আসুন জেনে নিই ঈমানের ৭৭ টি শাখা
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তরফদার ২৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:১৩:২৩ রাত
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহপাকের নামে শুরু করছি।
১। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ।
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সূরা আল-বাকারাঃ ২৮৫)
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান আনে তারপর অবিশ্বাস পোষণ করে, পুনরায় ঈমান আনে ও আবার অবিশ্বাস করে, তারপর অবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে যায়, -- তাদের পরিত্রাণ করার জন্য আল্লাহ্ নন, আর নন তাদের সুপথে পরিচালিত করার জন্যেও। (সূরা আন-নিসাঃ ১৩৬)
২। রাসুলগনের প্রতি বিশ্বাস ।
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সূরা আল- বাকারাঃ ২৮৫)
৩। ফেরেশতাগনের প্রতি বিশ্বাস ।
৪। কুর’আনের প্রতি বিশ্বাস ।
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর, যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামতদিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে। (সূরা আন-নিসাঃ ১৩৬)
৫। ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস ।
তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই।ভালো যা কিছু তোমার ঘটে তা কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে, আর মন্দ বিষয় থেকে যা কিছু তোমার ঘটে তা কিন্তু তোমার নিজের থেকে। আর আমরা তোমাকে মানবগোষ্ঠীর জন্য রসূলরূপে পাঠিয়েছি। আর সাক্ষীরূপে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। (সূরা আন-নিসাঃ ৭৮)
৬। শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস ।
তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে। (সূরা আত তাওবাঃ ২৯)
৭। পুনরুথানের প্রতি বিশ্বাস ।
যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা ধরে নিয়েছে যে তাদের কখনো তোলা হবে না। বলো -- ''হাঁ, আমার প্রভুর কসম, অতি-অবশ্য তোমাদের তোলা হবে, তারপর তোমাদের অবশ্যই জানানো হবে যা তোমরা করেছিলে।’’ আর এইটি আল্লাহ্র পক্ষে সহজ। (সূরা আত তাগাবুনঃ ৭)
আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর মৃত্যু দেন, অতঃপর তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। (সূরা আল-জাছিয়াঃ ২৬)
৮। হাশরের প্রতি বিশ্বাস ।
তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে। সেই মহাদিবসে, যেদিন মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব পালনকর্তার সামনে।
(সূরা আল-মোতাফ্ফেফিন ৪-৬)
৯। জান্নাত ও জাহান্নাম এর প্রতি বিশ্বাস ।
হাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। (সূরা আল -বাকারাঃ ৮১)
১০। আল্লাহকে বিশ্বাস করার সাথে ভালবাসা ।
আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হ’ত যদি এ জালেমরা পার্থিব কোন কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।
(সূরা আল-বাকারাঃ ১৬৫)
১১। আল্লাহ ভীতির প্রতি বিশ্বাস ।
যারা আল্লাহ্ ও রসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল তাদের উপরে দুর্যোগ ঘটার পরে, -- তাদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে ও ভয়শ্রদ্ধা করে তাদের জন্য আছে বিরাট পুরস্কার। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৭২)
নিঃসন্দেহ আমরা অবতীর্ণ করেছি তওরাত, যাতে রয়েছে হেদায়ত ও দীপ্তি। তার দ্বারা নবীগণ, যাঁরা ইসলামী ধর্মমত পোষণ করেন, বিধান দিয়েছিলেন তাদের যারা ইহুদীয় মত পোষণ করে, আর রব্বিসব ও পুরোহিতরা আল্লাহ্র কিতাবের যা তারা সংরক্ষণ করতো তারদ্বারা, আর তারা সে-সবের সাক্ষী ছিল। সেজন্য তোমরা লোকজনকে ভয় করো না, বরং ভয় করো আমাকে, আর আমার বাণীসমূহের জন্য স্বল্পমূল্য কামাতে যেয়ো না। আর যারা বিচার করে না আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা, তারা তবে নিজেরাই অবিশ্বাসী। (সূরা আল-মায়েদাঃ ৪৪)
হে বনী-ইসরাঈলগণ, তোমরা স্মরণ কর আমার সে অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা, তাহলে আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। আর ভয় কর আমাকেই। (সূরা আল-বাকারাঃ ৪০)
তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা আছে, তা তিনি জানেন। তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত। (সূরা আল-আম্বিয়াঃ ২৮)
অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে প্রসব যোগ্য করেছিলাম। তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত।
(সূরা আল-আম্বিয়াঃ ৯০)
এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কঠোর হিসাবের আশঙ্কা রাখে। (সূরা আর-রা’দঃ ২১)
যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দু’টি উদ্যান।
(সূরা আর-রহমানঃ ৪৬)
তাদের পর তোমাদেরকে দেশে আবাদ করব। এটা ঐ ব্যক্তি পায়, যে আমার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে এবং আমার আযাবের ওয়াদাকে ভয় করে। (সূরা ইব্রাহীমঃ ১৪)
১২। আল্লাহর আশ্বাসের প্রতি বিশ্বাস ।
যাদেরকে তারা আহবান করে, তারা নিজেরাই তো তাদের পালনকর্তার নৈকট্য লাভের জন্য মধ্যস্থ তালাশ করে যে, তাদের মধ্যে কে নৈকট্যশীল। তারা তাঁর রহমতের আশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার শাস্তি ভয়াবহ।
(সূরা ইশরাহঃ ৫৭)
পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সূরা আল-আর’আফঃ ৫৭)
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আঝ-ঝুমারঃ ৫৩)
তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। (সূরা আন-নিসাঃ ৪৮)
১৩। আল্লাহর প্রতি নির্ভরতায় বিশ্বাস ।
যখন তোমাদের দুটি দল সাহস হারাবার উপক্রম হলো, অথচ আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী ছিলেন, আর আল্লাহর উপরই ভরসা করা মুমিনদের উচিত। (সূরা আলে ইমরানঃ ১২২)
যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৭৩)
যারা ভয় করতো তাদের মধ্যের দুজন লোক -- যাদের উপরে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন, তারা বললে -- ''তাদের উপরে ঢুকে পড়ো দরজা দিয়ে, কাজেই যখন তোমরা তাতে প্রবেশ করবে তোমরা তখন নিশ্চয়ই বিজয়ী হবে, আর আল্লাহ্র উপরে তবে তোমরা নির্ভর করো, যদি তোমরা মুমিন হও।’’ (সূরা আল-মায়েদাঃ ২৩)
এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
(সূরা আত-তালাক্বঃ৩)
১৪। রাসুলদের প্রতি ভালবাসায় বিশ্বাস ।
১৫। রাসুলদের প্রতি সম্মানে বিশ্বাস ।
যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর। (সূরা আল-ফাতাহঃ৯)
সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
(সূরা আল-আর’আফঃ ১৫৭)
রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরকে আহ্বানের মত গণ্য করো না। আল্লাহ তাদেরকে জানেন, যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। (সূরা আন-নূরঃ ৬৩)
মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন। (সূরা আল-হুজুরাতঃ ১)
মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।
(সূরা আল-হুজুরাতঃ ২)
১৬। ধৈর্যধারন ।
১৭। জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ।
অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুস্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়। (সূরা ফাতিরঃ ২৮)
আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। ফেরেশতাগণ এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৮)
যদি আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত, তবে তাদের একদল আপনাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল। তারা পথভ্রান্ত করতে পারে না কিন্তু নিজেদেরকেই এবং আপনার কোন অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ আপনার প্রতি ঐশী গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। আপনার প্রতি আল্লাহর করুণা অসীম। (সূরা আন-নিসাঃ ১১৩)
মুমিনগণ, যখন তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। (সূরা আল-মোজাদালাহঃ ১১)
১৮। জ্ঞানদান করা।
আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল আর তার কেনা-বেচা করল সামান্য মূল্যের বিনিময়ে। সুতরাং কতই না মন্দ তাদের এ বেচা-কেনা। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৮৭)
১৯। পবিত্র কুর’আনকে ভক্তি করা ।
যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা আল হাশরঃ ২১)
২০। পবিত্রতা অর্জন।
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।
(সূরা আল-মায়েদাঃ ৬)
২১। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ।
অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
(সূরা আন-নিসাঃ ১০৩)
২২। যাকাত ।
তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। (সূরা আল-বাইয়্যেনাহঃ ৫)
২৩। রোযা
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। (সূরা আল- বাকারাঃ ১৮৩)
২৪। ইতেকাফ ।
যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাযের জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।(সূরা আল- বাকারাঃ ১২৫)
২৫। হজ্জ ।
এতে আছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী -- মক্কামে ইব্রাহীম; আর যে কেউ এখানে প্রবেশ করবে সে হচ্ছে নিরাপদ, আর আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে এই গৃহে হজ করা মানবগোষ্ঠীর জন্য আবশ্যিক -- যারই সেখানকার পাথেয় অর্জনের ক্ষমতা আছে। আর যে অবিশ্বাস পোষণ করে -- তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সমস্ত সৃষ্ট জগতের থেকে স্বয়ং-সম্পূর্ণ। (সূরা আলে ইমরানঃ ৯৭)
২৬। জিহাদ ।
হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। (সূরা আল-মায়েদাঃ ৫৪)
২৭। জিহাদে সার্বক্ষনিক দৃঢ়তা অবলম্বন ।
হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার। (সূরা আলে ইমরানঃ ২০০)
২৮। শত্রুর বিরুদ্ধে সংকল্প ।
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার। (সূরা আল আন’ফালঃ ৪৫)
২৯। গনীমতের হিসাব ।
আর কোন বিষয় গোপন করে রাখা নবীর কাজ নয়। আর যে লোক গোপন করবে সে কিয়ামতের দিন সেই গোপন বস্তু নিয়ে আসবে। অতঃপর পরিপূর্ণভাবে পাবে প্রত্যেকে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না। (সূরা আলে ইমরানঃ১৬১)
৩০। দাস মুক্তি ।
শপথ জনকের ও যা জন্ম দেয়। নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি। সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ? সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি। সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি? আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়, জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয় ? বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি।
(সূরা আল বালাদঃ ৩-১১)
৩১। কাফফারা ।
৩২। প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা ।
মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর। তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের কাছে বিবৃত হবে তা ব্যতীত। কিন্তু এহরাম বাধাঁ অবস্থায় শিকারকে হালাল মনে করো না! নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা যা ইচ্ছা করেন, নির্দেশ দেন।
(সূরা আল-মায়েদাঃ ১)
৩৩। আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ণনা করা ।
বল, সকল প্রশংসাই আল্লাহর এবং শান্তি তাঁর মনোনীত বান্দাগণের প্রতি! শ্রেষ্ঠ কে? আল্লাহ না ওরা-তারা যাদেরকে শরীক সাব্যস্ত করে। (সূরা আন-নামলঃ ৫৯)
৩৪। বেহুদা কথা না বলা ।
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত-তাওবাঃ ১১৯)
৩৫। আমানত রক্ষা করা ।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী। (সূরা আন-নিসাঃ ৫৮)
৩৬। হত্যা এবং পাপ কাজে বাধা দেয়া ।
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। (সূরা আন-নিসাঃ ৫৮)
৩৭। সঠিক যৌন আচরন ।
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সূরা আন-নুরঃ ৩০)
৩৮। অন্যের সম্পত্তি হস্তগত না করা ।
তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না। (সূরা আল- বাকারাঃ ১৮৮)
৩৯। পরিমিত আহার এবং পান করা ।
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। (সূরা আল-মায়েদাঃ ৯০)
৪০। পোষাক বেছে পরা ।
৪১। অলংকার এবং আনন্দ পরিহার করা ।
তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা। (সূরা আল-মায়েদাঃ ১১)
৪২। মিত্যব্যয়িতা ।
তুমি একেবারে ব্যয়-কুষ্ঠ হয়োনা এবং একেবারে মুক্ত হস্তও হয়ো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃতি, নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।
(সূরা আল-ইশরাহঃ ২৯)
৪৩। হিংসা না করা ।
নাকি যাকিছু আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন সে বিষয়ের জন্য মানুষকে হিংসা করে। অবশ্যই আমি ইব্রাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হেকমত দান করেছিলাম আর তাদেরকে দান করেছিলাম বিশাল রাজ্য। (সূরা আন-নিসাঃ ৫৪)
৪৪। অপবাদ না দেওয়া ।
নিঃসন্দেহ যারা ভালবাসে যে যারা ঈমান এনেছে তাদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার করুক তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি এই দুনিয়াতে ও আখেরাতে। আর আল্লাহ্ জানেন, আর তোমরা জান না। (সূরা আন-নুরঃ ১৯)
৪৫। আন্তরিকতা ।
তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। (সূরা আল-বাইয়্যেনাহঃ ৫)
৪৬। অন্যের ভাল কাজে খুশি হওয়া ।
৪৭। প্রতিটি পাপে অনুতপ্ত হওয়া ।
তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও তোমাদের কাছে আযাব আসার পূর্বে। এরপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না; (সূরা আঝ-ঝুমারঃ৫৪)
৪৮। ত্যাগ ।
অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সালাত পড়ুন এবং কোরবানী করুন। (সূরা আল-কাওসারঃ২)
৪৯। কতৃপক্ষকে মেনে চলা ।
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। (সূরা আন-নিসাঃ ৫৯)
৫০। পারস্পরিক ঐক্যবদ্ধতা ।
আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার। (সূরা আলে ইমরানঃ ১০৩)
৫১। ন্যায়পরায়ণতা ।
নিশ্চয়ই আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন, যা আল্লাহ আপনাকে হৃদয়ঙ্গম করান। আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না। (সূরা আন-নিসাঃ ১০৫)
৫২। সৎকাজে তাগিদ ও অন্যায়ে বাঁধাদান
"তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম। (সূরা আলে ইমরানঃ ১০৪)
৫৩। উত্তমকাজে এবং ধর্মপরায়ণতায় সাহায্য করা ।
হে মুমিনগণ! হালাল মনে করো না আল্লাহর নিদর্শনসমূহ এবং সম্মানিত মাসসমূহকে এবং হরমে কুরবানীর জন্যে নির্দিষ্ট জন্তুকে এবং ঐসব জন্তুকে, যাদের গলায় কন্ঠাভরণ রয়েছে এবং ঐসব লোককে যারা সম্মানিত গৃহ অভিমুখে যাচ্ছে, যারা স্বীয় পালনকর্তার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে। যখন তোমরা এহরাম থেকে বের হয়ে আস, তখন শিকার কর। যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শুত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা আল-মায়েদাঃ ২)
৫৪। বিনয়
৫৫। বাবা মা’র প্রতি দয়া ।
যখন আমি বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই অগ্রাহ্যকারী। (সূরা আল- বাকারাঃ ৮৩)
৫৬। আত্মীয়তা বজায় রাখা ।
কিন্ত যদি তোমাদের শাসনভার দেওয়া যায় তাহলে তোমাদের থেকে তো আশা করা যাবে যে তোমরা অবশ্যই দেশে ফসাদ সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের রক্ত-সম্পর্ক ছিন্ন করবে। (সূরা মুহাম্মদঃ২২)
৫৭। সচ্চরিত্র ।
নিঃসন্দেহ তুমি সুমহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত। (সূরা আল-কালামঃ৪)
৫৮। অধিনস্তদের প্রতি দয়া ।
উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। (সূরা আন-নিসাঃ ৩৬)
৫৯। স্ত্রীর হক আদায় করা ।
আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা আর-রুমঃ ২১)
৬০। ছেলে মেয়ের হক আদায় করা ।
মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। (সূরা আত-তাহরীমঃ ২১)
৬১। ধর্মপরায়ণ লোকের সাথে সম্পর্ক রাখা ।
হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ। (সূরা আন-নূরঃ ২৭)
৬২। সালামের জবাব দেয়া ।
তোমাদেরকে যদি কেউ দোয়া করে, তাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া কর; তারচেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মত ফিরিয়ে বল। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী। (সূরা আন-নিসাঃ ৮৬)
৬৩। রোগীর সেবা করা ।
৬৪। মৃতের জন্য দোয়া করা ।
৬৫। হাঁচির জবাব দেয়া ।
৬৬। অবিশ্বাসী থেকে দূরে থাকা ।
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা। (সূরা আত-তাওবাঃ ৭৩)
৬৭। প্রতিবেশীকে সম্মান দেখানো ।
আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। (সূরা আন-নিসাঃ ৩৬)
৬৮। অতিথিকে সম্মান দেখানো ।
আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইব্রাহীমেরে কাছে সুসংবাদ নিয়ে এসেছিল তারা বলল সালাম, তিনিও বললেন-সালাম। অতঃপর অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন! (সূরা হুদঃ ৬৯)
৬৯। অন্যের দোষ গোপন করা ।
যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সূরা আন-নূরঃ ১৯)
৭০। দুর্ভাগ্যে অটল থাকা ।
ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর সালাতের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। (সূরা আল- বাকারাঃ ৪৫)
৭১। দাবি ত্যাগ করা ।
তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুতঃ কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে ? (সূরা মুহাম্মদঃ ১৮)
৭২। পরিবারের প্রতি আন্তরিকতা ।
মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। (সূরা আত-তাহরীমঃ ৬)
৭৩। ভিত্তিহীন কথা থেকে সরে থাকা ।
এবং যারা মিথ্যা কাজে যোগদান করে না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।
(সূরা আল- ফুরকানঃ ৭২)
৭৪। উদরতা ।
যারা স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৩৪)
৭৫। ছোটদের স্নেহ এবং বড়দের শ্রদ্ধা ।
৭৬। ঝগড়া মেটানো ।
তাদের অধিকাংশ সলা-পরামর্শ ভাল নয়; কিন্তু যে সলা-পরামর্শ দান খয়রাত করতে কিংবা সৎকাজ করতে কিংবা মানুষের মধ্যে সন্ধিস্থাপন কল্পে করতো তা স্বতন্ত্র। যে একাজ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমি তাকে বিরাট ছওয়াব দান করব।
(সূরা আন-নিসাঃ ১১৪)
৭৭। তা ভালবাসা যা অন্য ভাইয়ের জন্য ভালবাসা ।
"তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।" [বুখারীঃ ১৩, মুসলিমঃ ৪৫]
আল্লাহ আমাদের সত্যিকারের ঈমানদার হওয়ার তাওফীক দিন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
২৮১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন