ইচ্ছাকৃতভাবে রমযান মাসের রোযা বিনা ওজরে যদি কেউ ভেঙ্গে ফেলে তাহলে যা করতে হবে ...

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ১৩ জুলাই, ২০১৩, ১২:৫৪:৫৭ দুপুর

রমযান মাসে রোযা রেখে যদি কেউ বিনা ওজরে ইচ্ছাকৃতভাবে তা ভেঙ্গে ফেলে তাহলে তাকে কাযা ছাড়াও শাস্তি হিসেবে ধারাবাহিক দুই মাস বা ৬০টি রোযা রাখতে হবে। এটাকে কাফফারা বলে। তবে পুরো জীবন নফল রোযা রাখলেও রমযানের রোযার ফযীলত পাবে না।

যেসব কারণে কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি

* রমযানে রোযা রেখে কোনো প্রকার শরীয়তসম্মত ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা-কাফফারা দু’টোই জরুরি।-সুনানে দারাকুতনী ২/১৯১; মাবসূত, সারাখসী ৩/৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৯-৪১০

* রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হয়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯৩৭; জামে তিরমিযী : ৭২৪

উল্লেখ্য, কাযা ও কাফফারার ক্ষেত্রে অবৈধ বা হারাম মিলনের বিধানও একই। যদিও হারাম হওয়ার কারণে এর গুনাহ অনেক বেশি।-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৯

* বিড়ি, সিগারেট ও হুক্কা পান করলেও রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে।-রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫ (বিস্তারিত দলিলের জন্য দেখুন : আল্লামা আবদুল হাই লাখনভী রাহ.কৃত ‘তারবীহুল জিনান বিতাশরীহী হুকমি শুরবিদ দুখান’, পৃষ্ঠা : ৬৯; মাজমুআতু রাসাইল ২/৩১৯)

* সুবহে সাদিক হয়ে গেছে এ কথা জানা সত্ত্বেও আযান শোনা যায়নি বা সম্পূর্ণরূপে আলো হয়নি এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে খানাপিনা করলে বা স্ত্রী সহবাস করলে কাযা ও কাফফারা দু’টোই জরুরি হবে।

কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি

* একটি রোযার পরিবর্তে ধারাবাহিক দু’ মাস রোযা রাখতে হবে। চন্দ্রমাসের পয়লা তারিখ থেকে কাফফারার রোযা শুরু করলে দু মাস রোযা রাখলেই চলবে। যদিও উভয় মাস বা কোনো এক মাস ২৯ দিনের হয়। আর যদি চাঁদের পয়লা তারিখ থেকে শুরু করা না হয় তাহলে ধারাবাহিক ৬০টি রোযা রাখতে হবে।

যদি কারো ধারাবহিক দু মাস রোযা রাখার সামর্থ্য না থাকে তাহলে ৬০জন মিসকীনকে দুবেলা পেট পুরে খাওয়াতে হবে অথবা ৬০ জনকে এক এক ফিতরা সমান (পৌনে দু কেজি গম বা তার মূল্য) সদকা করে দিতে হবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯৩৭; শরহু মুখতাছারিত তহাবী ২/৪১৯

* দু’ মাস রোযা রাখতে গিয়ে কোনো ওজরেও (যেমন-ঈদের কারণে বা অসুস্থতার কারণে) যদি ধারাবাহিকতা ছুটে যায় তাহলে নতুন করে রোযা রাখা শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে পিছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসেবে ধর্তব্য হবে না। হ্যাঁ, মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে আরম্ভ করতে হবে না। তবে নিফাসের (সন্তান প্রসব পরবর্তী স্রাব) কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে নতুন করে শুরু করতে হবে।-আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪১২

বিষয়: বিবিধ

১২৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File