প্রিয়তম/প্রিয়তমা, ১ম পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন ব১কলম ২৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৩১:৫১ সকাল
আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন কি দ্বীনদার বলে পরিচিত ভাই/বোনেরা আবেগের আতিশয্যে স্বামী/স্ত্রী পরস্পরকে সম্বোধন করতে প্রিয়তম/প্রিয়তমা শব্দ ব্যবহার করে থাকেন ।
একজন মু’মিনের কাছে কে সবচেয়ে ভালবাসার বা প্রিয়তম হতে পারে তা পবিত্র কুরআন হাদীস স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে । অথচ আমরা হয়ত অনেকেই তা জানিনা বা জানলেও ভাব প্রকাশ বা শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে তা খেয়াল করিনা।
[b]আল্লাহর প্রতি ভালবাসাঃ[/b]
আল্লাহ বলেনঃ
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللَّـهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّـهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّحُبًّا لِّلَّـهِ ﴿البقرة: ١٦٥﴾
অর্থঃ মানুষকে কিছু লোক আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে তাঁর সমকক্ষ ও প্রতিপক্ষ দাঁড় করায় এবং তাদেরকে এমন ভালোবাসে যেমন আল্রাহকে ভালোবাসা উচিত – অথচ ঈমানদাররা সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভালোবাসে । (সুরা বাকারা, ১৬৫)
ব্যক্তির সর্বোচ্চ ভালোবাসা আল্লাহর অধিকার। কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হলেন স্রষ্টা, সে তাঁর সৃষ্টি। আল্লাহ হলেন প্রভু, সে গোলাম/দাস। তাই গোলামি ও দাসত্বই হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সঙ্গে ব্যক্তির সবচেয়ে গভীর ও নিবিড় সম্পর্ক। আর তাই মুমিনের বড় সফলতা হলো আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হতে পারা। তার প্রতিটি কাজ-কর্ম, আচার-উচ্চারণে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা। সব আদেশ-নিষেধ পালন করে আল্লাহকে রাজি-খুশি করা। তাঁর পূর্ণ অনুগত ও সমর্পিত বান্দা হয়ে থাকা। তার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য আল্লাহর প্রিয়পাত্র হতে পারা। আল্লাহর ভালোবাসা লাভে নিজেকে ধন্য করা।
আল্লাহকে ভালোবাসা ও তাঁর প্রিয়পাত্র হওয়ার জন্য আল্লাহ নিজেই একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যে মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া ভালোবাসার দাবি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আর তা হলো তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ও তাঁর আনুগত্য করা। অতএব আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া ও তাঁর প্রিয়পাত্র হওয়ার একমাত্র পথ হলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ও তাঁর আনুগত্য করা।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ
﴿قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
অর্থঃ (হে নবী) বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর। আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।—(সুরা আলইমরান, ৩১)
এই আয়াতে আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসা পোষণের জন্য রাসুলকে ভালোবাসা ও তাঁর অনুসরণকে শর্ত করেছেন। সুতরাং রাসুলকে ভালোবাসা ও তাঁর অনুসরণ ছাড়া শুধু আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা যথেষ্ট নয়।
আল্লাহ তায়ালা ধমকের সূরে বলেছেনঃ
قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّـهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّـهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّـهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ ﴿التوبة: ٢٤﴾
বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। (সূরা বাকারা-৬৩)
বিষয়: বিবিধ
১৩০৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু উপস্থাপনার কায়দা আপত্তিকর ও অনুপযোগী
প্রিয়তম শব্দটিকে ব্যাকরণের ধারায় ফেলে বিশ্লেষণ করাটা বড়ই অন্যায়!
এটি আবেগের বিষয় এবং পার্থিব অনুষঙ্গ, এর সর্বোচ্চ মানও "আল্লাহ-রাসুল-দ্বীন" ইত্যাদির পরবর্তী নিম্নস্তরে সীমাবদ্ধ!
আল্লামা ইকবালের "শিকওয়া" ও "জওয়াবে শিকওয়া" সংক্রান্ত ঘটনায় ওলামায়ে কিরামের "সাহিত্য-না-বুঝা্দল" যা করেছিলেন এটাও ঠিক তেমনই!!
কসম ভংগ করা অপরাধ-
আল্লাহতায়ালা বলেন- তোমরা কথায় কথায় যে কসম কর তা আল্লাহতায়ালা ধরেননা, কিন্তু যে কসম দৃঢ়তা সহকারে করা হয়...
সুতরাং দৈনন্দিন জীবনের সব কথাকে শরয়ী ছকে ফেলে বিশ্লেষণ না করাই উচিত!
এতে অহেতুক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং মূর্খ লোকেদের দ্বীন থেকে বিমুখ হওয়ার কারণ ঘটে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন