এ কিসের আলামত??????
লিখেছেন লিখেছেন মুহিউদ্দীন ফাহিম ২৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:১৩:৪১ বিকাল
গতকাল সাভারে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল (ভদ্রলোকের নাম মনে করতে পারছি না) এর সংবাদ সম্মেলন কেউ দেখেছেন?
আমার পক্ষে এক নাগারে ২ মিনিট এর বেশি দেখার রুচি হয় নাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ জং এর পাশে বসে তিনি যে বক্তব্যটি দিয়েছেন তা শুনে তাকে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি না, বরং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নবম পদাতিক ডিভিশন শাখার সভাপতি বলে আমার মনে হয়েছে।
আওয়ামীলীগ এর একেবারে নিম্ন শ্রেণীর চাটুকাররা যে ভাষায় কথা বলে তিনি সে ভাষায় কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন তাদের সকল প্রেরনার উৎস প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। ভালো কথা, কোন আপত্তি নাই আমাদের। কিন্তু এর পর তিনি ধন্যবাদ দিলেন শেখ রেহানাকে কারন তিনি উদ্ধার কাজের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এ জন্য।
এইটা কোন বিবেকবান মানুষের কথা হয়??
অথচ বিরোধীদলীয় নেত্রী যে পরিদর্শনে গিয়েছেন এই কথাটা তিনি মুখে পর্যন্ত আনলেন না।
তারপর তিনি এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী নানক কে ধন্যবাদ দিলেন। তাদেরকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, গনজাগরন মঞ্চ সহযোগিতা করছে বলে জানালেন।
আওয়ামীলীগের এতগুলো অঙ্গ সংগঠনের নাম মনে করে করে তিনি বললেন কিন্তু যেই সাধারন মানুষরা দিনরাত পরিশ্রম করছে তাদের নাম তার মুখে শুনলাম না।
শুনলাম না এনাম মেডিকেলের নাম যারা অমানুষিক পরিশ্রম করছে নাওয়া-খাওয়া ভুলে। শুনলাম না ইবনে সিনার নাম যারা বিনামুল্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। শুনলাম না হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের নাম যারা রক্ত দেওয়া থেকে উদ্ধার কাজ সব কিছুতে এগিয়ে এসেছে।
শিবির কর্মীরা না হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্য উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছে, রক্ত দিচ্ছে, তাদের কথা বলার দরকার নাই। কিন্তু বাকিরা কি দোষ করল?
একজন উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা যখন এ ধরনের নির্লজ্জ দলীয় বক্তব্য রাখেন তখন আমাদের গর্বের স্থান সেনাবাহিনী সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাবতে হয়। আমাদের ভাবতে হয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে আসলে কতটুকু অংশে এরকম পচন ধরেছে। এই দলবাজ জেনারেল আমাদের মনে করিয়ে দেয় পিলখানায় হত্যা করা ৫৭ সেনা কর্মকর্তার কথা।
ব্রিগেডিয়ার আজমীর মত চৌকশ সেনা কর্মকর্তাদের বিনা কারনে সেনাবাহিনী থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা।
তবে কি এইসব দলবাজ চাটুকার সেনাকর্মকর্তাদের সামনে নিয়ে আসার জন্যই তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে? এটি অবশ্যই ভাববার মত বিষয়।
কতজন নির্লজ্জ দলীয় চাটুকার এরকম গুরুত্বপূর্ণ দায়ীত্বে রয়েছেন আমরা জানি না। সেনাবাহিনীর মত প্রতিষ্ঠান এভাবে দলীয় চাটুকারে ভরে যাবে এটা জাতি আশা করে না। তবে আমরা আশা করব এই মেজর জেনারেল বাংলাদেশের পুরো সেনাবাহিনীর প্রতিচ্ছবি নন। আশা করব এখনো সেনাবাহিনীতে অনেক দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার রয়েছেন যারা এই ক্ষুদ্র স্বার্থর কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিবেন না। রাজনীতির উর্ধে উঠে দেশের ক্রান্তিকালে এগিয়ে আসবেন। অন্তত সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আশাহত আমরা হতে চাই না।
বিষয়: রাজনীতি
১৭৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন