তবে কি বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হতে চলেছে?

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ১৭ মে, ২০১৩, ১১:৩৯:০৩ সকাল



সুখরঞ্জন বালীর কথা মনে আছে? জীবনবাজি রেখে এ অসমসাহসী মানুষটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বরেণ্য আলেম মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, আদালতে তিনি প্রকৃত কাহিনী তুলে ধরবেন। বলবেন, সাঈদী তার ভাইকে খুন করেননি। কিন্তু তিনি ওই সাক্ষ্য দিতে পারেননি। ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে তাকে অপহরণ করে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী। সে কাহিনী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও তোলপাড় সৃষ্টি করে। এরপর আর তার খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই সুখরঞ্জন বালী বেঁচে আছেন। তিনি কলকাতার একটি কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করছেন। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাকে অপহরণ করে ভারত সীমান্তে ঠেলে দেয়। কারাগারে থেকেই এক বিবৃতিতে বালী তার অপহরণ ও ভারতে পাঠিয়ে দেয়ার কাহিনী তুলে ধরেন। গতকাল ইংরেজি দৈনিক নিউএজ-এ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ডেভিড বার্গম্যান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন সাক্ষী ছিলেন সুখরঞ্জন বালী। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে। কলকাতার একটি কারাগারে তার খোঁজ পাওয়া গেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পিরোজপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সুখরঞ্জন বালী নিশ্চিত করেছেন যে, গত বছর ৫ নভেম্বর সকালে ট্রাইব্যুনালের ফটক থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। ওইদিন জামায়াত নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন তিনি।

ভারতের কারাগারে আটক অবস্থায় দেয়া এক বিবৃতিতে বালী বলেন, তাকে আদালত চত্বর থেকে অপহরণ করে পরে পুলিশের গাড়িতে করে একটি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই অফিসের ডেস্কে একটি পেপারস্ট্যাম্পে কিছু শব্দ দেখে তিনি বুঝতে পারেন যে, সেটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবির অফিস।

সুখরঞ্জন বালী কলকাতার দমদম সংশোধন কেন্দ্রে আটক রয়েছেন বলে গত ফেব্রুয়ারিতে তথ্য পায় নিউএজ। তাকে দেখতে পরিবারের সদস্যরাও সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে এবং কীভাবে তিনি সেখানে গেলেন, তা জানতে কাজ করে আসছিল পত্রিকাটি।

পত্রিকাটি তার সঙ্গে দেখা করতে এবং একটি বিবৃতি নিতে ওই কারাগারে প্রবেশে সক্ষম একজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নিরাপত্তার কারণে তিনি তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বা বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ট্রাইব্যুনালে মূলত এ দুটি দলের নেতাদের বিচার চলছে।

বিবৃতি নেয়া ওই ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন, যে ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন, বালীর আসল ছবির সঙ্গে তার সম্পূর্ণ মিল রয়েছে, অর্থাত্ তিনিই সুখরঞ্জন বালী।

বিবৃতি নেয়া ওই ব্যক্তি বলেন, ‘বালী পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা দেন। আমি মনে করি, ঘটনাটি সত্য না হলে তার কাছ থেকে এমন বিবরণ আসা খুবই কঠিন।’ অবশ্য বালীকে তখন নার্ভাস দেখাচ্ছিল বলেও ওই ব্যক্তি নিউ এজ-কে জানান।

বিবৃতিতে বালী বলেন, ওই অফিসের লোকজন পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিল এবং আমাকে যারা অপহরণ করেছিল, তারা সাদা পোশাকে ছিল।

ওই অফিসে তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি বলে তিনি জানান। তবে তিনি ‘কেন আমি সাঈদী সাহেবের পক্ষে’—এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল...। তারা বলেছেন, আমাকে হত্যা করা হবে এবং সাঈদী সাহেবকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে।’

বিবৃতি অনুযায়ী, গত ২০১২ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে হস্তান্তরের আগে ঢাকায় তাকে ছয় সপ্তাহ অবৈধভাবে আটক রাখা হয়। প্রথম তিন মাস তাকে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে আটক রাখা হয়।

গত ৩ এপ্রিল ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দেশটির ফরেনার অ্যাক্ট-১৯৪৬-এর অধীনে কলকাতার একটি আদালত বালীকে ১০৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়। যেহেতু বিচার চলাকালে এ সময়টা তিনি কারাভোগ করেছেন, তাই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে যে কোনো দিন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে (বালীর বিষয়ে) কোনো তথ্য নেই। আমি যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামের (পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা) সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি বলেছেন, তিনি কিছুই জানেন না। এ মুহূর্তে বালী কোথায় আছে, তিনি তা-ও জানেন না।’

গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আল্লামা সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এর মধ্যে একটি হলো সুখরঞ্জন বালীর ভাই বিশা বালীকে হত্যা।

আদালত রায়ে উল্লেখ করে, বিশা বালীকে একটি নারিকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উসকানিতে রাজাকার বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন।’ আদালত অন্য ছয়টি অপরাধের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করলেও কোনো সাজা ঘোষণা করেনি। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে বালীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর অপহরণ করার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে সরকার এবং ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষ।

গত বছর ৫ নভেম্বর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ঘটনাটি তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জানালে তদন্ত সংস্থার প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আদালতকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের জানামতে এমন কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন।’

এর পরে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ অপহরণের অভিযোগ জামায়াত নেতাদের বেআইনিভাবে মুক্ত করতে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার জন্য একটি অগ্রহণযোগ্য নাটকের অংশ।

অপহরণের ঘটনার এক সপ্তাহ পর হেবিয়াস কর্পাসের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম হাইকোর্টকে বলেন, ‘এ গল্প একেবারেই হাস্যকর... এ আবেদন একবারেই বিভ্রান্তিকর।’ প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এমনকি এ কথাও বলা হয় যে, সেদিন বালীর সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল না।

বালীর বিবৃতিতে বলা হয়, ছয় সপ্তাহ তাকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো আটকে রাখার পর ২৩ ডিসেম্বর তার চোখ বেঁধে ফেলা হয়; এর পর বাংলাদেশ পুলিশ তাকে সীমান্তে নিয়ে যায় এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তাকে তুলে দেয়া হয়।

বিবৃতিতে বালী বলেন, ‘তারা আমাকে খাবার দেয়ার জন্য মাগুরার একটি হোটেলের সামনে গাড়ি থামায়। তারা আমার চোখের বাঁধন খুলে দেয় এবং আমি বুঝতে পারি, আমাকে প্রাইভেট কারে এখানে আনা হয়েছে। আমার খাওয়া শেষ হলে ফের আমার চোখ বেঁধে ফেলা হয় এবং আমাদের গাড়ি ফের চলতে শুরু করে। সর্বশেষ বিকাল পাঁচটার দিকে বিএসএফের হাতে আমাকে তুলে দিয়ে তারা চলে যায়।’

বালী বলেন, বিএসএফ সদস্যরা তার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে। তারা আমাকে নির্যাতন করে এবং জানতে চায়, আমি সেখানে কী করেছিলাম। বিএসএফের হাতে তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত আমি কী করেছি, তা তুলে ধরার চেষ্টা করি। সম্ভবত তারা আমার কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব পায়নি; এজন্য আমাকে আরও বেধড়ক মারধর করা হয়।’

এতে আহত হলে বিএসএফ তাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে স্বরূপনগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরদিন তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হয়। বসিরহাট কারাগারে ২০ দিন আটক থাকার পর তাকে দমদম সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে জানান বালী।

বিবৃতিতে বালী বলেন, ২০১২ সালের মে মাসের কিছুদিন পর সাঈদীর ছেলে ‘বুলবুল’ (সাঈদীর বড় ছেলে রফিক বিন সাঈদী) তার বাড়িতে তার সঙ্গে দেখা করতে এসে প্রথমবার তাকে সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে বলেন। কিন্তু সে সময় বালী বাড়িতে না থাকায় তারা ফোনে কথা বলেন।

বালী বলেন, ‘বুলবুল তার বাবার জন্য সাক্ষী হতে আমাকে অনুরোধ করে। কিছুদিন পর বুলবুল মারা যান।’

এই ছেলে হৃদরোগে মারা যাওয়ার পর সাঈদীর আরেক ছেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখেন বলে জানান বালী। দুর্গাপূজার আগে (অক্টোবর ২০-২৪) বালী ঢাকা আসেন এবং সাঈদীর বাসায় ১৫ থেকে ১৬ দিন অবস্থান করেন।

তিনি বলেন, ৫ নভেম্বর তাকে সাঈদীর আইনজীবীদের অফিস পল্টনের একটি ভবনের দশম তলায় নেয়া হয়। এর পর সেখান থেকে ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়।

কলকাতায় ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) শরিফ উদ্দিন নিউএজ-কে বলেন, ‘বিভিন্ন সংশোধন কেন্দ্রে আটক বাংলাদেশীদের দেখতে এপ্রিলের শেষের দিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি দল কলকাতায় আসেন। আমরা দমদম সংশোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বালীর সঙ্গে দেখা করেছেন কি না, আমি বলতে পারব না।’

ওই প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) লে. কর্নেল তৌহিদ নিউএজ-কে বলেন, বালীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন কি না, তা তিনি বলতে পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু কারাগারে প্রায় ১৩০ জন ছিল, তাই আমি বিষয়টি স্মরণ করতে পারছি না। আপনাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।’

বালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের : এদিকে সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বাংলাদেশ ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ আহ্বান জানায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন সাক্ষীকে এভাবে অপহরণ করার ঘটনায় প্রসিকিউশন, বিচারক ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক প্রশ্নের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো, কে অপহরণের আদেশ দিয়েছিল এবং সে কোন পর্যায়ের অফিসার ছিল।’

বালীকে সরকারপক্ষ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিপক্ষে সাক্ষী হিসেবে দেখালেও তিনি সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার ভাইকে সাঈদী খুন করেনি। অথচ এ মামলায় তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে।

গত মার্চেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানতে পারে যে, বালী দমদম কারাগারে আটক আছেন। কিন্তু তার সাক্ষাতের আসায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। নিউএজ বিষয়টি ফাঁস করায় এখন বিবৃতি দিল সংস্থাটি।

এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার বালীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করার আগ পর্যন্ত তাকে ভারত যেন বাংলাদেশে হস্তান্তর না করে; কারণ এদেশে তার জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

‘বিএসএফ সীমান্তে নিয়মিত বাংলাদেশীদের হত্যা করে’ জানিয়ে এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, অপহরণকারীরা ধারণা করেছিল যে, ভারতে পুশ করার পর বালীকেও হত্যা করবে তারা। অথবা বালী চিরদিনের জন্য গুম হবেন। কিন্তু এখন বালী বেঁচে থাকায় আবার তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হলে তার জীবন বিপন্ন হবে।

তথ্যসূত্রঃ আমারদেশ

বিষয়: বিবিধ

১৫৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File