এটিএম বুথেও ডিজিটাল ক্রিমিনালদের স্পাই ক্যামেরা, আম-জনতা কি করবে?
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ০৯ জুন, ২০১৩, ০৮:৫৪:১১ সকাল
সাবধান। আপনার চারপাশে ওত পেতে আছে ডিজিটাল ক্রিমিনাল। তাক করে আছে স্পাই ক্যামেরা। একটু অসতর্ক হলেই একেবারে ধপাস। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে আইটি প্রতারকরা একেবারে নিঃস্ব করে ছাড়বে। ছদ্মবেশী এসব ডিজিটাল ক্রিমিনাল একটি চক্রের মাধ্যমে চষে বেড়াচ্ছে দেশ-বিদেশ। দেশী ও বিদেশী দুই আইটি প্রতারক ভয়ঙ্কর সব তথ্য দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। লন্ডনে আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত বাংলাদেশী যুবক মোশারফ হোসেন ও শ্রীলঙ্কার নাগরিক বৃটিশ পাসপোর্টধারী মোহনাথারাস পন্নুথারাই। দু’জনই আইটি প্রতারক। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশী কোন ব্যাংক তাদের প্রযুক্তির পাল্টা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। এমনকি ইউরোপের অনেক দেশেও তাদের মতো ডিজিটাল ক্রিমিনালদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মোশারফ জানায়, সে একাধারে সিঙ্গাপুর ও ইংল্যান্ডে আইটি বিষয়ে পড়াশোনা করেছে। পড়াকালে অর্থের অভাব শুরু হলে সুইডেনের স্টকহোমে বসে প্রযুক্তির অপচর্চা (রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং) শুরু করে। এর আগে ডেনমার্কের অরহাউজ শহরের হোমলেস শেল্টারে (মাদকাসক্ত ও ভবঘুরেদের আশ্রয়স্থল) বুলগেরিয়ান এক প্রতারকের কাছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল রপ্ত করে। তার কথামতো কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সহায়তায় সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নকল কাগজপত্র তৈরি করে। অনলাইনে কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটার যন্ত্র ক্রয়ের আবেদন করে। ওই যন্ত্র পাওয়ার পর ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ব্ল্যাংক কার্ড (খালি বা সাদা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে বিকল করে ফেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কার্ডের নিজস্ব গোপন নম্বর। এরপর শুরু করে গ্রাহকদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড (গোপন নম্বর) চুরি। একাজের জন্য সে স্পাই ক্যামেরা এটিএম বুথের ওপরে স্থাপন করে। পরে গ্রাহকের আঙুলের অবস্থান থেকে জেনে নেয় তার পাসওয়ার্ড। এরপর ঘরে বসে চুরি করা পাসওয়ার্ড দিয়ে হুবহু কার্ড তৈরি করে। সমপ্রতি রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বুথ থেকে ৪৫ জন গ্রাহকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড তৈরি করেছে। মোশারফ জানায়, কার্ড তৈরি করলেও টাকা তোলার অপারেশনে নামেনি। তার টার্গেট ছিল আরও কিছু কার্ড তৈরি করে একযোগে সকল বুথের টাকা উত্তোলনের। কিন্তু তার আগেই গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, এটি অপরাধীদের একটি নতুন কৌশল। বর্তমানে দেশে এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ইতিমধ্যেই তা দমনে ব্যাংকাররা কার্যক্রম শুরু করেছেন। আশা করছি শিগগিরই তাদের প্রযুক্তির পাল্টা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। গত পহেলা জুন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের পাকড়াও করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় বিভিন্ন ক্রেডিট, ডেবিট কার্ড, বিদেশী মুদ্রা, জালিয়াতির বিভিন্ন সরঞ্জাম- যেমন: কার্ড রিডার, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন গোপন ক্যামেরা, ল্যাপটপ, কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটার (কার্ড তৈরির যন্ত্র), ম্যাগনেটিক ব্ল্যাংক স্ট্রিপ কার্ড, ফেইক আইডি কার্ড (ব্র্যাক ব্যাংকের আইটি অফিসার হিসেবে পরিচয় প্রদানকারী) ও নকল কাগজপত্র। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মোশারফ জানায়, তার বাড়ি কুমিল্লার হোমনা থানায়। সে ২০০৩ সালে ঢাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০০৪ সালে সিঙ্গাপুরে ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে পড়াশোনা করে। সেখান থেকে ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রিনিটি কলেজে আইটির ওপর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ভর্তি হয় এবং টাকা-পয়সার অভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি। দু’বছর লন্ডনে অবস্থান করে ২০১১ সালে সুইডেনে যায় এবং সুইডেন থেকে ইতালি এবং ইতালি থেকে ডেনমার্ক হয়ে আবার সুইডেন গমন করে। সুইডেন যাওয়ার পর অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে পুলিশ কর্তৃক আটক হয় এবং সুইডেন পুলিশ তাকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠায়। ডেনমার্ক অবস্থানকালে একটি হোমলেস সেন্টারে আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত এক বুলগেরিয়ান যুবক রোজেন আইলির সঙ্গে পরিচয় হয়। তার কাছ থেকে গ্রেপ্তারকৃত মোশাররফ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল রপ্ত করে এবং সেই রপ্তকৃত কৌশল বাংলাদেশেরের আসার পর বিভিন্ন এটিএম বুথে প্রয়োগ করার মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে। তার উদ্দেশ্য ছিল কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মাধ্যমে অল্প সময়ে ধনী হওয়া। মোশারফ জানায়, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা জালিয়াতির জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের আইটি এক্সপার্ট ও মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নকল আইডি কার্ড তৈরি করে। তার পর এ কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিকে প্রদর্শন করে এটিএম বুথে প্রবেশ করে। তারপর সেখানে অবস্থান করে এটিএম বুথে আগত ক্লায়েন্টদের নিজের পরিচয় দেয় এবং তাদের জানায়, সিকিউরিটি আপগ্রেডেশনের জন্য এটিএম বুথে ডাবল ডোর সিস্টেম চালু করা হবে। এটিএম বুথের প্রথম দরজাটি খোলা থাকবে এবং দ্বিতীয় দরজাটিতে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড স্পর্শ করলে দরজাটি অটোমেটিক খোলে যাবে। তাই এই সিকিউরিটি আপগ্রেডেশনের জন্য প্রত্যেক ক্লায়েন্টকে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড তার সঙ্গে থাকা ঘ.ঋ.ঈ/কার্ড রিডার এ সোয়াপ করতে হবে। এ সোয়াপ করার মাধ্যমে মোশারফ কার্ডধারীর কার্ড সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চুরি করে। মোশারফ একই সঙ্গে এটিএম বুথের উপরে ছাদে সুপারগ্লু দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্পাইং ক্যামেরা সেট করে ক্লায়েন্টদের পাসওয়ার্ড/পিন কোড কপি করে। কার্ড রিডারের সংগৃহীত তথ্য মোশারফ বাসায় গিয়ে ল্যাপটপের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটারের মাধ্যমে (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড তৈরির যন্ত্র ) ব্ল্যাংক কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ অংশে কপি করে। এর ফলে ব্ল্যাংক কার্ডটি একটি ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডে রূপান্তরিত হয় এবং এ কার্ড পাঞ্চ করে ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে চোরাইকৃত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়। মোশারফ জানায়, সে বাংলাদেশে এসে তার আয়ত্তকৃত ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের চট্টগ্রামের জামালখান ও লালদীঘি এলাকার দু’টি এটিএম বুথে প্রয়োগ করে। কিন্তু স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় তাদের এটিএম বুথে সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ক্রেডিট কার্ডগুলোর লেনদেন ব্লক করে দেয়ায় মোশারফ টাকা উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়। তারপর সে ঢাকায় এসে ব্র্যাক ব্যাংক ইবিএল, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংকের বিভিন্ন এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে একই প্রক্রিয়ায় এবং মিরপুরের একটি এটিএম বুথে একই ধরনের চেষ্টা চালাতে গিয়ে ওত পেতে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।সাবধান। আপনার চারপাশে ওত পেতে আছে ডিজিটাল ক্রিমিনাল। তাক করে আছে স্পাই ক্যামেরা। একটু অসতর্ক হলেই একেবারে ধপাস। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে আইটি প্রতারকরা একেবারে নিঃস্ব করে ছাড়বে। ছদ্মবেশী এসব ডিজিটাল ক্রিমিনাল একটি চক্রের মাধ্যমে চষে বেড়াচ্ছে দেশ-বিদেশ। দেশী ও বিদেশী দুই আইটি প্রতারক ভয়ঙ্কর সব তথ্য দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। লন্ডনে আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত বাংলাদেশী যুবক মোশারফ হোসেন ও শ্রীলঙ্কার নাগরিক বৃটিশ পাসপোর্টধারী মোহনাথারাস পন্নুথারাই। দু’জনই আইটি প্রতারক। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশী কোন ব্যাংক তাদের প্রযুক্তির পাল্টা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। এমনকি ইউরোপের অনেক দেশেও তাদের মতো ডিজিটাল ক্রিমিনালদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মোশারফ জানায়, সে একাধারে সিঙ্গাপুর ও ইংল্যান্ডে আইটি বিষয়ে পড়াশোনা করেছে। পড়াকালে অর্থের অভাব শুরু হলে সুইডেনের স্টকহোমে বসে প্রযুক্তির অপচর্চা (রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং) শুরু করে। এর আগে ডেনমার্কের অরহাউজ শহরের হোমলেস শেল্টারে (মাদকাসক্ত ও ভবঘুরেদের আশ্রয়স্থল) বুলগেরিয়ান এক প্রতারকের কাছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল রপ্ত করে। তার কথামতো কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সহায়তায় সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নকল কাগজপত্র তৈরি করে। অনলাইনে কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটার যন্ত্র ক্রয়ের আবেদন করে। ওই যন্ত্র পাওয়ার পর ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ব্ল্যাংক কার্ড (খালি বা সাদা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে বিকল করে ফেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কার্ডের নিজস্ব গোপন নম্বর। এরপর শুরু করে গ্রাহকদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড (গোপন নম্বর) চুরি। একাজের জন্য সে স্পাই ক্যামেরা এটিএম বুথের ওপরে স্থাপন করে। পরে গ্রাহকের আঙুলের অবস্থান থেকে জেনে নেয় তার পাসওয়ার্ড। এরপর ঘরে বসে চুরি করা পাসওয়ার্ড দিয়ে হুবহু কার্ড তৈরি করে। সমপ্রতি রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বুথ থেকে ৪৫ জন গ্রাহকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড তৈরি করেছে। মোশারফ জানায়, কার্ড তৈরি করলেও টাকা তোলার অপারেশনে নামেনি। তার টার্গেট ছিল আরও কিছু কার্ড তৈরি করে একযোগে সকল বুথের টাকা উত্তোলনের। কিন্তু তার আগেই গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, এটি অপরাধীদের একটি নতুন কৌশল। বর্তমানে দেশে এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ইতিমধ্যেই তা দমনে ব্যাংকাররা কার্যক্রম শুরু করেছেন। আশা করছি শিগগিরই তাদের প্রযুক্তির পাল্টা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। গত পহেলা জুন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের পাকড়াও করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় বিভিন্ন ক্রেডিট, ডেবিট কার্ড, বিদেশী মুদ্রা, জালিয়াতির বিভিন্ন সরঞ্জাম- যেমন: কার্ড রিডার, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন গোপন ক্যামেরা, ল্যাপটপ, কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটার (কার্ড তৈরির যন্ত্র), ম্যাগনেটিক ব্ল্যাংক স্ট্রিপ কার্ড, ফেইক আইডি কার্ড (ব্র্যাক ব্যাংকের আইটি অফিসার হিসেবে পরিচয় প্রদানকারী) ও নকল কাগজপত্র। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মোশারফ জানায়, তার বাড়ি কুমিল্লার হোমনা থানায়। সে ২০০৩ সালে ঢাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০০৪ সালে সিঙ্গাপুরে ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে পড়াশোনা করে। সেখান থেকে ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রিনিটি কলেজে আইটির ওপর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ভর্তি হয় এবং টাকা-পয়সার অভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি। দু’বছর লন্ডনে অবস্থান করে ২০১১ সালে সুইডেনে যায় এবং সুইডেন থেকে ইতালি এবং ইতালি থেকে ডেনমার্ক হয়ে আবার সুইডেন গমন করে। সুইডেন যাওয়ার পর অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে পুলিশ কর্তৃক আটক হয় এবং সুইডেন পুলিশ তাকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠায়। ডেনমার্ক অবস্থানকালে একটি হোমলেস সেন্টারে আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত এক বুলগেরিয়ান যুবক রোজেন আইলির সঙ্গে পরিচয় হয়। তার কাছ থেকে গ্রেপ্তারকৃত মোশাররফ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল রপ্ত করে এবং সেই রপ্তকৃত কৌশল বাংলাদেশেরের আসার পর বিভিন্ন এটিএম বুথে প্রয়োগ করার মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে। তার উদ্দেশ্য ছিল কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মাধ্যমে অল্প সময়ে ধনী হওয়া। মোশারফ জানায়, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা জালিয়াতির জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের আইটি এক্সপার্ট ও মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নকল আইডি কার্ড তৈরি করে। তার পর এ কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিকে প্রদর্শন করে এটিএম বুথে প্রবেশ করে। তারপর সেখানে অবস্থান করে এটিএম বুথে আগত ক্লায়েন্টদের নিজের পরিচয় দেয় এবং তাদের জানায়, সিকিউরিটি আপগ্রেডেশনের জন্য এটিএম বুথে ডাবল ডোর সিস্টেম চালু করা হবে। এটিএম বুথের প্রথম দরজাটি খোলা থাকবে এবং দ্বিতীয় দরজাটিতে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড স্পর্শ করলে দরজাটি অটোমেটিক খোলে যাবে। তাই এই সিকিউরিটি আপগ্রেডেশনের জন্য প্রত্যেক ক্লায়েন্টকে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড তার সঙ্গে থাকা ঘ.ঋ.ঈ/কার্ড রিডার এ সোয়াপ করতে হবে। এ সোয়াপ করার মাধ্যমে মোশারফ কার্ডধারীর কার্ড সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চুরি করে। মোশারফ একই সঙ্গে এটিএম বুথের উপরে ছাদে সুপারগ্লু দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্পাইং ক্যামেরা সেট করে ক্লায়েন্টদের পাসওয়ার্ড/পিন কোড কপি করে। কার্ড রিডারের সংগৃহীত তথ্য মোশারফ বাসায় গিয়ে ল্যাপটপের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে কার্ড রিডার অ্যান্ড রাইটারের মাধ্যমে (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড তৈরির যন্ত্র ) ব্ল্যাংক কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ অংশে কপি করে। এর ফলে ব্ল্যাংক কার্ডটি একটি ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডে রূপান্তরিত হয় এবং এ কার্ড পাঞ্চ করে ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে চোরাইকৃত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়। মোশারফ জানায়, সে বাংলাদেশে এসে তার আয়ত্তকৃত ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের চট্টগ্রামের জামালখান ও লালদীঘি এলাকার দু’টি এটিএম বুথে প্রয়োগ করে। কিন্তু স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় তাদের এটিএম বুথে সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ক্রেডিট কার্ডগুলোর লেনদেন ব্লক করে দেয়ায় মোশারফ টাকা উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়। তারপর সে ঢাকায় এসে ব্র্যাক ব্যাংক ইবিএল, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংকের বিভিন্ন এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে একই প্রক্রিয়ায় এবং মিরপুরের একটি এটিএম বুথে একই ধরনের চেষ্টা চালাতে গিয়ে ওত পেতে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
তথ্যসূত্রঃ মানবজমিন
বিষয়: বিবিধ
১২৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন