কোন দলে কত জাসদ নেতা:

লিখেছেন লিখেছেন ব১কলম ১৭ জুন, ২০১৬, ১১:৫৬:৫৫ সকাল

আওয়ামী লীগ : জাসদ নেতা

শাজাহান খান: একসময়ের জাসদ নেতা শাজাহান খান আওয়ামী লীগ সরকারের নৌপরিবহনমন্ত্রী । মুক্তিযুদ্ধের আগে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের মাদারীপুর মহকুমার সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিববাহিনীতে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর জাসদ সৃষ্টি হলে তিনি তাতে যুক্ত হন। একবার জাসদ থেকে এমপিও নির্বাচিত হয়েছিলেন শাজাহান খান।।

আখতারুজ্জামান: কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ও গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক, একসময়ের জাসদ নেতা সাবেক ডাকসু ভিপি আখতারুজ্জামান ১৯৭২ সাল থেকে জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত। ’৭৩ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। পরে দুবার ডাকসু জিএস ও একবার ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ’৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এখন কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য। ।

ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক: নেত্রকোনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক। তিনি কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই। এরপর জাসদ ছেড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং আওয়ামী লীগের টিকিটে দুবার এমপি নির্বাচিত হন।

আবদুল বাতেন: টাঙ্গাইল-৬ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হয়েছেন একসময় জাসদের নেতা ছিলেন।

এম এ ওয়ারেস নাঈম: শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম এ ওয়ারেস নাঈম। তিনি একসময় জাসদের সক্রিয় নেতা ছিলেন। প্রায় ১৫ বছর আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। জেলা সহ-সভাপতির পাশাপাশি ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।

গোলাম রব্বানী: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি, একসময় জাসদ ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ২০০৬ সালে কানসাট আন্দোলনের পর তিনি গণফোরামে যোগ দেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের যোগদান করে এখন এমপি।

শফি আহমেদ: কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক শফি আহমেদ ১৯৮৮ থেকে ’৯২ সাল পর্যন্ত জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ‘জনতার মঞ্চ’-এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যুক্ত হন। একই বছর ১২ আগস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পর্যবেক্ষক ও পরে সহ-সম্পাদক। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে নেত্রকোনা-৪ আসনে মনোনয়ন পান।

আশরাফ আলী খান খসরু: নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, তার রাজনৈতিক জীবন শুরু বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে। পরে তিনি আওয়ামী লীগ রাজনীতি ছেড়ে জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত হন। বেশ কিছু সময় জাসদ করার পর আবার আওয়ামী লীগে ফেরেন। ২০০৪ সালের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন।

শেখ কামরুজ্জামান টুকু : বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ কামরুজ্জামান টুকু। তিনি একসময় জাসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জাসদ ভাগ হওয়ার পর আ স ম আবদুর রব গ্রুপের জাসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। নব্বইয়ের পর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। এরপর ২০০৫ সালের ৭ এপ্রিল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনে ভোট ছাড়াই আবারও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।

কামরুল হুদা সেলিম: মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক কামরুল হুদা সেলিমও একসময় জাসদ করতেন। তিনি ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

রওশন জাহান সাথী: জাতীয় মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন ।

শামীম শাহরিয়ার: স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক শামীম শাহরিয়ার জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন ।

বিএনপিতে সক্রিয় অর্ধশত নেতা :

দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপিতে এখনো সক্রিয় জাসদের সেই অর্ধশত নেতা। দলের স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়ও একসময় জাসদে ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল শাখার নেতা ছিলেন। বিএনপি আমলের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজও জাসদের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। অবশ্য তিনি এখন আর বিএনপির রাজনীতিতে নেই। তবে তার স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ এখনো বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত। তিনিও জাসদের কেন্দ্রীয় নেত্রী ছিলেন।

জানা যায়, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির টিকিটে জাসদের অর্ধশত এমপি নির্বাচিত হন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও এমপি হয়েছেন তারা। অবশ্য এরই মধ্যে কয়েকজন মারাও গেছেন। আবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে কেউ কেউ বর্তমানে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। বিএনপি আমলের স্পিকার মরহুম শেখ রাজ্জাক আলীও একসময় জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। জাসদ ছাত্রলীগেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। সিলেট বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন জীবনও জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। সুনামগঞ্জের জাসদের এমপি কলিমউদ্দিন মিলন এখন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। একসময় তিনি জাসদ ছাত্রলীগের ডাকসাইটে নেতা ছিলেন। বরিশালের সাবেক এমপি বিএনপির নির্বাহী কমিরি সদস্য আবুল হোসেন খানও জাসদ করতেন। চাকসুর সাবেক ভিপি জি এম ফজলুল হকও জাসদ ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তিনি বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। টাঙ্গাইলের সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী এবং লুত্ফর রহমান খান আজাদও একসময় জাসদের রাজনীতি করতেন। বর্তমানে তারা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। ফেনী কলেজের ভিপি জয়নাল আবেদীনও জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেলও একসময় জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। জেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিএনপির অনেক নেতাই একসময় জাসদের রাজনীতি করতেন।

জাতীয় পার্টি:

জাপার তিন মহাসচিবই জাসদের : সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের একটি বড় অংশ জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের একসময়ের নেতারা। জাতীয় পার্টির বর্তমান মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ছিলেন জাসদ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। দুই মেয়াদে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তিনি। সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু একসময় জাসদ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জাসদ থেকে বাসদ। বাসদ থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এ বি এম শাহজাহানও ছিলেন জাসদ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত নন। জানা গেছে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান, বর্তমান এমপি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের নোমান মিয়া ও বগুড়া-২ আসনের শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আলম মাস্টার, আবদুস সাত্তার মিয়া, দলের যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, দিদারুল আলম দিদার, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ই আযম জাসদ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ ছাড়াও মুন্সীগঞ্জের জামাল হোসেন, নোয়াখালীর ফজলে এলাহী, চট্টগ্রামের মাজহারুল হক জাসদ থেকে জাতীয় পার্টিতে এসে এমপি হয়েছিলেন। বগুড়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম জাকারিয়া খানও জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন

বিষয়: রাজনীতি

৮৯১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

372260
১৭ জুন ২০১৬ বিকাল ০৪:৫৩
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
372309
১৭ জুন ২০১৬ রাত ১০:১২
ব১কলম লিখেছেন : শেয়ার করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File