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে হবে এটা কোত্থাও বলা হয়নি। ইউরোপকে আমি যতটুকু জানি তাতে এই প্রস্তাব পাস হলে আমি মোটেও বিস্মিত হতাম না। মতাসীনদের পরে গণমাধ্যম এই মিথ্যা প্রচারে মুখের ফেনা বের করে দিয়েছে। পার্লামেন্ট বরং বলেছে, যেসব দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে (Stresses that parties which turn to terrorist acts should be banned )। যেকোন দলই সেটা হতে পারে। অর্থাৎ এই দোষে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করে দেওয়া যায়। ইসলামপন্থীরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে পাল্টা বল প্রয়োগ করেনি, এটা দাবি করা যাবে না। করেছে, না করলে তারা এত দিনে চিনাবাদাম হয়ে যেত। কিন্তু আসলে কী ঘটেছে, কার কী ভূমিকা তার একটা নির্মোহ অনুসন্ধান দরকার আছে। নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনাগুলো ‘দ্রুত, স্বাধীন ও স্বচ্ছ’ তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি দেবার কথা বলা হয়েছে। বিশেষভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা এই ধরনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট আসলে মতাসীনদের নিন্দাই করছে। অথচ বাংলাদেশের মতাসীনদের পাবলম্বনকারী গণমাধ্যম উল্টা প্রচার করছে। ইউরোপে রাষ্ট্রীয়পর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা বাংলাদেশ সম্পর্কে কী ভাবছে, কেমন করে ভাবছে, বাংলাদেশ সম্পর্কে তারা কী জানে আর কী জানে না পার্লামেন্টের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এই সকল দিক ভালভাবে আন্দাজ করা যায়। কারা কী প্রস্তাব করছে এবং কারা সমর্থন করছে তা বিচার করে কারা বাংলাদেশের পে বা বিপে সক্রিয় সেটাও বোঝা যায়। দ্বিতীয়ত ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাব বাংলাদেশ সম্পর্কে ইউরোপীয়দের মতামত গঠনে কিছুটা ভূমিকা রাখে। প্রস্তাবের গুরুত্ব অতটকুই। তার বেশি কিছু নয়।
তো ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের গুরুত্ব কেমন তা বোঝাবার জন্য একটা নজির দিচ্ছি। ২০ নভেম্বর ১৯৯৭ সাল। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট প্রস্তাব নিয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। পাহাড়ের ‘বেসামরিকীকরণ’ করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, পাহাড়ি অধিবাসী বা ‘জুম্ম জাতি’র স্বায়ত্তশাসনের দাবি বাংলাদেশ সরকারকে মানতে হবে। পাহাড়ে শুধু আদিবাসীরাই থাকবে আর কেউ নয়। বাঙালি সেটেলারদের পাহাড় থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পাহাড়ের জাতিগত বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে। ঠিক এখন যেমন বাঙালিদের ‘সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বিশুদ্ধতা’ বজায় রাখার জন্য জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামকে ‘নির্মূল’ করবার কথা আমরা শুনি। আমি কে তুমি কে? বাঙালি বাঙালি। তো এখানে কেউ নিজের মুসলমান পরিচয় অন্য সব পরিচয়ের তুলনায় অন্যতম বা প্রধান গণ্য করবে কেন? সে নিশ্চয়ই রাজাকার, কিম্বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। আর নিজেকে আগে মুসলমান পরে বাঙালি গণ্য করেও বা বাংলাদেশে বাস করবে কিসের অধিকারে? ইউরোপ নিজেকে জাতিগত বর্ণবাদ থেকে মুক্ত ভাবলেও এই ধরনের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে তাদের অন্দরমহলের আবর্জনা আমরা টের পাই। আর ইউরোপীয় চিন্তা কোকাকোলার মতো পান করে যারা আধুনিক ও ধর্মনিরপে হয় তাদের বর্ণবাদ বুঝতেও সুবিধা হয়।
মজার কথা হোল, সেটেলারদের সরিয়ে নেবার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো অর্থসাহায্য করতেও রাজি ছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের যারা জুম্ম জাতির অন্তর্ভুক্ত নয়, তাদের পাহাড় থেকে সরিয়ে সমতলে নতুন বসতি নির্মাণ করবার জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উন্নয়ন বরাদ্দের অভাব হোত না। এখনো তারা এ কাজে সম্ভবত রাজি। তো সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যÑ আমরা যে দিক থেকেই দেখিÑ সেটা প্রস্তাব হয়েই থেকে গেছে। বাস্তবায়িত হয়নি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবের রাজনৈতিক গুরুত্ব বোঝাবার জন্য উদাহরণটা দিলাম। (প্রস্তাবের ইংরেজি ভাষ্য : Urges the Government of Bangladesh to review its demographic policy, to relocate the Bengali settlers from CHT and rehabilitate them in the plains, in full respect of their rights and with the full use of the financial assistance of the European Union)। আমি বাঙালি জাতীয়তাবাদকে বর্ণবাদ গণ্য করি এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তার আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের আমি ঘোর সমর্থক। বাংলাদেশের যেকোন নাগরিকের মতো পাহাড়ের জনগণের নিজেদের সম্পত্তির ওপর অধিকার কায়েমও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের অন্তর্গত। অর্থাৎ আমি খালি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার তথাকথিত সাংবিধানিক স্বীকৃতিতে সন্তুষ্ট নই, কারণ সম্পত্তির অধিকারের প্রশ্ন বাদ দিয়ে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির কোন অর্থ নাই। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আমি চাই কারণ জাতি-ধর্ম-সংস্কৃতি নির্বিশেষে বাংলাদশে একটি ‘রাজনৈতিক জনগোষ্ঠির বিকাশ’ ছাড়া আমরা টিকে থাকতে পারবো না। ‘বাঙালি’ বলি, ‘জুম্ম’ বলি আমরা এখনো ‘জাতিবাদী’ জনগোষ্ঠি রয়ে গিয়েছি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উপযোগী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি নই, যারা বৈচিত্র্যের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যচর্চা করে। ফলে একক ও অখণ্ড গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তি গঠনে আমরা বারবার হোঁচট খাচ্ছি। আমরা তিন দিকেই শত্রু পরিবেষ্টিত, ফলে একক ও অখণ্ড গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তি গঠন ছাড়া আমাদের বিকল্প নাই। আমাদের একটি শক্তিশালী দেশ দরকার। বাংলাদেশের প্রতিরা ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যা প্রাথমিক শর্ত।
ুদ্র জাতি সত্তার আত্ম নিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং বাংলাদেশে প্রত্যকের পূর্ণ নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের দেশ হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি; কোন বর্ণবাদী বা সাম্প্রদায়িক আদর্শ দ্বারা নয়। এ কারণে শেখ হাসিনার শান্তিচুক্তির মতো গরু মেরে জুতা দান কোন রাষ্ট্রীয় নীতি হতে পারে না। যে কারণে পাহাড়ে শান্তিও আসেনি। সমস্যারও সমাধান হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা মাত্র নয়, বরং সরাসরি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সংকট।
এখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের উদাহরণ দিয়েছি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবের মানে বোঝাতে। ইউরোপ কিভাবে চিন্তা করতে অভ্যস্ত এবং আমাদের নিয়ে ভাবে সেটা বোঝা দরকার। যেহেতু আইনি গুরুত্ব নাই, আমরা চাইলে উপোও করতে পারি। শেখ হাসিনা যেমন এটা জানেন, অতএব তাকে উপোও করবেন। কিম্বা এই সব প্রস্তাব সাহিত্য বা সমাজতাত্ত্বিক মালমসলা হিসেবে পড়া যেতে পারে। যেহেতু আইনি গুরুত্ব নাই ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইউরোপ যা খুশি প্রস্তাব নিতেই পারে। ওপরের উদাহরণ যেমন। তাকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করলে ইউরোপকে বেশ বোঝা যায়। এর গুরুত্বই বা কম কী!
তবু বলব, আইনি কার্যকারিতা না থাকুক, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবকে গুরুত্বের সঙ্গেই নেওয়া উচিত। ইউরোপের কথা শোনার মধ্যে দোষ কিছু নাই। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবের নৈতিক ওজন তো আছেই। সেটা আবার অস্বীকার করা বেয়াকুবি। ঠিক তেমনি গুরুত্ব দিতে হবে ব্রিটিশ হাউস অব কমন্স কিম্বা মার্কিন সিনেটে বাংলাদেশ নিয়ে তর্কবিতর্ক ও প্রস্তাবকেও। ইউরোপীয় পার্লেমেন্টের তুলনায় তারা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সিদ্ধান্তের আইনি পরিণতির সম্ভাবনা থাকে।
বিদেশীরা তাদের পার্লামেন্টে, সিনেটে বা আইনসভায় বাংলাদেশ সম্পর্কে যেসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তার মধ্যে ইউরোপীয় মন ও তাদের চিন্তার ধরন স্বাভাবিক কিম্বা অ্যাবসার্ড বা আজিব যা-ই হোক বাংলাদেশের জনগণের দিক থেকে বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষকে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অন্যান্য রাষ্ট্র ও তাদের জনগণের মনমানসিকতা, চিন্তার প্যাটার্ন, ঝোঁক, অভ্যাস, ঐতিহ্য, ইতিহাস ইত্যাদির হদিস রাখলে সময়ে আজে আসতে পারে। বিশ্বসভায় রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসেবে আমাদের টিকে থাকার জন্যই এটা দরকার। অনেকটা সারভাইভাল ইন্সটিংক্ট বা নিজেকে রার স্বভাবজাত প্রবৃত্তির চর্চা হিসেবে জারি রাখা। এতে লাভ ছাড়া তি নাই।
বিশ্বব্যবস্থায় নিজেদের জায়গা মজবুত করতে হলে যেকোন ন্যায়সঙ্গত প্রস্তাব বা পরামর্শে সাড়া দেওয়া, আর অন্যায় প্রস্তাবের বিরোধিতা করাই সঠিক কাজ। গোলকায়নের (globalization) এই যুগে আমরা নিজেদের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ গণ্য করতে পারি না। সবাই সবার সঙ্গে কোন-না-কোনভাবে যুক্ত। অন্যদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই আমাদের নিজেদের পথ বের করতে হবে। তবে গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ একমত হওয়া নয়, কিম্বা সব কথাতে সায় দেওয়াও নয়। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা কিম্বা এশিয়ায় সাধারণ মানুষ বিশ্বব্যবস্থায় তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদার জন্য লড়ছে। সে লড়াই অধিকাংশ সময় সশস্ত্র রূপ গ্রহণ করে। সহিংসতা কেউই পছন্দ করে না। কিন্তু জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার যখন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সশস্ত্রতা ও সহিংসতা দিয়ে হরণ করা হয়, সেই অধিকারহীন অবস্থায় শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলে না। সেই সম্পয় জনগণকে শান্তির কথা বলা বাস্তবসম্মত নয়। দেখা যাক।
৩.
বরং কে কিভাবে ইউরোপকে বুঝল সেটাই ইন্টারেস্টিং
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং দিক তাদের প্রস্তাবে মোটেও নয়। বরং তাদের প্রস্তাবকে বাংলাদেশের দুই রাজনৈতিক প কে কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন ও গ্রহণ করেছে সেখানে। আমাদের আলোচনার বিষয়ও আসলে সেটাই। শেখ হাসিনা জানেন এই ধরনের প্রস্তাবের কোন মূল্য নাই। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রায় এগারোটি প্রস্তাবের একটি প্রস্তাব ছাড়া বাকি সবই শেখ হাসিনার বিপক্ষে। তিনি তার থোড়াই কেয়ার করেছেন। শেখ হাসিনা জানেন, দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নিজের সংগঠন ও শক্তির ওপর। মুখে প্রপাগান্ডা হিসেবে যা-ই বলা হোক, তিনি জানেন তাঁর সরকার একটি বে-আইনি ও অবৈধ সরকার। সারা বিশ্ব তাঁকে নিন্দা করছে, কিন্তু তিনি কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। করবেন বলে মনে হয় না। ইউরোপিয়ান পার্লেমেন্টে তাঁর খুনোখুনির নিন্দা করে প্রস্তাব নেবার পরও আইনশৃংখলা বাহনী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে। কারণ দুনিয়াতে তিনিই প্রথম নিষ্ঠুর ও নির্মম একনায়কতান্ত্রিক শাসক নন। আরো ছিল, আরো আছে এবং ভবিষ্যতে আরো আসবে। তাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কিম্বা ইউরোপ কি কাজ করছে না? করছে। অতএব তাঁর সঙ্গেও করতে হবে। বল প্রয়োগের শক্তিই প্রধান শক্তি।
অথচ খালেদা অবিলম্বে কাবু হয়ে গিয়েছেন। কিম্বা কাবু হবার জন্যই তিনি তৈরি ছিলেন। তিনি শান্তির পে আন্দোলনে ছেদ দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কর্মসূচিতে সাময়িক বিরতি দেওয়াকে আমি এর আগে একটি লেখায় সঠিক বলেছি। কিন্তু কত দিন? নতুনভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি দেবার আগে ব্রিটিশ হাউস অব কমন্স ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মূল্যায়ন তাঁর জানা দরকার ছিল বলেই ‘সাময়িক বিরতি’কে সঠিক বলেছি। ধারণা করেছিলাম ভেবেচিন্তা ২০ তারিখের সভায় তিনি আরো কংক্রিট কর্মসূচি এবং আন্দোলনের আগামি পদপেগুলো স্পষ্ট করবেন। নিদেনপে সাংগঠনিকভাবে নিজেকে সংহত করবার জন্য ‘সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা’ রা কমিটি গঠনের ওপর জোর দেবেন। তিনি সেটা করেননি।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে জামায়াত ও হেফাজত-সংক্রান্ত প্রস্তাব ছাড়া বাকি সবই মূলত তাঁর পরেই প্রস্তাব। প্রত্যেকেই এই নির্বাচনকে ভুয়া (not credible) নির্বাচন বলেছে এবং আবার দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এর পূর্ণ সুযোগ তিনি নিতে পারতেন। কিভাবে নেবেন সেটা তো পরের কথা, বরং ইউরোপকে খুশি করবার জন্য জামায়াত ও হেফাজত ছাড়ছেন ইঙ্গিতও দিয়ে দিয়েছেন। অহিংস ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয়েই বলেছে। কিন্তু বিএনপি জামায়াত বা হেফাজত ছাড়ুক সিনেট বা হাউস অব কমন্স এই দাবি করেনি। প্রথমত হেফাজতে ইসলাম কোন রাজনৈতিক দল নয়, তাকে ছাড়া-না-ছাড়ার কথা তোলা অবান্তর ও হাস্যকর। জামায়াত সংসদীয় রাজনীতির কারণে জোটের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক শাসনের কারণ আন্দোলনের মিত্রে পরিণত হয়েছে। বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বলা আর পার্লামেন্টারি রাজনীতি পরিত্যাগ করতে বলা সমার্থক। কিম্বা মতাসীনরা বলতে পারে আমরা হিংসা ও হত্যার রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছি, অতএব আমাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বিএনপি আর জামায়াতের আর জোট বাঁধার দরকার নাই। আমরা ভাল হয়ে গিয়েছি, আমাদের আর ভয় পাবার কারণ নাই। যারা কাণ্ডজ্ঞান হারায়নি তারা বিএনপিকে জামায়াত থেকে দূরে থাকবার কথা তাই বলবে না। সে কারণে এটা মার্কিন কিম্বা ব্রিটিশ দাবি নয়। ইউরোপিয়ানদের কাণ্ডজ্ঞান নাই এটা বলার দুঃসাহস আমি করি না। তবে বেগম জিয়া বোঝেন কি না জানি না, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এই দাবি আসার একমাত্র কারণ ভারতীয় প্রভাব, আর কিছুই নয়। ইউরোপ দিল্লিকে খুশি রাখতে চাই। এই আর কী!
বলাবাহুল্য, বিএনপির ২০ তারিখের সমাবেশে জামায়াত এবং হেফাজতের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রবল গুঞ্জন শুরু হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অবশ্য দাবি করেছেন, তারা জামায়াতকে ছাড়ছেন না। কিন্তু বেলুন থেকে বাতাস বেরিয়ে গেলে তাকে ফুলিয়ে তোলা কঠিন। আবার ফোলানোর যন্ত্রের দরকার হয়। সেই যন্ত্র বিএনপির আছে কি? জনগণ ভেবেছিল বিদেশী প্রচারে কান না দিয়ে খালেদা জিয়া কিভাবে তাঁর জোটকে সংহত ও ঐক্যবদ্ধ করবেন সেই দিকনির্দেশনাই দেবেন। দেননি। হয়তো কিভাবে সেই নির্দেশনা এখন সেটা স্থির করতে হবে তার দিশা তিনি আর পাচ্ছেন না। এখনো ভাঙা রেকর্ডের মতো নির্দলীয় নিরপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে যাচ্ছেন। কার কাছে এই দাবি? শেখ হাসিনার কাছে। শেখ হাসিনা কে? গায়ের জোরে মতা দখল করে নিয়েছেন। শেখ হাসিনার মতার ন্যায্যতা কী? একদমই নাই। বল প্রয়োগের মতা ছাড়া। সারা দুনিয়ার চোখে বাংলাদেশের মতাসীন সরকার বে-আইনি ও অবৈধ সরকার। আন্দোলনের এই বিশাল সাফল্যকে একদমই আমলে না নিয়ে খালেদা জিয়া উল্টা জামায়াত ও হেফাজতে ইসলাম থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবার ইঙ্গিতই যেন দিলেন। শেখ হাসিনা তার দুশমনদের ‘জাতীয়তাবাদী’ ও ‘ইসলামি শক্তি’ এই দুইভাবে ভাগ চেয়েছেন। প্রতিপরে নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে অবিশ্বাস্যভাবে সফল হয়ে যাবেন কি? এই আশংকাই এখন দেখা দিয়েছে।
আসলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ব্রিটিশ হাউস অব কমন্স, কিম্বা মার্কিন সিনেট কী বলল আর না বলল তাতে কী আসে-যায়! ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের লড়াই ন্যায়সঙ্গত কি না সেই গোড়ার প্রশ্নে স্বচ্ছ থাকা। যদি তা-ই হয় তাহলে রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে কে কী সিদ্ধান্ত নিলো, সেটা মুখ্য নয়। মুখ্য হচ্ছে সারা দুনিয়ায় ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক জনগণের সমর্থন আদায় করা। দুনিয়ায় কেউই এখন আর বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বাস করে না। অতএব বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনের গণতান্ত্রিক চরিত্র সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করাটাই প্রধান কাজ। আন্দোলনের ধরন হিসেবে সহিংসতা ও সশস্ত্রতার ভালমন্দ নীতিবাগিশতা দিয়ে ঠিক হয় না। সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো গণতন্ত্রের নামে বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশে বিরোধী পকে সহিংস ও সশস্ত্র সংগ্রামে প্রকাশ্যেই উসকে দিচ্ছে। গাদ্দাফির পতন কিভাবে ঘটানো হোল, আমরা সে ঘটনা বিচার করে দেখতে পারি, সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাতের জন্য যুদ্ধ চলছে। প্রয়োজনে বিরোধী দলকে মতাসীনদের বিরুদ্ধে উসকে দিতে পাশ্চাত্য কুণ্ঠা বোধ করে না। বরং অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে। আকাশ থেকে বোমা মেরে তাদের অপছন্দের শাসককে হত্যা করতেও তারা দ্বিধা করে না। অতএব বাংলাদেশে পাশ্চাত্য আন্দোলনের সহিংস ধরন নিয়ে উদ্বিগ্ন, এটা ডাহা মিথ্যা কথা। তাদের উৎকণ্ঠা অন্যত্র। বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শক্তিমান হয়ে উঠুক এটা তারা চায় না। তারা পাশ্চাত্যের দিক থেকে এটা খুবই স্বাভাবিক একটি অবস্থান। ইউরোপের এই স্বাভাবিক অবস্থানকে প্রতিপ ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলছে। তুলুক।
কিন্তু বিএনপি এতে কাবু হয়ে যাচ্ছে কি? আন্দোলনের বর্তমান পর্যায়ে সেটাই হবে সবচেয়ে অস্বাভাবিক ঘটনা।
লিংকঃ এখানে দেখুন
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন দেখি সর্ষের ভেতরই ভূত !
মন্তব্য করতে লগইন করুন