রাজধানীতে নৃশংস গণহত্যা : এবাদতরত ও ঘুমন্ত আলেমদের ওপর শেষরাতে পৈশাচিক অভিযান
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ০৭ মে, ২০১৩, ০৫:১৫:১৪ সকাল
রাত তখন প্রায় আড়াইটা। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আগত মুসল্লিদের অনেকেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে তখন ঘুমিয়ে পড়েছেন। অসংখ্য মুসল্লি তখনও জিকিরে মশগুল। এ অবস্থায় মাইকে ভেসে আসে একটি ঘোষণা-আপনারা সরে যান। এখন আমরা শাপলা চত্বর খালি করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করব।
তাতে স্বভাবতই রাজি হয়নি আল্লাহর পথে নিবেদিতপ্রাণ মুসল্লিরা। এরপর আর কথা বাড়ায়নি সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী। অন্তত ১০ হাজার পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা ত্রিমুখী হামলা শুরু করে। ব্রাশফায়ারের মুহুর্মুহু গুলি, গ্রেনেড, টিয়ারশেল আর সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় তারা। মুসল্লিদের দিকে গুলি আসতে থাকে বৃষ্টির মতো।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শাপলা চত্বরে ঘটে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ। কেউ কেউ ঘুমের মধ্যেই চলে যান চিরঘুমের দেশে। অনেকে আবার কিছু বুঝে উঠার আগেই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
অনেকেই শাপলা চত্বরের গণহত্যাকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাক হানাদারদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার চেয়েও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন।
এভাবেই মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিথর হয়ে পড়ে থাকে অসংখ্য আদম সন্তানের দেহ। যে অভিযান শুরু হয়েছিল রাত আড়াইটার দিকে তা চলে সকাল অবধি। তবে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় অভিযান শুরুর প্রথম দিকেই। হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটে অভিযান শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, প্রথমেই ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। এতে হেফাজত কর্মীদের প্রতিরোধ করার মনোবল ভেঙে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, একাজে অনেকটাই সফল হয় নিরাপত্তা বাহিনী।
ইউটিউব ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ও স্থিরচিত্তে দেখা যায়, শাপলা চত্বরের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য লাশ।
এসব ভিডিও ও স্থিরচিত্র যে একেবারেই সত্যি তাতে বোদ্ধামহলের কারও সন্দেহ হবে না।
তাছাড়া যেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত বা নিষিদ্ধ, যেমন ছিল গতকাল মধ্যরাতে শাপলা চত্বরে, সেখানে ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি এখন ব্যবহার করছে বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরাসহ বিশ্বের প্রথম সারির সব গণমাধ্যম। কালেভদ্রে এসব ছবি নিয়ে বিতর্ক উঠলেও সিরিয়ার মতো অবরুদ্ধ দেশের ছবি বিশ্ববাসী জানতে পারছে এসব গণমাধ্যমের সুবাদেই।
বাংলার চোখসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার যে ছবি আমার দেশ-এর কাছে এসেছে তাতে দেখা যায়, শুধু সোনালী ব্যাংকের সিঁড়ি ও এর আশপাশে পড়ে আছে অসংখ্য লাশ। শাপলা চত্বরের সবচেয়ে কাছের এই ভবনটিতে গতকাল আশ্রয় নিয়েছিলেন হেফাজতকর্মীরা। জীবন বাঁচাতে তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় নির্বিচার গুলি, গ্রেনেড আর ব্রাশফায়ারে।
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ৬ মে রাতে তাহলে কত লোক নিহত হয়েছে?
বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে গতকাল এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন জানায়, নিহতের সংখ্যা ২,৫০০ এরও বেশি হতে পারে। হেফাজতের ইসলামের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ২০০০ এরও বেশি হবে। বিরোধী দল বিএনপি বলছে, শাপলা চত্বরে সহস্রাধিক লোককে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ গণহত্যা ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের কালোরাতের চেয়ে ভয়াবহ ও জঘন্য বলে মন্তব্য দলটির।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, ‘আজকে আমরা খুবই ভারাক্রান্ত। দেশের ওপর দিয়ে যে তাণ্ডব চলে গেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তার নজির নেই। কত লোক যে গত রাতে নিহত ও আহত হয়েছে তা সংবাদমাধ্যমকেও বলতে দেয়া হয়নি। এমনকি বর্বরভাবে যখন মানুষ হত্যা করা হয়, তখন সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হয়নি।
অসমর্থিত একটি সূত্রের খবর, বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের একজন রিপোর্টার দাবি করেছেন, তিনি পাঁচটি ট্রাকে করে লাশ নিতে দেখেছেন। লাইভ রিপোর্টিংয়ের তার সেই তথ্য প্রচার করা হলেও পরে আর সেই খবর প্রচার করেনি চ্যানেলটি।
মার্কিন টিভি স্টেশন সিএনএন বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে জানায়, ৬ মে রাতের নিহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। বামপন্থী রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির গতকাল বাংলা ভিশনের টক শোয় বলেছেন, সাংবাদিকদের কাছে তিনি শুনেছেন, শত শত লোককে হত্যা করা হয়েছে। তবে তার ব্যক্তিগত ধারণা, অন্তত শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীদের ধারণা, নিহতের সংখ্যা এত বেশি যে সরকার কোনো দিনই তা প্রকাশ হওয়ার সুযোগ দেবে না। বিবিসি বলেছে, পুরো মতিঝিল এলাকার পরিবেশটা একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মতোই লাগছিল। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শাপলা চত্বরে তিনি ৫১টি লাশ নিজে গুনে দেখেছেন।
যেভাবে চালানো হয় অভিযান : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হাসান রাত ২টা ১০ মিনিটে মাইকে ঘোষণা দেন, আমরা এখনই অভিযান শুরু করছি। কোনো সাধারণ মানুষ এখানে থাকলে সরে যান। ডিএমপির আইন অনুযায়ী শাপলা চত্বরের আশপাশে যারা বসে আছেন, তারা অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। আমরা কোনো গুলি করব না, শুধু শাপলা চত্বর খালি করতে এবং অবৈধ অবস্থানকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই অভিযান শুরু করে পুলিশ র্যাব ও বিজিবির যৌথবাহিনী।
গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকা। এ সময় হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা আশপাশের বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেয়। একপর্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই সব অলিগলিতেও হানা দেন।
যুদ্ধসাজে সজ্জিত যৌথ বাহিনী এরপর অভিযান চালায় গলিগুলোয়। সেখান থেকেও পিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এর পরও চলতে থাকে পুলিশের তাণ্ডব। গুলি করতে করতে হেফাজতকর্মীদের ধাওয়া করতে থাকে তারা। এ সময় অনেককে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাদের রক্তে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে তাজা রক্তের ফোয়ারা। বর্তমানে মতিঝিল এলাকা পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
পল্টন-মতিঝিল যেন এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদ : মতিঝিল পল্টন ফকিরাপুল আরামবাগ যুদ্ধবিধ্বস্ত এক জনপদের রূপ নিয়েছে। রোববার রাতভর নিরীহ নিরস্ত্র তৌহিদি জনতার ওপর সাঁজোয়া যান আর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র হামলা নজিরবিহীন নৃশংস হামলা চালিয়েছিল যৌথবাহিনী।
গতকাল ভোরে মতিঝিল, পল্টন, নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা মোড়, দিলকুশা, টিকাটুলী ও গুলিস্তান এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে। পুলিশি তাণ্ডব আর হেফাজতকর্মীদের প্রতিরোধের এলাকাগুলো অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবখানে ছাইভস্ম আর আগুনে পোড়া চিহ্ন। রাস্তার ডিভাইডার উপড়ানো, সোলার প্যানেলসহ উপড়ানো বিদ্যুতের খুঁটি, কাটা গাছা, উপড়ে ফেলা ফুটপাতের ইট, পোড়া গাড়ি, পোড়া দোকান। হেফাজতকর্মীদের রক্ত আর পুড়ে যাওয়া ছাইভস্ম মিশে গেছে মতিঝিল-পল্টনের অলিগলি আর রাজপথে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মতিঝিল শাপলা চত্বরের কাছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একজন নিরাপত্তা প্রহরী সাব্বির আহমেদ জানান, রাত ১০টার আগেই ওই এলাকার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। নিভিয়ে দেয়া হয় রাস্তার লাইটপোস্টগুলো। প্রথমে ফকিরাপুল ও নটরডেম কলেজের দিক থেকে গুলি শুরু করে পুলিশ ও র্যাব। হেফাজতকর্মীদের প্রতিরোধে তারা পিছু হটে। রাত ২টার দিকে দৈনিক বাংলা মোড় ও আরামবাগের দিক থেকে হাজার হাজার রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়া হয়। টিয়ার শেলের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে হেফাজতের কর্মীরা ফুটপাতে থাকা দোকানপাটের চৌকি, টুল, ব্যানার—হাতের কাছে যা পেয়েছে, তাতেই আগুন দিয়েছে। টিয়ার শেলের পাশাপাশি পুলিশ রাবার বুলেট, ব্রাশফায়ার শুরু করে। শুরু হয় গ্রেনেডের বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। মনে হয়েছে একাত্তর সালে ফিরে গেছি আমরা। চারদিকে শুধু গুলি আর গুলি। ফিল্মি স্টাইলে পুলিশের অভিযানে রাত তিনটার দিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা প্রবেশ করে বিভিন্ন অলিতে-গলিতে।
অপর প্রত্যক্ষদর্শী পূবালী ব্যাংকের এটিএম বুথের গার্ড নজরুল ইসলাম বলেন, হেফাজতের মূলমঞ্চ দখলের পর মতিঝিলের সব রাস্তায় শুধু আগুন, ইট, পোড়া ছাই-ভস্ম। এরই মধ্যে চলতে থাকে পুলিশের গুলি। হেফাজতের কর্মীরা বিভিন্ন ভবনের সিঁড়ি ও গলিতে প্রবেশ করে। সেখানেও টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায় পুলিশ। নজরুল বলেন, প্রাণভয়ে তিনি বুথের ভেতরে ফ্লোরে শুয়ে ছিলেন। যখন পুলিশের গুলি থামে, তখন উঁকি দিয়ে দেখেন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা বেশ কিছু রক্তাক্ত মানুষ রাস্তায় পড়ে আছেন। রাত পৌনে চারটার দিকে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য অনবরত ফাঁকা গুলি ছুড়ছিল পুলিশ। ফজরের নামাজের আজান হতেই আহত ও নিহত মানুষকে ট্রাকে তোলে পুলিশ। ওই সময় মতিঝিলে পুলিশ বিজিবি আর র্যাব ছাড়া সাধারণ কোনো মানুষ রাস্তায় ছিল না।
গতকাল সকালে নটর ডেম কলেজের সামনেই দেখা গেছে কাটা গাছ, উপড়ে ফেলা ফুটপাত, আর রাস্তায় পড়ে থাকা ছাই-ভস্ম। শাপলা চত্বর এলাকাসহ পুরো পল্টন মোড় পর্যন্ত রাস্তায় পড়ে ছিল অসংখ্য ইটের টুকরো, আধাপোড়া কাপড়, চকি, টেবিলসহ নানা সরঞ্জাম।
শাপলা চত্বর থেকে দৈনিক বাংলা হয়ে পল্টন পর্যন্ত ফুটপাত ও ডিভাইডারের বড় একটি অংশে ইট ও স্লাব তুলে ফেলা হয়। দৈনিক বাংলা মোড়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি বাড়ি, বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে একটি বাস, দৈনিক বাংলার দক্ষিণ পাশে বিটিআরসির বাস ডিপোতে বেশ কয়েকটি পোড়া বাস পড়ে থাকে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কয়েকটি ট্রাকে করে রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। ফুটপাত ও রাস্তা থেকে পোড়া সরঞ্জামগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। সকাল থেকে নয়াপল্টন, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, মতিঝিলের শাপলা চত্বর, পল্টন মোড়ের সড়কে ইটের স্তূপ, গাছপালা ও বিদ্যুতের পড়ে থাকা খুঁটি সরানোর কাজ করছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যৌথভাবেই পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে।
দৈনিক বাংলা থেকে বায়তুল মোকাররম হয়ে পল্টন এবং বিজয়নগর রোডে ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশন ভবনের নিচতলায় আগুনে কয়েকটি দোকান পুড়ে গেছে। ওই দোকানটি আইডিয়াল প্রোডাক্টের বলে স্থানীয়রা জানান। জিপিও এবং বায়তুল মোকাররমের মধ্যবর্তী রাস্তায় বায়তুল মোকাররম সংলগ্ন ফুটপাতে হকারদের সব দোকান পুড়ে গেছে। সেগুলো থেকে সকালেও ধোঁয়া উড়ছিল।
আগুনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশন, আজাদ প্রোডাক্টস, আইডিয়াল প্রোডাক্টের শোরুম। বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনের ফুটপাতের হকাররা জানান, পুলিশের এমন তাণ্ডব তাদের জীবনে দেখেননি। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে মিশে যাওয়া শার্টপ্যান্ট পরা কিছু ব্যক্তি পেট্রল ঢেলে ঢেলে সেসব দোকানে আগুন দেয়। ওই আগুনে পুড়ে তাদের সব কিছুই শেষ। হকার মো. ইব্রাহিম বলেন, দুটি দোকানে দীর্ঘদিন ধরে নামাজের টুপি, তসবিহ, জায়নামাজ বিক্রি করতেন তিনি। প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল ছিল দোকানে। পুঁজি তো হারাইছি, ঋণের টাকা কীভাবে শোধ করমু জানি না। দুপুরবেলা থেকেই দোকানের কাছে আসতে পারিনি। কখনও হেফাজতের কর্মী, কখনও পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। রাতে যেভাবে সব পুড়েছে, তখন জান বাঁচানোই ফরজ মনে করেছি।’
বায়তুল মোকাররম ফুটপাত দোকান মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ শামীম খান জানান, প্রায় ৩০০ দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। প্রতিটি দোকানে প্রায় ছয় লাখ টাকার জিনিসপত্র ছিল। অনেক মালিক তাঁদের দোকানে নগদ টাকাও রেখেছিলেন।
ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণের দোকানও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, নিচে ১০টি স্বর্ণের দোকানে আগুন লাগে। পরে দোতলায় চারটি স্বর্ণের দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন