শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের জানাযা স্থানে উপস্থিত বক্তব্য এবং তাঁর জীবনী ও গ্রেফতার থেকে ফাঁসি

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:০৪:৩৪ সকাল

শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের জানাযা স্থানে উপস্থিত বক্তব্য

১ম অংশ

২য় অংশ

৩য় অংশ

আবদুল কাদের মোল্লার জীবনী ও গ্রেফতার থেকে ফাঁসি



ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ গ্রামের মরহুম সানাউল্লা মোল্লার ছেলে আবদুল কাদের মোল্লা ১৯৪৮ সালের ২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকায় ৪৯৩ বড় মগবাজারে গ্রিন ভ্যালি অ্যাপার্টমেন্টের ৮/এ ফ্ল্যাটে থাকতেন। কাদের মোল্লা ১৯৬১ সালে আমিরাবাদ ফজলুল হক ইনস্টিটিউশনে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালে ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে বিএসসি প্রথম বর্ষে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়ন ছেড়ে ইসলামী ছাত্রসংঘে যোগদান করেন।

১৯৬৮ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করে ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন কাদের মোল্লা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের শাসনকালেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত উদয়ন হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরি নেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে দেশের কোথাও হত্যা মামলা দাখিল করা হয়নি।

১৯৭৮ সালে তিনি ঢাকার রাইফেল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮০ সালে বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ফুয়াদ আবদুল হামিদ আল খতিবের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও আর্থিক সহায়তায় দেশে মুসলমান ছেলে-মেয়েদের আন্তর্জাতিক মানের একটি ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে গুলশান ১ নম্বর মার্কেটের দক্ষিণ পাশে ‘মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে মানারাত ইউনিভার্সিটি হিসেবে পরিচিত। সেখানে তিনি প্রায় এক বছর কাজ করেন।

১৯৮০ সালে তিনি দৈনিক সংগ্রামে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য এবং এরপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদে নিয়োজিত হন। পরে আবদুল কাদের মোল্লা জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদে নিয়োজিত হন। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনে জামায়াত থেকে নির্বাচন করেন।

কাদের মোল্লা ১৯৯৫ সালে কেয়ারটেকার সরকার আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সর্বদলীয় লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে তত্কালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এছাড়া ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন।

গ্রেফতার : ১৩ জুলাই ২০১০ সুপ্রিমকোর্ট এলাকা থেকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার

তদন্ত শুরু : ২১ জুলাই ২০১০

তদন্ত শেষ : ৩১ অক্টোবর ২০১১

আদালতে অভিযোগ উত্থাপন : ১৮ ডিসেম্বর ২০১১

শ্যোন এরেস্ট : ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জ থানায় মুক্তিযুদ্ধকালে গোলাম মোস্তফা নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগে কাদের মোল্লাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ২০০৮ সালে পল্লবী থানায়

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়। দুই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়

অভিযোগের সংখ্যা : ৬টি

৬ অভিযোগ : কবি মেহেরুন্নেছাসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, পল্লবীর আলোবদি গ্রামে ৩৪৪ জনকে হত্যা, আইনজীবী-সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে হত্যা, বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবসহ সাতজনকে হত্যা, কেরানীগঞ্জের শহীদনগর গ্রামের ভাওয়াল খানবাড়ি ও ঘাটারচরসহ পাশের আরও দুটি গ্রামের অসংখ্য লোককে হত্যা

অভিযোগ আমলে নেয় : ২৮ ডিসেম্বর ২০১১

চার্জ গঠন করে : ২৮ মে ২০১২

অভিযোগের ওপর সূচনা বক্তব্য শুরু হয় : ১৬ জুন ২০১২

রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষ্য : ৩ জুলাই ২০১২

রাষ্ট্রপক্ষের মোট সাক্ষী : ১২ জন

সাক্ষ্য শেষ হয় : ৪ নভেম্বর ২০১২

কাদের মোল্লার পক্ষের সাক্ষীর আবেদন : ৫ নভেম্বর ২০১২

কাদের মোল্লার পক্ষে সাক্ষী : ৬ জন

কাদের মোল্লার পক্ষে সাক্ষ্য শুরু : ১৫ নভেম্বর ২০১২

কাদের মোল্লার পক্ষে সাক্ষ্য শেষ হয় : ৬ ডিসেম্বর ২০১২

রাষ্ট্রপক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক : ১৭ ডিসেম্বর

মামলা পুনর্বিচারের জন্য আবেদন : ৩ জানুয়ারি ২০১৩

পুনর্বিচারের আবেদন খারিজ : ৭ জানুয়ারি ২০১৩

আসামিপক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক : ৭ জানুয়ারি ২০১৩

রায় দেয়ার ঘোষণা : ১৭ জানুয়ারি ২০১৩

ট্রাইব্যুনালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় : ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

শাহবাগিদের দাবি অনুযায়ী সরকারকে আপিলের সুযোগ দিতে আইন সংশোধন : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

সরকারে আপিল : ৩ মার্চ ২০১৩

কাদের মোল্লার আপিল : ৪ মার্চ ২০১৩

আপিলের সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩

আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ : ৯ ডিসেম্বর ২০১৩

ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যু পরোয়ানা জারি : ১০ ডিসেম্বর ২০১৩

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত : ১০ ডিসেম্বর রাত ১০টা

রিভিউ আবেদনের শুনানি খারিজ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৩

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর : ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ রাত ১০টা ১ মিনিট

সূত্রঃ বাঁশেরকেল্লা ও দিঘলিয়া নিউজ২৪

বিষয়: বিবিধ

১৯৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File