মা তোমাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ১২ মে, ২০১৩, ১২:৩৮:১৪ দুপুর
‘মধুর আমার মায়ের হাসি...’
মা। আমার মা। এই ছোট্ট একটি শব্দ মনে করিয়ে দেয় পৃথিবীতে আমার আমাদের অনেক কিছুই আছে। মাথার ওপর একটা বটবৃক্ষ আছে। পায়ের নিচে শক্ত মাটি আছে। বেঁচে থাকার অনেক মানে আছে। জীবনে অনেক সুখ-আনন্দ আছে। তিনি আমার, আমাদের মা। শুধুই আমার মা, আমাদের মা।
মায়ের কথা মনে হতেই প্রাণটা কেমন করে ওঠে। কী এক প্রশান্তি এনে দেয় চোখে মুখে। মনের ভেতর দোল খায় বাসন্তী হাওয়া। সব দুঃখ ভুলে মুহূর্তে একটা সুখ ছড়িয়ে পড়ে মন জুড়ে।
মায়ের সাথে বিশ্ব জগতের কিছুরই তুলনা চলে না। তুলনা হয়ও না। ধর্মে, সমাজে পরিবারের সবখানেই মা অনন্য। মা অসাধারণ। মা মমতা আর ভালোবাসার এক বেহেশতি অধ্যায়। মাকে ঘিরেই সন্তানের বেড়ে ওঠা। ভ্রুণ থেকে শরীর বয়ে বেড়ান মা। পেটে ধরেন, পিঠে চড়ান, আজীবন ধরেন বুকে। মায়ায়-মমতায় ধরেন। ধরেন দুঃখ সুখের প্রতিক্ষণে।
আজ মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। ১২ মে। বিশ্ব মা দিবস। দিন ক্ষণ ঠিক করে মায়ের জন্য ভালোবাসা নয়। মায়ের জন্য প্রেম-ভালোবাসা প্রতিটি মুহূর্তের। মাথায় আঁচল ঢাকা সাদাসিধে মুখটা মায়ের। হাসি হাসি সারাক্ষণ। পৃথিবীর কোনো কষ্টই তাকে ছোঁয় না। সব সময় সন্তানের জন্য সব করতে প্রস্তুত একজন মানুষ। সন্তানকে বুকে টেনে পৃথিবীর সব কষ্ট ভুলিয়ে দেয়ার এক অদ্ভূত ক্ষমতা তার আঁচলের ছায়ায়।
ইসলামে মায়ের মর্যাদাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বাবার চেয়ে মাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর একাধিক বাণী রয়েছে। অন্যান্য ধর্মেও মায়ের স্থান অনন্য। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মা উঠেছেন ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায়।
অনুপ ঘোষাল গেয়েছেন ‘মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে ঝরে/ মাকে মনে পড়ে’। কিংবা আজকের তরুণ শিল্পীর কণ্ঠে ‘মা, মাগো মা…তোমার নেই তুলনা’। অথবা জেমস যখন গীটারে কান্না তুলে টানা সুরে গেয়ে চলেন-‘ সবাই বলে ওই আকাশে লুকিয়ে আছে/ খুঁজে দেখ পাবে দূর নক্ষত্র মাঝে/ রাতের তারা আমায় কী তুই বলতে পারিস কোথায় আছে কেমন আছে মা’।
মাকে ঘিরে আছে অনেক সুখ-দুঃখ স্মৃতি, সবারই আছে। কারো মা আছেন পৃথিবীতে। কারো মা নেই। তবুও প্রতিদিনকার প্রতিটি কর্মে মা আছেন জড়িয়ে। দূর প্রবাসে বসে কিংবা প্রতিদিন সকালে ঘুম ভেঙে মাকে মনে করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ঢের কষ্টের। মায়ের কোনো ধনী-গরীব নেই। মায়ের কোনো ভেদ নেই। প্রকরণ নেই।
নগরের অতি বাস্তবতায় ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে চলার ফুটপাথের ধারে যে রকম আছেন মা। ঠিক তেমিন আছেন ইট পাথরে দালানে। কুঁড়ে ঘরে থাকেন মা। আবার থাকেন পথের ধারে।
তবুও তিনি মা। আমার মা। সন্তানকে আগলে রাখেন সব কিছু থেকে। দুটো বাহু তার সব সময় অকান্ত। পথের ধারে মায়েরা সন্তানদের আগলে রাখেন যে রকম মমতায়, অন্য খানেও সে রকম। শীতের রাতে নিজে কষ্ট করেন। সন্তানের জন্য তবুও ওম চাই তার। বর্ষার বৃষ্টিতে নিজে ভিজেন। সন্তানকে রাখেন সুরক্ষিত।
শুধু সন্তান জন্ম দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন না মায়েরা। তাকে লালন পালন করার গুরু দায়িত্বটা তারই থাকে। অসুখে বিসুখে সন্তানের পাশে থাকা, স্কুলে-কলেজে রোজ সকালে নিয়ে যাওয়া আর দুপুরে নিয়ে আসার কাজটাও মা করেন। করেন অতি যত্নে। বিরক্তিহীনভাবে।
১৯০৭ সালে আমেরিকায় আনা নামে এক তরুণী প্রথম উদ্যোগ নেন মা দিবস পালনের। ১৯১১ সালে এর বিস্তৃতি বাড়ে। ১৯১৪ সালের সে সময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউলসন দিবসটি সরকারিভাবে পালনের ঘোষণা করেন। সে থেকে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব মা দিবস। বাংলাদেশেও এটি পালিত হচ্ছে আড়ম্বরের সাথে।
আজ মা দিবসে সন্তানেরা তাদের মাকে ভালোবাসা জানাবেন। মায়ের জন্য নিয়ে আসবেন বিশেষ কোনো গিফট। হোক তা চকোলেট, কার্ড, মগ, কিংবা শাড়ি-গয়না। মায়ের কোমল স্নেহময়ী হাতটা তার অজান্তেই সন্তানের মাথায় উঠে আসবে, প্রতিদিনের মতো। এ এক অন্য রকমের মমতা ও প্রত্যাশিত ভালোবাসা।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন